ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

৫ জেলায় আ.লীগ নেতাসহ পাঁচজনকে হত্যা

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১৮ পিএম
আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২২ পিএম
৫ জেলায় আ.লীগ নেতাসহ পাঁচজনকে হত্যা
প্রতীকী ছবি

পাঁচ জেলায় গত রবি ও সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) পাঁচজন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের এক নেতাকে বাড়িতে ঢুকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া পাবনা ও কিশোরগঞ্জে দুজনকে পিটিয়ে এবং ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জে দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। 

আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর:

লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা চন্দ্রগঞ্জে মোহাম্মদ নূর আলম প্রকাশ নুরু নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। 

গত রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার পাঁচপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নুরু চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন বলে জানা গেছে। 

নুরুর স্ত্রী পুষ্প বেগম ও ছেলে আরিফ জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে নিজ ঘরে অবস্থান করছিলেন নুরু। এ সময় খোকন ও নিকুর নামে দুই ব্যক্তির নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত বাড়িতে ঢুকে অতর্কিতে হামলা করে। তিনি বাড়ির পেছন দিক দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা তাকে ধরে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যা করে।

নুরুকে বাঁচানোর জন্য তার স্ত্রী ও ছেলে এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাদেরও মারধর করে। 

নুরুর ছেলে আরিফ বলেন, ‘আমার বাবাকে আওয়ামী লীগ করার অপরাধে বিএনপির সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।’

চন্দ্রগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মফিজুর রহমান জানান, নুরু আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি পেশায় দর্জি ছিলেন। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পাবনায় হাতুড়িপেটায় নিহত ১
পাবনা সদর উপজেলায় হাতুড়িপেটায় সাইদুল ইসলাম (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গত রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সদর উপজেলার ভাড়ার ইউনিয়নের চিথুলিয়া ব্রিজের ওপর এ ঘটনা ঘটে।

সাইদুল সদর উপজেলার চর বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি কুলির কাজ করতেন।

নিহত সাইদুল ইসলামের বড় ভাই মোহাম্মদ আলী পেশায় কৃষক। অভিযোগ উঠেছে, পূর্ববিরোধের জেরে তার দুই ভাতিজা সাইদুলকে হত্যা করেন। তারা হলেন একই গ্রামের তালহা ও তামিম। 

ভাড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান জানান, পূর্ববিরোধের জেরে কিছুদিন আগে সাইদুল তার বড় ভাই মোহাম্মদ আলীকে মারধর করেছিলেন। সেই ঘটনায় থানায় মামলাও হয়েছে। সাইদুল গত রবিবার সন্ধ্যায় কাজ থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। চিথুলিয়া ব্রিজের ওপর পৌঁছামাত্র মোহাম্মদ আলীর দুই ছেলে তালহা ও তামিম হাতুড়ি দিয়ে তাকে বেধড়ক পেটান। পরে এলাকাবাসী ও স্বজনরা গুরুতর অবস্থায় সাইদুলকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। কিন্তু হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যান সাইদুল। 

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

কিশোরগঞ্জে একজনকে পিটিয়ে হত্যা
কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায় মসজিদের তবারক বিতরণকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কির জেরে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম ওয়াহাব ভূঁইয়া (৪৫)। তিনি ইটনা সদর উপজেলার উদিয়ারপাড় গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার সকালে রাস্তায় ওয়াহাব ভূঁইয়াকে একা পেয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এর দুই সপ্তাহ আগে ওই তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটেছিল। পরদিন রবিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

ইটনা থানার ওসি জাকির রাব্বানী বলেন, এ ঘটনায় উদিয়ারপাড় গ্রামের আবদুল খালেক ও হাবু মিয়া নামের দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।

ফরিদপুরে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা 
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় আকবর আলী (৪৮) নামে এক ব্যক্তি খুন হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, আকবর আলীর স্ত্রী আসমা বেগমের সাবেক স্বামী রমজান মাতুব্বর তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। গত রবিবার সন্ধ্যায় ভাঙ্গা পৌরসভার খাড়াকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আকবর আলী খয়রাতি পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। অভিযুক্ত রমজান মাতুব্বর ভাঙ্গা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের খাড়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। 

স্থানীয়রা জানান, আসমা বেগমের সঙ্গে রমজানের প্রথমে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের ছয়-সাত বছর পর রমজান তার স্ত্রী আসমাকে বাবার বাড়ি রেখে পালিয়ে ঢাকা চলে যান। এর দুই বছর পর আসমা বেগম আকবর আলীকে বিয়ে করেন। কিছুদিন পর রমজান ফিরে এসে আসমাকে আবার বিয়ে করেন। এর কিছুদিন পর রমজান আবার চলে যান। তখন দ্বিতীয় স্বামী আকবরের সঙ্গে বসবাস করতে থাকেন আসমা। এ ঘটনা নিয়ে রমজানের সঙ্গে আকবরের শত্রুতা ছিল।

আকবর আলীর পুত্রবধূ মঞ্জিলা বেগম বলেন, গত রবিবার দুপুর ১টার দিকে তার শাশুড়ির প্রথম স্বামী রমজান মাতুব্বর একটি ধারালো অস্ত্র নিয়ে আকবর আলীকে কুপিয়ে পালিয়ে যান। পরে তাকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আকবর আলী মারা যান।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জয়ন্ত কুমার বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মানিকগঞ্জে যুবককে কুপিয়ে হত্যা 
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম বান্দুটিয়া এলাকার আশরাফুল ইসলাম পলাশ নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।

সোমবার দুপুরে অভিযুক্ত আমজাদ ও তার স্ত্রীকে পালানোর সময় আটক করে পুলিশে দেন এলাকাবাসী।

পলাশ ধামরাই উপজেলার কাউয়াখোলা গাংগুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি মানিকগঞ্জ শহরের বান্দুটিয়া এলাকার খবির উদ্দিনের মেয়ের স্বামী ছিলেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে শহরের বেউথা এলাকায় পলাশকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। গতকাল ভোরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পলাশ।

মানিকগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) স্বপন কুমার জানান, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

‘দুষ্কৃতকারীরা ক্রান্তিকালকে ব্যবহার করছে’
মানবাধিকারকর্মী এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. নূর খান বলেছেন, ‘আমাদের মধ্যে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখনো যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারছে না। এর পেছনে নানা দুর্বলতা রয়েছে। একটা স্বৈরশাসক আসলে দেশটার সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। এই রকম একটা সময়ে যারা দুর্বৃত্ত-দুষ্কৃতকারী, তারা সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে নানা বার্তা আসছে। সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। এমন একটা ক্রান্তিকাল। 

এই ক্রান্তিকালের কারণে অনেক ক্ষেত্রে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নিতে বেগ পেতে হচ্ছে। মব জাস্টিস বা অন্য অপরাধগুলো সমাজে সব সময় ছিল। এই রকম একটা সময়ে আমি মনে করি, জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি যাদের ওপর দায়িত্ব আছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরও বিষয়টা শক্ত হাতে দেখতে হবে। সরকারের সদিচ্ছার তো এখন অভাব নেই। কারণ সরকার তো নিশ্চয়ই চাইবে না এসব ঘটনার মাধ্যমে সরকারের দুর্বলতা প্রকাশ পাক। দুষ্কৃতকারীরা ক্রান্তিকালকে ব্যবহার করছে। শক্ত হাতে এদের দমন করতে হবে।’

মাদকের বকেয়া টাকার জেরে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীকে হত্যা!

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৫, ১১:২০ এএম
আপডেট: ০১ জুন ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম
মাদকের বকেয়া টাকার জেরে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীকে হত্যা!
নিহত কলিমুদ্দিন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মাদকের বকেয়া ১৫০ টাকা বিল নিয়ে, বাকি টাকা ফেরত দেওয়াকে কেন্দ্র করে কলিমুদ্দিন নামে (৩৩) স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মীকে হত্যার পর ককটেল ফাটিয়ে উল্লাস করার ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে।

শুক্রবার (৩০ মে) রাতে হত্যা মামলাটি করেন নিহতের মা জাহানারা বেগম বেবি।

এর আগে বুধবার (২৮ মে) রাত ৯টার দিকে উপজেলার বারৈয়ারঢালা এলাকার ছোট দারোগার হাট বাজারের মাঝামাঝি পাকা রাস্তার ওপর এ ঘটনা ঘটে। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা
কলিমুদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত কলিমুদ্দিন সীতাকুণ্ডের বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ফেদাইনগর এলাকার মৃত আবু নাসেরের ছেলে। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তাবিত ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি। জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক অহিদুল ইসলাম চৌধুরী শরীফের অনুসারী ছিলেন।

মামলায় আসামিরা হলেন- বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের উত্তর কলাবাড়ীয়া গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন সাখা (৪২), মো. সুমন (৩৬), মো. হৃদয় (২৮), মধ্যম কলাবাড়ীয়ার মো. নুর ছাফা (৪০), মীরসরাই থানার ভাঙাপুল এবং বর্তমান উত্তর কলাবাড়ীয়ার বাসিন্দা মো. রাকিব (২৬), পশ্চিম ধর্মপুর গ্রামের মো. রিয়াজ (২৭) ও আদর্শ গ্রামের মো. ইমন (৩০) ও অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জন।

এরা সবাই ইয়াবা ব্যবসা এবং বিএনপির অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আসামিদের ওই এলাকায় মাদক (ইয়াবা) বিক্রির ১৫০ টাকা বকেয়া ছিল। পরে আবারও ইয়াবা কিনতে যান তারা। এ সময় ৫০০ টাকা দেওয়া হলে ১৫০ টাকা বকেয়া নিয়ে ৩৫০ টাকা ফেরত দেয় এবং তাদের কাছে আর বিক্রি করবে না বলে জানিয়ে দেয় ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। তার জেরে দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ
হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত হয়।

নিহত কলিমুদ্দিনের বড় ভাই তসলিম উদ্দিন বলেন, 'গরুর বাজার ইজারা নিয়ে বৈঠক চলাকালীন সময়ে যুবদলের সাখাওয়াত হোসেন সাকার লোকজন কলিমুদ্দিনকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে। সাখাওয়াত দলীয় পরিচয়ে মাদক ও ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সে যুবদলের নেতার নাম ভাঙিয়ে এ ব্যবসা করত। কলিমুদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও সোচ্চার ছিল।'

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

মুুসলেহ উদ্দীন/মেহেদী/

গরিবের চাল নিজের নামে তুললেন মহিলা মেম্বার!

প্রকাশ: ৩১ মে ২০২৫, ০৮:৫৬ পিএম
গরিবের চাল নিজের নামে তুললেন মহিলা মেম্বার!
ছবি: খবরের কাগজ

পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) কর্মসূচির আওতায় গরিব ও অসহায় নারীদের জন্য বরাদ্দকৃত চাল নিজের ও পুত্রবধূর নামে দীর্ঘদিন ধরে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে পারভীন আক্তার নামে নারী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে তার নামে বরাদ্দ পাওয়া ১০ বস্তা চাল জব্দ করেছে ইউনিয়ন পরিষদ। বর্তমানে চালগুলো ইউনিয়ন পরিষদের হেফাজতে রয়েছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইউপি সদস্য পারভীন আক্তার ও তার পুত্রবধূ মায়া আক্তারের নামে গত আড়াই বছরে মোট ৫৮ বস্তা চাল উত্তোলন করা হয়েছে। যার প্রতিটি বস্তায় ছিল ৩০ কেজি করে চাল। অর্থাৎ এ দুজনের নামে উত্তোলিত মোট চালের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭৪০ কেজি। যার মধ্যে ১০ বস্তা বর্তমানে জব্দ রয়েছে।

অভিযুক্ত পারভীন আক্তার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য। তিনি গোয়ালপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক রফিজ উদ্দীনের স্ত্রী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পারভীন আক্তার আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই প্রভাব খাটিয়ে নিজে এবং পুত্রবধূর নাম উপকারভোগী তালিকায় যুক্ত করেন। শুধু তাই নয়, ভিডব্লিউবি কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অনেকের কাছ থেকে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য পারভীন আক্তার বলেন,'তখন দলীয় সিদ্ধান্তে নিজের দুইটা নাম দিয়েছিলাম। তবে চালগুলো আমি খাইনি, গরিবদের মধ্যে বিতরণ করে দিয়েছি।'

হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইয়েদ নূর-ই-আলম বলেন,'মহিলা মেম্বার ও তার ছেলের বউয়ের নামে আসা ১০ বস্তা চাল আমরা জব্দ করেছি। আমরা জানতে পেরেছি তিনি আগেও চাল উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, 'ভিডব্লিউবি কর্মসূচির চাল গরিব ও অসহায়দের জন্য। যদি কেউ সচ্ছল হয়েও সুবিধা গ্রহণ করে, তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

স্থানীয়দের বক্তব্য, ইউপি সদস্য হিসেবে পারভীন আক্তার দায়িত্বশীল অবস্থানে থেকেও সরকারি ত্রাণ আত্মসাৎ করে গরিবদের প্রাপ্য অধিকার হরণ করেছেন। যেখানে তার পরিবার আর্থিকভাবে সচ্ছল। স্বামী স্কুলশিক্ষক এবং পরিবারের কয়েকটি ট্রাক্টর রয়েছে সেখানে গরিবদের চাল আত্মসাৎ নৈতিকতা ও আইন উভয়েরই পরিপন্থি।

রনি/মেহেদী/

মাগুরায় ৫ জনকে জিম্মি করে নির্যাতন, মুক্তিপণ দাবি

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১১:১৪ এএম
মাগুরায় ৫ জনকে জিম্মি করে নির্যাতন, মুক্তিপণ দাবি
ছবি: খবরের কাগজ

মাগুরায় গোপালগঞ্জের পাঁচ যুবককে জিম্মি করে নির্যাতন ও ১০ লাখ মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে একজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। 

বুধবার (২৮ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌরসভার সাজিয়াড়া এলাকার একটি মেস থেকে ওই পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়।

এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইশতিয়াক আহমেদ শান্ত (২৭) নামে এক যুবককে আটক করে সেনাবাহিনী।

উদ্ধার হওয়া পাঁচ যুবক হলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের বড়ফা গ্রামের রাজ্জাক সরদারের ছেলে রাজীব সরদার (২৪), মো. ওহিদ সরদারের ছেলে হৃদয় সরদার (২১), মৃত সুলতানা শেখের ছেলে বাবু শেখ (২৪), সোনা মিয়া সরদারের ছেলে ওসমান শেখ (২৪) ও মো. ওহিদ সরদার এর ছেলে রিয়াদ ইসলাম (২৩)।

শান্ত পৌরসভার সাজিয়াড়া এলাকার মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার মোবাইল ফোনে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র পাওয়া যায়।

এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী। 

তিনি জানান, সেনাবাহিনী ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে। মামলা হলে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
  
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২১ মে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রি করতে মাগুরায় আসেন ওই পাঁচ যুবক। তারা সাজিয়াড়া এলাকায় এম এস ছাত্রাবাসের দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার ইশতিয়াক আহমেদ শান্তসহ ৮-১০ জন তাদের বাড়িতে জিম্মি করে নির্যাতন করেন। তাদের মারধরের পাশাপাশি হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে তাদের বাড়িতে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়।

উদ্ধার হওয়া যুবকদের একজন বাবু শেখ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাতে গান বাজিয়ে আমাদের মারধর করে ও ভিডিও ধারণ করে। আমাদের দুজনকে রাতে একটি শ্মশানে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। সকালে আলাদা আলাদা ঘরে আমাদের বন্দি করে রাখে। পরে সেনাবাহিনী এসে আমাদের উদ্ধার করে।’
 
মাগুরা সেনাক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবকদের আটক করে মারধর করার ভিডিও তাদের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, চার যুবককে পাশাপাশি দেওয়ালের দিকে দুহাত উঁচু করে একজন লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন।

বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে সাজিয়াড়া গ্রামের ওই ছাত্রাবাস ও এর পাশে মো. মহসিনের বাড়ি থেকে তালা ভেঙে ওই পাঁচ যুবককে উদ্ধার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই গ্রামের ইশতিয়াক আহমেদ শান্তর বাড়ি থেকে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। পরে এম এস ছাত্রাবাস থেকে মাদক সেবনে ব্যবহৃত ফয়েল পেপার, কলকে, নির্যাতনে ব্যবহৃত লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে সেনাবাহিনী। 

পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানান হয়, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।

কাশেমুর রহমান/অমিয়/

পল্লবীতে স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, পরকীয়া প্রেমিক গ্রেপ্তার

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ১০:১২ পিএম
আপডেট: ২৯ মে ২০২৫, ০৩:৩২ পিএম
পল্লবীতে স্বামী-স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, পরকীয়া প্রেমিক গ্রেপ্তার
নাজমুল হাসান পাপ্পু ও দোলনা আক্তার দোলা। ইনসেটে ঘাতক গাউস মিয়া

রাজধানী মিরপুরের পল্লবী এলাকায় এক দম্পতিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় গাউস মিয়া (৩২) নামে এক সৌদিপ্রবাসী যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ মে) বেলা দেড়টার দিকে পল্লবী থানার মিরপুর-১১ নম্বরের বি ব্লকের পাঁচতলার একটি বাসার পঞ্চম তলায় এ ঘটনা ঘটে। 

খুন হওয়া দুজন হলেন দোলনা আক্তার দোলা (২৯) ও তার স্বামী নাজমুল হাসান পাপ্পু (৩৬)। গাউসের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলায়।

পুলিশ বলছে, গাউসের সঙ্গে দোলার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দোলার বিয়ে হয়েছে, সেটি তিনি আগে জানতেন না। গতকাল গাউস বিষয়টি জানতে পারেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দোলা এবং তার স্বামীকে গাউস মিয়া কুপিয়ে হত্যা করেন।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পরকীয়ার জেরে এই হত্যাকাণ্ড। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।

পুলিশ জানায়, দোলনা উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে এলএলএম করছিলেন। তিনি মিরপুর-১১ নম্বরের একটি ভবনের পাঁচতলায় ‘সাবলেট’ থাকতেন। তার স্বামী পাপ্পু বরগুনায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন এবং বরগুনাতে থাকতেন। তিনি স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় আসা-যাওয়া করতেন। দুই দিন আগে তিনি বরগুনা থেকে ঢাকায় আসেন।

পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার গাউস সৌদিপ্রবাসী। গাউস মিয়ার সঙ্গে দোলার ফেসবুকে পরিচয় হয়। সেই সূত্রে দোলার সঙ্গে গাউসের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত জানুয়ারিতে গাউস দেশে ফিরে মিরপুরের একটি বাসায় ওঠেন। তারপর বিভিন্ন সময়ে দোলার সঙ্গে তার দেখা হয়। দোলার বিয়ে হয়েছে, গাউস সেটা জানতেন না। গতকাল দোলা ও তার স্বামী পাপ্পু বাসার বাইরে একটি খাবার হোটেলে নাশতা করতে গিয়েছিলেন। গাউস তাদের দুজনকে একসঙ্গে দেখে অনুসরণ করতে থাকেন। দোলা ও পাপ্পুকে একসঙ্গে বাসায় উঠতেও দেখেন তিনি। খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারেন, দোলা আগেই বিয়ে করেছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দুটি ছুরি নিয়ে দোলার বাসায় যান গাউস। পরে দোলা ও তার স্বামী পাপ্পুকে কুপিয়ে হত্যা করেন।

জয়পুরহাটে ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

প্রকাশ: ২৮ মে ২০২৫, ০৪:৪৬ পিএম
আপডেট: ২৮ মে ২০২৫, ০৪:৪৯ পিএম
জয়পুরহাটে ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
ছাত্রদল নেতা বিপ্লব আহম্মেদ পিয়ালকে ছুরিকাঘাতে হত্যার ঘটনায় শোকাহত স্বজনরা। ছবি: খবরের কাগজ

জয়পুরহাটে পূর্ব বিরোধের জেরে ছাত্রদল নেতা বিপ্লব আহম্মেদ পিয়ালকে (৩০) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। 

বুধবার (২৮ মে) দুপুরে জয়পুরহাট শহরের ইসলামনগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পিয়াল জয়পুরহাট শহর ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ইসলামনগর এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, বুধবার দুপুরে পিয়াল তার নিজ এলাকার সড়কের পাশের একটি দোকানের সামনে বসে পানি পান করছিলেন। সেসময় কয়েকজন সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে এসে পিয়ালকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এ সময় স্থানীয়রা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহতের বাবা বাচ্চু মিয়া খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমার ছেলে মাদক বিক্রির জন্য আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বাধা দিয়ে আসছিল। তাকে কয়েকমাস আগেও হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছিল। আজ তাকে হত্যা করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’

জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাইসুল আলম রিপন বলেন, ‘কিছুদিন আগে মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পিয়ালকে কুপিয়ে আহত করে। এ নিয়ে একটি মামলাও হয়েছিল। আজকে তাকে হত্যা করা হলো। আমরা ধারণা করছি, তারাই এ হত্যা করেছে। দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’

জয়পুরহাট পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতিসহ এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

সাগর/পপি/