ঢাকা ২৯ আষাঢ় ১৪৩২, রোববার, ১৩ জুলাই ২০২৫
English

ঝড়ে ভেঙে গেছে ঘর, ঈদ কেটেছে না খেয়ে

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ১০:০১ এএম
আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ১০:০৫ এএম
ঝড়ে ভেঙে গেছে ঘর, ঈদ কেটেছে না খেয়ে
ছবি: খবরের কাগজ

হঠাৎ ঝড়ো বৃষ্টি, মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যাপার। কিন্তু সেই ঝড়ই পাল্টে দেয় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার দর্জিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল বাসেদ ও বাসিরন বেগমের জীবন। যে ঘর একদিন ছিল তাদের একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়, সেটি এখন কেবল ভাঙা টিন আর ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন বাঁশের বেড়ার মাথা গোঁজার ঠিকানা। 

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া বাসেদ আজ স্ত্রী ও একমাত্র শিশুসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে বসবাস করছেন একটি অস্থায়ী ভাঙা টিনের ছাউনির নিচে। খাবার নেই, নিরাপত্তা নেই। ঈদের দিনটিও কেটেছে অনাহারে ও কান্নায়।

এর আগে গত ১১ মে ঝড়ে তাদের একমাত্র কাঁচাঘরটি সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। এর পর থেকেই মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন তারা। স্থানীয় কিছু যুবক মিলে ভাঙা টিন ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী একটি ছাউনি তৈরি করে দিলেও সামান্য বৃষ্টি বা বাতাসেই সেটি নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাহীন অবস্থায় স্ত্রী ও শিশুকে নিয়ে বাস করছেন বাসেদ। তিনি বলেন, ‘আমার একমাত্র ঘরটি ঝড়ে ভেঙে গেছে। অনেক কষ্টে জীবনযাপন করছি। কয়েকবার উপজেলা পরিষদে গিয়েছি। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি। খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটাচ্ছি।’

বাসিরন বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী অসুস্থ। কিছুই করতে পারেন না। ঈদও কেটেছে না খেয়ে কান্না করে। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো লোক দেখতে আসা তো দূরের কথা, খবরটুকুও নেয়নি। আমাদের একটা ঘরের ব্যবস্থা হলে অনেক উপকার হতো।’ 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একসময় পাথর ভাঙার শ্রমিক ছিলেন বাসেদ। বয়স ও অসুস্থতার কারণে এখন কর্মক্ষম নন। সামান্য আয়ে সংসার চালাতেন স্ত্রী। ঘর হারানোর পর সেই আয়ের পথও বন্ধ। এই দুঃসময়ে উপজেলা প্রশাসনের শরণাপন্ন হলেও মেলেনি কোনো সহায়তা।

আব্দুর সাত্তার নামে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘আমরা নিজেরাই কয়েকবার খবর দিয়েছি। কিন্তু বাসেদের ঘর দেখতে কোনো সরকারি লোক আসেনি।’ জাকির হোসেন নামে আরেক প্রতিবেশী বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে কোনো রকম থাকার ঘরটি দাঁড় করিয়ে দিয়েছি।’ 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি জানা ছিল না। গত সপ্তাহে আমরা জেনেছি। সে সময় ইউএনও স্যারসহ যাওয়ার কথা ছিল। পরে নানা জটিলতায় যাওয়া হয়নি। আশা করছি, ঈদের ছুটির পর এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া উপজেলার ইউএনও আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, ‘ভুক্তভোগীকে আমরা টিন দেব, টাকাও দেব।’

পরকীয়ার অভিযোগে গাছে বাঁধা হলো বিএনপি নেতা ও প্রবাসীর স্ত্রীকে

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১০:১২ এএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৪ এএম
পরকীয়ার অভিযোগে গাছে বাঁধা হলো বিএনপি নেতা ও প্রবাসীর স্ত্রীকে
ছবি: খবরের কাগজ

মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত থাকার অভিযোগে হাতেনাতে ধরে স্থানীয়রা এক বিএনপি নেতাকে ওই প্রবাসীর স্ত্রীসহ গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

গত শুক্রবার (১১ জুলাই) গভীর রাতে উপজেলার ধামশ্বর ইউনিয়নের চর দেশগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত মো. সিরাজুল ইসলাম মুনজেল (৪৫) ধামশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ওই প্রবাসীর স্ত্রীর সঙ্গে এক ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক নিয়ে এলাকাজুড়ে গুঞ্জন চলছিল। শুক্রবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে সিরাজুল গোপনে ওই নারীর ঘরে ঢুকলে স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে উত্তেজিত জনতা তাকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে এবং ভোর পর্যন্ত ওই অবস্থায় রাখা হয়।

এ বিষয়ে ধামশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান পিন্টু বলেন, ‘তারা দুজনেই অনৈতিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন। বর্তমানে বিষয়টি সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা চলছে। দলের পক্ষ থেকেও তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ধামশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস আলী জানান, ‘দুজনেই এখন বিয়ে করতে রাজি। গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা চলছে।’

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-মামুন বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। তবে এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আসাদ/মেহেদী/

প্রশ্ন সোহাগের স্ত্রীর চাঁদা না দিলেই কি মানুষকে পাথর দিয়ে মেরে ফেলা যায়?

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৪ এএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:২৫ এএম
চাঁদা না দিলেই কি মানুষকে পাথর দিয়ে মেরে ফেলা যায়?
নির্মমভাবে হত্যার শিকার ব্যবসায়ী সোহাগের কবরের পাশে নির্বাক দাঁড়িয়ে আছেন তার স্ত্রী-সন্তানসহ স্বজনরা। গতকাল বরগুনা সদরের ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রামে। ছবি: খবরের কাগজ

ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় নির্মমভাবে হত্যার শিকার হওয়া লালচাঁদ ওরফে সোহাগের (৩৯) পরিবারে চলছে মাতম। বাবাকে হারিয়ে নির্বাক ১০ বছরের ছেলে সোহান ও ১৪ বছরের মেয়ে সোহানা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সোহাগের স্ত্রী লাকি বেগম প্রশ্ন করেন, চাঁদা না দিলেই কি মানুষকে পাথর দিয়ে মেরে ফেলা যায়?

শনিবার (১২ জুলাই) সোহাগের নানার বাড়ি বরগুনা সদরের ঢলুয়া ইউনিয়নের ইসলামপুরে দেখা যায় এ আহাজারি।এর আগে শুক্রবার তার লাশ ঢাকা থেকে এনে সেখানে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয়। জানাজায় স্থানীয় কয়েক শ মানুষ অংশ নেন। তারা সবাই এই হত্যার বিচার চেয়েছেন।

স্বজনদের ভাষ্য, গত কয়েক মাস ধরে একদল লোক সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতি মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। সোহাগ তাতে রাজি না হওয়ায় তার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। গত বুধবার বিকেলে তাকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে চাঁদা দিতে চাপ প্রয়োগ করা হয়। কিন্তু তিনি সাড়া না দেওয়ায় নির্মমভাবে পাথর দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়।

নিহতের ছেলে সোহান আর মেয়ে সোহানা শুধু জানে তাদের বাবা এখন নেই। সোহান বলে, ‘আমরা এখন এতিম হয়ে গেছি। বাবাকে মেরে ফেলেছে ওরা।’ মেয়ে সোহানা বলে, ‘আমরা চাই বাবার হত্যাকারীদের শাস্তি হোক।’

স্ত্রী লাকি বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘চাঁদা না দিলেই কি মানুষকে পাথর দিয়ে মেরে ফেলা যায়? আমার স্বামী বাঁচতে চেয়েছিল, তবু মারল। ওরা তার ব্যবসা সহ্য করতে পারছিল না। মাসে মাসে দুই লাখ টাকা চেয়েছে। কিন্তু সে চাঁদা দিতে চায়নি বলে ওরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।’ 

সোহাগের বোন ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার ভাই প্রায় ১৫ বছর ধরে ব্যবসা করছিল। চাঁদা দিতে না চাওয়ায় ওর ব্যবসা দখলের পাঁয়তারা শুরু করে হত্যাকারীরা। যেভাবে মেরেছে কোনো পশুকেও কেউ এমন করে না।’

সোহাগের মামা মন্টু মিয়া বলেন, ‘ও অনেক ভালো ছেলে ছিল। ওর মৃত্যু শুধু আমাদের না বরগুনার মানুষের মনেও কষ্ট দিয়েছে। যারা এভাবে খুন করেছে আমরা তাদের ফাঁসি চাই।’

সোহাগের জন্ম বরগুনা সদরের ইসলামপুরে নানার বাড়িতে হলেও তার গ্রামের বাড়ি একই জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া এলাকায়। সোহাগের বয়স যখন মাত্র সাত মাস, তখন বজ্রপাতে তার বাবা আইউব আলী মারা যান। এরপর মা আলেয়া বেগম তিন সন্তানকে নিয়ে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় পাড়ি জমান। ঢাকাতেই বেড়ে ওঠেন সোহাগ। দীর্ঘদিন ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন তিনি।

সিকৃবিতে শহিদ মুগ্ধ কর্নার উদ্বোধন

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৯:০৩ এএম
সিকৃবিতে শহিদ মুগ্ধ কর্নার উদ্বোধন
ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) জাতীয় দিবস উদযাপন কমিটির মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘শহিদ মুগ্ধ কর্নার’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

শনিবার(১২ জুলাই) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে কর্নারের উদ্বোধন করেন সিকৃবির ভিসি প্রফেসর ড. মো. আলিমুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পাশে স্থাপিত আর্সেনিক ও আয়রনমুক্ত বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ব্যবস্থাপনার (পানির পাম্প) নামটি ‘শহিদ মুগ্ধ কর্নার’ করা হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়।

কর্নার উদ্বোধন-পরবর্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিকৃবির ভিসি প্রফেসর ড. আলিমুল ইসলাম বলেন, ‘শহিদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ ছিলেন সময়ের এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। পানি লাগবে? পানি? একটি স্লোগান নয়, এটি ছাত্রসমাজের আত্মদর্শনের প্রতীক। এটি একটি শপথ। ন্যায্য অধিকার আর সম্মানের পক্ষে দাঁড়ানোর এক সাহসী উচ্চারণ।’

ভিসি বলেন, ‘তার (মুগ্ধ) আত্মত্যাগ কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনার অংশ নয়, বরং দেশের তরুণ সমাজের সাহসিকতার প্রতীক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তার স্মরণে নির্মিত এই কর্নার কেবল বিশুদ্ধ পানির উৎস নয়, এটি হবে আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য নৈতিকতা, গণতন্ত্র ও মানবিক চেতনার এক প্রেরণাস্থল। কর্নার শুধু মুগ্ধর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো নয়, এটি আমাদের সবার জন্য একটি বার্তা বহন করে- মানবিকতা, মূল্যবোধ এবং ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করবে এবং নিজেদের মধ্যে নৈতিকতা, দায়িত্ববোধ ও সাহসিকতা গড়ে তুলবে।’

সিকৃবির ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সামিউল আহসান তালুকদারের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এ টি এম মাহবুব-ই-ইলাহী। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

তানোরে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:৫৩ এএম
তানোরে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ
তানোরে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে চাষাবাদ।ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহীর তানোর উপজেলার মোহর গ্রামের কৃষক নাসির উদ্দীন। ঘোড়ার সঙ্গে মই বেঁধে রোপা আমনের জমিতে চাষাবাদ করে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। গরু-বলদের সংকটে এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ কৃষকদের কাছে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে।

নাসির উদ্দীন বলেছেন, ‘গত সপ্তাহে ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ শেষ করি। কিন্তু মই দেওয়ার সময় গরু না পেয়ে ঘোড়াকে কাজে লাগাই। এটা দেখে আশপাশের কৃষকরাও আগ্রহ দেখাতে শুরু করেন।’

তিনি জানান, প্রথমে নিজের দুই বিঘা জমিতে চাষ করেন। তার পর অন্যের জমিতে মাত্র এক ঘণ্টা কাজ করে ৪০০ টাকা আয় করেন। এর পর থেকেই শুরু হয় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ঘোড়া দিয়ে মই চাষ। প্রতিদিন তিনি তিন থেকে চার ঘণ্টা কাজ করে গড়ে ৭ থেকে ৮ বিঘা জমি চাষ করছেন।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, মই চাষের জন্য গরু কিংবা বলদ এখন আর আগের মতো সহজলভ্য নয়। ফলে ঘোড়া দিয়ে চাষে সময় ও খরচ দুটিই কমছে। স্থানীয় এক জমির মালিক হামিদুর রহমান বলেন, ‘গরু দিয়ে চাষ করতে সময় ও শ্রম বেশি লাগে। নাসিরের ঘোড়া দিয়ে মই চাষে আমার সাড়ে সাত বিঘা জমি এক দিনে চাষ হয়ে গেল। খরচও কম, মাত্র ১৫০০ টাকা।’

তানোর সদর, হাতিনান্দা ও চুনিয়াপাড়া এলাকার আরও কয়েকজন কৃষক জানান, এক সময় তাদের বাড়িতে একাধিক গরু, বলদ, মহিষ, লাঙল ও গরুর গাড়ি থাকত। এখন সেসব নেই। আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার যেমন বেড়েছে, তেমনি হারিয়ে যাচ্ছে বাংলার কৃষির ঐতিহ্য। তবে ঘোড়া দিয়ে মই চাষ কিছুটা হলেও সেই ঐতিহ্যকে নতুনভাবে ফিরিয়ে আনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

তানোর উপজেলার কৃষক সুলতান আহম্মেদ বলেন, ‘আমাদের গ্রামে এখন গরুর হাল পাওয়া কঠিন। অথচ ট্রাক্টর দিয়ে হালচাষ করার পরও জমি সমান করার জন্য মই দরকার হয়। সেই কাজটাই এখন ঘোড়ায় ভালোভাবে হচ্ছে।’

চুনিয়াপাড়ার কৃষক আশরাফুল ইসলাম রঞ্জুর ভাষ্য, ‘আগে গরু ছাড়া চাষের কথা কল্পনাই করা যেত না। এখন আধুনিক যন্ত্রের যুগে এসব স্মৃতিতে পরিণত হয়েছে। তবে নাসিরের মতো কৃষকরা আবার নতুনভাবে ভাবতে শেখাচ্ছেন।’

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গরুর বলদের সংকটের কারণে কৃষকরা চাষাবাদে বিকল্প পদ্ধতির দিকে ঝুঁকছেন। তবে ঘোড়া দিয়ে মই চাষ এ এলাকায় প্রথম বলেই তারা বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

 

নড়াইলে ফুটবল খেলা নিয়ে ১ জনকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশ: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪২ এএম
আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৩ এএম
নড়াইলে ফুটবল খেলা নিয়ে ১ জনকে কুপিয়ে হত্যা
কালিয়া থানা।

নড়াইলের কালিয়ায় ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। 

শুক্রবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যার দিকে পৌরসভার কুলশুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

নিহত জিল্লুর রহমান সরদার (৫৫) কালিয়া পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কুলশুর গ্রামের মৃত হাসেম সরদারের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে কালিয়ার কুলশুর গ্রামের এখলাস উদ্দিন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে বাবুপুর ও কুলশুর গ্রামের মধ্যে ফুটবল খেলা চলছিল। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জের ধরে বাবুপুর দলের সমর্থকরা কুলশুর গ্রামের জিল্লুর রহমানকে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা জিল্লুরকে কালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে পাঠান। খুমেক হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

কালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে একজন খুন হয়েছেন। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তবে শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ মামলা করেনি।