
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার মাদার্শা ইউনিয়নে ১২টি বন্যহাতি তাণ্ডব চালাচ্ছে। তাদের তাণ্ডবে কৃষকরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে কয়েকদিনের টানা বর্ষণে বন্যহাতির ওই পালটি পাহাড় থেকে লোকালয়ে প্রবেশ করে প্রায় দুই একর সবজি খেত ও এক একর আম বাগান নষ্ট করে পুনরায় পাহাড়ে ফিরে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বাগান মালিকরা।
এ ছাড়াও বন্যহাতির পালটি মাদার্শা ইউনিয়নের এয়াজের পাড়া, কামারপাড়া ও বড়ডেবা গ্রামে প্রায় সময় তাণ্ডব চালিয়ে ফসলের ও ফলের বাগানের ব্যাপক ক্ষতি করছে। এক্ষেত্রে বনবিভাগের কর্মকর্তারা বিষয়টি জেনেও এক প্রকার নীরব ভূমিকা পালন করছেন বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
স্থানীয়রা জানায়, ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে বন্যহাতির পালটি পাহাড় ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে। এসময় তারা একের পর এক তাণ্ডব চালাচ্ছে। ফসল ও ঘরবাড়ি রক্ষায় পাহারা বসিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন সেখানকার কৃষকরা। সোমবার সন্ধার দিকে বন্যহাতির পালটি জাগির হোসেন নামের এক কৃষকের ফসলি জমিতে তাণ্ডব চালায়। পরে তার গোয়ালঘরে আক্রমণেরও চেষ্টা করে।
এসময় বেশ কয়েকজন কৃষকের প্রায় দুই একর সবজি খেতের ফসল নষ্ট করে দেয়। এলাকাবাসী মশাল ও টর্চলাইট জ্বালিয়ে এগিয়ে আসলে বন্যহাতির পালটি পাহাড়ে ফিরে যায়।
মাদার্শা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কামারপাড়ার কৃষক জাগির হোসেন বলেন, ১২টি বন্যহাতি বেশ কিছুদিন ধরে মাদার্শা ইউনিয়নের এয়াজেরপাড়া ও কামারপাড়ার পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে অবস্থান করছে। সোমবার সন্ধ্যায় বন্যহাতির পালটি আমার লাউ, শসা ও কাঁকরোল খেত নষ্ট করে দিয়ে গোয়ালঘর পর্যন্ত চলে আসে। এতে আমার তিন লাখ টাকার অধিক ক্ষতি হয়েছে। বন্যহাতির বিষয়ে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের জানালেও কোনো কাজ হয় না।
একই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের এয়াজের পাড়ার কৃষক মো. সায়েম বলেন, বন্যহাতির পাল এখন মশাল ও মানুষ দেখে ভয় পায় না। বিভিন্ন কৌশলে ভয় দেখালেও কাজ হয় না। আমরা এখন বন্যহাতির কাছে নিরুপায় হয়ে গিয়েছি। সম্প্রতি আমার এক একর আম বাগান নষ্ট করে দিয়েছে। বনবিভাগ এ বন্যহাতির পালটিকে পাহাড়ে ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। যার কারণে আমরা প্রতিবার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন মাদার্শা রেঞ্জ কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন বলেন, বন্যহাতি তার নিজের গতিতে পাহাড়ে অবাধ বিচরণ করছে। খাদ্যের সন্ধানে মাঝেমধ্যে লোকালয়ে আসতেই পারে। তবে কৃষকদের ফসলি ক্ষেতে তাণ্ডব চালাচ্ছে এ বিষয়ে কেউ আমাকে জানায়নি। সরকারি বনাঞ্চলের বাইরে লোকালয়ে বন্যহাতির তাণ্ডব কিংবা আক্রমণে কারও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হলে নিয়ম অনুযায়ী বনবিভাগ বরাবর আবেদন করলে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
মো. আরিফুল ইসলাম/মাহফুজ