ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের অবস্থান আরও সুদৃঢ়

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৩ এএম
আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৪৩ এএম
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের অবস্থান আরও সুদৃঢ়

আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডি’স ইনভেস্টর সার্ভিস সাম্প্রতিক মূল্যায়নে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের আউটলুক স্থিতিশীল (Stable) হিসেবে প্রকাশ করেছে।

এই রেটিংয়ের মাধ্যমে পরবর্তী ১২ থেকে ১৮ মাসে ব্যাংকের সম্পদের গুণগত মান, ভারসাম্যপূর্ণ স্থিতিশীল তারল্যের প্রতি মুডির আস্থা প্রতিফলিত হয়েছে। বাংলাদেশে চ্যালেঞ্জিং তারল্য পরিস্থিতি সত্ত্বেও ২০২৩-এর জুন এবং সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক স্থায়ী আমানত বৃদ্ধিতে স্থিতিশীলতা প্রদর্শন করেছে, যা আমানতকারীদের আস্থা বৃদ্ধির ইঙ্গিত বহন করে।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের রেটিং উন্নতিতে যেসব বিষয় ভূমিকা রেখেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো বৈদেশিক মুদ্রার তারল্য বৃদ্ধি, যা প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠানোর মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। উপরন্তু রিটেইল সেবাকে বহুমুখী করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য ব্যাংকটি বৈচিত্র্যপূর্ণ আমানত প্রকল্প চালু করে আমানতের ভিত্তিকে করেছে মজবুত। এর ফলে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের ঝুঁকি হ্রাস পেয়েছে। এতে ব্যাংকের আর্থিক অবস্থান আরও দৃঢ় হয়েছে।

তা ছাড়া সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক আগের বছরের তুলনায় আর্থিক সক্ষমতা সূচকে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ব্যাংকের নন-পারফর্মিং বিনিয়োগের পরিমাণ ৪.৭ শতাংশ থেকে ৪.৬ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। একই সময়ে কমন ইক্যুইটি টায়ার-১ রেশিও ৭.০ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭.১ শতাংশে  পৌঁছেছে। এর পাশাপাশি ২০২৩-এর ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের সম্পদের বিপরীতে ০.৪ শতাংশ আয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল।   

মুডি’স মূল্যায়নে যেকোনো ঝুঁকি মোকাবিলায় সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের শক্ত অবস্থান প্রকাশ করে।

২০২৫-২৬ বাজেট জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে: অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৫:২১ পিএম
জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা এমন একটি বাজেট দিতে পেরেছি যা জনগণের জীবনমান উন্নয়ন ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করবে।’

মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ড. সালেহ উদ্দিন বলেন, ‘অনেকে বলছেন আমরা আগের ধারা অনুসরণ করেছি। হুট করেই বিপ্লব ঘটানো সম্ভব নয়। তবে একেবারেই ইনোভেশন নেই, সেটাও ঠিক নয়। বাজেট এখনো চূড়ান্ত নয়, এটি উন্মুক্ত থাকবে-সাজেশন নেব, তারপর ফাইনাল হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই প্রতিকূল অবস্থায় সবার সহযোগিতা চাই। কোলাবোরেটিভ ও সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই-চ্যালেঞ্জের মাঝেও ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের সামনের পথ কঠিন। তবে আমরা এনবিআরকে পুনর্গঠনের চেষ্টা করছি। পাশাপাশি বিদেশি ঋণ আনার বিষয়েও ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, সড়ক ও রেল উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, বাণিজ্য ও শিল্প উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানসহ বিভিন্ন আর্থিক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা।

এমএ/

যমুনা সেতুতে একদিনে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টোল আদায়

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:০৩ পিএম
আপডেট: ০৩ জুন ২০২৫, ০৪:১৭ পিএম
যমুনা সেতুতে একদিনে ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা টোল আদায়
ছবি: খবরের কাগজ

গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা সেতু থেকে দুই কোটি ৭৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ টাকা টোল আদায় করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ এবং এর বিপরীত ৩০ হাজার ১৬৭ টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ জুন ) যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, রবিবার (১জুন) রাত ১২টা থেকে সোমবার (২ জুন) রাত ১২টা পর্যন্ত ৩০ হাজার ১৬৭টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গগামী ১৫ হাজার ৩৯৮টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৭ লাখ ১৩ হাজার টাকা। অপরদিকে ঢাকাগামী ১৪ হাজার ৭৬৯ টি যানবাহন পারাপারে টোল আদায় হয়েছে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকা।

যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, 'মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বাড়লেও নেই যানজট। যানজট নিরসনে যমুনা সেতু পূর্ব ও পশ্চিম উভয় অংশে ৯টি করে ১৮টি টোল বুথ স্থাপনসহ মোটরসাইকেলের জন্য চারটি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। সেতুর উপর কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেই জন্য দুইটি রেকারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় আছে। আমরা সবাই মিলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।মানুষ যেন নির্বিঘ্নে গন্তব্য পৌঁছাতে পারে।' 

জুয়েল রানা/রিফাত/

সুদ পরিশোধে চাপ বাড়বে, বরাদ্দ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম
সুদ পরিশোধে চাপ বাড়বে, বরাদ্দ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

বাজেটে বরাদ্দের বড় একটি অংশ ব্যয় হয় ঋণের সুদ পরিশোধে। প্রতিবছর বাজেটে এই বরাদ্দ বাড়ছেই। ঋণের সুদ বাবদ ব্যয় এখন বাজেটের সর্বোচ্চ একক খাত। চলতি বছরের বাজেটেও একই ধারা অব্যাহত রয়েছে।

সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এর মধ্যে শুধু সুদ পরিশোধেই ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। সুদ পরিশোধের এই ব্যয়ের পরিমাণ প্রস্তাবিত মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এই ব্যয়ের বড় অংশই যাবে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া ঋণের সুদ পরিশোধে। 

এই বিপুল বরাদ্দের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে ২২ হাজার কোটি টাকা। অথচ চলতি অর্থবছরে ২০২৪-২৫ সংশোধিত বাজেটে সুদ পরিশোধের জন্য বরাদ্দ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে ব্যয় বাড়ছে ৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের সময়ে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বড় অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ নিয়েছিল সরকার। চলতি বছর কিছু বৈদেশিক ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় শুধু সুদ নয়, আসল অর্থও পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। ফলে চাপ বেড়েছে দ্বিগুণ। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদের হার বেড়েছে। গত দুই বছরে মুদ্রার অবমূল্যায়নে বৈদেশিক ঋণের বোঝা আরও বড় হয়েছে।

অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, ভবিষ্যতে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি আরও চাপের মুখে পড়তে পারে। সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘ঋণের বোঝা যেভাবে বাড়ছে তার বিপরীতে সুদ পরিশোধে বাজেটের বড় একটি অংশ খরচ হয়ে যাচ্ছে। এটি সরকারের জন্য দুশ্চিন্তার বিষয়। সুদ পরিশোধের চাপ কমাতে হলে সরকারকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ তথা রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে। তা না হলে সরকার কঠিন চাপের মুখে পড়বে।’

গত কয়েক বছরের সুদ পরিশোধের হিসাবও বড় ঋণ নির্ভরতার আভাস দেয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় ছিল ৭০ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। পরবর্তী বছর তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৭ হাজার ৭৭৯ কোটি, ২০২২-২৩ সালে ৯০ হাজার ১৩ কোটি এবং ২০২৩-২৪ সালে ৯৪ হাজার ৩৭৬ কোটি টাকায়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছর তা বেড়ে ১ লাখ ২২ হাজার কোটিতে পৌঁছাতে চলেছে।

বাজেটে ঘাটতি পূরণের জন্য দুই উৎস থেকে ঋণ নেয় সরকার। এর মধ্যে একটি হচ্ছে অভ্যন্তরীণ এবং অন্যটি বিদেশি ঋণ। অভ্যন্তরীণ উৎসের মধ্যে আবার ব্যাংক ব্যবস্থা এবং সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে ঋণ নেয় সরকার। আর বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বহুপক্ষীয় দাতা সংস্থা ও দ্বিপক্ষীয় দেশ থেকে বিদেশি ঋণ নেওয়া হয়। আন্তর্জাতিক সংস্থার পাশাপাশি বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং বাজেট সহায়তার জন্য বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে ঋণ নেয়।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় জাপান, চীন, রাশিয়া ও ভারতের কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি ঋণ নিচ্ছে। আর বহুপক্ষীয় সংস্থার মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও আইএমএফ থেকে ঋণ নেওয়া হয়। প্রতিবছর বাজেটে এই দুই উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এসব ঋণের বিপরীতে চড়া সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে সরকারকে। ফলে সুদের পেছনে ব্যয় বাড়ছেই।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ঋণ পরিশোধে খরচ হয়েছে ৩২১ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৮ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ২৫৭ কোটি ডলার (২৮ হাজার ২৮১ কোটি টাকা)। অর্থাৎ পরিশোধের চাপ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

১১০ পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম
১১০ পণ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ১১০ পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস করা হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) বিকেলে জাতীয় বাজেট উপস্থাপন করেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, আমদানি পণ্যের শুল্ক-করহার পর্যায়ক্রমে হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সংলাপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এটি করা হয়েছে। 

আমদানি শুল্ক হলো কোনো পণ্যের আমদানির ওপর ধার্য করা কর। এটি সাধারণত একটি পণ্যের মূল্যের ওপর নির্ভর করে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

প্রস্তাবিত বাজেটে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে অপরিশোধিত এবং পরিশোধিত উভয় ধরনের পেট্রোলিয়াম আমদানিতে শুল্ক-করহার হ্রাস হয়েছে। এ ছাড়া এসব পণ্যের ট্যারিফ মূল্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে পরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্কও হ্রাসের প্রস্তাব করা হয়েছে।

শিল্প খাতে প্রণোদনা দেওয়ার অংশ হিসেবে বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। স্থানীয় শিল্পের প্রতিরক্ষণের জন্য ক্লোরিনেটেড প্যারাফিন ওয়াক্স, সিল্ড ব্যাটারি, পলিয়েস্টার স্ট্যাপল ফাইবার, ব্যাটারির সেপারেটর, লিফটের যন্ত্রাংশ, এলইডি বাতির যন্ত্রাংশসহ কতিপয় পণ্যের আমদানি শুল্ক বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। 

এ ছাড়া আগামী অর্থবছরের জন্য ৯ পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অনেক সময় সরকার দ্রব্যসামগ্রীর ওপর আমদানি শুল্ক বা আবগারি শুল্ক কিংবা ভ্যাট আরোপ করে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারে না। তখন এসব কর ও শুল্কের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করা হয়। এটি সম্পূরক শুল্ক বা কর হিসেবে পরিচিত।

প্রস্তাবিত বাজেটে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার, এয়ারকন্ডিশনার ও এর কম্প্রেসরের উৎপাদনের জন্য কতিপয় প্রয়োজনীয় উপকরণ আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি পর্যায়ে সম্পূরক শুল্ক ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারক কর্তৃক সিগারেট পেপার আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্কহার ১৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৩০০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, ওটিটি বা ওভার দ্য টপ প্ল্যাটফর্ম সেবার সংজ্ঞা প্রদানপূর্বক এর ওপর ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, সব ধরনের আইসক্রিমের ওপর সম্পূরক শুল্কহার ১০ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। 

বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়েছে, বর্তমানে বলবৎ ন্যূনতম ও ট্যারিফ মূল্য পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করার অংশ হিসেবে বিদ্যমান সব ট্যারিফ মূল্য প্রত্যাহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৮৪টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য প্রত্যাহার এবং ২৩টি পণ্যের ন্যূনতম মূল্য বৃদ্ধি করে শুল্ক মূল্য যৌক্তিক করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

এটি দেশের ৫৪তম বাজেট এবং অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেট। 

প্রতিবছর জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করা হলেও এবার সংসদ না থাকায় তা ঘোষণা করা হচ্ছে বেতার-টেলিভিশনের মাধ্যমে। এবারের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা।

বাজেটে নেই মেগা প্রকল্প, এডিপির আকার ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০২:১৫ পিএম
বাজেটে নেই মেগা প্রকল্প, এডিপির আকার ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি
এ রকম মেগা প্রকল্পের জন্য এ বছর বাজেটে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। ছবি: সংগৃহীত

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা ও বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তবে এবার কোনো মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ রাখা হয়নি।

সোমবার (২ জুন) অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) নতুন জাতীয় বাজেট ঘোষণা করেন।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে উন্নয়ন বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে পরিবহন ও বিদ্যুৎ খাতে। এই দুই খাতে ৯১ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকা কমছে উন্নয়ন বাজেটে। প্রায় সব খাতেই বরাদ্দ কমছে। তবে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ খাতে ৫৮ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে। এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা।

নতুন এডিপিতে উন্নয়ন বরাদ্দের দিক দিয়ে সবচেয়ে অগ্রাধিকার পেয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাত। এরপর রয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। বিগত বছরগুলোতেও এই দুটি খাতকেই অগ্রাধিকার পেতে দেখা গেছে। এবার শিক্ষা খাতের অবস্থান তিন নম্বরে। চার নম্বরে আছে গৃহায়ন। স্বাস্থ্য খাতের অবস্থান পঞ্চম। এ ছাড়া শিক্ষা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৮ হাজার ৫৫৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ থাকছে ১৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। 

আগামী এডিপিতে স্থানীয় উৎস থেকে জোগান দেওয়া হবে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা। আর প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে ৮৬ হাজার কোটি টাকা। মোট প্রকল্পের সংখ্যা থাকছে ১ হাজার ১৪২।