নাটোরের লালপুরের কদিমচিলান ইউনিয়নের ইয়াজ উদ্দীনের ছেলে মুদি ও চা-দোকানি আব্দুস সালাম (৪৫)। তার দোকানে নিয়মিত জিনিসপত্র কিনতেন একই এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে সাহেদ আলী (২৭)। একপর্যায়ে ওই দোকানে সাহেদের ২০০ টাকা বাকি হয়। কয়েক দিন চাওয়ার পরও ওই টাকা দেননি সাহেদ। এক দিন ছেলেকে নিয়ে জিনিসপত্র কিনতে গেলে ওই বাকি টাকা চান সালাম। এ নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সাহেদকে চড়-থাপ্পড় দেন সালাম।
এ ঘটনার পর সবার সামনে ছেলের মাথায় হাত রেখে সালামকে খুন করার ঘোষণা দেন সাহেদ। এরপর কেটে যায় প্রায় এক বছর। একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় আবারও আগের মতো কথাবার্তা এবং জিনিসপত্র বেচাকেনা চলছিল।
গত সোমবার রাতেও ওই দোকানে চা-বিস্কুট খেয়ে বিল পরিশোধ করে বাড়ি ফেরেন সাহেদ। কিন্তু কেউ বুঝতে পারেনি তিনি ওই অপমানের বদলা নেবেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুল হাকিম জানান, রাতে দোকানেই চৌকি পেতে ঘুমান সালাম। গত সোমবার রাত দেড়টার দিকে হাঁসুয়া আর পেট্রল নিয়ে ওই দোকানে যান সাহেদ। এরপর সালামের শুয়ে থাকা চৌকিতে পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। সালাম হঠাৎ আগুন দেখে চিৎকার করে চৌকি থেকে লাফ দিয়ে পাশের রাস্তায় দৌড়াতে থাকেন। এ সময় সালামকে পিছু ধাওয়া করে তার ঘাড়ে আর শরীরে হাঁসুয়ার আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করেন সাহেদ।
এদিকে সালামের চিৎকার শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তারা আগুন দেখে সেটা নেভাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আগুন নেভানোর পর রাস্তায় তারা সালামের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান।
এদিকে সালামকে হত্যার পর লোকজন ছুটে আসতে দেখে হাঁসুয়া হাতেই দৌড়ে পালাতে যান সাহেদ। এ সময় পাশের গোধরা গ্রামে পৌঁছালে স্থানীয় রহিম তালুকদারের ছেলে ওহিদুল তালুকদারের (২৭) সঙ্গে তার দেখা হয়। ওহিদুল তাকে জিজ্ঞেস করতেই তিনি সালামকে হত্যা করার কথা বলেন।
বিষয়টি শুনে সাহেদকে ধরতে গেলে ওহিদুলকেও হাঁসুয়া দিয়ে কোপাতে থাকেন। এ সময় ওহিদুলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে সাহেদকে আটক করে পুলিশে দেন।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিকে বুধবার আদালতে পাঠানো হবে।’