ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

কুমিল্লায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চার স্কুলের মাঠে পশুর হাট

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:৫৬ এএম
কুমিল্লায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চার স্কুলের মাঠে পশুর হাট
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার চান্দিনায় চার স্কুলের মাঠে পশুর হাট বসিয়েছেন ইজারাদাররা। এ কারণে ওই স্কুলগুলোতে ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগের দিন পাঠদান সম্ভব হয়নি। মাঠ ছাপিয়ে বিদ্যালয় ভবনের বারান্দায়ও গরু-ছাগল বেঁধে রাখা হয়। 

সোমবার (২ জুন ) উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাদুটি উচ্চবিদ্যালয়, শ্রীমন্তপুর উচ্চবিদ্যালয়, ধেরেয়া সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়ে এ চিত্র দেখা গেছে। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলা বছরের শুরুতে উপজেলার চারটি স্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেয় প্রশাসন। এর মধ্যে প্রতিবছরের মতো উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর পশুর হাটটি ইজারা দেওয়া হয়। কিন্তু ঈদের আগ মুহূর্তে সেই পশুর হাট নিয়ে আসা হয় দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। এ ছাড়া উপজেলা প্রশাসন এবারও ২১টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দেয়। এর মধ্যে শ্রীমন্তপুর পশুর হাট বসে শ্রীমন্তপুর উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে, কাদুটি পশুর হাট বসে কাদুটি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে ও ধেরেয়া পশুর হাট বসে ধেরেয়া সরকারি প্রাথমিক ও উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে। উপজেলা প্রশাসন ওইসব পশুর হাট নির্ধারিত বাজারে ইজারা দিলেও ইজারাদাররা তাদের সুবিধার্থে স্কুলের মাঠে হাট বসান। বিদ্যালয়ের মাঠে পশুর হাট বসায় একদিকে যেমন ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান, অপরদিকে বিদ্যালয়ের মাঠ কর্দমাক্ত হয়ে খেলাধুলার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

দোল্লাই নবাবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বাজারের নির্ধারিত জায়গা থাকলেও প্রতিবছর স্কুলমাঠেই বসে পশুর হাট। সোমবার সকালে বৃষ্টি হওয়ায় গরু-ছাগল নিয়ে স্কুলের বারান্দায় চলে আসেন বিক্রেতারা। বারান্দায় বসানো হয়েছে ক্যাশ কাউন্টার। গত বছরগুলোতে আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনেক বার বলেছি। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ বছর কাউকে কিছুই বলিনি।’ 

কাদুটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বছরের পর বছর এভাবেই চলছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গেছে। তবে প্রাথমিক বিদ্যালয় সোমবার খোলা ছিল। এর মধ্যে গরুর হাটের কার্যক্রম ও চলছে।’

দোল্লাই নবাবপুর বাজারের ইজারাদার মো. শাহজাহান সাজু বলেন, ‘পশুর হাটের নির্ধারিত স্থানে জায়গা অনেক কম। এ কারণে অনেক বছর ধরে স্কুলের মাঠেই পশুর হাট বসে। এবারও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি নিয়ে হাট চালাচ্ছি।’

শ্রীমন্তপুর গরুর হাটের ইজারাদার জাকির হোসেন বলেন, ‘স্কুলের মাঠের বেশির ভাগ অংশই খাস জমি। আমরা ইজারা নিয়ে সেই খাস জায়গায় গরুর হাট বসিয়েছি।’

চান্দিনা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল হক বলেন, ‘কোনো স্কুলের মাঠেই পশুর হাট বসানোর অনুমতি দিইনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। যারাই স্কুল মাঠে বাজার বসিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে বিশাল ভাঙন, আতঙ্কে অন্তত ৬০০ পরিবার

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে বিশাল ভাঙন, আতঙ্কে অন্তত ৬০০ পরিবার
ছবি: খবরের কাগজ

বর্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত সোমবার (৭ জুলাই) বিকেল থেকে বাঁধটির প্রায় ২৫০ মিটার অংশ নদীতে ধসে পড়ে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীর পাড়ের ৬০০ পরিবার। কেউ কেউ ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে হুমকিতে পড়বে আশপাশের রাস্তা, হাটবাজার ও শতাধিক বসতবাড়ি।  পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন বলেছে, পূর্ব সতর্কতায় ঘরবাড়ি হারানো পরিবারগুলোকে দেওয়া হচ্ছে সহায়তা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শরীয়তপুরের জাজিরার আলম খারকান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি ও ওছিম উদ্দিন মুন্সিকান্দি গ্রামের অন্তত ৬০০ পরিবার। গতবারের ধসে পড়া বাঁধের মেরামতকৃত ১০০ মিটার-সহ নতুন করে আরও আড়াইশো মিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে গেছে। গত সোমবার মাত্র এক ঘণ্টায় ভেঙে পড়ে ২০০ মিটার বাঁধ, বিলীন হয় অন্তত ১০টি ঘরবাড়ি ও ৯টি দোকান। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। 

ছবি: খবরের কাগজ

শুধু পদ্মা সেতু প্রকল্প নয়, মাঝিরঘাটের বিভিন্ন পাড়াও এখন ভাঙনের সরাসরি ঝুঁকিতে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে হাটবাজারসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল হারিয়ে যেতে পারে পদ্মার পেটে। দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে জিওব্যাগ ডাম্পিংয় ও স্থায়ী বেরি বাঁধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বছরের নভেম্বরে নাওডোবা এলাকায় ১০০ মিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ ধসে যায়, যার পুনর্নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যয় করে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সেই সংস্কার করা এলাকার কিছু অংশসহ গত ৭ জুন দু’টি স্থানে প্রায় ২০০ মিটার বাঁধ পদ্মা নদীতে ধসে পরেছে। এক মাসের ব্যবধানে নতুন করে আরও ২৫০ মিটার এলাকা ধসে পড়ে। এতে বিলীন হয়েছে ৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ১০টি স্থাপনা, সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বসত ঘর। 

ছবি: খবরের কাগজ

এছাড়া ভাঙনের হুমকিতে পরেছে শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মহর আলী মাদবরকান্দি, আলম খাঁরকান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি এবং কালাই মোড়লকান্দি গ্রামের অন্তত ছয় শতাধিক বসত বাড়ি। তাই অনেকেই বাঁধের কাছ থেকে বাড়িঘর ও গাছপালা সরিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া হুমকিতে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মঙ্গল মাঝিরঘাট বাজারের দুই শতাধিক দোকানপাট। তাই আতঙ্কে রয়েছে ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা।

জানা যায়, ২০১০-২০১১ সালে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ২ কিলোমিটার ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড’ বাঁধটি নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। বাঁধটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। এখন পুরো বাঁধটি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। 

পাইনপাড়া অছিম উদ্দিন কান্দির ছাত্তার শেখ বলেন, হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দিয়েছে, আমরা ঘরবাড়ি নিয়ে যে কোথায় যাব, সেটা এখন অনিশ্চিত। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ রইলো আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন।

ছবি: খবরের কাগজ

অছিমউদ্দিন কান্দির রিনা বেগম বলেন, আমাদের ঘরের পিছনে নদী। পরের জায়গায় থাকি, এখন আতঙ্কে আছি ঘর নিয়ে এখন কোথায় যাব।

মাঝিরঘাট এলাকার সোহারাব, রবিউল, জুয়েল জানান, অবৈধ্য বালু উত্তোলনের কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করলে, মাঝিরঘাট এলাকাটি শরীয়তপুরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।

ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শাজাহান সিরাজ ধসে পড়া বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে তিনি জানিয়েছেন, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জিওব্যাগ ফালানো হচ্ছে। দ্রুত ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় জানিয়েছেন, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে যারা সতর্কতাবশত ঘরবাড়ি সরিয়েছেন, তাদের সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ২৬ জনকে ৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন দিয়েছি।

শরীয়তপুরে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদ হোসেন জানান, ভাঙন কবলিত ৩০টি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জিওব্যাগ ফালানো হচ্ছে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।


রাজিব হোসেন রাজন/মাহফুজ

 

বগুড়ায় শ্বশুর ও পুত্রবধূর মরদেহ উদ্ধার, তদন্তে পিবিআই ও পুলিশ

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম
বগুড়ায় শ্বশুর ও পুত্রবধূর মরদেহ উদ্ধার, তদন্তে পিবিআই ও পুলিশ
ছবি: খবরের কাগজ

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর লক্ষ্মীমণ্ডল গ্রামে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শ্বশুর ও পুত্রবধূ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন- আফতাব আলী (৬৫) ও তার পুত্রবধূ রিভা আক্তার (৩০)।

জানা গেছে, নিহত আফতাব আলী তার ছেলে শাহজাহানের স্ত্রী রিভা আক্তারকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। শাহজাহান বর্তমানে কর্মসূত্রে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, মঙ্গলবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে আফতাব ও রিভা নিজ নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান। পরদিন (৯ জুলাই) সকালে রিভার ৫ বছরের মেয়ে ঘুম থেকে উঠে মা ও দাদার মরদেহ দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।

দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে—রাতে দুর্বৃত্তরা ঘরে প্রবেশ করে আফতাব আলীকে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং রিভা আক্তারকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।

ঘটনার পর থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও থানা পুলিশের যৌথ দল ঘটনাস্থলে থেকে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশ জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে পূর্ব শত্রুতা, পারিবারিক বিরোধ কিংবা চুরির উদ্দেশ্যে হামলা—সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।

নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রিপন দাস/মাহফুজ

শ্যামনগরে শিয়াল মারতে বিদ্যুতের ফাঁদ, প্রাণ গেল গৃহবধূর

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:১১ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:১২ পিএম
শ্যামনগরে শিয়াল মারতে বিদ্যুতের ফাঁদ, প্রাণ গেল গৃহবধূর
প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মুরগির খামারে শিয়ালের উপদ্রব ঠেকাতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা হয়। সেই ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন রূপবান বেগম (৪৫) নামের এক গৃহবধূ।

বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী ‘সুন্দরবন প্রজেক্ট’ নামীয় মুরগির খামারের পরিবারের সদস্যরা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। তিনি শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের জহুর আলী মোল্লার স্ত্রী। 

খবর পেয়ে শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এদিকে শিয়াল মারার জন্য তৈরি ফাঁদে আটকে ঐ গৃহবধূর মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে প্রজেক্ট মালিক ও তার কর্মচারীরা পালিয়ে যায়।

জানা যায়, উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের সুন্দরবন প্রজেক্ট নামীয় মুরগির খামারে শিয়ালের উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে চারপাশে বৈদ্যুতিক ফাঁদ দেন খামার মালিকরা। সকালে একই গ্রামের জহুর আলী মোল্লার স্ত্রী রূপবান বেগম ওই খামারের মধ্যে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।

নিহত গৃহবধূর ছেলে আব্দুস সবুর জানান, সকালে তার মা ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে গিয়েছিল সুন্দরবন প্রজেক্টের ভেতরে। এর আগে গতকাল প্রজেক্টের ম্যানেজার মাকসুদ প্রজেক্টের মধ্যে বেড়ে ওঠা ঘাস কেটে নেওয়ার জন্য তার মাকে পরামর্শ দিয়েছিল।

তিনি আরও জানান, দুপুর গড়াতে গেলেও তার মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে প্রতিবেশিসহ আশপাশের বাড়িগুলোতে খোঁজ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ সময় পেরিয়ে গেলেও তার মা ফিরছিল না। এক পর্যায়ে আব্দুর রহমান-সহ গ্রামবাসীরা প্রজেক্টের মধ্যে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া তার আটকে তার মায়ের মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর দেয়।

দুর্ঘটনার সময় প্রজেক্টে উপস্থিত থাকা মাকসুদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সুন্দরবন প্রজেক্টের মালিক নুর ইসলাম জানান, খবর পেয়ে প্রজেক্টে পৌঁছান তিনি। শিয়ালের উপদ্রব বেশি হওয়ায় রাতে প্রজেক্টের চারপাশে জিআই তার দিয়ে তৈরি করা বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখা হয়। হয়তো ভুলবশত মাকসুদ সকালে বিদ্যুতের সংযোগ খুলে রাখেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। 

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। 

শাহাজান সিরাজ/মাহফুজ

 

চট্টগ্রামে নালায় পড়ে শিশুর মৃত্যু

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৫:৫৮ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:০১ পিএম
চট্টগ্রামে নালায় পড়ে শিশুর মৃত্যু
ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের হালিশহরে বল তুলতে গিয়ে নালায় পড়ে হুমায়রা নামে তিন বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

বুধবার (৯ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে হালিশহরের নয়াবাজার আনন্দীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর শিশুকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের লিডার কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শিশু হুমায়রার মা একজন গার্মেন্টসকর্মী এবং বাব এলাকায় ডিশ লাইনে কাজ করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো. মাহমুদুর রহমান শাওন খবরের কাগজকে বলেন, ‘নালায় পড়ে শিশু নিখোঁজের খবর শুনে আশপাশের লোকজন উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। সবাই মিলে নালার স্ল্যাব তুলে খোঁজ শুরু করেন। নিখোঁজের প্রায় এক ঘণ্টা পর স্থানীয় এক যুবক শিশুটিকে উদ্ধার করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লোকজন নালার ওপর থেকে সব স্ল্যাব তুলে নালাটি পরিষ্কার করে। কাজ শেষে তারা অন্য সব স্ল্যাব ফের বসালেও একটি বসায়নি। ওই ফাঁক দিয়েই একটি শিশুর জীবন প্রদীপ নিভে গেল। এই অবহেলার দায় কে নেবে?’

নালায় শিশুর মরদেহ খুঁজে পাওয়া স্থানীয় যুবক জানান, তিনি নালায় নেমে ডুব দিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছেন। শিশুটি নালার ভেতরে থাকা বিভিন্ন সেবা সংস্থার পাইপের সঙ্গে আটকে ছিল। নিখোঁজের প্রায় ঘণ্টাখানেক পর শিশুকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় শিশুটির দেহ ফোলে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিশু নিখোঁজের পর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে ডুবুরিদল নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। তবে তারা কাজ শুরু করার আগেই স্থানীয়রা বিকেল ৩টা ৫৪ মিনিটে শিশুকে উদ্ধার করে মা ও শিশু হাসপাতালে পাঠায়।

মা ও শিশু হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. শারমিন আলম বলেন, ‘নালায় পড়া একটি শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় তার শ্বাস বা হার্টবিট ছিল না। পরে আমরা ইসিজি করে দেখলাম শিশুটি মারা গেছে। শিশুর অভিভাবক বলেন, তাকে নালা থেকে উদ্ধারের আধঘণ্টা পর তারা হাসপাতালে আনেন।’

চট্টগ্রাম শহরের নালায় পড়ে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। গত ছয় বছরে নগরে খাল-নালায় পড়ে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২ জন, ২০২১ সালে ৫ জন, ২০২৩ সালে ৩ জন, ২০২৪ সালে ৩ জন ও চলতি বছর দুইজন।

নিখোঁজ হওয়ার ১৪ ঘণ্টা পর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে নগরের চাক্তাই খাল থেকে শিশু সেহরিশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শহরের কিছু নালার পাশে অস্থায়ীভাবে বাঁশের ঘের দেয়।

সালমান/

জেলা পরিষদের গোপন কক্ষে মিলল প্রায় ৯ লাখ টাকা

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম
জেলা পরিষদের গোপন কক্ষে মিলল প্রায় ৯ লাখ টাকা
ছবি: সংগৃহীত

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের একটি তালাবদ্ধ গোপন কক্ষের ফাইল কেবিনেট থেকে ৮ লাখ ৮২ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে পরিষদের নবনিযুক্ত অস্থায়ী চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা, পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা, সদস্য এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে তালাবদ্ধ ওই গোপন কক্ষটি খুলে নগদ টাকাগুলো উদ্ধার করা হয়।

জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার হওয়া টাকাগুলো সদ্য দায়িত্ব থেকে অপসারিত হওয়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার সময়কালে গোপন কক্ষটিতে রাখা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

এ ঘটনায় সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরাকে অভিযুক্ত করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ‘কক্ষটি কেবলমাত্র সাবেক চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা ব্যবহার করতেন। এটি ছিল তার ব্যক্তিগত গোপন কক্ষ। আর ওই কক্ষের চাবি জিরুনা ত্রিপুরা ছাড়া আর কারও কাছে ছিল না। সেখানে প্রবেশ সবার জন্যই নিষিদ্ধ ছিল।’

অস্থায়ী চেয়ারম্যান শেফালিকা ত্রিপুরা বলেন, ‘পরিষদে এত নগদ টাকা থাকার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কীভাবে এসব টাকা এই গোপন কক্ষে এল তা তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে থানায় জিডি করা হয়েছে। উদ্ধার টাকাগুলো প্রশাসনের হেফাজতে রয়েছে।’

এদিকে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া অর্থের উৎস, মালিকানা ও ব্যয়ের বৈধতা যাচাইয়ে পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগে জিরুনা ত্রিপুরার চেয়ারম্যান পদ থেকে বিরত থাকার আদেশ জারির পর গতকাল মঙ্গলবার পরিষদের সদস্য শেফালিকা ত্রিপুরাকে অস্থায়ী চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এদিকে সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরার বিরুদ্ধে আর্থিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে নেমেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

রাজু/সালমান/