ক্যাপশন: স্কুলগামী কয়েকজন শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছে। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়ন থেকে তোলা/ খবরের কাগজ
প্রত্যাশার সেতু এখন মরণফাঁদ নতুন চেয়ে মিলছে সংস্কারের আশ্বাস
আসাদ জামান, মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়ন। আট বছর আগে এই এলাকার জৈল্যা খালের ওপর একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়। শুরুতে এই সেতুকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। কিন্তু এই সেতুটিই এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সেতুটির রেলিং ভেঙে গেছে। কাঠের পাটাতনে তৈরি হয়েছে বড় বড় ছিদ্র। এ ছাড়া নড়বড়ে অবকাঠামোর কারণে প্রতিমুহূর্তে রয়েছে সেতু ভেঙে পানিতে পড়ে প্রাণহানির শঙ্কা।
অথচ এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করা হোক। যদিও এই দাবি একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের কাছে করেও কোনো ফল না পাওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে খোদ জনপ্রতিনিধির মুখে। অবশ্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ মিলেছে সেতুটি সংস্কারের আশ্বাস।
বলধারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় মাত্র ২ লাখ টাকা ব্যয়ে জৈল্যা খালের ওপর প্রায় ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর রেলিং অনেক আগেই ভেঙে পড়েছে। পাটাতনের অসংখ্য স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় ছিদ্র। কোথাও কোথাও কাঠ উঠে গিয়ে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে। হেঁটে কিংবা বাইসাইকেল চালিয়ে ব্রিজ পার হওয়াটাই যেন রীতিমতো এক দুঃসাহসিক অভিযান। সেতুর দক্ষিণ পাশেই অবস্থিত জৈল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরা।
স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে তারা ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে ব্রিজটি এখন জননিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। তাদের আশঙ্কা-যেকোনো মুহূর্তেই ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা জানান, সংস্কারের আশ্বাস বহুবার পেলেও বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ তারা দেখেননি। এ অবস্থায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আবুল কাশেম মিয়া নামে স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘আমার জীবনে অনেক ব্রিজ দেখেছি, কিন্তু এমন ভয়ানক অবস্থা কখনো দেখিনি। দিনে দিনে শুধু খারাপই হচ্ছে। আমরা না জানি কখন একটা বড় দুর্ঘটনার খবর শুনব।’
শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলে, ‘ব্রিজের ওপর হাঁটতে ভয় লাগে। মাঝেমধ্যে পাটাতনের ফাঁকার মধ্যে পা ঢুকে যায়। আমার স্কুলের অনেকে ব্যথাও পেয়েছে। আর বৃষ্টির দিনে আরও বেশি ভয় করে। আমাদের কথা চিন্তা করে হলেও এখানে একটি নতুন ব্রিজ বানানো হোক।’
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সালমা বেগম বলেন, ‘আমার ছোট মেয়েটা জৈল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়েই স্কুলে যায়। আমি প্রতিদিন ওর জন্য দোয়া করি যেন নিরাপদে যেতে পারে। কিন্তু কতদিন এভাবে চলবে?’
আবদুর রহমান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সেতুর যে অবস্থা তাতে আমাদের গ্রামের কেউ মারা গেলে তার খাটিয়া নিয়ে কবরস্থানে যাওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এখানে দ্রুত একটি মজবুত সেতু নির্মাণ করা হোক।’
মজিবর রহমান নামে এক কৃষক বলেন, ‘কৃষিপণ্য বাজারে নিতে হলে আমাদের এই ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সব সময় ভয় করে, বড় বোঝা নিয়ে যদি ফেঁসে (আটকে) যাই?’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘জৈল্যার এই ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজটি এখন আর শুধু একটি অবকাঠামোগত সমস্যা নয়, এটি হয়ে উঠেছে জীবন-মরণের প্রশ্ন। আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করেছি। যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যার দায় এড়ানো যাবে না।’
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহাগ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। জনগণের নিরাপত্তা বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে ব্রিজটির সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ক্যাপশন: স্কুলগামী কয়েকজন শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছে। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়ন থেকে তোলা/ খবরের কাগজ
প্রত্যাশার সেতু এখন মরণফাঁদ নতুন চেয়ে মিলছে সংস্কারের আশ্বাস
আসাদ জামান, মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়ন। আট বছর আগে এই এলাকার জৈল্যা খালের ওপর একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়। শুরুতে এই সেতুকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। কিন্তু এই সেতুটিই এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সেতুটির রেলিং ভেঙে গেছে। কাঠের পাটাতনে তৈরি হয়েছে বড় বড় ছিদ্র। এ ছাড়া নড়বড়ে অবকাঠামোর কারণে প্রতিমুহূর্তে রয়েছে সেতু ভেঙে পানিতে পড়ে প্রাণহানির শঙ্কা।
অথচ এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করা হোক। যদিও এই দাবি একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের কাছে করেও কোনো ফল না পাওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে খোদ জনপ্রতিনিধির মুখে। অবশ্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ মিলেছে সেতুটি সংস্কারের আশ্বাস।
বলধারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় মাত্র ২ লাখ টাকা ব্যয়ে জৈল্যা খালের ওপর প্রায় ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর রেলিং অনেক আগেই ভেঙে পড়েছে। পাটাতনের অসংখ্য স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় ছিদ্র। কোথাও কোথাও কাঠ উঠে গিয়ে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে। হেঁটে কিংবা বাইসাইকেল চালিয়ে ব্রিজ পার হওয়াটাই যেন রীতিমতো এক দুঃসাহসিক অভিযান। সেতুর দক্ষিণ পাশেই অবস্থিত জৈল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরা।
স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে তারা ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে ব্রিজটি এখন জননিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। তাদের আশঙ্কা-যেকোনো মুহূর্তেই ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা জানান, সংস্কারের আশ্বাস বহুবার পেলেও বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ তারা দেখেননি। এ অবস্থায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আবুল কাশেম মিয়া নামে স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘আমার জীবনে অনেক ব্রিজ দেখেছি, কিন্তু এমন ভয়ানক অবস্থা কখনো দেখিনি। দিনে দিনে শুধু খারাপই হচ্ছে। আমরা না জানি কখন একটা বড় দুর্ঘটনার খবর শুনব।’
শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলে, ‘ব্রিজের ওপর হাঁটতে ভয় লাগে। মাঝেমধ্যে পাটাতনের ফাঁকার মধ্যে পা ঢুকে যায়। আমার স্কুলের অনেকে ব্যথাও পেয়েছে। আর বৃষ্টির দিনে আরও বেশি ভয় করে। আমাদের কথা চিন্তা করে হলেও এখানে একটি নতুন ব্রিজ বানানো হোক।’
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সালমা বেগম বলেন, ‘আমার ছোট মেয়েটা জৈল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়েই স্কুলে যায়। আমি প্রতিদিন ওর জন্য দোয়া করি যেন নিরাপদে যেতে পারে। কিন্তু কতদিন এভাবে চলবে?’
আবদুর রহমান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সেতুর যে অবস্থা তাতে আমাদের গ্রামের কেউ মারা গেলে তার খাটিয়া নিয়ে কবরস্থানে যাওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এখানে দ্রুত একটি মজবুত সেতু নির্মাণ করা হোক।’
মজিবর রহমান নামে এক কৃষক বলেন, ‘কৃষিপণ্য বাজারে নিতে হলে আমাদের এই ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সব সময় ভয় করে, বড় বোঝা নিয়ে যদি ফেঁসে (আটকে) যাই?’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘জৈল্যার এই ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজটি এখন আর শুধু একটি অবকাঠামোগত সমস্যা নয়, এটি হয়ে উঠেছে জীবন-মরণের প্রশ্ন। আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করেছি। যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যার দায় এড়ানো যাবে না।’
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহাগ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। জনগণের নিরাপত্তা বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে ব্রিজটির সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ক্যাপশন: স্কুলগামী কয়েকজন শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পার হচ্ছে। মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়ন থেকে তোলা : খবরের কাগজ
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়ন। আট বছর আগে এই এলাকার জৈল্যা খালের ওপর একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়। শুরুতে এই সেতুকে ঘিরে স্থানীয়দের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়। কিন্তু এই সেতুটিই এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সেতুটির রেলিং ভেঙে গেছে। কাঠের পাটাতনে তৈরি হয়েছে বড় বড় ছিদ্র। এ ছাড়া নড়বড়ে অবকাঠামোর কারণে প্রতিমুহূর্তে রয়েছে সেতু ভেঙে পানিতে পড়ে প্রাণহানির শঙ্কা।
অথচ এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষ যাতায়াত করেন। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে এখানে একটি টেকসই সেতু নির্মাণ করা হোক। যদিও এই দাবি একাধিকবার সংশ্লিষ্টদের কাছে করেও কোনো ফল না পাওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে খোদ জনপ্রতিনিধির মুখে। অবশ্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ মিলেছে সেতুটি সংস্কারের আশ্বাস।
বলধারা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিএসপি প্রকল্পের আওতায় মাত্র ২ লাখ টাকা ব্যয়ে জৈল্যা খালের ওপর প্রায় ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই বেইলি সেতুটি নির্মাণ করা হয়।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুর রেলিং অনেক আগেই ভেঙে পড়েছে। পাটাতনের অসংখ্য স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় ছিদ্র। কোথাও কোথাও কাঠ উঠে গিয়ে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে। হেঁটে কিংবা বাইসাইকেল চালিয়ে ব্রিজ পার হওয়াটাই যেন রীতিমতো এক দুঃসাহসিক অভিযান। সেতুর দক্ষিণ পাশেই অবস্থিত জৈল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করছে। ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন অভিভাবকরা।
স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর ধরে তারা ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে ব্রিজটি এখন জননিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকিতে পরিণত হয়েছে। তাদের আশঙ্কা-যেকোনো মুহূর্তেই ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। স্থানীয়রা জানান, সংস্কারের আশ্বাস বহুবার পেলেও বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ তারা দেখেননি। এ অবস্থায় দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
আবুল কাশেম মিয়া নামে স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘আমার জীবনে অনেক ব্রিজ দেখেছি, কিন্তু এমন ভয়ানক অবস্থা কখনো দেখিনি। দিনে দিনে শুধু খারাপই হচ্ছে। আমরা না জানি কখন একটা বড় দুর্ঘটনার খবর শুনব।’
শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলে, ‘ব্রিজের ওপর হাঁটতে ভয় লাগে। মাঝেমধ্যে পাটাতনের ফাঁকার মধ্যে পা ঢুকে যায়। আমার স্কুলের অনেকে ব্যথাও পেয়েছে। আর বৃষ্টির দিনে আরও বেশি ভয় করে। আমাদের কথা চিন্তা করে হলেও এখানে একটি নতুন ব্রিজ বানানো হোক।’
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক সালমা বেগম বলেন, ‘আমার ছোট মেয়েটা জৈল্যা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। প্রতিদিন এই ব্রিজ দিয়েই স্কুলে যায়। আমি প্রতিদিন ওর জন্য দোয়া করি যেন নিরাপদে যেতে পারে। কিন্তু কতদিন এভাবে চলবে?’
আবদুর রহমান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘সেতুর যে অবস্থা তাতে আমাদের গ্রামের কেউ মারা গেলে তার খাটিয়া নিয়ে কবরস্থানে যাওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, জনগণের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে এখানে দ্রুত একটি মজবুত সেতু নির্মাণ করা হোক।’
মজিবর রহমান নামে এক কৃষক বলেন, ‘কৃষিপণ্য বাজারে নিতে হলে আমাদের এই ব্রিজ ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু সব সময় ভয় করে, বড় বোঝা নিয়ে যদি ফেঁসে (আটকে) যাই?’
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘জৈল্যার এই ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রিজটি এখন আর শুধু একটি অবকাঠামোগত সমস্যা নয়, এটি হয়ে উঠেছে জীবন-মরণের প্রশ্ন। আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবগত করেছি। যদি এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যার দায় এড়ানো যাবে না।’
সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহাগ খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। জনগণের নিরাপত্তা বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে ব্রিজটির সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’