ঢাকা ১৬ বৈশাখ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২

ইলিয়াস আলীর ফেরার অপেক্ষায় সিলেট বিএনপি: কাইয়ূম চৌধুরী

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:১৯ পিএম
ইলিয়াস আলীর ফেরার অপেক্ষায় সিলেট বিএনপি: কাইয়ূম চৌধুরী
ছবি: খবরের কাগজ

বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর পরিবারের অপেক্ষার অবসান হয়নি, রহস্য এখনো অমীমাংসিত বলে সিলেট জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়। জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেছেন, ‘সিলেট বিএনপি এখনো ইলিয়াস আলীর অপেক্ষায়। রহস্য এখনো অমীমাংসিত বলে এই মর্মান্তিক বাস্তবতা আমরা কখনো ভুলব না। ইলিয়াসকে ফেরার আশাও ছাড়ব না।’ 

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে সিলেটের কোর্ট পয়েন্টে জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিগত দিনে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের আশ্বাস প্রবঞ্চনা ছিল উল্লেখ করে জেলা সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী আরও বলেন, ‘নানা আশ্বাস সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত ইলিয়াস আলীর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি এখনো জীবিত এবং সংশ্লিষ্ট মহল তার অবস্থান সম্পর্কে অবগত।”

সিলেটবাসীর হৃদয়ের নেতা ইলিয়াস আলীর খোঁজ না পাওয়া আমাদের জন্য গভীর বেদনা ও ক্ষোভের বিষয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি জাতির জন্য চরম লজ্জার। আমরা ন্যায়বিচারের আশায় আজও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মানের তদন্ত কমিশন গঠনের জোর দাবি জানাই।’

সম্প্রতি ‘আয়নাঘর’ থেকে গুম হওয়া কয়েকজন ব্যক্তি ফিরে আসার প্রসঙ্গ টেনে কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘এই ঘটনাগুলো ইলিয়াস আলী গুমের প্রসঙ্গকে নতুন করে সামনে এনেছে। একইভাবে নিখোঁজ ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার ও জুনেদ আহমদের ক্ষেত্রেও তাদের সন্ধান ও মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’ 

মানববন্ধনে একাত্ম হয়ে অন্যান্য বক্তারা বলেন, গুমের ঘটনাগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশ্নের মুখে ফেলছে দেশকে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিকমানের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন একান্ত প্রয়োজন। অতীতে যেসব ভুলের কারণে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় নিতে হয়েছিল, বর্তমান সরকার যেন সে ভুলগুলো না করে। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। জনগণ আজ যেসব অপকর্ম দেখে ক্ষুব্ধ, সেগুলো পরিহার করে আমাদের সামনের দিকে এগোতে হবে।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদি, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম, জেলা সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক পিপি, সহসভাপতি মামুনুর রশিদ মামুন। 

মানববন্ধনে একাত্ম হন জেলা বিএনপির সহসভাপতি নাজিম উদ্দিন লস্কর, সামিয়া বেগম চৌধুরী, গৌছ আলী, লিলু মিয়া, অধ্যক্ষ জিল্লুর রহমান সুয়েব, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, তাজরুল ইসলাম তাজুল, আনোয়ার হোসেন মানিক, কোহিনুর আহমদ, আবুল কাশেম, মাহবুবুল হক চৌধুরী, শাকিল মোর্শেদ, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ ও এড. আল আসলাম মুমিন, লোকমান আহমদ, এড. বদরুল ইসলাম চৌধুরী, তাসনিম শারমিন তামান্না, আল মামুন খান, মাহবুব আলমসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা।

মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে ইলিয়াস আলীসহ সকল গুম হওয়া নেতা-কর্মীদের সন্ধান ও মুক্তির দাবি জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকার বনানী থেকে ‘গুম’ হন ইলিয়াস আলী। ছাত্রাবস্থা থেকে সাহসী চরিত্রের ইলিয়াস বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন একজন নেতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে আবাসিক হলের নেতা থেকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসীন হন। ১৯৮৩ সালে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও ১৯৮৬ সালে প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে আন্তর্জাতিকবিষয়ক সচিব নির্বাচিত হন। আশির দশকের মধ্যভাগে রাজধানীতে ছাত্ররাজনীতির চালিকাশক্তি হয়ে ইলিয়াসই প্রথম সেই সময়কার সামরিক শাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এ জন্য ১৯৮৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃতও হন। ১৯৮৮ সালে গ্রেপ্তার হয়ে সাত মাস কারাভোগ করেন। ১৯৯২ সালের ১০ অক্টোবর বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে আবার কারাবন্দি হন। ২৩ মাস কারাভোগের পেছনে ছিল অন্তর্দলীয় ষড়যন্ত্র। তা ভেদ করেন কারামুক্তির মধ্য দিয়ে। তখন বয়সে তরুণ হলেও মূল দলে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত ইলিয়াস ভোটের রাজনীতিতে নেমেও অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য হন। এরপর ২০০৮ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও তার সমর্থকদের অভিযোগ ছিল, ‘ওয়ান-ইলেভেন ষড়যন্ত্রে’ তাকে হারানো হয়। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে গাড়িচালক আনসার আলীসহ তাকে তুলে নেওয়া হয়। সেই থেকে তার আর কোনো সন্ধান মেলেনি। 

ইলিয়াস আলী সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসেবে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পাশাপাশি সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তার সাংগঠনিক দায়িত্বে সিলেটে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার যে সমাবেশ হয়েছিল, সেখানে বাংলাদেশে পানির ন্যায্য হিস্যার বিষয়টি উত্থাপন করে ইলিয়াস ভারতের আগ্রাসী তৎপরতার প্রথম প্রকাশ্য প্রতিবাদ জানান। এরপর সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে ভারতের টিপাইমুখের বাঁধবিরোধী আন্দোলনের ডাক দেন। আন্দোলনে সম্পৃক্তরা বলেছেন, এ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে ওঠায় ইলিয়াসও গণমুখী হয়ে উঠেছিলেন। গণমুখী হতেই তিনি ‘গুম’ হন। 

শাকিলা ববি/মাহফুজ

 

উৎস ব্লক ফ্যাক্টরি ও রাজশাহী ব্লকটেকের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম
উৎস ব্লক ফ্যাক্টরি ও রাজশাহী ব্লকটেকের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত
ছবি: খবরের কাগজ

দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগ্রুপ নাবিল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ এবার নির্মাণখাতে অবদান রাখতে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক পরিবেশবান্ধব ও টেকসই প্রযুক্তিতে নির্মাণের আধুনিক উপকরণ হিসেবে উন্নতমানের ব্লক তৈরি করছে। এর ফলে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ইটভাটার কার্যক্রম কমে আসবে। নির্মাণখাতে তৈরি হবে যুগান্তকারী প্রযুক্তি।

এ লক্ষ্যে সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে নাবিল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান উৎস ব্লক ফ্যাক্টরি ও রাজশাহী ব্লকটেক-এর মাঝে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।  

ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত এ চুক্তি সম্পাদন অনুষ্ঠানে নাবিল গ্রুপের পক্ষে স্বাক্ষর করেন উৎস ব্লক ফ্যাক্টরির স্বত্বাধিকারী ইসরাত জাহান। অপরদিকে রাজশাহী ব্লকটেকের পক্ষে সমঝোতা স্মারকের স্বাক্ষর করেন স্বত্বাধিকারী মশিউল আলম।

এ সময় তারা বলেন, পরিবেশ রক্ষায় নির্মাণ সামগ্রী হিসেবে ব্লক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। সরকারি স্থাপনা নির্মাণকাজেও ব্লক ইটের ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়েছে। পরিবেশবান্ধব ও উন্নত প্রযুক্তির হওয়ায় ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ব্লক। কাজেই এখন ব্যক্তিগত স্থাপনা নির্মাণখাতেও ব্লকের বিপুল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। তাই এ দুটি প্রতিষ্ঠান এক হয়ে দেশের ব্লক তৈরির বাজারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে চায়।

এনায়েত করিম/মাহফুজ

নড়াইলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, ধর্ষক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩১ পিএম
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম
নড়াইলে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, ধর্ষক গ্রেপ্তার
ধর্ষক নুরনবী শেখ (২২)। ছবি: সংগৃহীত

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় ১৪ বছর বয়সী সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে নুরনবী শেখ (২২) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) তাকে আদালতে পাঠানো হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান।

এর আগে রবিবার এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে রাতেই লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের লাহুড়িয়া রাজাপুর গ্রাম থেকে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে লোহাগড়া থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তার নুরনবী লোহাগড়া উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের লাহুড়িয়া রাজাপুর গ্রামের নূর মিয়া শেখের ছেলে।

পুলিশও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রবিবার সকালে ওই ছাত্রী স্কুলে যাওয়ার সময় স্কুল গেটের সামনে থেকে নুরনবী তাকে জোর করে তুলে নিয়ে লোহাগড়া পৌরসভায় একটি বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে।

পরে ওই ছাত্রী স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষককে ঘটনা খুলে বলে। এরপর ওই ছাত্রীর বাবা লোহাগড়া থানায় ধর্ষণ মামলা করেন।

ওসি মো. আশিকুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে ওইদিন রাতেই আমরা নুরনবীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই।’

শরিফুল ইসলাম/সুমন/

ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলা-ভাঙচুর, আহত ৫

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৭ পিএম
ঝিনাইদহে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলা-ভাঙচুর, আহত ৫
ছবি: খবরের কাগজ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্দি ইউনিয়নের দিঘিরপাড় গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারীসহ অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। 

রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রামের আলিম উদ্দিন বিশ্বাসের সমর্থকদের সঙ্গে স্থানীয় রেজওয়ান বিশ্বাসের সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ চলছিল। রবিবার রাতে রেজওয়ানের সমর্থক তুষারের সঙ্গে আলিম উদ্দিনের সমর্থক মুকুলের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। 

পরে রাতে আলিম উদ্দিনের লোকজন রেজওয়ান বিশ্বাসের সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করে। বাঁধা দিলে পিটিয়ে ও কুপিয়ে নারীসহ ৫ জনকে আহত করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মাহফুজুর রহমান/মাহফুজ

 

বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি, ২ চোরকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম
বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি, ২ চোরকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ
ছবি: খবরের কাগজ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ইউনিয়নের ভারগাঁও কাজিপাড়া এলাকায় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির সময় দুই চোরকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের সোপার্দ করেছে এলাকাবাসী।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) দিবাগত রাতে তাদের আটক করে গণধোলাই দেওয়া হয়। এঘটনায় সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর এজিএম (প্রশাসন) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে চোরদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলো-রূপগঞ্জের মাসাবো এলাকার মো. রবিউল ইসলাম (২৩), একই এলাকার রাকিবুল ইসলাম (২০)। তবে মো. সাগর নামের আরও এক চোর পালিয়ে যায়।  

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুর রহমান বলেন, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরির দায়ে দুই চোরকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। দুই চোরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ইমরান হোসেন/মাহফুজ 

 

সিওমেকে চিকিৎসককে মালাউনের বাচ্চা বলে গালি, হাতাহাতি

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩১ পিএম
আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪২ পিএম
সিওমেকে চিকিৎসককে মালাউনের বাচ্চা বলে গালি, হাতাহাতি
সিওমেকে চিকিৎসককে মালাউনের বাচ্চা বলে গালি দেওয়ায় মেজাজ হারান চিকিৎসক। ছবি: খবরের কাগজ

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ (সিওমেক) হাসপাতালে রোগীর এক স্বজনের বিরুদ্ধে ডা. তনয় বর্ধন নামে এক চিকিৎসককে মালাউনের বাচ্চা ও আবাদি বলে গালি দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। 

রবিবার ( ২৭ এপ্রিল) হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

চিকিৎসক ও রোগীর স্বজনের হাতাহাতির ঘটনার একটি ভিডিও রবিবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এদিকে রোগীর আত্মীয় ও বন্ধুকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে চরম ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠে। ভিডিওতে দেখা যায় কর্তব্যরত চিকিৎসককে কিছু একটা বলায়, রোগীর ভাইকে মারতে তেড়ে যান চিকিৎসক। ভিডিওতে এক যুবককে লাথি মারতেও দেখা যায়।

তবে সেই চিকিৎসকের দাবি মালাউনের বাচ্চা ও আবাদি বলে গালি দেওয়াসহ  অশোভন আচরণ করায় মেজাজ হারান তিনি।

জানা গেছে, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিতে আসেন জুবায়ের আহমদ নামে এক ব্যক্তি। ঘটনার সময় রোগীর অ্যাপেন্ডিসাইটস-এর ব্যথা হচ্ছিল। তখন পাশের ওয়ার্ডে এক রোগী মারা গেলে ডা. তনয় বর্ধন সেখানে দ্রুত যাচ্ছিলেন। ওই সময় রোগীর বিছানায় শুয়ে পায়ের ওপর পা তুলে তাকে ‘এই স্যার’ বলে ডাক দিচ্ছিলেন রোগীর স্বজন। তখন চিকিৎসক তার ডাক দেওয়ার বাচন ও শারীরিক ভঙ্গি ভালো না লাগার কথা ওই রোগীর স্বজনদের জানান। এই কথা শুনে চিকিৎসককে মালাউন, নন সিলেটি ও আবাদি বলায় নিজের মেজাজ হারিয়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ডা. তনয় বর্ধন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী রোগী জোবেল আহমেদ ও তার বন্ধু জুবায়ের বলেন, ‘অ্যাপেন্ডিসাইটিস-এর ব্যথা ওঠায় চিকিৎসককে ডাক দিলে তিনি আসছেন বলে ইমার্জেন্সি অন্য একটি রোগী দেখতে আরেকটি ওয়ার্ডে চলে যান। পরবর্তীতে চিকিৎসক আসার পর আবার যখন আমি ডাক দেই তিনি বলেন, এইভাবে ডাকছেন কেন। আমি বললাম স্যার বলেই তো ডাকলাম, পরবর্তীতে চিকিৎসক ক্ষেপে গিয়ে থাপ্পড় ও লাথি দেন।’

এ বিষয়ে ওই ওয়ার্ডে কর্তব্যরত আরেক চিকিৎসক ডা. রুবেল আহমেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোগীর স্বজনদের ডা. তনয়কে ডাকার ভঙ্গি ভালো ছিল না। আর পরবর্তীতে যখন ডা. তনয় ফিরে আসেন তখন তাকে গালাগালি করলে তিনি মেজাজ হারিয়ে ফেলেন এবং এই ঘটনা ঘটে।’

এ ব্যাপারে ডা. তনয় বর্ধন বলেন, ‘পাশের ওয়ার্ডে একজন রোগী মারা যান। তাই আমি দ্রুত সেখানে যাচ্ছিলাম। তখন রোগীর বিছানায় শুয়ে পায়ের উপর পা তুলে তাকে ‘এই স্যার, এই স্যার’ বলে ডাক দিচ্ছিলেন রোগীর এক স্বজন। পরে আমি পাশের ওয়ার্ড থেকে এসে তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে, সে কেন এভাবে আমাকে ডাকল। আমার কথা শুনে তিনি আমাকে স্থানীয় ক্ষমতার কথা বলেন এবং আমাকে মালাউনের বাচ্চা, নন সিলেটি, আবাদি বলায় নিজের মেজাজ হারিয়ে ফেলি। তখন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। তবে আমি পরে বুঝতে পারি এভাবে মেজাজ হারানো আমার ঠিক হয়নি। আমি এইজন্য অনুতপ্ত। পরবর্তীতে রোগীর বাবার কাছে গিয়ে সব কিছু বুঝিয়ে বললে তারা বিষয়টা বুঝতে পারেন। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।’

এ ব্যাপারে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেপুটি ডিরেক্টর সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, ‘বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ঘটনায় ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা ৭ কর্মদিবসে প্রতিবেদন দিবেন। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সুমন/