চট্টগ্রাম নগরীর হাজারী গলিতে অভিযানকালে যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ৮০ জনকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
আইএসপিআর জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে ওসমান আলী নামে একজন ব্যক্তির ‘ইসকন’বিরোধী একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম নগরীর টেরীবাজার এলাকার হাজারী লেনে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এতে আনুমানিক ৫০০ থেকে ৬০০ জন বিশৃঙ্খলাকারী হাজারী লেনে ওসমান আলী ও তার ভাইকে হত্যা এবং দোকান জ্বালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে জড়ো হন। স্থানীয় ‘কন্ট্রোল রুম’ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের ছয়টি টহল দল ওই এলাকায় পৌঁছায়।
আইএসপিআর জানিয়েছে, বিশৃঙ্খলাকারীদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় জানমাল রক্ষা ও ‘মব জাস্টিস’ রোধে যৌথ বাহিনী ওসমান আলী ও তার ভাইকে ওই এলাকা থেকে উদ্ধার করে। এ সময় উত্তেজিত জনতাকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের আশ্বস্ত করা সত্ত্বেও একপর্যায়ে দুষ্কৃতকারীরা আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। দুষ্কৃতকারীরা এ সময় যৌথ বাহিনীর ওপর অতর্কিতে জুয়েলারির কাজে ব্যবহৃত এসিড হামলা চালায় ও ভারী ইটপাটকেলসহ ভাঙা কাচের বোতল ছুড়তে শুরু করে। এতে সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যসহ সাতজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর আহত পাঁচ সদস্যকে বর্তমানে চট্টগ্রামের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া ঘটনাস্থলে দুষ্কৃতকারীরা ইট ছুড়ে সেনাবাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যানের উইন্ডশিল্ড ভেঙে ফেলে। এ অভিযানের পর দুষ্কৃতকারীদের শনাক্তকরণে ওই রাতে যৌথ বাহিনীর ১০টি টহল দল হাজারী লেন এলাকায় গেলে লুকিয়ে থাকা দুষ্কৃতকারীরা পুনরায় যৌথ বাহিনীর ওপর এসিডসদৃশ বস্তু ছুড়তে শুরু করে। এ সময় যৌথ বাহিনী ঘটনাস্থল থেকে ৮০ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আটক করে। বর্তমানে বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ ও গোয়েন্দা তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের চিহ্নিতকরণের প্রক্রিয়া চলছে।
আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। হাজারী গলিসহ নগরীর অন্যান্য এলাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।