ঢাকা ২৬ আষাঢ় ১৪৩২, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
English
বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে মৃত মায়ের মুখ দেখলেন ২ মেয়ে

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:৩৯ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৮:২১ পিএম
সীমান্তের শূন্যরেখায় দাঁড়িয়ে মৃত মায়ের মুখ দেখলেন ২ মেয়ে
ছবি: খবরের কাগজ

মঙ্গলবার (৩ জুন) সকাল ৯টা ১০ মিনিট। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলা পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের শূন্যরেখা এলাকা। একটি খাটিয়ায় করে ভারতের নদীয়া জেলার এক বৃদ্ধার লাশ নিয়ে আসা হয়। তখন বাংলাদেশ অংশে থাকা দুই নারী কান্না শুরু করেন। খাটিয়ার দিকে এগিয়ে যান। অপলক দৃষ্টিতে লাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন। তাদের আর্তনাদে আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। তাদের সঙ্গে থাকা পুরুষ সদস্যদেরও মুখ মলিন। সেখানে থাকা সশস্ত্র বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের সতর্ক অবস্থান দেখা যায়। এভাবে চলল ২০ মিনিট। ৯টা ৩০ মিনিটে আবারও খাটিয়া কাঁধে নিয়ে কয়েকজন মানুষ ভারতের দিকে চলে যান। ওই দুই নারীর কান্না তখনো থামেনি। অপলক দৃষ্টিতে তারা খাটিয়া চলে যাওয়ার দৃশ্য দেখছিলেন।

ভারত থেকে আনা খাটিয়ায় ছিল লোজিনা বেগমের লাশ। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি নদিয়া জেলার চাপড়া থানার গোংরা গ্রামে স্বামী-ছেলের সঙ্গে বসবাস করতেন। আর বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যে দুই নারী লাশ দেখে আহাজারি করছিলেন, তারা ছিলেন ওই বৃদ্ধার সন্তান। একজনের নাম বরকতি বেগম (৪৫) অন্যজন কুলসুম বেগম (৪০)। তারা দুজনই বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সীমান্তবর্তী জয়পুর এলাকার বাসিন্দা। বিয়ের পর থেকে তারা সেখানে বসবাস করে আসছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লোজিনা বেগম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। সোমবার রাতে তিনি মারা যান। খবর পেয়ে বাংলাদেশে থাকা তার দুই মেয়ে মায়ের লাশ দেখার অনুমতি চেয়ে ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের জগন্নাথপুর বিওপির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সীমান্তের বিপরীত পাশে থাকা ভারতের ১৬১ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের গোংরা ক্যাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখতে দুই মেয়ের আকুতির বিষয়টি তাদের কাছে তুলে ধরেন। এতে বিএসএফও সাড়া দেয়। মঙ্গলবার সকালে সীমান্তের শূন্যরেখায় মা হারা সন্তানদের শেষ ইচ্ছে পূরণের ব্যবস্থা করা হয়। দুই দেশে থাকা বৃদ্ধার স্বজনদের উপস্থিতিতে সীমান্তে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। শেষবারের মতো মেয়েরা মাকে বিদায় জানায়।

জানা গেছে, লোজিনা বেগম দীর্ঘবছর ধরে ভারতের নদীয়া জেলায় স্বামী-ছেলেসহ বসবাস করে আসছেন। তবে ঠিক কত বছর আগে তিনি বাংলাদেশ থেকে সেখানে গেছেন এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি। তার দুই মেয়ে বরকতি বেগম ও কুলসুম বেগমের বিয়ে খুব ছোট থাকতে হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে খবরের কাগজের পক্ষ থেকে তথ্যগুলো যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে পেয়ে দুই মেয়ে বিজিবি ও বিএসএফের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বরকতি বেগম জানিয়েছেন, ‘মাকে স্পর্শ করতে না পারলেও শেষবারের মতো তাকে একবার দেখতে পেয়েছি। তাকে শেষ বিদায় দিতে পেরেছি। এতে মনটা হালকা হয়েছে। বিজিবি ও বিএসএফের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’ একই কথা বলেন লোজিনা বেগমের আরেক মেয়ে কুলসুম বেগম।

চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাজমুল হাসান বলেন, ‘সীমান্তে শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি বিজিবি মানবিক দিকেও খেয়াল রাখে। এ বিষয়ে বিজিবি সব সময় আন্তরিক। এ ধরনের ঘটনা পারস্পরিক আস্থা, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, শূন্যরেখায় শেষবারের মতো লোজিনা বেগমের বিদায় অনুষ্ঠানে তার বাংলাদেশ অংশে থাকা স্বজন মো. নুরজামান, আবদুস সালাম ও রবিউল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। বিজিবির পক্ষ থেকে জগন্নাথপুর বিওপির কমান্ডার নায়েক সুবেদার আবুল হাসান তার সশস্ত্র দল দিয়ে সেখানে টহলে ছিলেন।

কোটালীপাড়ায় প্রবল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, চলাচলে দুর্ভোগ

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
কোটালীপাড়ায় প্রবল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক, চলাচলে দুর্ভোগ
ছবি: খবরের কাগজ

টানা প্রবল বর্ষণের ফলে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে একটি সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ ছাড়াও অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।

জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে একটানা বৃষ্টির ফলে উপজেলার বিভিন্ন সড়কে ফাটল ও খানাখন্দ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে গোপালগঞ্জ-পয়সার হাট আঞ্চলিক সড়কের কোটালীপাড়া জিরো পয়েন্টে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। মাঝবাড়ি-রাধাগঞ্জ সড়ক, ধারাবাশাইল-তরুর বাজার সড়ক, কোটালীপাড়া-রাজৈর সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মাঝবাড়ি-মান্দ্রা সড়কের পূর্ব মাঝবাড়ি নতুন মসজিদ সংলগ্ন ব্রিজের দুই পাশ ভেঙ্গে পড়ায় যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা হাজার হাজার জনসাধারণ।

ব্যবসায়ী দিদার দাড়িয়া বলেন, ‘মাঝবাড়ি-মান্দ্রা সড়কের পূর্ব মাঝবাড়ি নতুন মসজিদের সামনের বেইলি ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে পড়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপদে পড়েছে হাজার হাজার জনসাধারণ। এটি দ্রুত মেরামত করা দরকার।’

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘অতিবৃষ্টির কারণে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এলাকাটি পরিদর্শন করেছি। প্রবল বর্ষণের ফলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্রিজের ক্ষতিগ্রস্ত সংযোগ সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য কোটালীপাড়া এলজিইডির প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত জনসাধারণের এই দুর্ভোগ রোধ হবে।’

বাদল সাহা/সুমন/

ইচ্ছাশক্তিতে বলীয়ান হাত-পা ছাড়া লিতুন, সব বিষয়ে জিপিএ-৫

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৫:২৪ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৫:২৫ পিএম
ইচ্ছাশক্তিতে বলীয়ান হাত-পা ছাড়া লিতুন, সব বিষয়ে জিপিএ-৫
মা-বাবার সঙ্গে জিপিএ-৫ পাওয়া হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া লিতুন জিরা। ছবি: খবরের কাগজ

হাত-পা ছাড়া জন্ম নেওয়া লিতুন জিরাকে কোনো কিছুই দমাতে পারেনি! অদম্য ইচ্ছাশক্তিতে বলীয়ান হয়ে সে একের পর এক পরীক্ষায় মেধা ও প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। যশোরের মণিরামপুর উপজেলার গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয় লিতুন জিরা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে। ভবিষ্যতে এই মেধাবী ও লড়াকু কিশোরী চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। 

এই লিতুন জিরাকে নিয়ে গেল বছর জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসে খবরের কাগজ-এ বিশেষ প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল।
 
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে ফলাফল প্রকাশের পর উচ্ছ্বসিত লিতুন জিরার পরিবার। 

ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে লিতুন জিরা জানায়, সে আরও ভালোভাবে লেখাপড়া করে চিকিৎসক হতে চায়। সমাজের পিছিয়ে পড়া ও আর্তমানবতার সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার কথা জানায় সে।

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার সাতনল খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা বেগম দম্পতির দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছোট লিতুন জিরা। বড় ছেলে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। লিতুন জিরা পিইসি (প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা) ও জেএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর, প্রাথমিকে বৃত্তি লাভ, শ্রেণির সেরা শিক্ষার্থীর পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চায়ও রেখেছে তাক লাগানো সাফল্য। তার একাগ্রতা আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। স্বাভাবিক কিশোরীর মতোই এগিয়ে চলেছে লিতুন জিরা। বরং এক্ষেত্রে স্বাভাবিক শিশুর চেয়েও দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে চলেছে সে।

লিতুন জিরা ২০২৩ ও ২০২৪ সালে উপজেলা পর্যায়ে মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন, ২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রচনা প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন, একই সালে জাতীয় শিশু-কিশোর প্রতিযোগিতায় গোল্ড মেডেল অর্জনসহ একই বছরের ৪ জানুয়ারি খুলনা বেতারে গান গাওয়ার সুযোগ পায়। 

লিতুন জিরার মা জাহানারা বেগম আবেগতাড়িত কণ্ঠে জানান, জন্মের পর মেয়ে লিতুন জিরার ভবিষ্যৎ চিন্তায় অনেক রাত চোখের পানি ফেলেছেন। যার দুই হাত-পা নেই, সেই মেয়ে বড় হয়ে কিই বা করতে পারবে? এমন অজানা শঙ্কায় আঁতকে উঠতেন তিনি। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের পড়ালেখার প্রবল আগ্রহ এবং মেধার স্বাক্ষরতায় সেই শঙ্কা কেটে গেছে। আজ আশার আলোয় রূপ নিয়েছে তার কাছে।
 
বাবা কলেজশিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি যে কলেজে চাকরি করেন, দীর্ঘ দুই দশকেও সেটি এমপিওভুক্ত হয়নি। তারপরও ছেলে-মেয়েদের কখনো অভাব বুঝতে দেননি। হাঁটাচলা করতে না পারা লিতুন জিরাকে সেই শিশু বয়স থেকে কর্দমাক্ত পথ মাড়িয়ে ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে হুইলচেয়ারে করে বিদ্যালয়ে নিয়ে গেছেন তিনি। এসএসসিতেও সে প্রত্যাশিত ফলাফল পেয়েছে। এখন কলেজেও তাকে প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করতে হবে। লিতুন জিরা ভবিষ্যতে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। সেই স্বপ্ন পূরণে তিনি সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।

এইচ আর তুহিন/অমিয়/

লামার ৭৫ রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৫:১৪ পিএম
লামার ৭৫ রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা
ছবি: খবরের কাগজ

কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে বান্দরবানের লামায় বৈরী আবহাওয়ায় প্রাণহানির ঝুঁকি এড়াতে সব পর্যটন রিসোর্ট ফের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। লামার ৭৫টি রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) উপজেলা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা প্রস্তুতি কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈন উদ্দীন বলেন, ‘কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণের ফলে পাহাড়ি ঢালুতে অবস্থিত রিসোর্টে পাহাড়ধস ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ কারণে প্রাণহানির শঙ্কা থাকায় মিরিঞ্জা ভ্যালিসহ লামার বিভিন্ন পর্যটন স্পটের ৭০-৭৫টি রিসোর্ট আজ ১০ জুলাই থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িক বন্ধ থাকবে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে বিগত সময়ের মতো ফের রিসোর্টগুলো খুলে দেওয়া হবে।’

বান্দরবান আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন কুমার মণ্ডল জানান, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর কারণে গত ৭ জুলাই থেকে আজ ১০ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আগামী শুক্র-শনিবার দুই দিন বৃষ্টিপাত কম এবং রবিবার থেকে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।

এর আগে, গত ১ জুন বৈরী আবহাওয়ায় প্রাণহানি এড়াতে বান্দরবানের লামা উপজেলায় প্রায় ৬০ রিসোর্ট সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছিল স্থানীয় প্রশাসন।

রাহাত/সালমান/

ফলাফল পেয়ে চোখে জল বাবার মরদেহ রেখে পরীক্ষা দিতে যাওয়া মারিয়ার

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫৭ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৫:১১ পিএম
ফলাফল পেয়ে চোখে জল বাবার মরদেহ রেখে পরীক্ষা দিতে যাওয়া মারিয়ার
ছবি: খবরের কাগজ

এসএসসি পরীক্ষার দিন ভোরে বাবাকে হারায় মারিয়া আক্তার। হৃদয়বিদারক সেই ক্ষণেও নিজেকে সামলে বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই পরীক্ষাকেন্দ্রে ছুটে যায় সে। আজ প্রকাশিত হয়েছে এসএসসি ফলাফল। বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পেয়েছে জিপিএ ৩ দশমিক ৮৩। কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে এই শিক্ষার্থী।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের গাবুয়া গ্রামের শহিদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মারিয়া। গত ১০ এপ্রিল হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার বাবা মামুন হাওলাদার। সেদিনই ছিল এসএসসির গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। বাবার মৃত্যুতে মুষড়ে না পড়ে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত আজো অনেকে দেখেন এক অনন্য সাহসিকতার নিদর্শন হিসেবে।

মারিয়া বলেন, বাবা সবসময় বলতেন আমি যেন মানুষ হই। তিনি আমাকে ডাক্তার হিসেবে দেখতে চাইতেন। তার স্বপ্ন বুকে নিয়ে চোখের জল মুছে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়েছিলাম। তবে যা প্রত্যাশা করেছিলাম, ফলাফল তেমন হয়নি। খুব খারাপ লাগছে।

বিজ্ঞানে পড়াশোনা করা মারিয়া বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, আমি কোথায় ভর্তি হবো, তা চাচা ঠিক করবেন।

মারিয়ার ছোট চাচা অলিউল্লাহ বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুর পর মারিয়া একেবারে ভেঙে পড়েছিল। আমরা সাহস দিয়েছি, পাশে থেকেছি। আল্লাহর অশেষ কৃপায় সে পরীক্ষা দিতে পেরেছে। আমরা তাকে ঢাকায় ভালো কোনো কলেজে ভর্তি করাতে চাই। আশা করছি, ইন্টারমিডিয়েটে সে আরও ভালো করবে।

হাসিবুর রহমান/অমিয়/

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বেড়ে ২১২ মেগাওয়াট

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪৪ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫১ পিএম
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বেড়ে ২১২ মেগাওয়াট
কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ছবি: খবরের কাগজ

কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় কাপ্তাইয়ে অবস্থিত দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। দৈনিক সর্বোচ্চ ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট থেকে ২১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হচ্ছে। এর পুরোটাই যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে।

বৃহস্পতিবার ( ১০ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।

এর আগে কাপ্তাই হ্রদে পানিস্বল্পতায় কয়েকমাস ধরে একটি ইউনিট চালু রেখে মাত্র ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছিল। তবে বৃষ্টিপাতে হ্রদে পানি বাড়ায় গেল ২ জুন কেন্দ্রের ৪টি ইউনিট হতে ১৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। যা সর্বশেষ আজ ২১২ মেগাওয়াটে পৌঁছেছে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান বলেন, বুধবার রাত ৮ টায় কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট একসঙ্গে চালু করা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে ২১২ মেগাওয়াট। এরমধ্যে ১ ও ২ নম্বর ইউনিট থেকে প্রতিটি ৪৬ মেগাওয়াট করে এবং ৩, ৪ ও ৫ নম্বর ইউনিট থেকে প্রতিটি ৪০ মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। উৎপাদিত এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সঞ্চালন করা হচ্ছে। 

মূলত, দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।  তবে রাঙামাটিতে গেল শুক্রবার থেকে থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। একসঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা ভারতের পাহাড়ি ঢলে বৃদ্ধি পেতে থাকায় কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতাও বৃদ্ধি পেতে থাকে।

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট হলেও সর্বোচ্চ ২৪০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা দেখিয়েছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে হ্রদের পানির স্তর কমে গেলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভাটা পড়ে। তখন কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট থেকে পর্যায়ক্রমে মাত্র একটি ইউনিট চালু রেখে উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হয়। পুরোদমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রকৃতি নির্ভর এই পানির যোগান স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। 

জিয়াউর রহমান/সুমন/