
কুমিল্লার চান্দিনায় চার স্কুলের মাঠে পশুর হাট বসিয়েছেন ইজারাদাররা। এ কারণে ওই স্কুলগুলোতে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগের দিন পাঠদান সম্ভব হয়নি। মাঠ ছাপিয়ে বিদ্যালয় ভবনের বারান্দায়ও গরু-ছাগল বেঁধে রাখা হয়।
সোমবার (২ জুন ) উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাদুটি উচ্চবিদ্যালয়, শ্রীমন্তপুর উচ্চবিদ্যালয়, ধেরেয়া সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলা বছরের শুরুতে উপজেলার চারটি স্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেয় প্রশাসন। এর মধ্যে প্রতিবছরের মতো উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর পশুর হাটটি ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু ঈদের আগ মুহূর্তে সেই পশুর হাট নিয়ে আসা হয় দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসন এবারও ২১টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেয়। এর মধ্যে শ্রীমন্তপুর পশুর হাট বসে শ্রীমন্তপুর উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে, কাদুটি পশুর হাট বসে কাদুটি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে ও ধেরেয়া পশুর হাট বসে ধেরেয়া সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে। উপজেলা প্রশাসন ওইসব পশুর হাট নির্ধারিত বাজারে ইজারা দিলেও ইজারাদাররা তাদের সুবিধার্থে স্কুলের মাঠে হাট বসান। বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট বসায় একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান, অপরদিকে বিদ্যালয়ের মাঠ কর্দমাক্ত হয়ে খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।
দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বাজারের নির্ধারিত জায়গা থাকলেও প্রতিবছর স্কুলমাঠেই বসে পশুর হাট। সোমবার সকালে বৃষ্টি হওয়ায় গরু-ছাগল নিয়ে স্কুলের বারান্দায় চলে আসেন বিক্রেতারা। বারান্দায় বসানো হয়েছে ক্যাশ কাউন্টার। গত বছরগুলোতে আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনেক বার বলেছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ বছর কাউকে কিছুই বলিনি।’
কাদুটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বছরের পর বছর এভাবেই চলছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয় সোমবার খোলা ছিল। এর মধ্যে গরুর হাটের কার্যক্রম ও চলছে।’
দোল্লাই নবাবপুর বাজারের ইজারাদার মো. শাহজাহান সাজু বলেন, ‘পশুর হাটের নির্ধারিত স্থানে জায়গা অনেক কম। এ কারণে অনেক বছর ধরে স্কুলের মাঠেই পশুর হাট বসে। এবারও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে হাট চালাচ্ছি।’
শ্রীমন্তপুর গরুর হাটের ইজারাদার জাকির হোসেন বলেন, ‘স্কুলের মাঠের বেশির ভাগ অংশই খাস জমি। আমরা ইজারা নিয়ে সেই খাস জায়গায় গরুর হাট বসিয়েছি।’
চান্দিনা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল হক বলেন, ‘কোনো স্কুলের মাঠেই পশুর হাট বসানোর অনুমতি দিইনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। যারাই স্কুল মাঠে বাজার বসিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’