ছবি: খবরের কাগজ
মাগুরায় গোপালগঞ্জের পাঁচ যুবককে জিম্মি করে নির্যাতন ও ১০ লাখ মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে একজনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী।
বুধবার (২৮ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে পৌরসভার সাজিয়াড়া এলাকার একটি মেস থেকে ওই পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়।
এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইশতিয়াক আহমেদ শান্ত (২৭) নামে এক যুবককে আটক করে সেনাবাহিনী।
উদ্ধার হওয়া পাঁচ যুবক হলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়নের বড়ফা গ্রামের রাজ্জাক সরদারের ছেলে রাজীব সরদার (২৪), মো. ওহিদ সরদারের ছেলে হৃদয় সরদার (২১), মৃত সুলতানা শেখের ছেলে বাবু শেখ (২৪), সোনা মিয়া সরদারের ছেলে ওসমান শেখ (২৪) ও মো. ওহিদ সরদার এর ছেলে রিয়াদ ইসলাম (২৩)।
শান্ত পৌরসভার সাজিয়াড়া এলাকার মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার মোবাইল ফোনে নির্যাতনের ভিডিওচিত্র পাওয়া যায়।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আইয়ুব আলী।
তিনি জানান, সেনাবাহিনী ও পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে। মামলা হলে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২১ মে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রি করতে মাগুরায় আসেন ওই পাঁচ যুবক। তারা সাজিয়াড়া এলাকায় এম এস ছাত্রাবাসের দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার ইশতিয়াক আহমেদ শান্তসহ ৮-১০ জন তাদের বাড়িতে জিম্মি করে নির্যাতন করেন। তাদের মারধরের পাশাপাশি হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। পরে তাদের বাড়িতে ফোন করে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়।
উদ্ধার হওয়া যুবকদের একজন বাবু শেখ সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাতে গান বাজিয়ে আমাদের মারধর করে ও ভিডিও ধারণ করে। আমাদের দুজনকে রাতে একটি শ্মশানে নিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। সকালে আলাদা আলাদা ঘরে আমাদের বন্দি করে রাখে। পরে সেনাবাহিনী এসে আমাদের উদ্ধার করে।’
মাগুরা সেনাক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, ওই যুবকদের আটক করে মারধর করার ভিডিও তাদের হাতে এসেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, চার যুবককে পাশাপাশি দেওয়ালের দিকে দুহাত উঁচু করে একজন লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছেন।
বুধবার দুপুরে খবর পেয়ে সাজিয়াড়া গ্রামের ওই ছাত্রাবাস ও এর পাশে মো. মহসিনের বাড়ি থেকে তালা ভেঙে ওই পাঁচ যুবককে উদ্ধার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই গ্রামের ইশতিয়াক আহমেদ শান্তর বাড়ি থেকে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। পরে এম এস ছাত্রাবাস থেকে মাদক সেবনে ব্যবহৃত ফয়েল পেপার, কলকে, নির্যাতনে ব্যবহৃত লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র জব্দ করে সেনাবাহিনী।
পুলিশ ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানান হয়, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।
কাশেমুর রহমান/অমিয়/