ঢাকা ২৫ আষাঢ় ১৪৩২, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
English

শালিখায় গঙ্গা স্নান, পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২৫, ০২:৪৯ পিএম
শালিখায় গঙ্গা স্নান, পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত
ছবি: খবরের কাগজ

মাগুরার শালিখা উপজেলার গাঙ্গারামপুরের নবগঙ্গা নদী তীরে অনুষ্ঠিত হলো গঙ্গাস্নান, পূজা এবং মেলা। গঙ্গাদেবীর পূজা ও স্নান উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে গ্রামীণ মেলা। 

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ভোর থেকে ভক্তরা পুণ্যের আশায় বেলপাতা, ফুল, ধান, দূর্বাসহ বিভিন্ন উপকরণ গঙ্গায় ভাসিয়ে স্নান করেন।

গঙ্গাস্নানে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও ইউনিয়ন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী যশোর, নড়াইল, ঝিনাইদহসহ বিভিন্ন স্থান থেকে বহু পুণ্যার্থীরা অংশ নেন।

স্থানীয়রা জানান, ঐতিহ্যবাহী এ ধর্মীয় উৎসব ১০৫ বছর আগে শুরু হয়। এখানো শ্রী শ্রী গঙ্গাদেবীর পূজা, গঙ্গা স্নান করে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মায়ের অশেষ কৃপার আশায় এখানে আসেন। প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা দশমী তিথিতে নবগঙ্গা নদীর তীরে গঙ্গা দেবীর পূজা ও নদীর সঙ্গমস্থলে স্নান উপলক্ষে মহামিলন ঘটে।

ভোর থেকে শুরু হওয়া মেলায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা দোকানীরা কয়েক দিন আগে থেকেই তাদের বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন।

গঙ্গারামপুর গ্রামসহ আশপাশের ২৮টি গ্রামের সহযোগিতায় এই মেলার আয়োজন করা হয়।

মেলায় আসার সবিতা রানী বলেন, আমরা প্রতিবছর এখানে গঙ্গাস্নান করতে আসি। বিশ্বশান্তি ও পাপাচার থেকে মুক্ত হতেই গঙ্গা স্নান করা হয়।

মেলা কমিটির সহসভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ১০৫ বছর ধরে এই মেলাটি হয়ে আসছে। এখানে মাগুরাসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ অংশ নেন। আমরা নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ভুলে গঙ্গায় স্নান করি পাপ মোচনের জন্য।

ঐতিহ্যবাহী এই মেলা উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব ও মাগুরা-২ আসনের সন্তান রবিউল ইসলাম নয়ন।

অমিয়/

নলছিটিতে মা ও ছেলের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪১ পিএম
নলছিটিতে মা ও ছেলের ইসলাম ধর্ম গ্রহণ
ছবি: খবরের কাগজ

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ষাটপাকিয়া গ্রামের এক মা ও তার ছেলে আনুষ্ঠানিকভাবে সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন। আদালতের হলফনামার মাধ্যমে ধর্মান্তরের এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

ধর্মান্তরিত ওই যুবকের পূর্বের নাম ছিল প্রীতিশ মল্লিক। ইসলাম গ্রহণের পর তার নতুন নাম রাখা হয়েছে আবদুর রহমান মল্লিক। তার পিতার নাম প্রয়াত বিষ্ণুপদ মল্লিক। তার মায়ের আগের নাম ছিল কল্পনা মল্লিক, বর্তমান নাম ফাতেমা মল্লিক।

আবদুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘আমি সুস্থ, বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন এবং নিজ সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার বলপ্রয়োগ বা চাপ প্রয়োগ করা হয়নি। ছোটবেলা থেকেই মুসলিম বন্ধুদের সঙ্গে বড় হয়েছি। তাদের চলাফেরা, আচার-আচরণ, ধর্মীয় অনুশাসন এবং বই-পুস্তক ও আলেমদের বক্তৃতা শুনে বুঝতে পারি, ইসলাম শান্তি ও সত্যের ধর্ম। এই ধর্মের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই আমি কালেমা পাঠ করে স্থানীয় মুসলমানদের উপস্থিতিতে মাওলানা সাব্বির হোসেনের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করি।’

ধর্মান্তর প্রক্রিয়ার পুরো ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন নলছিটি হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা অ্যাডভোকেট মো. আল আমিন। তিনি নবদীক্ষিত মা ও ছেলের হাতে ইসলামিক বইসহ প্রয়োজনীয় উপহার তুলে দেন।

স্থানীয়রা নব মুসলিমদের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং তাদের নতুন জীবনের পথচলায় সফলতা কামনা করেছেন।

কামরুজ্জামান সুইট/মাহফুজ

 

দ্রুত বাড়ছে গোমতীর পানি, ২৪ ঘণ্টায় ১২৯ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
দ্রুত বাড়ছে গোমতীর পানি, ২৪ ঘণ্টায় ১২৯ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড
টানা বর্ষণ ও উজানের ঢলে পানি বেড়েছে গোমতীতে। ছবি: খবরের কাগজ

গত ৪৮ ঘণ্টার টানা বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি পানি হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে। এতে করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে গোমতীর চর ও দুই তীরের বাসিন্দাদের মাঝে। গেল বছরের আগস্টে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় গোমতীর বাঁধ ভেঙে পাশের তিন উপজেলা প্লাবিত হয়ে যায়। ফলে এবার পানি বাড়তে থাকায় সে শঙ্কা আরও বেড়েছে।

কুমিল্লার কোল ঘেষে বয়ে চলা গোমতী নদীর পানি প্রতি ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার করে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এর ফলে নদীর বাঁধের ভেতর জমি-জমা ও বসতি ডুবতে শুরু করেছে। তবে নদীর পানির উচ্চতা বুধবার (৯ জুলাই) বিকাল ৫টা পর্যন্ত বিপৎসীমার ৭ ফুট নিচে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান।  

এদিকে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল ৩টা থেকে বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত কুমিল্লা জেলায় ১২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গোমতীর চরে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ারও সতর্কতা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া টানা ভারী বৃষ্টিপাতে শহরের নিম্নাচল পানিতে ডুবে গেছে, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে নিচু এলাকা গুলোতে।

ছবি: খবরের কাগজ

বুধবার দুপুরে গোমতী নদীর টিক্কার চর, চানপুর ব্রিজ ও সংরাইশ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু কিছু স্থানে চরাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে।

সংরাইশ এলাকার বাসিন্দা নূরে আলম বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি পানি ঘরের একদম কাছাকাছি চলে এসেছে। আমরা খুব আতঙ্কে আছি। গত বছর বন্যায় আমাদের ঘরবাড়ি ভেসে গিয়েছিল। এলাকার লোকজন মিলে আমাদের নতুন ঘর তুলে দিয়েছিল। আবার যদি ঘর ভেসে যায়, তাহলে আমাদের পথে পথে থাকতে হবে।’

টিক্কার চর এলাকার পারভেজ আলম জানান, ‘গতকাল বিকেলেও এত পানি ছিল না। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি পানি অনেক বেড়েছে। এভাবে বাড়তে থাকলে বিকেলের মধ্যে পানি বিপৎসীমার ওপরে চলে যেতে পারে।’

এ বিষয়ে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভির আহমেদ বলেন, ‘গোমতীর পানি এখনো বিপৎসীমার ১০ ফুট নিচে আছে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে পানি না এলে পরিস্থিতি তেমন খারাপ হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘গোমতীর চরে বসবাসরত মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রশাসন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। হঠাৎ পানি এভাবে বাড়বে, তা আমরা আগে বুঝতে পারিনি। আমরা সরেজমিনে গোমতীর পাড় ঘুরে দেখছি।’

কুমিল্লা জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা আরিফুর রহমান জানান, কুমিল্লায় মঙ্গলবার বিকাল ৩টা থেকে আজ বুধবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত ১২৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সারাদিনও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। কুমিল্লার পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলেও ভরী বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খাঁন মোহাম্মদ ওয়ালীউজ্জামান জানান, বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানির উচ্চতা ৮.৫ মিটার পর্যন্ত উঠেছে। বিপৎসীমা ১১.৩ মিটার। আমাদের পর্যবেক্ষণে প্রতি ঘণ্টায় ১০ সেন্টিমিটার করে গোমতী নদীর পানির উচ্চতা বাড়ছে। টানা বৃষ্টির ওপর নির্ভর করছে আমরা কতটুকু বিপদের মুখে আছি।

জহির শান্ত/মাহফুজ

পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে বিশাল ভাঙন, আতঙ্কে অন্তত ৬০০ পরিবার

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৩ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
পদ্মা সেতু রক্ষা বাঁধে বিশাল ভাঙন, আতঙ্কে অন্তত ৬০০ পরিবার
ছবি: খবরের কাগজ

বর্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই শরীয়তপুরের জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত সোমবার (৭ জুলাই) বিকেল থেকে বাঁধটির প্রায় ২৫০ মিটার অংশ নদীতে ধসে পড়ে। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদীর পাড়ের ৬০০ পরিবার। কেউ কেউ ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে হুমকিতে পড়বে আশপাশের রাস্তা, হাটবাজার ও শতাধিক বসতবাড়ি।  পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রশাসন বলেছে, পূর্ব সতর্কতায় ঘরবাড়ি হারানো পরিবারগুলোকে দেওয়া হচ্ছে সহায়তা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে শরীয়তপুরের জাজিরার আলম খারকান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি ও ওছিম উদ্দিন মুন্সিকান্দি গ্রামের অন্তত ৬০০ পরিবার। গতবারের ধসে পড়া বাঁধের মেরামতকৃত ১০০ মিটার-সহ নতুন করে আরও আড়াইশো মিটার এলাকা নদীগর্ভে চলে গেছে। গত সোমবার মাত্র এক ঘণ্টায় ভেঙে পড়ে ২০০ মিটার বাঁধ, বিলীন হয় অন্তত ১০টি ঘরবাড়ি ও ৯টি দোকান। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। 

ছবি: খবরের কাগজ

শুধু পদ্মা সেতু প্রকল্প নয়, মাঝিরঘাটের বিভিন্ন পাড়াও এখন ভাঙনের সরাসরি ঝুঁকিতে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে হাটবাজারসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চল হারিয়ে যেতে পারে পদ্মার পেটে। দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে জিওব্যাগ ডাম্পিংয় ও স্থায়ী বেরি বাঁধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বছরের নভেম্বরে নাওডোবা এলাকায় ১০০ মিটার পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড বাঁধ ধসে যায়, যার পুনর্নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যয় করে ২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। সেই সংস্কার করা এলাকার কিছু অংশসহ গত ৭ জুন দু’টি স্থানে প্রায় ২০০ মিটার বাঁধ পদ্মা নদীতে ধসে পরেছে। এক মাসের ব্যবধানে নতুন করে আরও ২৫০ মিটার এলাকা ধসে পড়ে। এতে বিলীন হয়েছে ৯টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ১০টি স্থাপনা, সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে বসত ঘর। 

ছবি: খবরের কাগজ

এছাড়া ভাঙনের হুমকিতে পরেছে শরীয়তপুরের জাজিরার নাওডোবা-পালেরচর সড়ক, মহর আলী মাদবরকান্দি, আলম খাঁরকান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি এবং কালাই মোড়লকান্দি গ্রামের অন্তত ছয় শতাধিক বসত বাড়ি। তাই অনেকেই বাঁধের কাছ থেকে বাড়িঘর ও গাছপালা সরিয়ে নিচ্ছে। এছাড়া হুমকিতে রয়েছে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মঙ্গল মাঝিরঘাট বাজারের দুই শতাধিক দোকানপাট। তাই আতঙ্কে রয়েছে ভাঙন কবলিত এলাকার বাসিন্দারা।

জানা যায়, ২০১০-২০১১ সালে পদ্মা সেতু থেকে মাঝিরঘাট হয়ে পূর্ব নাওডোবা আলমখার কান্দি জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ২ কিলোমিটার ‘পদ্মা সেতু প্রকল্পের কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড’ বাঁধটি নির্মাণ করে সেতু কর্তৃপক্ষ। বাঁধটি নির্মাণ করতে ব্যয় হয় ১১০ কোটি টাকা। এখন পুরো বাঁধটি ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। 

পাইনপাড়া অছিম উদ্দিন কান্দির ছাত্তার শেখ বলেন, হঠাৎ করে ভাঙন দেখা দিয়েছে, আমরা ঘরবাড়ি নিয়ে যে কোথায় যাব, সেটা এখন অনিশ্চিত। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ রইলো আমাদের থাকার ব্যবস্থা করে দেন।

ছবি: খবরের কাগজ

অছিমউদ্দিন কান্দির রিনা বেগম বলেন, আমাদের ঘরের পিছনে নদী। পরের জায়গায় থাকি, এখন আতঙ্কে আছি ঘর নিয়ে এখন কোথায় যাব।

মাঝিরঘাট এলাকার সোহারাব, রবিউল, জুয়েল জানান, অবৈধ্য বালু উত্তোলনের কারণে এ ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ না করলে, মাঝিরঘাট এলাকাটি শরীয়তপুরের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।

ফরিদপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শাজাহান সিরাজ ধসে পড়া বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে তিনি জানিয়েছেন, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জিওব্যাগ ফালানো হচ্ছে। দ্রুত ভাঙনরোধে কাজ শুরু করা হবে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী রায় জানিয়েছেন, ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে যারা সতর্কতাবশত ঘরবাড়ি সরিয়েছেন, তাদের সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা ২৬ জনকে ৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ ও ঢেউটিন দিয়েছি।

শরীয়তপুরে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদ হোসেন জানান, ভাঙন কবলিত ৩০টি পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। জিওব্যাগ ফালানো হচ্ছে। স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হচ্ছে।


রাজিব হোসেন রাজন/মাহফুজ

 

বগুড়ায় শ্বশুর ও পুত্রবধূর মরদেহ উদ্ধার, তদন্তে পিবিআই ও পুলিশ

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৮ পিএম
বগুড়ায় শ্বশুর ও পুত্রবধূর মরদেহ উদ্ধার, তদন্তে পিবিআই ও পুলিশ
ছবি: খবরের কাগজ

বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর লক্ষ্মীমণ্ডল গ্রামে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শ্বশুর ও পুত্রবধূ নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাতে নিজ বাড়ি থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন- আফতাব আলী (৬৫) ও তার পুত্রবধূ রিভা আক্তার (৩০)।

জানা গেছে, নিহত আফতাব আলী তার ছেলে শাহজাহানের স্ত্রী রিভা আক্তারকে নিয়ে ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। শাহজাহান বর্তমানে কর্মসূত্রে সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, মঙ্গলবার রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে আফতাব ও রিভা নিজ নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান। পরদিন (৯ জুলাই) সকালে রিভার ৫ বছরের মেয়ে ঘুম থেকে উঠে মা ও দাদার মরদেহ দেখতে পেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে।

দুপচাঁচিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফরিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে—রাতে দুর্বৃত্তরা ঘরে প্রবেশ করে আফতাব আলীকে দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে এবং রিভা আক্তারকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে গেছে।

ঘটনার পর থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও থানা পুলিশের যৌথ দল ঘটনাস্থলে থেকে তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

পুলিশ জানায়, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে পূর্ব শত্রুতা, পারিবারিক বিরোধ কিংবা চুরির উদ্দেশ্যে হামলা—সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।

নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

রিপন দাস/মাহফুজ

শ্যামনগরে শিয়াল মারতে বিদ্যুতের ফাঁদ, প্রাণ গেল গৃহবধূর

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:১১ পিএম
আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:১২ পিএম
শ্যামনগরে শিয়াল মারতে বিদ্যুতের ফাঁদ, প্রাণ গেল গৃহবধূর
প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে মুরগির খামারে শিয়ালের উপদ্রব ঠেকাতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা হয়। সেই ফাঁদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন রূপবান বেগম (৪৫) নামের এক গৃহবধূ।

বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী ‘সুন্দরবন প্রজেক্ট’ নামীয় মুরগির খামারের পরিবারের সদস্যরা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। তিনি শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের জহুর আলী মোল্লার স্ত্রী। 

খবর পেয়ে শ্যামনগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে। এদিকে শিয়াল মারার জন্য তৈরি ফাঁদে আটকে ঐ গৃহবধূর মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে প্রজেক্ট মালিক ও তার কর্মচারীরা পালিয়ে যায়।

জানা যায়, উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের সুন্দরবন প্রজেক্ট নামীয় মুরগির খামারে শিয়ালের উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে চারপাশে বৈদ্যুতিক ফাঁদ দেন খামার মালিকরা। সকালে একই গ্রামের জহুর আলী মোল্লার স্ত্রী রূপবান বেগম ওই খামারের মধ্যে গরুর জন্য ঘাস কাটতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান।

নিহত গৃহবধূর ছেলে আব্দুস সবুর জানান, সকালে তার মা ছাগলের জন্য ঘাস কাটতে গিয়েছিল সুন্দরবন প্রজেক্টের ভেতরে। এর আগে গতকাল প্রজেক্টের ম্যানেজার মাকসুদ প্রজেক্টের মধ্যে বেড়ে ওঠা ঘাস কেটে নেওয়ার জন্য তার মাকে পরামর্শ দিয়েছিল।

তিনি আরও জানান, দুপুর গড়াতে গেলেও তার মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এক পর্যায়ে প্রতিবেশিসহ আশপাশের বাড়িগুলোতে খোঁজ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ সময় পেরিয়ে গেলেও তার মা ফিরছিল না। এক পর্যায়ে আব্দুর রহমান-সহ গ্রামবাসীরা প্রজেক্টের মধ্যে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া তার আটকে তার মায়ের মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর দেয়।

দুর্ঘটনার সময় প্রজেক্টে উপস্থিত থাকা মাকসুদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সুন্দরবন প্রজেক্টের মালিক নুর ইসলাম জানান, খবর পেয়ে প্রজেক্টে পৌঁছান তিনি। শিয়ালের উপদ্রব বেশি হওয়ায় রাতে প্রজেক্টের চারপাশে জিআই তার দিয়ে তৈরি করা বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে রাখা হয়। হয়তো ভুলবশত মাকসুদ সকালে বিদ্যুতের সংযোগ খুলে রাখেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। 

শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির মোল্যা জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। 

শাহাজান সিরাজ/মাহফুজ