চট্টগ্রামের হালিশহরে বল তুলতে গিয়ে নালায় পড়ে হুমায়রা নামে তিন বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) বেলা আড়াইটার দিকে হালিশহরের নয়াবাজার আনন্দীপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার ঘণ্টাখানেক পর শিশুকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আগ্রাবাদ ফায়ার স্টেশনের লিডার কামরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিশু হুমায়রার মা একজন গার্মেন্টসকর্মী এবং বাব এলাকায় ডিশ লাইনে কাজ করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো. মাহমুদুর রহমান শাওন খবরের কাগজকে বলেন, ‘নালায় পড়ে শিশু নিখোঁজের খবর শুনে আশপাশের লোকজন উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। সবাই মিলে নালার স্ল্যাব তুলে খোঁজ শুরু করেন। নিখোঁজের প্রায় এক ঘণ্টা পর স্থানীয় এক যুবক শিশুটিকে উদ্ধার করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের লোকজন নালার ওপর থেকে সব স্ল্যাব তুলে নালাটি পরিষ্কার করে। কাজ শেষে তারা অন্য সব স্ল্যাব ফের বসালেও একটি বসায়নি। ওই ফাঁক দিয়েই একটি শিশুর জীবন প্রদীপ নিভে গেল। এই অবহেলার দায় কে নেবে?’
নালায় শিশুর মরদেহ খুঁজে পাওয়া স্থানীয় যুবক জানান, তিনি নালায় নেমে ডুব দিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করেছেন। শিশুটি নালার ভেতরে থাকা বিভিন্ন সেবা সংস্থার পাইপের সঙ্গে আটকে ছিল। নিখোঁজের প্রায় ঘণ্টাখানেক পর শিশুকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের সময় শিশুটির দেহ ফোলে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিশু নিখোঁজের পর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা বিকেল ৩টা ১০ মিনিটে ডুবুরিদল নিয়ে ঘটনাস্থলে যায়। তবে তারা কাজ শুরু করার আগেই স্থানীয়রা বিকেল ৩টা ৫৪ মিনিটে শিশুকে উদ্ধার করে মা ও শিশু হাসপাতালে পাঠায়।
মা ও শিশু হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. শারমিন আলম বলেন, ‘নালায় পড়া একটি শিশুকে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় তার শ্বাস বা হার্টবিট ছিল না। পরে আমরা ইসিজি করে দেখলাম শিশুটি মারা গেছে। শিশুর অভিভাবক বলেন, তাকে নালা থেকে উদ্ধারের আধঘণ্টা পর তারা হাসপাতালে আনেন।’
চট্টগ্রাম শহরের নালায় পড়ে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। গত ছয় বছরে নগরে খাল-নালায় পড়ে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২ জন, ২০২১ সালে ৫ জন, ২০২৩ সালে ৩ জন, ২০২৪ সালে ৩ জন ও চলতি বছর দুইজন।
নিখোঁজ হওয়ার ১৪ ঘণ্টা পর চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে নগরের চাক্তাই খাল থেকে শিশু সেহরিশের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র সমালোচনার মুখে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন শহরের কিছু নালার পাশে অস্থায়ীভাবে বাঁশের ঘের দেয়।
সালমান/