
পটুয়াখালীর বাউফলের চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের স্থায়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ভবন নেই। ফলে ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে একটি বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের অভিযোগ, এতে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।
তেঁতুলিয়া নদীর মাঝে জেগে ওঠা চরকে ২০১৩ সালে চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন নামে ঘোষণা করা হয়। চরটি এক সময় নাজিরপুর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত চর দিয়ারা ও চর কচুয়া গ্রাম নামে পরিচিত ছিল। গত ১২ বছরেও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের স্থায়ী ভবন নির্মিত হয়নি। সে জন্য বিকল্প হিসেবে ইউনিয়নের ১৫৮ নম্বর চর কচুয়া মিয়াজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিদ্যালয়টির দ্বিতীয় তলার তিনটি কক্ষ ইউপি অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও মনোযোগের অভাব দেখা দিচ্ছে।
তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ইমরান বলে, ‘আমাদের স্কুলের দ্বিতীয় তলায় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যান তাদের কাজ করেন। এ ছাড়া বহিরাগতরা সারাক্ষণ স্কুলে আসা-যাওয়া করে। এতে আমরা ঠিকভাবে পড়াশোনা ও খেলাধুলা করতে পারি না। আমরা চাই, এই ইউনিয়ন পরিষদের দপ্তরটি অন্য কোথাও স্থানান্তর করা হোক।’
হাসান সিকদার নামে এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আমাদের সন্তানদের সুশিক্ষা পাওয়ার জন্য স্কুলে পাঠাই। কিন্তু সেখানে ইউপির প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড চলে। এতে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে।’
১৫৮ নম্বর চর কচুয়া মিয়াজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘এই চন্দ্রদীপ ইউনিয়নে নিজস্ব কোনো ইউনিয়ন পরিষদ নেই। ইউনিয়ন পরিষদ না থাকায় তারা ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্যে আমাদের বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলার তিনটি কক্ষে ব্যবহার করছে। ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলার সময় ক্লাস নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। অনেক সময় সরকারি সভা, ভিজিএফ কার্ড বিতরণ, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনসহ বিভিন্ন কাজে ভিড় লেগে থাকে, যা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে।’
চন্দ্রদীপ ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি প্রশাসনিক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘চন্দ্রদীপ ইউনিয়ন ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই ইউনিয়নে কোনো নিজস্ব ইউপি কমপ্লেক্স ভবন নির্মিত হয়নি। এতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অস্থায়ী ভবনে অফিস কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর আগে আ স ম ফিরোজ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে এই পরিষদ পরিচালিত হতো। সেখানেও স্কুলের কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটত। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দাপ্তরিক কার্যক্রম একটি কক্ষে ভালোভাবে করা যায় না। এরপর থেকে আমরা এই স্কুলে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’
এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম জানান, ইতোমধ্যে নতুন ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণ করার জন্য আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া চলমান।