
চাঁদপুরের দুই যুবক বছরের পর বছর ধরে পবিত্র মক্কায় আল্লাহর ঘরের মেহমানদের সেবা করে যাচ্ছেন। তাদের একজন হাফেজ মুহাম্মদ হাসান মানছুর মাক্কী, যিনি ১১ বছর ধরে পবিত্র মসজিদুল হারামে হাজিদের সেবা করছেন। অন্যজন কচুয়ার কৈটোবা গ্রামের হাফিজ আহমাদ, যিনি এ বছর থেকে একইভাবে দোভাষী ও সহায়ক হিসেবে বাংলাদেশ হজ মিশনে যুক্ত রয়েছেন।
জানা গেছে, এ বছর বিভিন্ন দেশের অন্তত ৪০ জন যুবক মাঠপর্যায়ে থেকে হাজিদের সেবা করছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন চারজন।
বাকি দুজন হলেন- কক্সবাজারের শিহাব আব্দুস সালাম ও লক্ষ্মীপুর সদরের সৈয়দপুর গ্রামের মাহবুবুর রহমান।
মক্কা নগরীর মসজিদুল হারামে কর্মরত হাফেজ মানছুর হাজিদের চিকিৎসা সহায়তা, ভাষাগত অনুবাদ এবং ধর্মীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
অসুস্থ হাজিদের চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠানো, হজ কার্যক্রমে সহযোগিতা এবং প্রয়োজনে দেশে ফেরত পাঠানোর কাজও তিনিই সমন্বয় করেন।
প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করলেও ক্লান্ত অনুভব করেন না তিনি।
হাফেজ মানছুর বলেন, ‘আমি আল্লাহর ঘরের অতিথিদের সেবা করছি- এই ভাবনাই শান্তি দেয়।’
হাফেজ মানছুর ২০১৪ সালে সৌদি সরকারের বৃত্তিতে মক্কার জামেয়া উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখান থেকে অনার্স ও উচ্চতর ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর থেকে পবিত্র হারামে অনুবাদক হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
ভোলদিঘি কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি হজ করতে গিয়ে এই ছেলেদের খেদমত পেয়েছি। তারা আন্তরিক, ধর্মপ্রাণ ও ধৈর্যশীল। এ সেবা নিঃসন্দেহে সওয়াবের কাজ।’
ধর্মানুরাগীদের মতে, পবিত্র মক্কায় হাজিদের সেবা শুধু পেশা নয়, বরং একটি ইবাদত। ভাষাগত জটিলতা দূর করা, অসুস্থদের সহায়তা এবং হজ পালন সহজতর করার এই খেদমত মুসলিম বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরছে একটি মানবিক ও দায়িত্বশীল জাতি হিসেবে।
চাঁদপুরের এই দুই তরুণ তাদের আত্মত্যাগ, ধর্মীয় দায়িত্ববোধ ও নিষ্ঠা দিয়ে আগামী প্রজন্মের সামনে অনুকরণীয় এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
ফয়েজ/পপি/