নিহত পোল্ট্রি খামারি মো. মামুন
রাঙামাটির কাউখালীতে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বে অপহরণের আটদিন পর পোল্ট্রি খামারি মো. মামুনের (২৫) বস্তাবন্দি দ্বিখণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দেওয়ায় কামরুল ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকালে কাউখালীর নাইল্যাছড়ি মাঝের পাড়া এলাকার কামরুলের দেখিয়ে দেওয়া পাহাড়ের ঢালে মাটিতে পুঁতে রাখা মরদেহ উদ্ধার করে কাউখালী থানা পুলিশ।
এর আগে সোমবার (১৪ জুলাই) সন্ধ্যায় হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত কামরুল ইসলামকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় লক্ষ্মীপুর জেলার ভবানিগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে কাউখালী থানা পুলিশ।
নিহত মামুন কাউখালীর কলমপতি ইউনিয়নের সুগারমিল আদর্শগ্রাম এলাকার আলী আহম্মেদের একমাত্র ছেলে। মামুনের আট ও তিন বছর বয়সী দুই ছেলে এবং ৯ মাস বয়সী এক মেয়ে রয়েছে।
আর গ্রেপ্তার কামরুল মামুনের সাবেক কর্মচারী ও একই ইউনিয়নের ডাব্বুনিয়া এলাকার সেলিম সওদাগরের ছেলে।
এদিকে মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে সকালে স্থানীয় উৎসুক বাসিন্দারা উদ্ধার অভিযান এলাকায় ভিড় করেন। পরে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত কামরুলের ওপর হামলার চেষ্টা করেন। এ সময় তারা কামরুলসহ হত্যায় জড়িত সবার ফাঁসি দাবি করেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের জেরে গত ৭ জুলাই বিকেলে অপহৃত হন মো. মামুন। পরে মামুনের স্ত্রীর কাছে ফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ পরিশোধে পার্শ্ববর্তী চট্টগ্রামের রাণীরহাট এলাকায় আনোয়ার (২০) নামে এক ব্যক্তির কাছে দুটি চেক পাঠান মামুনের পরিবার। এই চেকের সূত্র ধরে আনোয়ারকে আটকের পর উঠে আসে অপহরণের সঙ্গে জড়িত মামুনেরই সাবেক কর্মচারী কামরুলের নাম। পরে মামুনের স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরির প্রেক্ষিতে কাউখালী থানা পুলিশ কামরুল ইসলামের স্ত্রী সাথী আক্তারকেও আটক করে।
পুলিশ হেফাজতে কামরুলের স্বীকারোক্তির বরাতে পুলিশ জানায়, মামুনকে পার্শ্ববর্তী রানীরহাট এলাকায় ভাড়া বাসায় চায়ের সঙ্গে নেশাদ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে স্ত্রীসহ মিলে হত্যা করে। পরে মরদেহ দ্বিখণ্ডিত করে বস্তায় ভরে কাউখালীর মাঝের পাড়া এলাকায় নিজের ফুফা শ্বশুরের বাড়ির পাশের পাহাড়ে মাটিতে পুঁতে রেখে পালিয়ে যান।
রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদুল ইসলাম বলেন, 'এ ব্যাপারে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। গ্রেপ্তার কামরুলকে আদালতে উপস্থাপন করে রিমান্ড চাওয়া হবে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইতোমধ্যে কামরুলের স্ত্রী সাথী আক্তার ও চেক গ্রহণকারী আনোয়ারকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।'
জুয়েল /মেহেদী/