ঢাকা ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫
English
মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নীলফামারীতে বেড়েছে দুধ উৎপাদন

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২৪, ০১:০৩ পিএম
নীলফামারীতে বেড়েছে দুধ উৎপাদন
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার আদর্শ দুগ্ধ খামারে দুধ ওজন করা হচ্ছে। ছবি: খবরের কাগজ

গরুর জাতের উন্নয়ন ঘটানোয় গত পাঁচ বছরে নীলফামারীতে দুধ উৎপাদন ৭০ হাজার মেট্রিক টন বৃদ্ধি পেয়েছে। তার পরও জেলায় দুধের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। মাথাপিছু দুধপানও কাঙ্ক্ষিত মাত্রার চেয়ে কম। আবার দিন দিন বাড়ছে দুধের দামও।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ঘাটতি মেটাতে গো-খাদ্যের বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে নজর রাখার পাশাপাশি সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হলে স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

জানা গেছে, নীলফামারীতে প্রায় ৩১ হাজার ছোট-বড় দুগ্ধ খামারি বছরে ১ লাখ ৫৩ হাজার টন দুধ উৎপাদন করছেন। অথচ পাঁচ বছর আগে জেলায় বছরে দুধ উৎপাদন হতো মাত্র ৮৫ হাজার টন। গরুর জাত উন্নয়নের ফলে দুধ উৎপাদন বেড়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে দেশি গরুর খামার করা থেকে সরে আসছেন অনেকেই। একটি দেশি গরু প্রতিদিন গড়ে পাঁচ লিটার দুধ দেয়। সেখানে একটি উন্নত সংকর জাতের গরু প্রতিদিন গড়ে দুধ দেয় ২০ লিটার। 

নীলফামারী সদর উপজেলার দুগ্ধখামারি সাইদুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি পাঁচ বছর আগে ছয়টি দেশি গরু দিয়ে খামার শুরু করেছিলাম। প্রথম দুই বছর লাভের মুখ দেখতে পারিনি। পরে প্রাণিসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে উন্নত সংকর জাতের গরু পালনের পরামর্শ দেন। বর্তমানে আমার খামারে ২৫টি গরু আছে, যা প্রতিদিন ৮০ লিটার দুধ দেয়। এতে খামার থেকে আমি কিছুটা লাভবান হয়েছি।’

ডোমার উপজেলার আদর্শ দুগ্ধ খামারের ব্যবস্থাপক বাবুল মিয়া বলেন, ‘এক লিটার দুধ উৎপাদনে যে ব্যয় হয়, তার ৭০ শতাংশই যায় গো-খাদ্যে। এর বাইরে শ্রমমূল্য এবং অন্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ও রয়েছে। দেশি গরু খায় কম, তাই দুধ উৎপাদন কম, সংকর জাতের গরু খায় বেশি, তাই দুধ উৎপাদন অনেক বেশি। সংকর জাতের খামারের তুলনায় দেশি গরুর খামারে এত বেশি দুধ উৎপাদন সম্ভব নয়। গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় দেশি খামারে মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।’ 

নীলফামারী সদরের রুহামা অ্যাগ্রো লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী ড. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে জেলায় খামারির সংখ্যা বেড়েছে। তবে গরুর জাত উন্নয়নের কারণে দুধের উৎপাদন বেড়েছে। খামারিরা এখনো দেশি গরুতে সীমাবদ্ধ থাকলে দুধের বর্তমান উৎপাদন সম্ভব হতো না। যেখানে ২০১৯ সালে মানবদেহে প্রতিদিন ১৫০ মিলিলিটার দুধের প্রয়োজন ছিল, সেখানে বর্তমানে ডব্লিউএইচওর সমীক্ষা অনুযায়ী মানবদেহে দুধের প্রয়োজন ২৫০ মিলিলিটার। বর্তমানে আমরা ১৭৫ মিলিলিটার দুধ উৎপাদন করতে পেরেছি। দুধের উৎপাদন বেড়েছে। তবে গো-খাদ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ না করলে উৎপাদন বৃদ্ধির এই হার হোঁচট খাবে। তবে সরকার ঘোষিত ১০০ ফিডমিল তৈরি ও ২০টি মিল্কহাব স্থাপন করার পর পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে।’ 

নীলফামারী সদরের মনষাপাড়ার খুচরা দুধ ব্যবসায়ী মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘তিন-চার বছর আগে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি করতাম ৩৫-৪০ টাকা। বর্তমানে গরুর খাবারের দাম বেশি হওয়ায় খামারিদের কাছ থেকে কিনতে হয় অনেক বেশি দামে। এখন প্রতিলিটার দুধ বিক্রি করতে হয় ৭০ টাকা দরে। তাই এখন গ্রাহক কিছুটা কমেছে। গরুর খাদ্যের দাম কমলে দুধের দাম কমে আসবে। তখন গ্রাহক অনেটাই বৃদ্ধি পাবে।’

চা-ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, ‘আগে গরুর দুধের চা বিক্রি করতাম প্রতি কাপ ৫ টাকা। দুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। তাই এখন প্রতি কাপ চা বিক্রি করতে হয় ১০ টাকা।’

নীলফামারী পৌরসভার বাসিন্দা গৃহিণী আকলিমা খাতুন বলেন, ‘আমার পরিবারের সদস্য ছয়জন। প্রতিদিন বাড়িতে দুধ লাগে দুই লিটার। আগে প্রতি লিটার ৪০ টাকা করে কিনতাম। কিন্তু বর্তমানে দুধের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। এত টাকা দিয়ে প্রতিদিন দুধ কেনা আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের পক্ষে সম্ভব হয় না। দুধের দাম কমে এলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য অনেক ভালো হবে।’ 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় জনপ্রতি প্রতিদিন ২৫০ মিলিগ্রাম দুধ হিসাব করলে চাহিদা দাঁড়ায় ১ লাখ ৯৩ হাজার মেট্রিক টন। যার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ১ লাখ ৫৩ হাজার টন। চাহিদার তুলনায় বছরে প্রায় ৪০ হাজার টন দুধের ঘাটতি রয়েছে। তবে জেলায় প্রশিক্ষিত খামারি রয়েছেন ৪৬ হাজার, উৎপাদমুখী খামারি রয়েছেন ৩১ হাজার। বাকি ১৫ হাজার প্রশিক্ষিত খামারি দুধ উৎপাদন শুরু করলে আগামী পাঁচ বছরে এই ঘাটতি পুষিয়ে দুধ রপ্তানি করা যাবে।

নীলফামারী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সিরাজুল হক খবরের কাগজকে বলেন, ‘২০১৮-১৯ অর্থবছরে জেলায় দুধ উৎপাদন হয়েছিল ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। গরুর জাত উন্নয়ন ও খামারি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ লাখ ৫৩ হাজার মেট্রিক টনে এসে দাঁড়িয়েছে। তবে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় এখনো প্রশিক্ষিত ১৫ হাজার খামারি পিছিয়ে আছেন। গো-খাদ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে আমরা আগামী পাঁচ বছরে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দুধ রপ্তানি করতে পারব।’

বাজেটে অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৪৬ পিএম
বাজেটে অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে ভ্যাট ১৫ শতাংশ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

আগামী বাজেটে অনলাইনে পণ্য বিক্রির কমিশনের ওপর ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। 
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে ই-কমার্স খাতে বা অনলাইনে পণ্য বিক্রয়ে কমিশনের ওপর ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।’

সোমবার দুপুরে ঢাকার তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ সভায় ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

এদিকে ভ্যাটের হার বাড়ায় তা ই-কর্মাস ব্যবসায়ীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা জানান, এই প্রস্তাবে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে বাধা পড়বে।

বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমানো হবে ১০ শতাংশ

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৪৩ পিএম
বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমানো হবে ১০ শতাংশ
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

২০২৫-২৬ অর্থবছরে বিদ্যুতের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। 

সোমবার (২ জুন) বিকেলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস করার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সার্বিক ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তিগুলোও পর্যালোচনা করছি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমাতে এনার্জি অডিট করার উদ্যোগ নিয়েছি। গ্যাস বিতরণে নিযুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার ২ শতাংশের স্থলে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ কেনার অর্থ পরিশোধকালে উৎসে কর কর্তনের হার ৬ শতাংশের স্থলে ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।’

বাজেট ঘোষণায় উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০’ বাতিল করা হয়েছে। এ আইনের আওতায় এর আগে সম্পাদিত চুক্তিগুলো পর্যালোচনার জন্য একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।’’ 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা, ২০০৮’ যুগোপযোগী করে নতুন একটি নীতিমালা প্রণয়নের কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনের শতকরা ৩০ ভাগ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া Integrated Power Sector Master Plan তৈরি করা হয়েছে এবং এর আওতায় আগামী ২০২৮ সালের মধ্যে ৩ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পরিচ্ছন্ন উৎস থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’  

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার নিজস্ব উদ্যোগে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে বলেও জানান তিনি। উপদেষ্টা বলেন, ‘এ লক্ষ্যে ২০২৫-২৬ থেকে ২০২৭-২৮ পর্যন্ত সময়ে বাপেক্স কর্তৃক প্রয়োজনীয় জরিপ কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। মধ্যমেয়াদে বাপেক্সের নিজস্ব রিগ দিয়ে ৬৯টি কূপ খনন এবং ৩১টি কূপের ওয়ার্কওভার সম্পন্নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পরিশোধিত তেলের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর ৩ মিলিয়ন টন অপরিশোধিত তেল শোধন ক্ষমতাসম্পন্ন ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের ইউনিট-২ স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।’

বাজেটে সিগারেট, জর্দা ও গুলের করহার অপরিবর্তিত

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৩৮ পিএম
বাজেটে সিগারেট, জর্দা ও গুলের করহার অপরিবর্তিত
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরনের সিগারেট, জর্দা ও গুলের দাম ও করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এতে সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে। ২০২৫-২৬ সালের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার পর তামাকবিরোধী সংগঠন ‘প্রজ্ঞা ও আত্মা’ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানায়, এর ফলে তরুণ জনগোষ্ঠী সিগারেট ব্যবহারে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। 

প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেট প্রস্তুতকারকের নিট বিক্রয়মূল্যের ওপর অগ্রিম কর ৩ শতাংশের স্থলে ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক আমদানিকারকের সিগারেট পেপার আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক ১৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৩০০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে তামাকপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট নয় বলে মনে করে প্রজ্ঞা ও আত্মা।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তারা জানায়, বাজারের প্রায় ৮০ শতাংশ নিম্ন এবং মধ্যম স্তরের সিগারেটের দখলে। এগুলো একত্রিত করে সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ করার পাশাপাশি অন্যান্য স্তরের সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে রাজস্ব আয়ের এই সুযোগ হাতছাড়া হবে না এবং জনস্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটবে।

প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়ায় প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এ বি এম জুবায়ের বলেন, ‘তামাকের কারণে দেশে প্রতিদিন গড়ে ৪৪২ জন মানুষ মারা যান। তামাকবিরোধীদের কর সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হলে তামাকের ব্যবহার ও তামাকজনিত মৃত্যু কমবে এবং সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।’

বাজেটে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নেই

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:৩৩ পিএম
বাজেটে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব নেই
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে না বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (২ জুন) প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ তথ্য জানান তিনি।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি অর্থনীতিকে সচল রাখতে জ্বালানির পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং একই সঙ্গে তা যথাসম্ভব সাশ্রয়ী রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যমান উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে নীতিগতভাবে আমরা বিদ্যুতের দাম আপাতত না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে প্রদত্ত ভর্তুকির পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমানোর লক্ষ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সার্বিক ব্যয় ১০ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। আমরা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিগুলোও পর্যালোচনা করছি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় কমাতে এনার্জি অডিট করার উদ্যোগ নিয়েছি।’ 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বছরের মধ্যেই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৬৪৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করার এবং ২০২৮ সালের মধ্যে স্থানীয় কূপ থেকে অতিরিক্ত ১ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

পিপিপি তহবিলে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ০১:২৯ পিএম
পিপিপি তহবিলে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ বা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) পদ্ধতিতে সম্ভাবনাময় খাতে বিনিয়োগ বাস্তবায়নের উদ্যোগ জোরদার করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরে পিপিপি তহবিলে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

সোমবার (২ জুন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনকালে এ প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই এবং প্রতিযোগিতামূলক করতে হলে বেসরকারি খাত সামনে রেখে কাঠামোগত সংস্কার এবং বিনিয়োগ সহায়ক নীতিনির্ধারণ অপরিহার্য।’ তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য বিনিয়োগকারীদের একটি পাইপলাইন তৈরি করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিকে ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রকৃত বিনিয়োগে রূপান্তর করা হবে। তিনি বলেন, দেশের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রসমূহে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগ প্রকল্পের বাস্তবায়নকে উৎসাহিত করার দিকেও আমরা বিশেষ নজর দিচ্ছি। এ লক্ষ্যে পিপিপি তহবিল হিসেবে আগামী অর্থবছরে ৫ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি।

দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হলে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি, এমন মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিনিয়োগের পথে যেসব অন্তরায় রয়েছে, সেগুলো চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ে তা দূর করার জন্য সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

অর্থ উপদেষ্টা জানান, বিনিয়োগকারীদের দ্রুত ও সহজে সেবা দিতে বর্তমানে ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) পোর্টালের মাধ্যমে ৪৩টি সংস্থার ১৩৪টি সেবা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যবসা সহজীকরণের অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আওতায় চালু করা হয়েছে ‘বাংলাদেশ সিঙ্গেল উইন্ডো’ (বিএসডব্লিউ)। এর মাধ্যমে একটি প্ল্যাটফর্মে আবেদন, প্রক্রিয়াকরণ ও সেবা গ্রহণ করা যাচ্ছে। 

২০০৯-১০ অর্থবছরের বাজেটে সরকার প্রথম পিপিপি প্রকল্প চালু করার উদ্যোগ নিয়ে এ খাতে বরাদ্দ রাখে। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিত প্রথমবারের মতো পিপিপির অধীনে প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এর পরে প্রতিটি বাজেটে পিপিপির জন্য আলাদা বরাদ্দ রাখা হলেও বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহে এই পিপিপির অধীনে খুব বেশি প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি।  পিপিপির অধীনে দেশে একমাত্র বাস্তবায়িত প্রকল্প হচ্ছে উড়ালসড়ক।