ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় সেলিস্তি ওরফে শিলাশ্রী ওরফে শিলাস্তি নামের এক তরুণীর নাম উঠে এসেছে। তবে খুনের কোন পর্যায়ে এই তরুণী সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না তদন্ত কর্মকর্তারা।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, এমপি আজীমের বাল্যবন্ধু ও খুনের মাস্টারমাইন্ড আখতারুজ্জামান শাহীনের ‘গার্লফ্রেন্ড’ সেলিস্তি রহমানের বয়স ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে। বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। সেলিস্তিকে নিয়েই নিউটাউনের ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি। শাহীনের সঙ্গে প্রায়ই বিদেশ ভ্রমণ করে থাকেন সেলিস্তি। সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে ফ্ল্যাটে ডেকে নিতে টোপ হিসেবে ওই তরুণীকে ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে।
কিলিং মিশন শেষে মূল কিলার আমানুল্লাহর সঙ্গে তিনি গত ১৫ মে দেশে ফেরেন। সেলিস্তিকে ইতোমধ্যে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
কলকাতায় শাহীনের ফ্ল্যাটে যখন এমপিকে খুন করা হয়, তখন সেলিস্তি ওই কক্ষে ছিলেন না। হত্যাকাণ্ডের পর ওই কক্ষে যান সেলিস্তি। ব্লিচিং পাউডারের উৎকট গন্ধ পেয়ে তার কারণ অন্যদের কাছে জানতে চান তিনি। তখন খুনিরা তাকে জানায়, ফ্ল্যাটে একজন মলত্যাগ করেছে, ওই গন্ধ দূর করতেই ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হয়েছে।
তবে পুলিশ বলছে, এ সবই প্রাথমিক তথ্য। সামনে এগোলে আসল রহস্য বের হয়ে আসবে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, যে ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে সেখানে ১৩ মে দুজন পুরুষ ও একজন নারী ঢুকেন। একদিন সেখানে অবস্থানের পর ফ্ল্যাট থেকে বের হয়ে আসেন এক পুরুষ ও এক নারী। ধারণা করা হচ্ছে, ওই নারীই সেলিস্তি।
সেলিস্তি ১৩ মে আমানুল্লাহ ও এমপি আনারের সঙ্গে ফ্ল্যাটে ঢুকে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ এমপি আনারকে কলকাতায় নিতে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শাহীন এই তরুণীকেই ফাঁদ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। আর এই পরিকল্পনা থেকেই শাহীন ১০ মে দেশে ফিরে এলেও সেলিস্তি থেকে যান কলকাতায়।
কলকাতা ডিবির সূত্রে সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, হত্যাকাণ্ডের সময় সেলিস্তি তিনতলা ফ্ল্যাটের একটি তলায় অবস্থান করছিলেন। তবে সামনে ছিলেন না। হত্যাকাণ্ড ঘটানোর পর তিনি নিচে নেমে আসেন। এরপর লাশ গুমে সহায়তা করেন। আমানুল্লাহ ও সেলিস্তি মিলেই এমপি আজীমের দেহের টুকরো টুকরো অংশ লাগেজে নিয়ে প্রথমে বের হয়েছিলেন বলে তথ্য রয়েছে।
অমিয়/