ঢাকা ২ শ্রাবণ ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

সিরাজগঞ্জে নির্মাণের ১ মাসেই সড়ক বেহাল

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৪৭ এএম
সিরাজগঞ্জে নির্মাণের ১ মাসেই সড়ক বেহাল
এক মাসে আগে বানানো সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিরইল এলাকা থেকে তোলা। খবরের কাগজ

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ২ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্মাণের এক মাস না যেতেই সড়কটির বিভিন্ন জায়গায় গর্ত ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে এই সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এক মাস আগে বানানো এই সড়কের একাংশের কাজ হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে। এতে রাস্তার কাজ শেষ হতে না হতেই সামান্য বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন জায়গা ধসে পড়েছে। আবার কোনো কোনো জায়গায় পানি জমে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে প্রতিদিন হাজারো যানবাহন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছে। খানাখন্দের মধ্যে পড়ে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। ঠিকাদারের বিরুদ্ধে এলজিইডির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

জানা গেছে, উপজেলা এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম খান এ কাজের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, তিনি ঠিকাদারের সঙ্গে আঁতাত করায় রাস্তার কাজ মানসম্মত হয়নি। এর আগেও উপজেলার একটি সেতু নির্মাণ ও হাটের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজে তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। তাই বিতর্কিত কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে একজন সৎ ও দক্ষ প্রকৌশলীকে এ কাজের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দাবি করেছেন এলাকাবাসী।

তাড়াশ এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পাবনা ও বগুড়া গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কাজটি করার সিদ্ধান্ত হয়। ২ কোটি ৩২ লাখ ৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ১ হাজার ৮০০ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির কাজ শুরু হয়। কাজের ব্যাপ্তি ছিল উপজেলার হামকুড়িয়া-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের হামকুড়িয়া ওয়াপদা বাঁধ থেকে বিরইল জামে মসজিদ পর্যন্ত। কাজ পায় মেসার্স ভাবী কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তারা ফিরোজ হোসেন নামে এক ঠিকাদারের কাছে কাজটি বিক্রি করে দেয়। কাজের মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। কিন্তু এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি মাত্র ২৬ শতাংশ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তা নির্মাণে মাটিমিশ্রিত বালু ব্যবহারের কারণে সামান্য বৃষ্টিতে তা ধুয়ে খোয়া বের হয়ে গেছে। কোথাও কোথাও রাস্তা ভেঙে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ার যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।

মহেষরৌহালী গ্রামের বাসিন্দা সেলিম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘রাস্তায় যে বালু ও খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো খুবই নিম্নমানের। রাস্তায় কোনো সাইনবোর্ড নেই। কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে কখনো কাজ পরিদর্শনে আসতে দেখা যায়নি। যে উচ্চতায় রাস্তাটি করা হচ্ছে, বর্ষায় নিশ্চিত পানি উঠে রাস্তাটি ভেঙে যাবে। ঠিকাদার কাজ ফেলে চলে গেছেন। আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

মহেষরৌহালী গ্রামের আরেক বাসিন্দা আরমান আলী বলেন, ‘রাস্তার কাজ খুবই খারাপ হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কারণ যেভাবে রাস্তাটি হওয়ার কথা সেভাবে হচ্ছে না। নির্মাণকাজে ব্যবহার হওয়া বালুগুলো মূলত মাটিমিশ্রিত। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এ রাস্তা বেশিদিন টিকবে না।’

ওই এলাকার বাসিন্দা এরশাদ আলী বলেন, ‘এখানে সঠিক নিয়মে কাজ হয়নি। ২ নম্বর ইট দেওয়া হয়েছে। অর্ধেক বালি ও অর্ধেক খোয়া দেওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। বালিতে মাটি মেশানো হয়েছে। ফলে বৃষ্টির পানিতে সব ধুয়ে যাচ্ছে।’ একই অভিযোগ তোলেন ওই এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম, সবুজ আলী, জয়নাল হোসেন, হোসেন আলীসহ একাধিক বাসিন্দা।

ইজিবাইকচালক রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাস্তায় বৃষ্টির পানি জমে গর্ত হওয়ার কারণে গাড়ি নিয়ে যাওয়া যায় না। আমাদের অনেক কষ্ট হয়। অনেক সময় গাড়ির ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যায়। গাড়ির অনেক ক্ষতি হয়।’ এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ঠিকাদার ফিরোজ হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাই তার বক্তব্য জানা যায়নি।’ 

তাড়াশ উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম খান দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো সঠিক নয়। তিনি বলেন, ‘রাস্তায় কোনো নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়নি। বৃষ্টির কারণে বালু ধুয়ে গিয়ে খোয়া বের হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সেখানে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা ঠিকাদারকে বালু ফেলে জায়গাগুলো ঠিক করে দিতে বলেছি।’ সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দৌলতপুরে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ২দিনের ছুটি

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৪ এএম
দৌলতপুরে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ২দিনের ছুটি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় কয়েক হাজার বাসিন্দা। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একই চত্বরে অবস্থিত বেসরকারি ট্রেসল ইংলিশ ভার্সন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। দুই প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে সেবা নিতে আসা জনগণও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ কারণে বিদ্যালয় দুটি দুদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ এবং নিচতলার সব শ্রেণিকক্ষ পানিতে তলিয়ে গেছে। শ্রেণিকক্ষ ও বারান্দায় জমে থাকা পানিতে পচা আবর্জনা ভাসছে। তীব্র দুর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে বসা দুঃসহ হয়ে উঠেছে, ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। চারপাশের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারণে একাধিক শিক্ষার্থী চর্মরোগসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছে।

আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী পিয়াস বলে, ‘পানির মধ্যে হেঁটে স্কুলে আসতে হয়, আবার সেভাবেই বাড়ি ফিরতে হয়। এতে হাতে-পায়ে চর্মরোগ হয়েছে। অনেকেই স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।’

বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী প্রশোন আহমেদ তানিম বলেন, ‘বিদ্যালয়ে পানি জমে থাকায় ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে না। আমরা গত মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করেছি, তিনি দুই দিনের ছুটি ঘোষণা করেছেন।’

আল্লারদর্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, ‘প্রতিবছরই বর্ষায় জলাবদ্ধতা হয়। তবে এবার পরিস্থিতি ভয়াবহ। যদি দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হতে পারে। আপাতত দুই দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে। আগামী রবিবার থেকে ক্লাস শুরুর চেষ্টা করব।’

স্থানীয় এক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, আশপাশে মাটি ভরাট করে ভবন নির্মাণ করায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়।’

জানতে চাইলে হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিস চৌধুরী বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে একাধিকবার উপজেলা সমন্বয় সভায় বলেছি। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমার ইউনিয়ন পরিষদসহ দুটি বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই দুটি বিদ্যালয়ই ছুটি দেওয়া হয়েছে।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জলাবদ্ধতা নিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ফোনে পাওয়া না গেলেও অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার কামাল হোসেন বলেন, ‘মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইতোমধ্যে বিদ্যালয় দুটি পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাহজাদপুরে রডের পরিবর্তে বাঁশের গাইডওয়াল

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:২১ এএম
আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪২ এএম
শাহজাদপুরে রডের পরিবর্তে বাঁশের গাইডওয়াল
রডের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে রাস্তার পাশে গাইডওয়াল তৈরি করা হয়েছে। এ ছাড়া খোয়ার বদলে ব্যবহার করা হয়েছে পোড়া মাটি। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার দুর্গাপুর এলাকা থেকে তোলা। ছবি: খবরের কাগজ

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম দুর্গাপুর। স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দেড় বছর আগে উপজেলার চরমোনহারপুর বাজার থেকে স্থানীয় দুর্গাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত একটি সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হয়। কিন্তু ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটির কাজ এতদিনেও শেষ হয়নি।

এলাকাসীর অভিযোগ, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কর্মকর্তাদের যোগসাজসে ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী দিয়ে রাস্তার কাজ করছেন। ইট, রড ও সিমেন্টের পরিবর্তে বাঁশ দিয়ে গাইডওয়াল বানানো হয়েছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে উকিল নোটিশ পাঠানো হয়। এই রাস্তাটির স্থায়িত্ব নিয়ে তাদের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এলজিইডি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি ব্যবস্থা নেবেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৭৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটির জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে কাজটি পায় নূর এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে রাস্তার কাজ শুরু হয়। সময় নির্ধারণ ছিল ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। কিন্তু উল্লেখিত সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি কাজ শেষ করতে পারেনি। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ঠিকাদারও পালিয়ে যান। পরে ওই কাজের দায়িত্ব নেন রেজাউল করিম লিটন নামে আরেক ঠিকাদার।

কাজের মেয়াদ চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেও কাজ শেষ হয়নি। উল্টো নিম্নমানের কাজের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাস্তার মেকাডাম ও সাব-বেজের কাজে নিম্নমানের খোয়া ও পোড়া মাটি ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি, প্রাইম কোডের জন্য ব্যবহৃত তেল বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে। এতে স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

দুর্গাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল গফুর বলেন, ‘চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি যেভাবে মজবুত করে করার কথা ছিল ঠিকাদার তেমনটি করছে না। নিম্নমানের ইট ও খোয়া দিয়ে কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে।’

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘খুবই নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ চলছে। এগুলোকে খোয়া না বলে বরং পোড়া মাটি বললে ভালো হবে। হাত দিয়ে চাপ দিলেই এগুলো ভেঙে যায়। প্রাইম কোড হিসেবে যে তেল ব্যবহার করেছে তা বৃষ্টিতে ধুয়ে গেছে। সড়কটি টেকসই হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

চরমোনহারপুর গ্রামের আতাউর রহমান বলেন, ‘গাইডওয়াল ঢালাইয়ের কাজে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। এই গাইডওয়াল কয়েক দিন পরেই ভেঙে যাবে। আর রাস্তা যদি ভেঙে যায় তাহলে তো আমরা আর চলাচল করতে পারব না। আমাদেরই সমস্যায় পড়তে হবে।’

আবদুল্লাহ আল মাহমুদ নামে শাহজাদপুর উপজেলার এক বাসিন্দা দাবি করেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসেই ঠিকাদার নিম্নমানের কাজ করে যাচ্ছেন। এগুলো দেখার যেন কেউই নেই।’

তবে ঠিকাদার রেজাউল করিম লিটন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, ‘কাজ তো এখনো শেষ হয়নি। কাজ চলমান রয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, ‘সড়কের কাজ কখনো শতভাগ সঠিক হয় না।’

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সার্ভেয়ার লতিফুর রহমান বলেন, ‘কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজের মানের ভিত্তিতে ঠিকাদারকে বিল দেওয়া হবে। অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। সড়কের কাজ আমি নিজেই তদারকি করছি।’ 

এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী এ এইচ এম কামরুল হাসান রনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি জানতাম না। আপনার কাছ থেকে শুনলাম। এখন আমি নিজে গিয়ে দেখে শতভাগ কাজ করিয়ে নেব।’

সৈয়দপুরে সামান্য বৃষ্টিপাতেই শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:১৫ এএম
আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪২ এএম
সৈয়দপুরে সামান্য বৃষ্টিপাতেই শহরজুড়ে জলাবদ্ধতা
ছবি: খবরের কাগজ

নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর শহরে বর্ষা মানেই জলাবদ্ধতা। শ্রাবণের শুরুতেই এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছেন শহরবাসী। বৃষ্টিতে শহরের মুন্সীপাড়া, নতুন বাবুপাড়া, পুরাতন বাবুপাড়া, বাঁশবাড়ি, মিস্ত্রিপাড়া, বাঙালিপুর নিজপাড়াসহ নিম্নাঞ্চলের মানুষ জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছেন। এ সময় পৌর এলাকার প্রায় ৮০ ভাগ মানুষের ঘরবাড়ি ছিল ২ ফুট পানির নিচে। প্রতিবছরই সামান্য বৃষ্টিপাতেই শহরজুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এই সমস্যা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই।

শহরবাসীর অভিযোগ, প্রথম শ্রেণির পৌর সভা সৈয়দপুর। কিন্তু খানাখন্দভরা সড়ক আর ড্রেনেজব্যবস্থা নিম্নমানের হওয়ায় ভোগান্তির শেষ নেই পৌরবাসীর। এসব নিয়ে সৈয়দপুর পৌর সভার মেয়রসহ কয়েকজন কাউন্সিলকে অভিযোগ দিলে তারা কোনো কর্ণপাত করেন না। কাউন্সিলর ও পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতাও পান না ভুক্তভোগীরা।

সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে আছেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদ নূর মোহাম্মদ স্ট্রিটের উভয় পাশের মানুষ, মুন্সীপাড়া, বাঁশবাড়ির সাদরা লেন এলাকাসহ বাঙালিপুর নিজপাড়ার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের শত শত পরিবার। মাত্র ১ ঘণ্টার বৃষ্টিতে তলিয়ে যাচ্ছে পুরো এলাকা। বৃষ্টির পানি নালা-নর্দমা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আউটলেট সুবিধা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতে ড্রেনের পানি উপচে ঢুকে যাচ্ছে মানুষের ঘর বাড়িতে।

শহরের শহিদ ডাক্তার জিকরুল হক সড়কের ব্যবসায়ীরা বলেন, এই সড়কের ড্রেন দুটি একেবারেই নিম্নমানের। তাছাড়া নিয়মিত পরিষ্কার না করার ফলে এক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই শহরের ব্যস্ততম এই সড়কটির সঙ্গে প্রতিটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে পড়েছে বৃষ্টির পানি। যতক্ষণ পর্যন্ত পানি বেরিয়ে না যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রায় ৫ শতাধিক ব্যবসায়ীকে তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করে রাখতে হয়।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের পান দোকানদার মনসুর আলী বলেন, ‘পুরো বর্ষাকাল এখানকার হাজারও পরিবারকে জলাবদ্ধতার কারণে পানিবন্দি হয়ে থাকতে হয়। এটা যেন আমাদের বিধিলিপিতে পরিণত হয়েছে। সাবেক মেয়র ও বর্তমানে প্রশাসকের কাছে আমরা একটি মাস্টার ড্রেনের জন্য বহু বার আবেদন করে ধরনা দিয়েছি। তারা শুধু আশ্বাসই দিয়েছেন। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেননি। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ি।

এরই মধ্যে শহরের ১ নম্বর রেলগেট থেকে হাতিখানা কবরস্থান যাওয়ার রাস্তাটি ওই এলাকার ফল ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা নিজ অর্থে সড়কটি উঁচু করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। এক ঘণ্টার ভারী বর্ষণে সেটির মাটি ও খোয়া উঠে গেছে।

ফল ব্যবসায়ী দুলাল বলেন, ‘আমাদের সমস্যার কথা পৌর কর্তৃপক্ষকে বলে বলে বিরক্ত হয়ে গেছি। তাই নিজেরাই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। তাতেও লাভ হচ্ছে না।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সাবেক পৌর কাউন্সিলর বলেন, সৈয়দপুর পৌর শহরের পয়োনিষ্কাশনের নালাগুলোতে পলিথিনসহ নানা কিছু আটকে থাকে। ফলে পানি তাৎক্ষণিক নামে না। এ ছাড়া পৌর এলাকার রেলওয়ে আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকার নালা-নর্দমা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা সম্ভব হয় না। আবার ওইসব এলাকায় বসবাসকারী গৃহস্থালি বর্জ্য নালা-নর্দমায় ফেলছেন।

পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে আমাদের নিজস্ব টিম আছে। কিন্তু মাস্টার ড্রেন নির্মাণ বা সংস্কার করতে বাজেট ঘাটতি থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক কিছুই সম্ভব হয়নি। তবে এ বছর শহর উন্নয়নে প্রায় ১২৩ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। ২-৩টি রাস্তার সংস্কার কাজ চলমান। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পৌরবাসীর ভোগান্তির নিরসন হবে।’

সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহিন আকতার শাহিন বলেন, ‘২০২০ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সৈয়দপুর মহিলা লীগের সভাপতি রাফিকা আকতার জাহান বেবি মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন প্রায় ৪ বছর। এই সময় তিনি যদি শহরের প্রায় ৩টি সড়কও সংস্কার করতেন, তাহলে শহরবাসীর কাছে মাথা উঁচু করে কথা বলতে পারতেন। এ ছাড়া গত বছর ৫ আগস্টের পর সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুর-ই আলম সিদ্দিকিকে প্রশাসকের দায়িত্ব দেওয়ায় তিনি ২/১টি সড়ক সংস্কার ও ২/৩টি ছোট ড্রেন সংস্কার করলেও পৌরবাসীর ভোগান্তি যেন পিছু ছাড়ছে না।’

পৌর প্রশাসক নুর-ই আলম সিদ্দিকি বলেন, ‘শহর উন্নয়নে প্রায় ১২৩ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছে। আশা করছি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে পৌরবাসী আর ভোগান্তির শিকার হবেন না।’

গোপালগঞ্জে গুলিবিদ্ধ যুবক ঢাকা মেডিকেলে

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:২৭ পিএম
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:২৮ পিএম
গোপালগঞ্জে গুলিবিদ্ধ যুবক ঢাকা মেডিকেলে
ছবি: খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জ শহরে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ সুমন বিশ্বাস (২০) নামে এক যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। 

বুধবার (১৭ জুলাই) দুপুরের দিকে শহরের পাচুরিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে তাকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।  

আহত সুমনের মা নিপা বিশ্বাস বলেন, লোকমুখে দুপুরের দিকে সংবাদ পাওয়া যায় আমার ছেলের শরীরে গুলি লেগেছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এরপর সদর হাসপাতালে গিয়ে তাকে দেখতে পাই। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় পাঠিয়ে দেন।

আহত সুমন জানান, তিনি সদরের পাচুরিয়া এলাকার এনএসআই কোয়ার্টারের পেছনে একটি পানি সরবরাহকারী কোম্পানিতে চাকরি করেন। দুপুরে সংঘর্ষ দেখে কাজ ছেড়ে বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য বের হন। তবে সেখানে অনেক সংঘর্ষ চলছিল। এজন্য সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। এমন সময় একটি গুলি এসে তার পেটের ডান পাশের পেছনের দিকে লাগে। গুলিটি বেরিয়ে যায় পেটের সামনের দিক দিয়ে তখন ডান হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুলও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জানান, তার পেটের সামনে ও পাশে দুইটি ক্ষত ছিদ্র রয়েছে। এছাড়া ডান হাতের একটি আঙ্গুলও ক্ষত হয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মো. ফারুক জানান, সন্ধ্যার দিকে আহত অবস্থায় ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে। তার বাবার নাম সুশীল বিশ্বাস। বাড়ি সদর উপজেলার মোহাম্মদপাড়ায়।

 

সিরাজগঞ্জে খাদ্য বিষক্রিয়ায় ভাই-বোনের মৃত্যু

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪২ পিএম
সিরাজগঞ্জে খাদ্য বিষক্রিয়ায় ভাই-বোনের মৃত্যু
ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে কাঁঠাল ও মুড়ি খেয়ে খাদ্য বিষক্রিয়া হয়ে বাকি বিল্লাহ (৫) ও আছিয়া খাতুন (৪) নামে ভাই-বোনের মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার (১৬ জুলাই ) দুপুরে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের মামুদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহতদের পিতা নুরুল হক স্থানীয় তাঁত কারখানায় শ্রমিকের কাজ করেন। 

স্থানীয়রা জানান, বুধবার দুপুরে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে কাঠাল-মুড়ি খায় শিশু বাকি বিল্লাহ ও আছিয়া খাতুন। তবে খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে পর্যায়ক্রমে দুই শিশুই ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পরে। পরে অসুস্থ অবস্থায় শিশুদের খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক ভাই-বোনকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ বিষয়ে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. জুলফিকার আলী জানান, খাদ্য বিষক্রিয়া হয়ে দুই ভাই বোনের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। শিশু দুটির মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

সিরাজুল ইসলাম/সুমন/