
বরগুনার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা।
গত রবিবার থেকে সোমবার (২৩ জুন) দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৬৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। বর্তমানে জেলায় চিকিৎসা নিচ্ছেন ২২১ জন। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যমতে, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩২৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। তাদের মধ্যে জেনারেল হাসপাতালে ৭ জন এবং ১৫ জন উন্নত চিকিৎসা নিতে জেলার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন।
এ পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু মোকাবিলায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে শুরু হয়েছে হেল্প ডেস্ক ও স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম। সোমবার সকালে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ও জাগোনারীর সহযোগিতায় বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম ২০ দিনব্যাপী এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। হেল্প ডেস্কের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্টার্ট ফান্ডের সহযোগিতায় জেনারেল হাসপাতালে ২৫০টি মশারি দেওয়া হয়। যা রোগীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
এ সময় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রেজাওনুর আলম, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকাহ, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জাগোনারীর প্রধান নির্বাহী হোসনে আরা হাসি, বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি হাসানুর রহমান ঝন্টু, এবং জেলা স্বাস্থ্য অধিকার যুব ফোরামের সমন্বয়ক মহিউদ্দিন অপুসহ আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
বরগুনা জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরাম থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দুই শিফটে ১০ জন স্বেচ্ছাসেবক এই হেল্প ডেস্কে দায়িত্ব পালন করবেন। হাসপাতালের নিচতলায় স্থাপিত হেল্প ডেস্কে দুজন স্বেচ্ছাসেবক রোগী ও তাদের স্বজনদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেবেন। ডেঙ্গু ওয়ার্ডে তিনজন স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন, যারা রোগীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উৎসাহিত ও নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য ফেলতে সহায়তা করবেন। এ ছাড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং মশারির ব্যবহার নিশ্চিত করবেন।
জেলা স্বাস্থ্য অধিকার ফোরামের সভাপতি হাসানুর রহমান জানান, ফোরামের পক্ষ থেকে হাসপাতালে কালার কোড যুক্ত ঝুড়ি সরবরাহ করা হয়েছে। যেন বর্জ্য সঠিকভাবে ফেলা যায়। পাশাপাশি লিফলেট বিতরণ এবং সচেতনতামূলক পথসভা আয়োজনের মাধ্যমে জনসচেতনতা বাড়ানোর পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
জেলার সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় শুধু স্বাস্থ্য বিভাগ নয়, সবাইকে সচেতন হয়ে এগিয়ে আসতে হবে। বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখতে হবে। মশা নিধন করতে হবে। কারণ ডেঙ্গুর মূল চিকিৎসাই হলো মশা নিধন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. শফিউল আলম বলেন, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রতিনিধিরা এখানকার প্রতিটি বাড়িতে এডিসের লার্ভা পেয়েছেন। ইতোমধ্যে পৌরসভার পক্ষ থেকে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও বৃষ্টির কারণে কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বৃষ্টি কমলেই আবার কাজ শুরু হবে।