
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মাদারীপুরের তামিম হাওলাদারের (৩০) বসতবাড়িতে আগুন দিয়েছে স্থানীয়রা। এ সময় দুটি ঘর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নে ব্রাহ্মন্দী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার তামিম হাওলাদার সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী এলাকার এরশাদ হাওলাদারের ছেলে।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও দুজন হলেন- মাদারীপুর সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী গ্রামের কালাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (৩০) ও ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের শশিকর গ্রামের যতন্দ্রীনাথ মল্লিকের ছেলে সম্রাট মল্লিক (২৮)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাম্য হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার তিনজনই এলাকায় বিভিন্ন সময় নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পরপরই তামিম ও পলাশ গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় চলে যায়। কারণ তারা ছিলেন আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগের অনুসারী। আওয়ামীপন্থী নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল বলে জানা গেছে। এ ছাড়া সম্রাট মাদকাসক্ত বলে স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সোহেল খাঁ ও রুবেল খাঁর লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে কাজ করতেন তামিম ও পলাশ। আওয়ামী লীগের দলীয় কোন পদ-পদবি না থাকলেও তারা আওয়ামীলীগের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ৫ আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর তামিম ও পলাশ ঢাকায় চলে যান। এর পর আর বাড়িতে ফেরেনি। পলাশের বাবা কালাম সরদার এক সময় পালকি বহন করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। অন্যদিকে তামিমের বাবা এলাকায় জমি বেঁচা-কেনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার সম্রাট মাদকাসক্ত হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বেশ কিছুদিন আগে তিনি মসজিদের মাইক লাগানো নিয়ে এলাকায় ছাত্রদের মারধর করে। এ নিয়ে ডাসার থানায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগও রয়েছে।
ডাসার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. এহতেশামুল ইসলাম বলেন, সম্রাটের বিরুদ্ধে ডাসার ও ডিএমপির রুপনগরসহ বিভিন্ন থানায় তিনটি মাদক মামলা রয়েছে। তার বিষয় আমরা বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চাতক চাকমা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিনজনের বাড়িই মাদারীপুর জেলায়। এদের মধ্যে তামিম হাওলাদার ও পলাশ সরদারের বাড়ি সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাহ্মন্দী গ্রামে। অপরজনের বাড়ি ডাসার উপজেলার শশিকরে। বুধবার সন্ধ্যায় তামিম হাওলাদারের বাড়িতে বিক্ষুব্ধরা অগ্নিসংযোগ করার খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্য দুজনের বাড়িতে এখনো কেউ অগ্নিসংযোগ বা ভাঙচুর করেছে বলে কোন খবর পাইনি। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে।
রফিকুল/মেহেদী/