![রেলের জমিতে মন্ত্রীপুত্রের সেই পার্ক উচ্ছেদ](uploads/2024/11/19/ministers-son's-gra-land-1732002354.jpg)
লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলরুটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভাণ্ডার রেলওয়ে স্টেশনের পাশে প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গা দখল করেন সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ। দখল করা জমিতে ব্যক্তিগত বিনোদনের জন্য গড়ে তোলেন পার্ক।
তবে অবশেষে সোমবার (১৮ নভেম্বর) সেই স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত বছর দুবার চেষ্টা করা হলেও সাবেক মন্ত্রীর প্রভাবে তারা উচ্ছেদ করতে পারেনি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে প্রায় ৭০ শতাংশ জায়গা দখল করে বিনোদন পার্ক তৈরি করেন।
রেলওয়ের জায়গার ওপর অবৈধভাবে এ স্থাপনাটি গড়ে তুলতে রাকিবুজ্জামান জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ভিন্ন নামে ২০টি প্রকল্পের মাধ্যমে দেড় কোটি টাকাও তুলেছেন। সরকারি টাকায় তিনি ওই ব্যক্তিগত পার্ক তৈরি করেছেন। সরকারি টাকায় পার্ক বানালেও যেখানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ ছিল।
জানতে চাইলে রেলওয়ের বিভাগীয় সহকারী ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা (ডিইও) আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আজকে (সোমবার) পার্কের বড় স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। রেলওয়ের জায়গার ওপর গড়ে তোলা সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার প্রস্তুতি আছে। এ মাসেই সেখান থেকে সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।’
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে নুরুজ্জামান আহমেদ ও রাকিবুজ্জামান পলাতক আছেন। তাদের দুজনের বিরুদ্ধেই হত্যা মামলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তুষভাণ্ডার রেলওয়ে স্টেশনের পার্শ্ববর্তী জায়গাটিতে এলাকার দরিদ্র লোকজন বসবাস করতেন। পাশে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করতেন। মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট উঠিয়ে দিয়ে জায়গাটি দখলে নিয়ে প্রথমে টিন দিয়ে ঘিরে ফেলেন।
পরে জায়গাটির চারদিকে ইটের প্রাচীর দেওয়া হয়। মূল ফটকের ওপর বসান কংক্রিটের নৌকা। পাশে অবৈধভাবে তৈরি করেন আওয়ামী লীগের অফিস। এ ছাড়া ভেতরের অংশে একটি বড় পুকুর কেটে এর চারপাশ ঘিরে তৈরি করা হয় সড়ক। বসানো হয় চেয়ার-টেবিল। রাকিবুজ্জামান সেখানে মাঝে মধ্যে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতেন।
রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ভূসম্পত্তি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, রেলওয়ের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের শুরুতেই সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কোনো তোয়াক্কা করেননি। নুরুজ্জামান আহমেদ ২০১৬ সালে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালের মন্ত্রিসভায় তিনি বাদ পড়েন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।