ঢাকা ২৭ আষাঢ় ১৪৩২, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
English
শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

পঞ্চগড়ে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা বিপর্যস্ত

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৬:১০ পিএম
পঞ্চগড়ে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা বিপর্যস্ত
গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। ছবি: খবরের কাগজ

পঞ্চগড়ে আকস্মিক ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে উপড়ে গেছে কয়েক হাজার গাছপালা, উড়ে গেছে টিনের চাল, ভেঙে গেছে ঘর-বাড়ি। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হাজারো গ্রাহক। বিঘ্ন ইন্টারনেট পরিসেবা। 

সোমবার (২ জুন) রাত সোয়া ১০টা থেকে ১০ টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত ঝড়ে পঞ্চগড় পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা, সদর উপজেলার সদরের ধাক্কামারা, মাগুড়া ও গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

গ্রামগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, কোথাও কোথাও ঝড়ে গাছ ভেঙে পড়েছে ঘরের উপর। এতে ভেঙে গেছে ঘর-বাড়ি। উড়ে গেছে টিনের চাল। মসজিদ, মাদ্রাসা-সহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তা-সহ স্থানীয় নেতারা। তবে মঙ্গলবার (৩ জুন) পর্যন্ত ঝড়ের সার্বিক ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি প্রশাসন।

ঝড়ে পঞ্চগড় পৌরসভা এলাকার, মসজিদ পাড়া, পুরাতন ক্যাম্প, রামের ডাংগা, রাজনগর, কায়েতপাড়া, তুলারডাংগা, নিমনগর, ইসলামবাগ, জালাসীপাড়াসহ বিভিন্ন মহল্লা এবং সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের বুড়িরবান, লাঙ্গলগাঁও, মাগুড়া ইউনিয়নের সিপাইপাড়া, বান্দারাপাড়া-সহ গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার গাছ উপড়ে গেছে। ধাক্কামারা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিও ভেঙে গেছে। গাছ পড়ে অনেকের বাড়ি ঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ঝড়ে ভেঙে গেছে সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সীমানা প্রাচীর। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সদর থানার বিভিন্ন অবকাঠামো। বিভিন্ন কক্ষের জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে।

এদিকে ঝড়ের কারণে সোমবার রাত থেকে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। ইন্টারনেট পরিসেবাও বিঘ্ন ঘটেছে। তবে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে শহরের কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন চালু হলেও অধিকাংশ এলাকায় চালু করা যায়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ। গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি সড়কে পরে বিভিন্ন এলাকার সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

পৌরসভা এলাকার নিমনগর মহল্লার ষাটোর্ধ রশিদ আলী বলেন, আমার জীবনে এমন ঝড় দেখিনি। রাতে বৃষ্টির সঙ্গে হঠাৎ করে ঝড় শুরু হয়। ঝড়ে আমার বাড়ির উপর সাতটি গাছে ভেঙে পড়েছে। এতে আমার ঘরের ক্ষতি হয়েছে। আমাদের এলাকায় অনেকের বাড়ি এবং সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে। বলতে গেলে সকলের বাড়িতে দুই-একটা করে গাছ ভেঙে গেছে।

রামের ডাংগা মহল্লার তরিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ির উপড়ে তিনটি গাছ ভেঙে পড়েছে। এতে আমার একটি সেমিপাকা ঘরের দেওয়াল ভেঙে গেছে। বড় বড় গাছ পড়ে আমাদের এলাকার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। রাত থেকে বিদ্যুৎ নেই। এমন ঝড় এর আগে কখনো হয়েছে বলে মনে পড়ে না।

ঝড় কবলিত রামের ডাংগা এলাকা পরিদর্শকালে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইকবাল হোসাইন বলেন, গতকাল (সোমবার) রাতে পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকায় স্মরণকালের ভয়াবহ ঝড় বয়ে গেছে। এখানে সাধারণত এমন ঝড় দেখা যায় না। আমরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। এরপর যেসকল গরীব ও দুঃস্থ মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, তাদের সামান্য হলেও সহায়তার চেষ্টা করা হবে।

সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের বুড়িরবান এলাকার প্রসন্ন কুমার রায় বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আমাদের এদিকে বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার রাতে ১৫-২০ মিনিটের ঝড়ে সব লণ্ডভণ্ড হয় গেছে। প্রায় দুইশ বছরের পুরোনো একটি বট ও পাখুরে গাছ ভেঙে গেছে। বিদ্যুৎ বিছিন্ন হয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকা। জানি না কখন বিদ্যুৎ পাব।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, রাতে পঞ্চগড় পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা এবং সদর উপজেলার মাগুড়া ও গরিনাবাড়ি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা দিয়ে আকস্মিক ঝড় বয়ে যায়। পৌরসভাসহ দুই ইউনিয়নে ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নিরূপন করতে ইউনিয়ন পর্যায়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। সব তথ্য পাওয়া গেলে ঝড়ে সঠিক পরিমাণ জানা যাবে এবং সে অনুযায়ী পরবর্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মো. রনি মিয়াজী/

 

গাইবান্ধায় এসএসসিতে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:২২ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম
গাইবান্ধায় এসএসসিতে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে লাবণ্য আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে পলাশবাড়ী পৌরশহরের নূরপুর গ্রামে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে।

লাবণ্য নূরপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলামের মেয়ে। আশরাফুল ইসলাম সাদুল্লাপুর উপজেলার কুঞ্জমহিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। লাবণ্য পলাশবাড়ী পিয়ারি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

পুলিশ ও লাবণ্যর স্বজনরা জানান, এসএসসির ফলাফল প্রকাশের পর এক বিষয়ে ফেল করার বিষয়টি জানতে পারে লাবণ্য। এতে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। একপর্যায়ে বিকেলে সবার অজান্তে নিজ ঘরের আড়ার সঙ্গে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পলাশবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টু জানান, পরীক্ষায় ফেল করায় অভিমান করে লাবণ্য আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। স্বজনদের কাছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

রফিক/রিফাত/সুমন/

৫২ বছর বয়সে পরীক্ষা দিয়ে ইংরেজিতে ফেল

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:৩৭ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৫ পিএম
৫২ বছর বয়সে পরীক্ষা দিয়ে ইংরেজিতে ফেল
দেলোয়ার হোসেন দুলু। ছবি: সংগৃহীত

নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য দেলোয়ার হোসেন দুলু ৫২ বছর বয়সে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন। আশা ছিল ভালো ফল করবেন। কিন্তু ইংরেজিতে ফেল করায় সেই আশা পূরণ হয়নি। তবে তিনি মনোবল হারাননি। আগামী বছর আবারও তিনি পরীক্ষা দেবেন বলে জানিয়েছেন।

পূরণে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর কলম ধরেছিলেন তিনি। তবে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, তিনি  দুঃখজনকভাবে ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন। ফলে স্বপ্ন গেছে ভেস্তে। তবু দুলুর মুখে হতাশা নয়, বরং দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে বলেছেন, ‘পরেরবার আবার অংশ নেব এবং পাস করেই দেখাব।’

জানা যায়, ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিলেন দেলোয়ার হোসেন দুলু। ১৯৮৫ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময় প্রাথমিক বৃত্তি এবং ১৯৮৮ সালে অষ্টম শ্রেণিতে জামনগর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করেন। এরপর ১৯৯০ সালে বাগাতিপাড়া কেন্দ্রে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহরাব হোসেনের নির্দেশে তিনি বহিষ্কৃত হন। ঘটনাটি মানসিকভাবে দুলুকে এতটাই ভেঙে দেয় যে সেখানেই তার শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটে। তবে ২০২১ সালে ইউপি নির্বাচনে জয়লাভ করে আবারও ফিরে আসে তার হারিয়ে যাওয়া আত্মবিশ্বাস। সিদ্ধান্ত নেন জীবনের অপূর্ণ অধ্যায়টি শেষ করতেই হবে। 

এরপর ২০২২ সালে রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার উমরগাড়ী দারুল খায়ের দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং এ বছর ওই মাদ্রাসার কারিগরি শাখায় কম্পিউটার ট্রেডে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। সব বিষয়ে ভালোভাবে পাস করলেও ইংরেজি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছেন। তবে এতে তিনি দমে যাননি। জানিয়েছেন, ‘আমার পরিবারের সবাই শিক্ষিত। শুধু আমিই পিছিয়ে ছিলাম। এটাই আমাকে কুঁরে কুঁরে খেত। এবার চেষ্টা করলাম। পরেরবার আরও ভালো করে প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেব। ইংরেজিতে পাস করেই ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।’ 

এ বিষয়ে জামনগর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘এই বয়সে বই-খাতা নিয়ে আবার বসা, তাও পরীক্ষার হলে, এটা সাহসের পরিচয়। দুলু ভাই দেখিয়ে দিয়েছেন, ইচ্ছা থাকলে বয়স কোনো বাধা নয়।’ এই প্রচেষ্টা আমাদের মনে করিয়ে দেয় জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে নতুন করে শুরু করা সম্ভব, যদি মন থেকে চাওয়া যায়। তার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।

কুমিল্লায় এসএসসিতে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৮ পিএম
কুমিল্লায় এসএসসিতে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
ছবি: খবরের কাগজ

এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার খবর শুনে কুমিল্লার বুড়িচংয়ে প্রভা আক্তার (১৭) নামে এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে নিজ বাড়িতে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহননের পথ বেছে নেয় প্রভা। সে উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রামের কাতার প্রবাসী মোস্তফা কামালের মেয়ে এবং উপজেলার ভরাসার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক বলেন, ‘আমরা খবর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটা আত্মহত্যা বলেই জানা যাচ্ছে। তদন্ত করে বিস্তারিত জানানো হবে।’

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রভা এ বছর ভরাসার বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ফলাফল ঘোষণার পর সে জানতে পারে, ২ বিষয়ে ফেল করেছে। এতে সে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং এক পর্যায়ে নিজ ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

প্রভার দাদা জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার পিতা মোস্তাফা কামাল প্রবাসে থাকেন, মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে সে প্রবাস থেকে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিয়েছে।

পরীক্ষা অকৃতকার্য শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার বিষয়টিকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যা দিয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভির হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।’

জহির শান্ত/সুমন/

বাড়ছে গোমতীর পানি, ডুবছে চরের ফসল

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩৯ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫৬ পিএম
বাড়ছে গোমতীর পানি, ডুবছে চরের ফসল
ছবি: খবরের কাগজ

কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে। এ অবস্থায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন গোমতীর চরের কৃষকরা।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। 

গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমা না ছুঁলেও পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ইতোমধ্যে ডুবে গেছে নদীর দুই পাড়ের চরের কৃষি জমি। এতে কৃষের কষ্টের ফসলও ডুবে গেছে। ফসল পানিতে ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন চরের কৃষকরা।

গেল বছরের বন্যায়ও চরের কৃষকরা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। যার ক্ষত এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি তারা। নদীর পানি বাড়লে শুরুতেই ডুবছে তাদের ফসল। এবারও ডুবেছে তাদের কষ্টের ফসল। 

সরেজমিন দেখা গেছে, কুমিল্লা সদর উপজেলার আমতলী ও কাচিয়াতলী এলাকায় হেক্টরের পর হেক্টর জমিতে করলা, মুলা, লাউসহ বিভিন্ন সবজির চাষ হয়েছিল, তা এখন পানিতে ভাসছে। ফসল ঘরে তোলার মাত্র দুদিন আগেই বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে এসব ফসল। গোমতী নদীর পানির বিপৎসীমার সর্বোচ্চ পরিমাপ ১১ দশমিক ৭৩ মিটার হলেও পানির উচ্চতা ৬ থেকে ৮ মিটার হলেই ডুবে যায় চরের অনেক কৃষিজমি। তাই নদীর পানি বাড়লেই অনেক কৃষককে অপরিপক্ব ফসল তুলে ফেলতে হয়। অনেকেই হতাশ নিয়ে বসে আছেন নদীর ধারে।

আমতলী এলাকার কৃষক মো. সুজন মিয়া বলেন, ‘চরে প্রায় ৩ একর জমিতে করলাসহ নানা জাতের সবজি চাষ করেছি। আর মাত্র দুদিন পর এসব ফসল বাজারে বিক্রি করা যেত, কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাতে সব ফসল তলিয়ে গেছে। ব্যাংক ঋণ ও কিস্তি নিয়ে দুই বছর আগে থেকে কৃষিকাজ শুরু করেছি। আমার প্রায় ১২ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। শুধু আমার নয়, এ চরে প্রায় ২০ জন কৃষক রয়েছে যাদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি গুনতে হবে। গত বছরও বন্যায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল এবার তার চেয়ে বেশি হয়েছে। যে মুহূর্তে ফসল ঘরে তুলব সে মুহূর্তে বন্যার পানিতে ডুবে গেছে ফসল। করলা যা পেরেছি সংগ্রহ করছি, অন্যান্য সব ফসল পানির নিচে। আমি এ ঋণ কীভাবে পরিশোধ করব।’

কাচিয়াতলি এলাকার কৃষক শাহাদাত হোসেন ও মিন্টু মিয়া বলেন, ‘গত বছরের বন্যা থেকে এ বছর লোকসান বেশি হয়েছে। কারণ গত বছর জমিতে ফলন তেমন ছিল না, কিন্তু এ বছর তো ফলন তোলার মুহূর্তে বন্যার পানি ভেসে গেছে। মরিচ, ধনে পাতা, মিষ্টি কুমড়া, মুলা এসব ৬ ফুট পানির নিচে। মাচায় কিছু করলা আছে সেগুলো নৌকায় করে গিয়ে সংগ্রহ করতেছি। এছাড়া বেশিরভাগ ফসল পানিতে ভেসে গেছে। এভাবে যদি বৃষ্টি থাকে তাহলে আমাদের মাথায় হাত দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।’ 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, ‘গোমতী নদীর চরে চলতি বন্যায় প্রায় ১১ হাজার হেক্টর ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে পানি কমে গেলে কৃষকের কী পরিমাণ ক্ষতি হবে তা বলা যাবে। আমরা সব উপজেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করছি। সরকার যদি এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য বরাদ্দ দেয় তাহলে তারা পাবেন।’

শান্ত/রিফাত/

পটুয়াখালীতে সাপের এক্সরে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হলো ঢাকা

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৭:২৬ পিএম
আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম
পটুয়াখালীতে সাপের এক্সরে করে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হলো ঢাকা
ছবি: খবরের কাগজ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গ্রামবাসীর হামলায় আহত একটি কালসাপকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘অ্যানিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালী’। সাপটির শরীরে গুরুতর আঘাতের প্রমাণ মিললে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।

গত বুধবার (৯ জুলাই) সকালে আমতলী উপজেলার পূজাখোলা এলাকার দফাদার বাড়ির পাশে লাঠি দিয়ে পেটানোর সময় সাপটি গ্রামবাসীর হাত থেকে উদ্ধার করেন সংগঠনের সদস্যরা। পরে রাত ১০টার দিকে পৌরসভার শংকর এলাকায় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে এক্সরে করানো হয়। এক্সরে প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাপটির শরীরের মাঝ বরাবর হাড়ে চিড় ধরেছে।

‘অ্যানিমেল লাভারস অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার টিম লিডার বায়জিদ আহসান জানান, কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসিন সাদিকের সহায়তায় আহত সাপটির এক্সরে করা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে প্রাণীটিকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে যাতে বিশেষায়িত চিকিৎসা দেওয়া যায়।

কলাপাড়া উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মারুফ বিল্লাহ খান বলেন, সাপটির শরীরে লাঠির আঘাতের কারণে হাড়ে আঘাত লেগেছে। সঠিক চিকিৎসা পেলে এটি সুস্থ হয়ে উঠবে বলে আশা করছি।

সবুজ, লাল ও কালো রঙের ডোরাকাটা এ সাপটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ ফুট। দেশে এ ধরনের উদ্যোগ বিরল হওয়ায় সচেতন মহল প্রাণী সুরক্ষায় এ প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছে।

হাসিবুর রহমান/সুমন/