ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বান্দরবানের দুর্গম সীমান্তে স্কুল প্রতিষ্ঠা করল বিজিবি

প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ০৮:৫১ পিএম
বান্দরবানের দুর্গম সীমান্তে স্কুল প্রতিষ্ঠা করল বিজিবি
বান্দরবানের দুর্গম সীমান্তে বিজিবি প্রতিষ্ঠিত স্কুল ও শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের দুর্গম সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সহায়তায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের শিক্ষা লাভের জন্য একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় উদ্বোধন করা হয়েছে। পাহাড়ি ওই দুর্গম এলাকায় ৪২টি পরিবারের বসবাস থাকলেও আশেপাশে কোনো স্কুল ছিল না। 

শুক্রবার (২ মে) বিজিবির আলীকদম ব্যাটালিয়নের (৫৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মেহেদী থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নের ত্রীমতি কারবারী পাড়ায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ওই বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করেন।

এ সময় তিনি ২৫ জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে প্রাথমিক শিক্ষার বই, শিক্ষা সহায়ক সামগ্রী, বিস্কুট ও চকলেট বিতরণ করেন। এর বাইরেও স্থানীয় দরিদ্রদের মাঝে মশারী বিতরণ ও আর্থিক অনুদান দেন তিনি।

আলীকদম ব্যাটালিয়নের (৫৭ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মেহেদী খবরের কাগজকে বলেন, ‘দুর্গম ত্রীমতি কারবারি পাড়ায় কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় স্থানীয় পাঁচটি পাড়ার ৪২টি পরিবারের কোমলমতি শিশুরা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিল। ওই এলাকার শিশু-কিশোরদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিজিবির পক্ষ থেকে স্থানীয় কারবারি ও জণসাধারণের সমন্বয়ে একটি অস্থায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় স্কুলটি পাঠদানের জন্য উদ্বোধন করা হয়েছে।’

এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানিয়েছে, বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়নের বান্দরবান সেক্টরেরের অধীনে আলীকদম ব্যাটালিয়ন (৫৭ বিজিবি) সার্বক্ষণিক অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে অতি দূর্গম বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে দায়িত্ব পালন করছে।

অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে সীমান্ত সুরক্ষাসহ আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ দমনের পাশাপাশি ‘অপারেশন উত্তরণের’ আওতায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বসবাসরত স্থানীয় নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে বিভিন্ন সময়ে মানবিক কাজের অংশ হিসেবে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান, আর্থিক অনুদান, খাদ্য ও বস্ত্র বিতরণ, শীতকালীন কম্বল বিতরণ, অগ্নিকাণ্ড এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে পাহাড়ি-বাঙ্গালি সম্প্রীতি সুদৃঢ়করণে বিজিবি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় স্কুলটি চালু করা হলো। বিজিবির এই কাজের জন্য কারবারীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ বিজিবির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পদবির বিজিবি সদস্য, স্থানীয় পাড়ার কারবারীরা উপস্থিত ছিলেন। 

আলমগীর হোসেন/সুমন/

সিলেটে বৃষ্টি কমলেও থামেনি পাহাড়ি ঢল, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:০৮ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৯:২২ পিএম
সিলেটে বৃষ্টি কমলেও থামেনি পাহাড়ি ঢল, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত
ছবি: খবরের কাগজ

সিলেটে গত দুইদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত কিছুটা কমলেও ভারতের পাহাড়ি ঢল থামেনি। যার ফলে সিলেট জেলার বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারার চারটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ভারতের আসাম রাজ্যের বরাক উপত্যকায় কয়েকদিন ধরে টানা ভারী বর্ষণের ফলে দ্রুত বাড়ছে সীমান্ত নদী কুশিয়ারার পানি। আর এই কুশিয়ারা নদী বয়ে গেছে সিলেটের জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা দিয়ে। তাই এই তিন উপজেলায় ইতোমধ্যে নদীর পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে। বিশেষ করে বাঁধ ভেঙে সীমান্তবর্তী জকিগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার এলাকার লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে এবং এই দুই উপজেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে। ভারতের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকলে কুশিয়ারার বাঁধে আরও ভাঙন দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদীর তিনটি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। রবিবার (১ জুন) রাত থেকে সোমবার (২ জুন) সকাল পর্যন্ত জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামে প্রায় ১০০ ফুট, বাখরশাল গ্রামে ৫০ ফুট এবং খলাছড়া ইউনিয়নের লোহারমহল এলাকায় ৪০ ফুট বাঁধ ভেঙে যায়। এছাড়া আরও ২৫ থেকে ৩০টি স্থানে বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে। যার ফলে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে প্লাবিত হয়েছে অন্তত ৫০টি গ্রাম।

অপরদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের আঙ্গারজুর গ্রাম এলাকায় কুশিয়ারা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে ওই অঞ্চলের একাধিক গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যার আশঙ্কায় বিয়ানীবাজারে ৬৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিরণ মাহমুদকে প্রধান করে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।

সুরমা, কুশিয়ারা নদী ছাড়াও সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী সারি, সারিগোয়াইন, ডাউকি, ধলাই ও লোভা নদীতে পানি বাড়ছে। ফলে গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মানুষ উদ্বেবেগের সাথে দিনানিপাত করছেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের তথ্য মতে, মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা তিনটায় কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জ উপজেলার আমলশিদ পয়েন্ট বিপৎসীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার, বিয়ানীবাজার উপজেলার শেওলা পয়েন্টে ৪৮ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত হয়েছে ২৬.৬ মিলিমিটার।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস খবরের কাগজকে বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার ও সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৯৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মূলত ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্যে বিশেষ করে শিলচরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে যার ফলে সেই পানি আমাদের সুরমা ও কুশিয়ারা নদী দিয়ে নামছে। এজন্য সিলেটের কয়েকটি উপজেলার মানুষজন বন্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। যেহেতু সিলেটেও বৃষ্টিপাত কমে গেছে, আশা করছি আগামী দুই তিনদিনের মধ্যে বন্যার পানি নেমে যাবে।

শাকিলা ববি/মাহফুজ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৯ লাখ টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৫৮ পিএম
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৯ লাখ টাকার ভারতীয় চোরাই পণ্য জব্দ
ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলা থেকে প্রায় ৩৯ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় বিভিন্ন চোরাচালানি পণ্য জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। মঙ্গলবার (৩ জুন) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার আমতলী এলাকায় বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে এ সব পণ্য জব্দ করে। এ দিন দুপুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।

বিজিবির ২৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জাব্বার আহমেদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২৫ বিজিবির ব্রাহ্মণবাড়িয়া ট্রানজিট ক্যাম্পের একটি দল বিজয়নগর উপজেলার আমতলী এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। 

অভিযানে ১৪০ পিস ভারতীয় সানস্ক্রিন ক্রিম, ৬ হাজার পিস আইভি ক্যানুলা এবং ৪৬ বাক্স বিভিন্ন প্রকার আগরবাতি জব্দ করা হয়। চোরাচালানি এ সব পণ্যের আনুমানিক মূল্য ৩৮ লাখ ৬৩ হাজার ৩০০ টাকা। জব্দকৃত পণ্য আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

আজিজুল সঞ্চয়/মাহফুজ

 

আ.লীগ নেতার কারখানা থেকে কেএনএফের পোশাক উদ্ধার, ৩ জন রিমান্ডে

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:২২ পিএম
আ.লীগ নেতার কারখানা থেকে কেএনএফের পোশাক উদ্ধার, ৩ জন রিমান্ডে
বায়েজিদ এলাকার একটি কারখানা থেকে উদ্ধার হওয়া ইউনিফর্ম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের মালিনাকাধীন ওয়েল কম্পোজিট নিট লিমিটেড কারখানা থেকে কেএনএফ এর পোশাক তৈরি কাপড় জব্দের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর আগে সোমবার (২ জুন) রাতে কালুরঘাট বিসিক শিল্প এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। একইসঙ্গে গাড়িসহ কাপড়ের রোল জব্দ করা হয়। 

মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২ এর বিচারক ইব্রাহিম খলিল এ আদেশ দেন। এর আগে বায়েজিদ থানার উপ-পরিদর্শক আরিফুর রহমান ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন আদালতের কাছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী। 

রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া তিন আসামি হলেন- আতিকুর রহমান, তারেকুল ইসলাম তারেক ও তৌহিদুল ইসলাম। এদের মধ্যে তারেকুল ইসলাম আবদুচ ছালামের আপন ভাই। আবদুচ ছালাম ৯ বছর আওয়ামী লীগের হয়ে সিডিএ (চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) চেয়ারম্যান ছিলেন এবং তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ। এছাড়াও সর্বশেষ বিতর্কিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম ৮ আসন থেকে তিনি একতরফাভাবে এমপি হন। 

জানা গেছে, সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ইউনিফর্ম তৈরির জন্য কাপড় সরবরাহের অভিযোগে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা আবদুচ ছালামের মালিকানাধীন ওয়েল কম্পোজিট নিট লিমিটেড কারখানায় কেএনএফ এর পোশাক তৈরি হচ্ছে এমন সন্দেহে সোমবার (২ জুন) রাতে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। এসময় ৪ জনকে একটি গাড়িসহ আটক করা হয়। ওই গাড়িতে কাপড়ের রোল রয়েছে। 

এসময় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চারজনের মধ্যে তারেকুল ইসলাম ওয়েল কম্পোজিট নিট লিমিটেডের পরিচালক। এটি আবদুচ ছালামের ওয়েল গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। তিনি ওই গ্রুপের চেয়ারম্যান।

গ্রেপ্তার অন্য তিনজন তৌহিদুল ইসলাম জামালুল ইসলাম ও মো. আতিকুর রহমান ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। পুলিশের ভাষ্য, তারা কেএনএফের ইউনিফর্ম তৈরির জন্য কাপড় সরবরাহের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

পুলিশ জানায়, গত ১৭ মে বায়েজিদ বোস্তামী থানার এলাকার রিংভো অ্যাপারেলস নামের একটি পোশাক কারখানা থেকে ২০ হাজার ৩০০টি ইউনিফর্ম জব্দ করে গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর ২৬ মে দিবাগত রাতে বায়েজিদ বোস্তামী থানার নয়াহাট এলাকার একটি গুদাম থেকে আরও ১১ হাজার ৭৮৫টি সন্দেহজনক ইউনিফর্ম জব্দ করে পুলিশ। ২৭ মে রাতে পাহাড়তলী থানার ডিটি রোডের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে ১৫ হাজার ইউনিফর্ম জব্দ করে পুলিশ। 

মনির/মাহফুজ

 

সড়ক ও নালা সমান হওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না: মেয়র শাহাদাত

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:১২ পিএম
সড়ক ও নালা সমান হওয়ায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না: মেয়র শাহাদাত
ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের হাজীপাড়া, চালিতাতলী ও ওয়াজেদিয়া এলাকায় জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হচ্ছে খাল ও নালার স্বাভাবিক পানি প্রবাহে বাধা। অনেক জায়গায় দেখা গেছে, নালার উচ্চতা রাস্তার সমান হয়ে গেছে, যেকারণে পানি জমে যাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধানে নালা ১-২ ফুট উঁচু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

তিনি মঙ্গলবার (৩ মে) দুপুরে নগরীর জলাবদ্ধ এলাকা পাঁচলাইশ ওয়ার্ডস্থ হাজীপাড়া এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন এবং পানি নিষ্কাশনের পথ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণগুলো চিহ্নিত করেন।

সিটি মেয়র জানান, আশেকানে আউলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন নিচু জায়গার পানি পার্শ্ববর্তী খালে পড়তে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্য বুধবার (৪ জুন) চসিকের অস্থায়ী কার্যালয়ে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল ও পরিচ্ছন্ন বিভাগ এবং পাঁচলাইশ ওয়ার্ড এলাকাবাসী নিয়ে যৌথভাবে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

মেয়র বলেন, বিভিন্ন নীচু এলাকার খালগুলোর মাঝে ড্রেনেজ সংযোগ স্থাপন করা গেলে এলাকাবাসী কিছুটা হলেও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাবে। আমাদের লক্ষ্য জনগণকে একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় নিয়ে আসা। চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় খাল সংস্কার ও পরিষ্কার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে রাজনৈতিক দল, স্থানীয় জনসাধারণ এবং প্রশাসনের সমন্বিত সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বলেন খাল ও নালায় গৃহস্থালি ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। ময়লা ডাস্টবিনে ফেলবেন। আল্লাহর রহমতে এ বছর জলাবদ্ধতা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ কমেছে। আমরা আরও উন্নতি করতে পারব ইনশাআল্লাহ।

পরিদর্শনকালে মেয়রের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ, সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম, জি এম আইয়ুব খান, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস আলী, বায়েজিদ থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের জসিম, মহানগর বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ আবু ইউছুপ প্রমুখ।

 

গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, আটক ২৩

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৭:৫০ পিএম
গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর, আটক ২৩
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় কারখানার শ্রমিকরা। ছবি: খবরের কাগজ

গাজীপুরের শ্রীপুরের নয়নপুর নতুন বাজার এলাকায় জিন্নাত নিটওয়্যার লিমিটেড কারখানায় ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও এপিসি কার ভাঙচুরের ঘটনায় ২৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে এ তথ্য জানিয়েছে গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২ এর পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, শ্রীপুরের নয়নপুরে শ্রমিক আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ২৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের শ্রীপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। আটকদের বিরুদ্ধে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা হবে।

হামলায় ভাঙচুরের শিকার পুলিশের এপিসি কার। ছবি: খবরের কাগজ

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, আটকদের ১৯ জনকে ইতোমধ্যে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকীদেরও থানায় হস্তান্তরের কথা জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ। শিল্প পুলিশের দেওয়া অভিযোগে প্রেক্ষিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, সোমবার (২ জুন) রাত সাড়ে ৭টার কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ওই কারখানার শ্রমিক মো. জাকির হোসেন (৩০) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে ক্ষুব্ধ শ্রমিকরা মঙ্গলবার (৩ ‍জুন) সকালে কারখানা ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশের এপিসি গাড়ি। পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এই ঘটনায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় শ্রমিকদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১১ জন পুলিশ সদস্য ও অর্ধশত কারখানার শ্রমিক আহত হন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন। ছবি: খবরের কাগজ

কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি, পুলিশ পূর্বপরিকল্পিতভাবে সেখানে অবস্থান নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে।

অপরদিকে পুলিশ জানিয়েছে, শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পরিস্থিতি ও শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার সময় এই হামলা চালানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে সেখানে কয়েকটি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করতে হয়েছে।

কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে ওই কারখানার শ্রমিক নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাদেচিরাম গ্রামের মুক্তার উদ্দিনের ছেলে মো. জাকির হোসেন (৩০) নিহত হন।

আন্দোলনরত শ্রমিকরা দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ছুটি চাইতে গিয়েছিলেন জাকির। কিন্তু ছুটি না দিয়ে তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার কারণে তিনি অভিমানে আত্মহত্যা করেছেন। লাফিয়ে পড়ার পর তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রাত ৯টায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কারখানার এজিএম জুবায়ের বাসার বলেন, ওই শ্রমিক ছুটি চাইতে যাননি। বরং তিনি জানতে পেরেছেন পারিবারিক কলহের কারণে হতাশায় ভুগছিলেন। হতাশা থেকেই তিনি লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

শিল্প পুলিশের গাজীপুরের শ্রীপুর সাবজোনের ইনচার্জ মো. আব্দুল লতিফ বলেন, শ্রমিকরা আমাদের একটি এপিসি গাড়ি ভাঙচুর করেন। পরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়।

পলাশ প্রধান/মাহফুজ