রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় ‘ডায়মন্ড’ এবং ‘দে ধাক্কা’ কিশোর গ্যাং পরিচালনাকারী চক্রের অন্যতম হোতা জুলফিকার আলীসহ ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
র্যাব-৩ এর একটি দল শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে আদাবর থানাধীন মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগজিন ও বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন, জুলফিকার আলীর সহযোগী হারুন অর রশিদ (৩৮), শামছুদ্দিন বেপারী (৪৮), কৃষ্ণ চন্দ্র দাস (২৮), ও সুরুজ মিয়া (৩৯)।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলির র্যাব-৩ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, র্যাব-৩ এর একটি দল গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, মোহাম্মদপুর এলাকায় কতিপয় কিশোর গ্যাং সদস্য দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয় ও সেবন, এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, সাধারণ মানুষকে হয়রানি এবং বিভিন্ন রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তাররা জানায়, রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশকিছু কিশোর গ্যাং সক্রিয় রয়েছে। তারমধ্যে জুলফিকারের নেতৃত্বে এবং অপর আসামিদের সহযোগিতায় ‘ডায়মন্ড’ এবং ‘দে ধাক্কা’ নামে দুটি কিশোর গ্যাং পরিচালিত হতো। এলাকার বেশকিছু বেপরোয়া ও মাদকসেবী কিশোরদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে কিশোর গ্যাং পরিচালনার মাধ্যমে এলাকায় অস্ত্র, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণ, ডাকাতি ও ভূমি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে।
জুলফিকারের কিশোর গ্যাং পরিচালনা করার জন্য হারুন, শামছুদ্দিন বেপারী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস এবং সুরুজ মিয়া সার্বিক সহযোগিতা করে থাকে।
র্যাব-৩ অধিনায়ক আরও জানান, রাজধানীর মোহাম্মদপুর জুড়ে তাদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা ‘ডায়মন্ড’ এবং ‘দে ধাক্কা’ দুটি কিশোরগ্যাংয়ের তৎপরতায় প্রতিনিয়ত তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে বিরোধী অন্যান্য গ্যাংসমূহের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তো। খুবই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এলাকায় ত্রাসের সৃষ্টি করত। এসব ঘটনায় তারা হরহামেশাই যে কাউকে গুলিবিদ্ধ, কুপিয়ে জখম, ছিনতাই ও ডাকাতির মতো ভয়ংকর ঘটনা ঘটাতেও দ্বিধাবোধ করে না।
তিনি আরও বলেন, মোহাম্মদপুর তিন রাস্তার মোড়, চাঁদ উদ্যান, লাউতলা, নবীনগর হাউজিং, বসিলা চল্লিশ ফিট, কাঁটাসুর, তুরাগ হাউজিং, আক্কাস নগর, ঢাকা উদ্যান নদীর পাড়, চন্দ্রিমা হাউজিং, নবীনগর হাউজিং, বসিলা হাক্কার পাড় ইত্যাদি এলাকাজুড়ে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাংয়ের মহড়া পরিচালনা করতো। তাদের তৎপরতায় কিশোরগ্যাং সদস্যরা এই সব এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান র্যাব-৩ অধিনায়ক।
খাজা/এমএ/