বরগুনার বামনায় রামনা ইউনিয়নের শের-ই-বাংলা সমবায় বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে সড়কে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি প্রাইভেট কার উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই গাড়ির চালককে হত্যা করে লাশ অন্যত্র ফেলে রেখে গাড়িটি বামনায় রেখে পালিয়ে যায় হত্যাকারীরা। যার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন খুনিদের ছবি উদ্ধার করতে পারলেও এখনো তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।
বামনা থানা পুলিশ সূত্র জানায়, শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে খবর পেয়ে বামনা থানার পুলিশ গাড়িটি উদ্ধার করে অনুসন্ধান শুরু করলে তারা জানতে পারেন নিহত চালকের নাম জহুর উদ্দিন। তিনি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার গৌরীপুরের আক্কাস আলীর ছেলে।
এ বিষয় বামনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তুষার কুমার মন্ডল বলেন, শুক্রবার (৫ জুলাই) রাত থেকে রামনায় স্কুলের সামনে একটি গাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে বলে খবর পেয়ে গাড়িটি উদ্ধার করে তদন্ত শুরু করি। গাড়ি থেকে একটি অস্পষ্ট মোবাইল ফোন নম্বর উদ্ধার করে ওই নম্বর থেকে চালকের নাম ও ঠিকানা জানতে পারি। বিভিন্ন থানায় বিষয়টি জানালে রাজাপুর থানা থেকে অজ্ঞাত লাশ উদ্ধারের বিষয় জানতে পারি। পরে নিশ্চিত হই যে, রাজাপুরে উদ্ধার হওয়া ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে তার গাড়িটি বামনা উপজেলায় ফেলে রেখে হত্যাকারীরা পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, উদ্ধার করা গাড়ির মালিককে শনাক্ত করে যোগাযোগ করেছি। তার নাম রবিউল ইসলাম। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মচারী।
তিনি আরও বলেন, ওই দিন রাতে বামনার ডৌয়াতলা বাজারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দুজন সন্দেহভাজন যুবকের ছবি উদ্ধার করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত তাদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ওই যুবকরা ঘটনার রাত দেড়টার সময় রামনা থেকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে পাথরঘাটা উপজেলার লেমুয়ায় যেতে চাইলে মোটরসাইকেল চালক গভীর রাত হওয়ায় তাদের কাকচিড়া বাজারে নামিয়ে দিয়ে চলে আসেন।
নিহতের শ্বশুর নুরুল ইসলাম জানান, যে দুজন সন্দেহভাজনের ছবি পাওয়া গেছে তার একজনকে তিনি চিনতে পেরেছেন। তিনিও একজন গাড়িচালক। তবে তার নাম জানেন না তিনি। কিছুদিন আগে তার মেয়ের জামাইয়ের সঙ্গে ঝগড়াসহ মারামারিও হয়েছিল ওই যুবকের।
রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, অজ্ঞাত লাশটি প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড বলে জানতে পারি। ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশের উদ্যোগে দাফন হয়। রবিবার (৭ জুলাই) নিহতের পরিবার রাজাপুর থানায় এসে মরদেহের ছবি দেখে শনাক্ত করে জানান গত বুধবার থেকে জহুর উদ্দিন বাসায় ফেরেনি। শুক্রবার থেকে তার ফোন বন্ধ পায় পরিবার। এ ঘটনায় রাজাপুর থানায় নিহতের স্ত্রী কল্পনা আক্তার হত্যা মামলা করেছেন। খুনিদের ধরতে আমরা চেষ্টা করছি।
৫ জুলাই ঝালকাঠির রাজাপুরের সাতুরিয়া ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মইনুল হায়দারের বাড়ির সামনে ডোবা থেকে অজ্ঞাত একটি লাশ উদ্ধার করে। পরে অপমৃত্যুর মামলা দিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে অজ্ঞাত হিসেবে লাশটি দাফন করে পুলিশ।
মহিউদ্দিন অপু/জোবাইদা/অমিয়/