ঢাকা ২৮ আষাঢ় ১৪৩২, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
English

কর্মস্থলে ফেরা শুরু পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড়

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২৫, ০৩:২৩ পিএম
আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম
পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে যাত্রীদের ভিড়
ছবি: খবরের কাগজ

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট দিয়ে রাজধানীমুখী হচ্ছেন কর্মজীবীরা। ঈদের ছুটি শেষে আগামী রবিবার অফিস খুলবে। আর এরইমধ্যে ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ।

শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে পাটুরিয়া ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটে দেখা যায়, ফেরি ও লঞ্চ দুটোতেই যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। বাস, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেলে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাট হয়ে মানুষ পাটুরিয়ায় আসছেন।

যাত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল আরোহী।

পাটুরিয়া লঞ্চঘাটে ভিড় ছিল বেশি। সকাল থেকে প্রতিটি লঞ্চ ধারণক্ষমতার তুলনায় বেশি যাত্রী নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে আসতে দেখা গেছে। 

সাভারে যাবেন বাগেরহাট থেকে আসা নুসরাত জাহান। তিনি বলেন, ভিড় একটু বেশি, তবে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রওনা দিয়েছি। নিরাপদেই লঞ্চ পার হয়ে যাচ্ছি।

ফেরিঘাটে যাত্রী নিয়ে আসা বাসচালক শরীফুল ইসলাম বলেন, অন্য ঈদের তুলনায় এবার ফেরিঘাটে কোনো জটলা হয়নি। নির্বিঘ্নে গাড়ি পার হচ্ছে, যাত্রীরাও শান্তিতে ফিরছেন।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ১৬টি ফেরি এবং ১৮টি লঞ্চ চলাচল করছে। যাত্রীদের চাপ সামাল দিতে প্রতিটি ফেরি ও লঞ্চ নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি ট্রিপ দিচ্ছে।

শুধু পাটুরিয়া নয়, মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাটেও বাড়ছে যাত্রীর চাপ। পাবনার কাজিরহাট থেকে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে যাত্রীরা আরিচা ঘাটে এসে নেমে ঢাকার দিকে রওনা দিচ্ছেন। বিশেষ করে পাবনা, সিরাজগঞ্জ থেকে আসা যাত্রীরা এই রুটে বেশি ব্যবহার করছেন।

যাত্রীরা জানান, এবার ঈদের ছুটি শেষে ফিরতি যাত্রায় সড়কে কিংবা ফেরিঘাটে কোনো দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়নি তাদের। পুলিশ, নৌপুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বিত ব্যবস্থাপনায় যাত্রাপথে ছিল না কোনো বিশৃঙ্খলা।

পটুয়াখালীর যাত্রী জাহিদ হাসান বলেন, আমরা ভয়ে ছিলাম যে, ফেরার সময় কষ্ট হবে। কিন্তু কোনো সমস্যা হয়নি। ফেরিতে সময়মতো উঠেছি, শান্তিতেই যাচ্ছি ঢাকার পথে।

বিআইডব্লিউটি আরিচা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত ডিজিএম আব্দুস সালাম জানান, আজ সকাল থেকেই যাত্রী ও যানবাহনের চাপ অন্যান্য দিনের চেয়ে একটু বেশি। সেজন্য আমাদের প্রস্তুতিও ভালো রয়েছে। ১৬টি ফেরি দিয়ে যাত্রী ও যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। যেহেতু পাটুরিয়া এলাকায় যাত্রী এবং যানবাহন কম তাই ফেরিকে এই ঘাটে অপেক্ষা না করিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নদীতে পানি বৃদ্ধি ও স্রোতের কারণে কিছুটা সময় বেশি লাগলেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না পারাপারে।

আসাদ জামান/অমিয়/

শরীয়তপুর সুপার পরিবহন থেকে যুবদল নেতার চাঁদা দাবি, পরিবহন চলাচলে বাধা

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪২ পিএম
শরীয়তপুর সুপার পরিবহন থেকে যুবদল নেতার চাঁদা দাবি, পরিবহন চলাচলে বাধা
ছবি: খবরের কাগজ

যাত্রাবাড়ীতে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, শ্রমিক মারধর ও বাস ভাঙচুরের অভিযোগ তুলেছেন শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানা, ২৬ ফিল্ড আর্টিলারি রেজিমেন্ট, শরীয়তপুর পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিম। অভিযোগ রয়েছে, তিনি আওয়ামী লীগ নেতা আবু বক্কর সিদ্দিক হাবু হত্যা মামলারও প্রধান আসামি ছিলেন।

শরীয়তপুর জেলার সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস লিমিটেড পদ্মা সেতু চালুর পর থেকে শরীয়তপুর-ঢাকা রুটে নিয়মিত যাত্রীসেবা দিয়ে আসছে। কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর থেকে যাত্রাবাড়ী থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মুশফিকুর রহমান ফাহিম পরিবহন মালিকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে সাত লাখ টাকা করে চাঁদা দাবি করে আসছেন। সম্প্রতি তিনি এককালীন ৫০ লাখ টাকা দাবি করলে মালিকপক্ষ তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এর জের ধরে গত ৬ জুলাই থেকে যাত্রাবাড়ী থেকে বাস চলাচলে বাধা দেওয়া হয়। এরপর ৯ জুলাই ধোলাইপাড় এলাকায় একটি বাস (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৯৬৭৩) ভাঙচুর করা হয়। ১০ জুলাই সকাল ৬টায় গোমতি ফিলিং স্টেশনের সামনে দুটি বাস (ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৯৩৮৫ ও ঢাকা মেট্রো-ব-১৫-৯১৮৬) হামলার শিকার হয়। হামলাকারীরা হাতুড়ি দিয়ে বাসের সামনের গ্লাস ও পাশের জানালার কাচ ভেঙে দেয়। সর্বশেষ ১১ জুলাই সকালে মালিক গ্রুপের এক শ্রমিককে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের এক বাসের চালক নয়ন বেপারী বলেন, আজকে সকালেও যাত্রাবাড়ীতে পাঁচ-সাত জন এসে আমাকে মেরেছে। বলেছে, চাঁদা না দিয়ে এই রুটে তোরা বাস চালাতে পারবি না। আমি এটার বিচার চাই।

শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন হাওলাদার বলেন, একজন রাজনীতিক যুবদল নেতা দীর্ঘদিন ধরে আমাদের জিম্মি করে রেখেছেন। চাঁদা না দিলে বাস চালাতে দিচ্ছেন না। হামলা, ভাঙচুর ও মারধরের শিকার হচ্ছি আমরা। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পরিবহন সেক্টর ধ্বংস হয়ে যাবে।

শরীয়তপুর আন্তজেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারুক চৌকিদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই এই খাতে চাঁদাবাজি হচ্ছে। কিন্তু সেটা সহনশীল ছিল। ৫ আগস্টের পরে এই যুবদল নেতা ফাহিম চাঁদাবাজি করে আসছেন এবং আমাদের শ্রমিকদের মারছেন ও গাড়ি ভাঙচুর করছেন পাঁচ কোটি টাকা চাঁদার জন্য। এখন শরীয়তপুরে ২০ লাখ জনগণ সবাই ভোগান্তিতে পড়ছেন, কারণ যাত্রাবাড়ীতে আমাদের গাড়ি যেতে দিচ্ছে না এই ফাহিম। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা হুমকিতে পড়বে। আমরা শ্রমিক ইউনিয়ন অনেক ধৈর্য ধরে বসে আছি। এটা যদি সঠিক কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আমরা শ্রমিকরাই আন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।

মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার বলেন, আমরা পদ্মা সেতুর পর থেকে আন্তঃজেলা যাত্রীসেবায় নিবেদিতভাবে কাজ করে আসছি। ৫ আগস্টের পরে যুবদল নেতা ফাহিম বিভিন্ন পরিবহন দখল করে এবং প্রতিটি গাড়ি থেকে প্রতিদিন ১০০–২০০ টাকা করে তিনি নেন। সম্প্রতি তিনি আমাদের কাছে দশটি বাসের প্লেস চায়, যেটা মালিক গ্রুপের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ আমাদের ২০০টি গাড়ির মধ্যে ১৭০টি চলে, আর বাকি গাড়ি বসে থাকে। আর আমরা এই রুট ছাড়া অন্য কোনো জেলায় গাড়ি চালাতে পারছি না। এরপর থেকেই তিনি আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করছেন, শ্রমিক পেটাচ্ছেন। আমরা ন্যায়বিচার চাই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত যুবদল নেতা মুশফিকুর রহমান ফাহিম বলেন, মূল ঘটনা হয়েছে আমাদের দুইটা পরিবহন নিয়ে। তারা হচ্ছে জেলা শহর, আমরা হচ্ছি ঢাকা থেকে একটি পরিবহন ছেড়েছি। আমাদের পরিবহন তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। আমাদের পরিবহনগুলো তারা বাধাগ্রস্ত করে। এই বিভিন্ন ঝামেলা তারা করে, এখন উল্টো আমি চাঁদাবাজ হয়ে গেছি। তারা যে অভিযোগ করেছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি। তারা তা খতিয়ে দেখছেন। যেহেতু ঘটনাস্থল ঢাকা মহানগর এলাকায়, তাই আমি ডিএমপির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথেও যোগাযোগ করেছি। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি, যাতে শরীয়তপুর থেকে ঢাকাগামী কোনো বাস এবং যাত্রী যাত্রাবাড়ীতে কোনো হয়রানির শিকার না হয়। বাস চলাচল নির্বিঘ্ন রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে।

রাজিব হোসেন রাজন/মাহফুজ

 

এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে ফেল করলেন জয়পুরহাটের জিৎ চন্দ্র মোহন

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৭:১০ পিএম
এক বিষয়ে পরীক্ষা দিয়ে দুই বিষয়ে ফেল করলেন জয়পুরহাটের জিৎ চন্দ্র মোহন
রেজাল্ট কার্ডে দেখা যায় তিনি কৃষি শিক্ষা ও গণিতে ফেল করেছেন। ছবি: সংগৃহীত

গতবছর গণিত বিষয়ে ফেল করায় এবার প্রস্তুতি নিয়ে সেই বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলেন জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার শ্রীকর্ণদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিৎ চন্দ্র মোহন। কিন্তু ফলাফল দেখে হতবাক তিনি। একটি বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিলেও ফলাফলে দেখা যায় দুই বিষয়ে তিনি ফেল করেছেন। এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার শ্রীকর্ণদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখার শিক্ষার্থী জিৎ চন্দ্র মোহন্ত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। সেই পরীক্ষায় তিনি শুধুমাত্র গণিত বিষয়ে অকৃতকার্য হন। পরে ২০২৫ সালে শুধুমাত্র গণিত বিষয়ে পুনরায় পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু অনলাইনে ফলাফলে তিনি দেখেন, তাকে গণিত ও কৃষি দুইটি বিষয়ে ফেল দেখানো হয়েছে। অথচ তার এডমিট কার্ডে শুধু গণিত বিষয়েই অংশগ্রহণের কথা উল্লেখ রয়েছে।

জিৎ চন্দ্র মোহন্ত বলেন, ২০২৪ সালে শুধু গণিতে ফেল করায় ২০২৫ সালে শুধুই গণিত বিষয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন ফলাফলে দেখছি কৃষিতেও ফেল দেখানো হয়েছে। কৃষি বিষয়ে আমি এবার পরীক্ষা দেইনি। তাহলে সেই বিষয়ে ফেল আসে কীভাবে। বুঝতে পারছিনা কী করব।

ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, বোর্ডের কোনো কারিগরি ত্রুটির কারণে এমন হতে পারে। বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করছি।

প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এটা দ্রুত বোর্ড কর্তৃপক্ষকে জানাব।

জিৎ চন্দ্র মোহনের রেজাল্ট কার্ড

সাগর কুমার/মাহফুজ

 

ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম
ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
ছবি: সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে রাসেল (২০) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার (১২ জুলাই) ভোরে উপজেলার মিনাপুর সীমান্তের ৩৫৩ নম্বর প্রধান পিলারের কাছে ভারতের অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত রাসেল হরিপুর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার নিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

স্থানীয় সূত্র ও বিজিবি জানিয়েছে, ভোর ৪টার দিকে রাসেলসহ কয়েকজন সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে গেলে ভারতের কিষাণগঞ্জ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে রাসেল ঘটনাস্থলেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। তার মরদেহ ভারতের অভ্যন্তরে প্রায় ২০০ গজ ভেতরে পড়ে রয়েছে।

ঘটনার পর থেকেই সীমান্ত এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিরাপত্তা জোরদারে সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। একইভাবে ভারতের পক্ষেও অতিরিক্ত বিএসএফ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

দিনাজপুরে অবস্থিত ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মইন হাসান জানান, ঘটনার পরপরই আমরা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছি। নিহতের মরদেহ ফেরত আনতে পতাকা বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আমরা ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি এবং কূটনৈতিকভাবে বিষয়টির সুরাহায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

নবীন হাসান/মাহফুজ 

 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৬:১৪ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩১ পিএম
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
ভুক্তভোগী নারী নওরিন সিদ্দিকা সংবাদ সম্মেলনে তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ধরেন। ছবি: খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে মারধর, জীবননাশের হুমকি, প্রতারণার অভিযোগে স্বামী অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস, এম তাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী স্ত্রী নওরিন সিদ্দিকা।

শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১১টায় জেলা শহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন গোপালগঞ্জ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই নারী নওরিন সিদ্দিকা লিখিত বক্তব্যে বলেন, পরিবারিকভাবে ২০১০ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি আমার সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস.এম তাজ উদ্দিনের বিয়ে হয়। আমাদের সংসারে ২ সন্তান রয়েছে। বিয়ের ১ বছর পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে আমার স্বামী তাজ উদ্দিন বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে আমাকে নির্যাতন শুরু করে। আমি ভদ্র পরিবারে সন্তান, মানুষের জীবনে বিয়ে একবার হয় বলে সকল নির্যাতন আমি সহ্য করে স্বামীর সংসার করেছি। আমার স্বামী একজন নারীলোভী প্রকৃতির মানুষ, তার পরকীয়া আমার কাছে ধরা পড়ে যাওয়ায় আমি বাধা দিই। এরপর থেকেই শুরু হয় আমার ওপর অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। আমার স্বামীর নির্যাতনের কারণে রক্তাক্ত অবস্থায় বার বার ঢাকা মেডিকেল ও গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বহু রেকর্ড আছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমার স্বামী তাজ উদ্দিন অর্থ মন্ত্রণালয়ে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। সে একজন সিবিএ নেতা ছিল। আমি বার বার তার অফিসে তার ঘৃণ্য এই কার্যকলাপের জন্য লিখিত আবেদন করেছি, কিন্তু তার ক্ষমতার কাছে তার অফিসও হার মেনেছে। আমি কোনো বিচার পাই নাই। আমি যাত্রাবাড়ি থানায়ও অভিযোগ করেছি, যাত্রাবাড়ি থানা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সহচর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিপি (বাগেরহাট বাড়ি) আমাকে ও আমার পরিবারকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আমাদের লালবাগের সরকারি বাসায় পাঠিয়ে দিয়ে আবারো নির্যাতন করেছে। এক পর্যায়ে আমাকে আমার স্বামী ঘরের ভিতরে আটকিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে এবং শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে, আশপাশে লোকজন টের পেয়ে ছুটে আসলে আমি বেঁচে যাই। সে আমার সঙ্গে প্রতারণা করে আমার ২ ছেলেকে ঢাকা নিয়ে গেছে। আমার সঙ্গে আমার সন্তানদের যোগাযোগ করতে দেয় না।

নারীলোভী আমার স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে অবশেষে গোপালগঞ্জ আদালতে মামলা দায়ের করি। আদালত আমাদেরকে ৩১শে অক্টোবর মীমাংসা করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। তারপরেও আমার নারীলোভী স্বামী তাজ উদ্দিন আমি বাসায় না থাকায় বিভিন্ন মেয়েদের নিয়ে বাসায় আসতো। পাশের বাসা থেকে এসব তথ্য আমাকে দিত। আমি জিজ্ঞেস করলে মারধর করতো। এক সময় আমি গোপন সূত্রে এক সময় জানতে পারলাম আমার স্বামী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী এলাকার শেখ আসমা সুলতানা নামক এক ডিভোর্সি নারীকে গোপনে বিবাহ করেছে ২০২৪ সালের ৮ই জুলাই। ওই বিয়ে করে সে আমার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ডিভোর্সের কাগজ পাঠিয়েছে, তাতে তারিখ দেওয়া আছে ২৪শে ডিসেম্বর ২০২৪। শুধু তাই নয়, সে আমার ভাইকে বার বার মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে জগন্নাথের ওই ভিপিকে দিয়ে।

ভুক্তভোগী নারী নওরিন সিদ্দিকা আরো বলেন, এখানেই শেষ নয়, আমার পাষণ্ড স্বামী জুলাই আন্দোলনের সময়কালে লালবাগ পুলিশের ধাওয়া খেয়ে জীবন বাঁচাতে কোমল মতি শিক্ষার্থীরা আমাদের কোয়াটারে আশ্রয় নিতে আসলে ও পুলিশ ডেকে তাদেরকে ধরিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারে পতনের পর ঐ সকল বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা তাকে বাসায় বার বার খুঁজতে আসলে তাকে পায় নাই। প্রায় দীর্ঘ ২ মাস সে পালিয়ে বেড়িয়েছে। এখন সে আবার পূর্বের ন্যায় দাপটের সহিত কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের মাধ্যমে আমি বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে আবেদন করছি যে, আমি আমার ১৫ বছরের সংসার ফিরে পাওয়াসহ ওই নারীলোভী পাষণ্ডের সকল ঘৃণিত কর্মকাণ্ড নজরে এনে বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোর দাবি জানাই।

বাদল সাহা/মাহফুজ

গোপালগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ০৫:৪৮ পিএম
গোপালগঞ্জে হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ
ছবি: খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে নৈশপ্রহরী গৌতম গাইন (৩৫) হত্যার ঘটনায় মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।

এলাকাবাসীর দাবি, গৌতমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতার এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা।

গৌতম গাইন গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের কলিগ্রামের বিমল গাইনের ছেলে।

শনিবার (১২ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে গৌতমের মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হলে নিজ এলাকায় নিয়ে আসা হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার জলিরপাড় ইউনিয়নের জলিরপাড় জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয় সামনে এ বিক্ষোভ
সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে ওই এলাকার তিনশতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।

এর আগে ওই এলাকার বঙ্গরত্ন মহাবিদ্যালয়ের সামনে এলাকাবাসী জড়ো হয়ে উজানি- জলিরপাড় সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। পরে সেখান থেকে বিক্ষোভ মিছিলসহ মরদেহ নিয়ে জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে যানয়। এ সময় তার গৌতম গাইনের
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নীলরতন বালা, রুপালতা মন্ডল, বিএনপি নেতা চিন্তাহরন মন্ডল।

নিহত গৌতম গাইনের ভাইজি সমর্পিতা গাইন বলেন, 'আমার কাকা একজন নিরীহ লোক ছিল। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে কেনো নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো? কি অপরাধ করেছিলো আমার কাকা? আমার জন্মের পর এমন হত্যাকাণ্ড দেখিনি। সরকারের কাছে
আবেদন হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।'

নিহতের ভাইয়ের স্ত্রী স্বরসতি বৈরাগী বলেন, 'আজ ছোট দুটি সন্তান বাবা হারা হলো। অন্যের বাবারা যখন সন্তানদের আদর করবে তখন এ এতিম বাচ্চাদের কি জবাব দেবেন? আমরা চাই আর কোনো সন্তান যেন তার বাবাকে না হারায়, আর কোন ভাই যেন ভাই হারানো বেদনা নিয়ে চলতে না হয়।'

মুকসুদপুর থানার পরিদর্শক শীতল চন্দ্র পাল জানান, নিহতের স্ত্রী মিলি বৈরাগী বাদি হয়ে একটি অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।

প্রসঙ্গত, গত বুধবার (৯ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে জেকেএমবি উচ্চ বিদ্যালয় যান গৌতম। সেখান থেকে নিখোঁজ হন তিনি। ওই রাতে কল দিলে মুঠোফোন বন্ধ পায় পরিবারের সদস্যরা। পরদিন বৃহস্পতিবার মুকসুদপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয় (জিডি নং-
৫১৫)। এর পর শুক্রবার সন্ধ্যায় সদর থানা পুলিশ কংশুর মধুমতি বিলরুট চ্যানেল থেকে গৌতমের মরদেহ উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠায়।

বাদল/মেহেদী/