
নাটোরের সিংড়ায় স্ত্রীর সঙ্গে না ঘুমিয়ে সাত বছর বয়সী মেয়ে হাওয়া খাতুনের সঙ্গে ঘুমানোয় মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন সৎমা নূপুর বেগম। এই শোকে বাবা হাফিজুল ইসলাম বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে হাতিয়ান্দহ ইউনিয়নের দিঘল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও পুলিশ জানায়, রাতে ঘুমের মধ্যে মেয়ের শরীর থেকে লেপ সরে যায়। পরে শীতে কষ্ট পায়। এ জন্য স্ত্রীর কাছে না ঘুমিয়ে এক রাতের জন্য মেয়ের কাছে ঘুমান বাবা। ওই রাগে হাওয়াকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে পাশের পুকুরে ফেলে দেন নূপুর।
পরে বাড়ি ফিরে মেয়েকে দীর্ঘসময় খুঁজে না পেয়ে পুকুরে মেয়ের মরদেহ দেখতে পান। পরে মেয়ে হারানোর শোক সহ্য করতে না পেরে নিজেই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন হাফিজুল।
এ ঘটনায় সৎমা নূপুরকে আটক করেছে পুলিশ। আর বাবাকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাফিজুল জানান, তার বাড়ি সদর উপজেলার গেকুলনগর এলাকায়। প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের পর মেয়ে হাওয়া খাতুন তার সঙ্গেই থাকত। মেয়ের নিরাপত্তাসহ আদরে মানুষ হওয়ার কথা চিন্তা করে পাঁচ মাস আগে সিংড়ার সিধাখালি চকপুর এলাকার নূপুরকে বিয়ে করেন। এর পর ওই এলাকায় একটি পুকুরের পাহারাদারের চাকরি নিয়ে মেয়েসহ সপরিবারে ওই পুকুরপাড়েই ঘরে থাকতেন।
তিনি জানান, বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নূপুর মেয়েকে আদর করা সহ্য করতে পারত না। মেয়েকে আদর করলেই হিংসা করতেন তিনি। ওই কারণে মেয়েকে আদরও করতে পারতেন না তিনি। রাতে মেয়েকে পৃথক বিছানায় ঘুমাতে দিতেন। সম্প্রতি ঘুমের মধ্যে শীতে কষ্ট পাচ্ছিল। তাই গত রাতে মেয়ের খেয়াল রাখতে কাছে ঘুমান। সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছু দূরে একটি কাজে যান। ফিরে এসে জানতে পারেন, মেয়েকে হাঁসুয়া দিয়ে মাথায় পরপর তিনটি আঘাত করে নূপুর পুকুরে ফেলে দিয়েছে। দীর্ঘসময় পুকুরে খোঁজার পর মেয়ের মরদেহ পান। এরপর নিজেও মেয়ের সঙ্গে পরপারে চলে যেতে বিষপান করেন।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক জানান, নূপুর বেগমকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। মরদেহ ময়নাতদন্তের পরে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কামাল মৃধা/জোবাইদা/অমিয়/