মেধাবী কিশোর তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার কাজল হাওলাদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এদিকে অন্য আসামি শিপন ও মামুনকে আবার তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার আলীর আদালতে প্রথমে তোলা হয় শিপন ও মামুনকে। এ সময় র্যাব তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তাদের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে একই আদালতে হাজির করা হয় কাজল হাওলাদারকে। আদালত তার দেওয়া জবানবন্দি রেকর্ডভুক্ত করেন। কাজল আজমেরী ওসমানের বন্ধু।
প্রয়াত সংসদ সদস্য একেএম নাসিম ওসমানের ছেলে ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের বিরুদ্ধে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যার নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
আদালত পুলিশের পরিদর্শক আব্দুর রশীদ জানান, আসামি কাজল হাওলাদার আমলি আদালতের এই বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে ত্বকীকে হত্যার সময়ের নানা তথ্য আদালতকে জানিয়েছেন। আদালত তার দেওয়া জবানবন্দি রেকর্ডভুক্ত করেছেন। মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাব অন্য দুই আসামিকে আবার অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে কাজল হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। পরদিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬ দিনের রিমান্ড দেন আদালত। রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে তোলা হলে কাজল স্বপ্রণোদিত হয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি হন।
এর আগে ১১ সেপ্টেম্বর ত্বকী হত্যা মামলায় ঢাকার মিরপুর থেকে আজমেরী ওসমানের গাড়িচালক জামশেদ শেখকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। একই মামলায় ৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া এলাকা থেকে মো. শাফায়েত হোসেন শিপনকে এবং কালিবাজার এলাকা থেকে মামুন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত প্রত্যেক আসামির ছয় দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকেলে বঙ্গবন্ধু সড়ক থেকে তানভীর মুহাম্মদ ত্বকীকে অপহরণ করে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যায় মেলে ত্বকীর লাশ। ত্বকী হত্যার সঙ্গে ওসমান পরিবারের সদস্যরা জড়িত আছেন বলে শুরু থেকে অভিযোগ করে আসছে তার পরিবার। তবে দীর্ঘসময় পেরিয়ে গেলেও এই হত্যকাণ্ডের তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি র্যাব।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামে এক রাজমিস্ত্রির হাতুড়ির আঘাতে আরেক রাজমিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে।
রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ভোর ৫টার দিকে ঠিকাদারের কাছে পাওনা টাকা নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম মিজান (২৫)। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলায়। আর ঘাতক রাজমিস্ত্রি শাহাদাতের (১৯) বাড়ি গাজীপুর জেলায়।
উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের আবুল মুন্সীর বাড়ির ভবন নির্মাণের কাজ করছিলেন তারা।
জানা যায়, শাহাদাত হাতুড়ি দিয়ে মিজানের মাথায় একাধিক আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান মিজান। পরে শাহাদাত মিজানের মরদেহ ঘর থেকে টেনে বাড়ির পাশের পুকুরে নিয়ে যেতে থাকলে আবুল মুন্সীর বাড়ির এক নারী দেখে ফেলেন। পরে ওই নারী আশপাশের লোকজনকে খবর দিলে তারা শাহাদাতকে আটক করে পুলিশে দেয়।
শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. শাহিন বলেন, শাহাদাতকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে।
টঙ্গিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মঈনউদ্দিন সুমন/জোবাইদা/অমিয়/
রাজধানীর ইস্কাটনে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগে দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় যুবদল-ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে তাদের আটক করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে রমনা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
আটকরা হলেন- আমির সালাম এবং হুমায়ুন রশিদ।
জানা যায়, রাজধানীর ইস্কাটন রোডের ওই বাড়িতে কুতুব উদ্দিন আহমেদ নামে এক প্রবাসী একাই থাকেন। তার সন্তানরা বিদেশে থাকেন। এই সুযোগে দুই ট্রাকে করে ৪০-৫০ জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী বাড়িটি দখলের চেষ্টা করে। তারা বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে আলমারিতে থাকা নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা, স্বর্ণালংকার ও পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেয়। এ সময় বাড়ির মালিকের চিৎকারে স্থানীয় যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা তাদের ধাওয়া দিলে তারা একটি ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় দুজনকে আটক করে একটি ট্রাকসহ তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা জানান, তাদের নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসীরা বাড়িতে ঢুকে। তারা বাড়িটি দখলের চেষ্টা করছিল।
বাড়ির মালিক কুতুব উদ্দিন আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘এই ঘটনায় মামলা করেছি। বাড়িটি নিয়ে খুবই আতঙ্কে আছি।’
রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাড়ি দখলের চেষ্টার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, গত ২৯ আগস্ট রাত ১০টায় একই সন্ত্রাসীরা এসে বাড়ি দখলের হুমকি দিয়েছিল, সেদিনও কুতুব উদ্দিন আহমেদের চিৎকারে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
শফিকুল ইসলাম/সালমান/
ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে স্তূপ করে মরদেহ পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সম্পৃক্ত পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক আরাফাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩-এর একটি দল।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল মুনিম ফেরদৌস গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার সামনে লাশ পোড়ানোর ঘটনার ভিডিও দেশ-বিদেশে নাড়া দেয়। এতে ব্যাপক সমালোচনা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে উঠে আসে লাশ পোড়ানোর ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন পরিদর্শক আরাফাত হোসেন। এরপর আত্মগোপনে চলে যান তিনি। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আফতাবনগর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
গত ৩০ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, একটি ভ্যানে আংশিক ঢাকা বেশ কয়েকটি রক্তাক্ত মরদেহ এবং পাশে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। প্রায় দুই মিনিটের ওই ভিডিওতে বিছানার চাদরে ঢাকা দুই হাত প্রসারিত অবস্থায় মরদেহ দেখা যায়। ভ্যানের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যদের মধ্যে দুজন পুলিশ ভেস্ট পরে ছিলেন।
ভিডিওতে ডিবির পরিদর্শক (তদন্ত) আরাফাত হোসেনকে নিরস্ত্র অবস্থায় হাঁটতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, ভ্যানে থাকা মরদেহগুলো পুড়ছে এবং পাশেই কয়েকজন পুলিশ সদস্য দাঁড়িয়ে আছেন।
তুলি/সালমান/
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে দুই ছেলের হাতে খুন হয়েছেন নুরুল হক চৌধুরী (৬৫)। এ ঘটনায় এক ছেলে নিজাম উদ্দিনকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার বড় উঠান ইউনিয়নের শাহমীরপুর ঘোয়াল বাপের এলাকায় ছেলেদের হাতে নিহত হন বাবা।
বড় উঠান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড। বাবাকে খুন করা দুই ভাই প্রবাসী। কিছুদিন আগে তারা দেশে ফেরেন।
এ ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় নিহতের স্ত্রী ও দুই ছেলের নামে মামলা করেছেন তার ছোট ভাই মোহাম্মদ বদরুজ্জামান।
বদরুজ্জামান খবরের কাগজকে বলেন, সম্পত্তি ভাগাভাগি নিয়ে আমার বড় ভাইকে তার স্ত্রী-সন্তানরা মিলে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
এ ঘটনায় নিজামকে গ্রেপ্তার করা হলেও পালিয়ে আছেন অপর ছেলে মিজানুর রহমান (২৬) ও স্ত্রী লুৎফর নাহার (৫০)।
আবদুস সাত্তার/অমিয়/