ঢাকা ৩ আশ্বিন ১৪৩১, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা

প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
আপডেট: ১২ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৫ পিএম
জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেল গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা
ছবি : খবরের কাগজ

গোপালগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ব্রোঞ্জের গহনা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। এটি জেলার দ্বিতীয় পণ্য হিসেবে জিআই স্বীকৃতি পেল।

এর আগে গোপালগঞ্জের রসগোল্লা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পায়।

শুক্রবার (১২ জুলাই) গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘গত ১২ মার্চ জেলা প্রশাসক জিআই পণ্যের অর্ন্তভূক্তির জন্য বাংলাদেশ শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। পরে যাচাই-বাছাই করে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনা নিবন্ধনের জন্য ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন, ২০১৩ এর ধারা ১২ অনুসারে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর জার্নাল প্রকাশ করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই অর্জন ব্রোঞ্জের গহনা তৈরির সঙ্গে সম্পৃক্ত কারিগরদের কর্মসংস্থান ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। ব্রোঞ্জ শিল্পভিত্তিক অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে। এলাকার আর্থ-সামজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটবে।’

এ অর্জনে জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম গোপালগঞ্জের ব্রোঞ্জের গহনার জিআই ভুক্তিকরণের সঙ্গে সম্পৃক্ত জেলা প্রশাসন ও মুকসুদপুর উপজেলা প্রশাসনের সব কর্মকর্তা এবং ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (ইডিসি) কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

চলতি বছরের ১২ মার্চ জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনার জিআই পণ্যের স্বীকৃতি চেয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোতে আবেদন করা হয়। 

ব্রোঞ্জ মার্কেটের ব্যবসায়ী ও জলিরপাড় ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য সুভাষ বৈদ্য খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডেই ব্রোঞ্জের গহনা তৈরির পল্লী প্রায় ১০০ বছর আগে গড়ে ওঠে। পরে এটি সারা জলিরপাড় ইউনিয়নের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ পল্লীকে কেন্দ্র করে এখানে ব্রোঞ্জ মার্কেট প্রতিষ্ঠত হয়। তখন জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনার সুখ্যাতি দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এটি বিদেশের বাজারে ছড়িয়ে যায়। কিন্তু এ শিল্পে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি। তাই সম্প্রতি ভারতসহ বিভিন্ন দেশের ব্রোঞ্জের গহনা আমাদের বাজারের প্রায় ৫০ ভাগ দখল করে দিয়েছে। তারপরও জলিরপাড়ের ব্রোঞ্জের গহনা তৈরি শিল্প সগৌরবে শতাধিক পরিবার টিকিয়ে রেখেছে। জলিরপাড় ব্রোঞ্জ মার্কেটে এখনো ৪৫টি দোকান রয়েছে। এসব দোকানে এখনো ব্রোঞ্জের গহনা বিক্রি করা হয়।’

জলিরপাড় গ্রামের গহনা প্রস্তুতকারক জগদীশ শীল বলেন, ‘ব্রোঞ্জ গহনা তৈরির তামা, দস্তা ও পিতলের দাম বেড়েছে। সহজ প্রাপ্যতা কমেছে। ভারতসহ অন্যান্য দেশের ব্রোঞ্জ গহনার রং খুব চকচকা। আমাদের গহনার রং তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে পারে না। দামী সুদৃশ্য, মনোহর ও সৌখিন গহনার বাজার ভারত ও চীনের দখলে চলে গেছে। তাই যেসব গহনার চাহিদা রয়েছে এমন সব গহনা আমরা তৈরি করি। সরকার এ শিল্পকে অধুনিকায়ন, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা ও সব ধরনের সহযোগিতা করলে আমরা ব্রোঞ্জ গহনার শত বছরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে পারব। এখানে এখানো মানসম্পন্ন কারিগর রয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি সমন্বয়ে তাদের কাজে লাগিয়ে আমরাও দামী গহনা তৈরি করতে পারি। তা হলেই শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ীরা অধিক উপার্জন করতে পারবেন। এ শিল্প দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ ও গতিশীল করবে।’

বাদল/ইসরাত চৈতী/

সরকারের সহায়তা চেয়ে এস আলম গ্রুপের চিঠি

প্রকাশ: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:৪৪ পিএম
আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ পিএম
সরকারের সহায়তা চেয়ে এস আলম গ্রুপের চিঠি
এস আলম গ্রুপ

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপের হাজার হাজার কোটি টাকার একাধিক ব্যবসা ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংক হিসাবগুলো থেকে ব্যবসায়িক লেনদেন, আমদানি ঋণপত্র খোলা, কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির মতো জরুরি পরিষেবা বিল ও গ্রুপের কাছে সরকারের প্রাপ্য কর, ভ্যাট ও কাস্টমস শুল্ক পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রাখতে সহযোগিতা চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ও বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) গ্রুপটির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। 

চিঠি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হোসনে আরা শিখা খবরের কাগজকে বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর বিষয়টি আগেই স্পষ্ট করেছেন যে, কোনো যৌথ মালিকানার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি। আজ এস আলম গ্রুপের আবেদন পাওয়ার পর আমি নিজে বিএফআইইউ প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলেছি। সেখান থেকে জানানো হয়, ইতোমধ্যে যাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে তার সবই ব্যক্তির এবং একক ব্যক্তির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। কোনো যৌথ মূলধনি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি।’

এ প্রসঙ্গে মুখপাত্র আরও বলেন, ‘আজই আমরা এস আলম গ্রুপের আবেদন পেলাম এবং জানতে পারলাম যে তাদের ব্যবসায়িক লেনদেন বিঘ্নিত হচ্ছে বিধায় বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউয়ের সহযোগিতা চেয়েছে। এখন খোঁজখবর নেওয়া ও অভিযোগের সত্যতা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে সে সিদ্ধান্ত সময়মতো সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দেওয়া হবে।’

এর আগে বিএফআইইউয়ের উপপ্রধান মো. রফিকুল ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, ‘কোনো ব্যাংক যদি স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে থাকে তাহলে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য আমাদের জানাতে হবে। সে ক্ষেত্রে বিএফআইইউ ও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আমরা শুধু ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছি। এর বাইরে কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়নি। এ ব্যাপারে প্রতিটি ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া ছাড়াও আমরা প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানিয়েছি।’

গত ৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর এক সংবাদ সম্মেলনে প্রথম ঘোষণা দেন যে, কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হবে না। তিনি বলেছিলেন, এর উদ্দেশ্য দুটি। এক. বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ভ্যালু নষ্ট করতে চায় না। দুই. ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত কর্মসংস্থান, বেতন-ভাতা তথা জীবিকা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কোনো ক্ষতি বাংলাদেশ ব্যাংক করবে না।

গভর্নর বলেন, ‘গণমাধ্যমে এসব নিয়ে অপপ্রচার বা অভিসন্ধিমূলক সংবাদ প্রচার হচ্ছে, যা একেবারেই অপ্রত্যাশিত।’

এদিকে এস আলম গ্রুপ লেনদেন করতে না পারায় ব্যবসা পরিচালনা করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে এবং এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএফআইইউকে চিঠি দিয়েছে তারা। 

ওই চিঠিতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির যেসব হিসাব ছিল, সেগুলো স্থগিত করা হয়েছে এবং এ জন্য কর্মীদের সময়মতো বেতন-ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। তাতে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শ্রমিক অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়তে পারে বলেও চিঠিতে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, এস আলম গ্রুপ তার ব্যাংক হিসাব থেকে গ্যাস-বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন পরিষেবার বিল পরিশোধ করতে পারছে না। গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা বিভাগের আশঙ্কা, এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির মতো পরিষেবার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া এস আলম গ্রুপের পক্ষে সরকারকে কর, ভ্যাট ও কাস্টমস শুল্কও পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।

চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, গ্রুপটির খাদ্য ও সহায়ক অন্যান্য পণ্যের এলসি বা আমদানি ঋণপত্র জোরপূর্বক বাতিল করা হচ্ছে। এস আলম গ্রুপ মনে করছে, এর ফলে দেশে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্যের সংকট হতে পারে। এ ছাড়া এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির বেচাবিক্রি কমে যাচ্ছে। ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতিও হচ্ছে। 

এদিকে এস আলম গ্রুপের পক্ষ থেকে খবরের কাগজকে জানানো হয়েছে যে, বর্তমানে দেশে ভোগ্যপণ্যের (সয়াবিন, পামওয়েল, ডাল, ছোলা ও চিনি) চাহিদা পূরণে এস আলম গ্রুপ নিয়মিত এককভাবে শীর্ষস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। দেশে রমজান মাসসহ বিভিন্ন সময়ে সরবরাহজনিত সংকটে এস আলম গ্রুপ জরুরিভিত্তিতে এসব ভোগ্যপণ্য আমদানির উদ্যোগ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।

একটি খতিয়ান থেকে তা স্পষ্ট হতে পারে। কোম্পানিটি গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে ৭ লাখ ৫০ হাজার টন চিনি আমদানি করে, যার মূল্য ৪৯ কোটি ৫ লাখ মার্কিন ডলার। গত তিন বছরে (২০২৩, ২০২২, ২০২১) চিনি আমদানির সম্মিলিত পরিমাণ ছিল ১৪ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন, যার মূল্য দাঁড়ায় ৮২ কোটি ৬১ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ ডলার। এ ছাড়া গত বছর (২০২৩ সালে) ৫ লাখ ২০ হাজার টন গম আমদানির বিপরীতে ব্যয় হয় ১৫ কোটি ডলার। গত তিন বছরে (২০২৩, ২০২২, ২০২১) গমের আমদানির সম্মিলিত পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ১০ হাজার টন যার মূল্য ৫০ কোটি ডলার। গত বছর পাম ও সয়াবিন তেলের মোট আমদানির পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ১২ হাজার ৪৮০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে পাম তেল ছিল ২ লাখ ৭৫ হাজার ৭৭৯ মেট্রিক টন এবং সয়াবিন তেল ছিল ৩৬ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। আর্থিক হিসাবে এ দুই ধরনের ভোজ্যতেলের বাজার মূল্য ছিল যথাক্রমে পাম তেলের জন্য প্রায় ২৬ কোটি ডলার এবং সয়াবিন তেলের জন্য ৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। গত তিন বছরে (২০২৩, ২০২২, ২০২১) মোট তেল আমদানির পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ১০৬ মেট্রিক টন, যার বাজার মূল্য ১৫৭ কোটি ডলার।

অর্থাৎ এস আলম গ্রুপ শুধু আমদানি বাণিজ্যেই গড়ে বছরে ২০০ কোটি ডলারের মতো বিনিয়োগ করে আসছে। এস আলম গ্রুপ এককভাবে বর্তমান অভ্যন্তরীণ মোট বাজার চাহিদার পরিসংখ্যানে চিনি ৩৫ শতাংশ, তেল ৩০ শতাংশ ও গম ২০ শতাংশ পূরণ করে থাকে।

এর বাইরে গত পাঁচ বছরে এই গ্রুপটি দেশের চাহিদা পূরণে ৯৮ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ, ৫৫ হাজার ও ৪৮ হাজার মেট্রিক টন ছোলা আমদানি করেছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে এই গ্রুপের ছয়টি ভোজ্যতেল শোধনাগার এবং দুটি সক্রিয় চিনি শোধনাগার রয়েছে। আরও একটি চিনি শোধনাগার নির্মাণাধীন। স্ব-অর্থায়নে নির্মিত এসব শোধনাগারে অত্যাধুনিক মানসম্পন্ন ইউরোপীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল এবং ৫ হাজার ১০০ মেট্রিক টন চিনি পরিশোধন করা হয়। একটি মেগা চিনি শোধনাগারের নির্মাণকাজ ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হবে।

এসব ব্যবসায় এস আলম গ্রুপ লব্ধিত অর্থ লেনদেন থেকে সরকার বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি ডলার (১২ হাজার কোটি টাকা) রাজস্ব আদায় করে থাকে। দেশে এই গ্রুপের সম্মিলিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৯১০ কোটি ডলার বা ১ লাখ ৮ হাজার কোটি টাকা। 

শুধু বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতেই এ গ্রুপের বিনিয়োগ রয়েছে ২২৬ কোটি ডলার। এস আলম গ্রুপ গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সাফল্যজনক বিনিয়োগের জন্য চায়না-বাংলাদেশ বিজনেস এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ অর্জন করে।

এ গ্রুপের এস এস পাওয়ার প্ল্যান্ট বাংলাদেশে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীতে স্থাপিত এ প্রকল্পের দুটি ইউনিটের মোট উৎপাদন ক্ষমতা ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। প্রকল্পটিতে এস আলম গ্রুপের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ৭০ শতাংশ শেয়ার বা প্রায় ২৯ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। অবশিষ্ট ৩০ শতাংশের মধ্যে সেপকো ২০ শতাংশ ও চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান এইচটিজি ১০ শতাংশের মালিক। ২০২৩ সালের শুরুর দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে এ গ্রুপের আরও ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের তালিকায় রয়েছে ‘গ্রিন ও রিনিউয়েবল এনার্জি’ প্রকল্প।

এ গ্রুপের শিল্প ও বাণিজ্যিক কার্যক্রমে প্রায় ৪০ হাজারের অধিক জনবল প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত রয়েছে। বার্ষিক টার্নওভার ও বিনিয়োগ বিবেচনায় দেশের ব্যাংকের আকার অনুযায়ী একক বা দুই-তিনটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এ বিশাল ব্যবসায় তারল্য (চলতি মূলধন) জোগান দেওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য পাঁচ থেকে ছয়টি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চলতি মূলধনের জোগান দরকার হয়। একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়েই ব্যবসা করে। এটি একটি চেইন। এতে ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট সেবা প্রতিষ্ঠানটিরও মুনাফা হয় এবং তাদের সংশ্লিষ্ট জনবলও পরিবারের ভরণ-পোষণ করতে পারে। এ ছাড়া এস আলম গ্রুপের বিনিয়োগ এবং আয়-ব্যয় ও ব্যবসার বার্ষিক টার্নওভার বিবেচনায় নিলে হিসাবের বাইরে কোনো অর্থ নেই বা কোনো রকমের অর্থ অন্যত্র সরানো হয়নি।

 

সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় কমেছে লেনদেন

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ এএম
সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় কমেছে লেনদেন

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রবিবার মূল্যসূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় কমেছে লেনদেন। কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। এতে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার চেয়ে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। তবে কমেছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ১৬৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৮৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৬৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
 
এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে লিন্ডে বাংলাদেশের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪২ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালি আঁশের ২৭ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে অগ্নি সিস্টেম, ওরিয়ন ইনফিউশন, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, এনআরবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং সোনালি পেপার।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

এদিন ডিএসইতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

মূল্যবৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর ৮ টাকা ৫০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ওইমেক্স ইলেকট্রোড লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

গতকাল রবিবার মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসা অপর কোম্পানিগুলো হচ্ছে সি পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এইচআর টেক্সটাইল লিমিটেড, সেন্ট্রাল ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড, ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড, সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড এবং কেডিএস অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

এদিন ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ৪০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তাতে দরপতনের শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে কোম্পানিটি।
এদিকে দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৪২ টাকা ৬০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমেছে। আর শেয়ারদর ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে যাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

এদিন দরপতনের তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো হলো এমবি ফার্মাসিটিক্যালস পিএলসি, কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড, প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের দর কমেছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় কমেছে লেনদেন

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫২ এএম
সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় কমেছে লেনদেন

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রবিবার মূল্যসূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়ায় কমেছে লেনদেন। কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। এতে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার চেয়ে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। তবে কমেছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠান। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে ১৬৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৮৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬৬৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। 

এই লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে লিন্ডে বাংলাদেশের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪২ কোটি ৩২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সোনালি আঁশের ২৭ কোটি ১৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গ্রামীণফোন।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে অগ্নি সিস্টেম, ওরিয়ন ইনফিউশন, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, এনআরবি ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক এবং সোনালি পেপার।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

এদিন ডিএসইতে এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১ টাকা ৭০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

মূল্যবৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে দেশ গার্মেন্টস লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর ৮ টাকা ৫০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ওইমেক্স ইলেকট্রোড লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ।

গতকাল রবিবার মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসা অপর কোম্পানিগুলো হচ্ছে সি পার্ল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা লিমিটেড, এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এইচআর টেক্সটাইল লিমিটেড, সেন্ট্রাল ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড, ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেড, সোনালি পেপার অ্যান্ড বোর্ড মিলস লিমিটেড এবং কেডিএস অ্যাকসেসরিজ লিমিটেড।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

এদিন ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট দর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ৪০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তাতে দরপতনের শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে কোম্পানিটি।

এদিকে দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৪২ টাকা ৬০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ কমেছে। আর শেয়ারদর ৬ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে যাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

এদিন দরপতনের তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো হলো এমবি ফার্মাসিটিক্যালস পিএলসি, কোহিনুর কেমিক্যাল কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড, প্রিমিয়ার লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স লিমিটেড, প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, এমবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের দর কমেছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।

খাতুনগঞ্জে কমছে পেঁয়াজের দাম

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৩ এএম
খাতুনগঞ্জে কমছে পেঁয়াজের দাম
চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের পাইকারি বাজার। খবরের কাগজ

পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের ২০ শতাংশ শুল্কহার কমানোর খবরের প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে। দুই দিনের ব্যবধানে সব ধরনের পেঁয়াজে কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমেছে বলে জানিয়েছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। 

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক কমানোর খবরে গত শুক্রবার থেকে খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। বর্তমানে খাতুনগঞ্জে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ রয়েছে। চীন ও মিসর থেকে আসা পেঁয়াজের সরবরাহ একেবারে নেই। পাশাপাশি পাকিস্তানি পেঁয়াজের সরবরাহও অনেকটাই কমে গেছে। ভারত থেকে কম শুল্কে পেঁয়াজ এলে বর্তমানে সরবরাহে থাকা আগের কেনা দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হবে না। তখন বড় লোকসানে পড়তে হবে। তার ওপর বেচাকেনাও কম। তাই ব্যবসায়ীরা দাম কমিয়ে আড়তে থাকা পেঁয়াজগুলো বিক্রি করে দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার খাতুনগঞ্জে কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ ১০৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৮৩ টাকা ও মিসরের পেঁয়াজ ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে ভারতীয় ও দেশি পেঁয়াজ ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া পাকিস্তান থেকে আসা পেঁয়াজ কেজিপ্রতি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

চাক্তাইয়ের আফরা ট্রেডার্সের মালিক মো. আলাউদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, ‘বর্তমানে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দেশি, ভারতীয় ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ রয়েছে। দামও কমতে শুরু করেছে। কম শুল্কের ভারতীয় পেঁয়াজ এই সপ্তাহে বাজারে চলে আসবে। সরবরাহ বাড়বে। তখন পণ্যটির দাম আরও কমে যাবে।’

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস খবরের কাগজকে বলেন, ‘ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক কমিয়েছে, এমন খবরে খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে গেছে। এসব পেঁয়াজ আগের কেনা। নতুন নির্ধারিত শুল্কের পেঁয়াজ বাজারে এখনো আসেনি। কিন্তু চলে এলে পুরোনো পেঁয়াজের প্রতি ক্রেতার আগ্রহ থাকবে না। তখন ব্যাংক লোন শোধ করা সম্ভব হবে না। তাই আমরা কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা লোকসান দিয়ে পণ্যটি বিক্রি করে দিচ্ছি। পাশাপাশি চলতি সপ্তাহের মধ্যে ক্রেতারা কম দামে ভারতীয় পেঁয়াজ পাবেন।’

যা বলছেন সীমান্তের ব্যবসায়ীরা
গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত চার মাসের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। এর পর থেকেই হিলিসহ দেশের বিভিন্ন স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ থাকে। গত ২৩ মার্চ সেই মেয়াদের সময়সীমা বাড়িয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। পরে গত ৪ মে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় ভারত সরকার। কিন্তু রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ রেখেছিল দেশটি। 

ভারত গত ১৩ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্কহার ৪০ শতাংশ থেকে নামিয়ে ২০ শতাংশ করেছে। তবে পাইপলাইনে এখনো অনেক ট্রাক সারিবদ্ধভাবে ওই দেশের বর্ডারে দাঁড়িয়ে আছে। সিদ্ধান্ত হলেও এখন পর্যন্ত ২০ শতাংশ শুল্কে ভারত পেঁয়াজ বাংলাদেশে ছাড়েনি। অন্যদিকে ১৬ সেপ্টেম্বর (আজ সোমবার) ঈদে মিলাদুন্নবীর (দ.) বন্ধ রয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যেই নতুন নির্ধারিত শুল্কহারে পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসবে বলে জানিয়েছেন সীমান্তের ব্যবসায়ীরা।

আমদানিকারকরা হিসাব কষে জানিয়েছেন, বর্তমানে ভারত থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আনতে ৪৮ রুপি খরচ পড়বে। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৮ টাকা (প্রতি রুপি ১ টাকা ৪৩ পয়সা হিসেবে)। বাংলাদেশে প্রতি কেজিতে গাড়ি ভাড়া খরচ ৪ টাকা। ওই হিসাবে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পড়বে ৭২ টাকা। আগে ৪০ শতাংশ শুল্কে পেঁয়াজ আমদানি খরচ পড়ত শত টাকার কাছাকাছি। 

তবে আমদানিকারকরা আরও জানিয়েছেন, ভারতে যদি আবহাওয়া ভালো থাকে, এক সপ্তাহ পর প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২২ রুপিতে পাওয়া যাবে। তখর খুচরা পর্যায়ে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে ভারতীয় পেঁয়াজ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিকারক মো. মোবারক হোসাইন খবরের কাগজকে বলেন, ‘গত ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে আমরা ৪০ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে পেঁয়াজ এনেছি। তবে এ সময়ে দেশটি থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে ধস নামে। কারণ আমাদের আমদানিকারকরা এত বেশি শুল্ক দিয়ে পেঁয়াজ আনতে অনাগ্রহ দেখান। তাই গত ১৩ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ২০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করে। তবে সেটা এখনো বাস্তবায়ন করেনি দেশটি। আশা করছি, চলতি সপ্তাহের মধ্যে আমরা নির্ধারিত শুল্কে পেঁয়াজ আনতে পারব। বর্তমানে পাইপলাইনে প্রচুর পেঁয়াজ আছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের সরবরাহ অনেক বেড়ে যাবে। মানুষ কম দামে পেঁয়াজ পাবে।’ 

পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরও শিথিল করেছে ভারত। পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর চার মাস আগে আরোপ করা ৪০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ করার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক সন্তোষ কুমার স্বাক্ষরিত এক নোটিশের মাধ্যমে পেঁয়াজ রপ্তানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

ব্যাংক খাত সংস্কারে বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে এডিবি

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ এএম
বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে এডিবি

বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের সংস্কারে ৫০০ মিলিয়ন বা ৫০ কোটি ডলার সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে ম্যানিলাভিত্তিক বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে এই অর্থ পাওয়া যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছে সংস্থাটি। এ ছাড়া বাজেট সহায়তার অংশ হিসেবে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে (এডিবি) ৪০০ মিলিয়ন বা ৪০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে। 

গতকাল রবিবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করে এই অর্থ সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে এডিবির প্রতিনিধিদল।

বৈঠকে চলমান ঋণ ও ভবিষ্যৎ অর্থায়ন নিয়ে এডিবির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এডিবি বলেছে, বাংলাদেশের চলমান প্রকল্পে অর্থায়ন অব্যাহত রাখবে। এ ছাড়া নতুন করে যে বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে, সে বিষটিও সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবে সংস্থাটি। 

বৈঠকে এডিবির সিনিয়র অ্যাডভাইজার এডিমন গিনটিং, কান্ট্রি ডিরেক্টর হুয়ে ইউন জুয়াং, ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়াংবো নিং উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘এডিবি বাংলাদেশের অন্যতম অর্থায়ন সহযোগী। বৈঠকে আমরা ক্লাইমেট ফান্ড এবং অন্যান্য জলবায়ু প্রকল্প নিয়ে আলাপ করেছি। এ ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়েও আলাপ হয়েছে। এডিবি তার চলমান অর্থায়ন প্রকল্পগুলো অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প পরিকল্পনা নিয়ে আমরা আলাপ করেছি।’ 

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, বাজেট সহায়তা বাবদ এডিবি যে ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা তা ডিসেম্বরের মধ্যে আসবে। এ ছাড়া ব্যাংকিং ও অন্যান্য খাতের সংস্কারের জন্য সহায়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ব্যাংক খাতের সংস্কারের জন্য ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছে। আগামী মার্চের মধ্যে এই খাতে ৫০০ মিলিয়ন ডলার দেবে এডিবি। এ ছাড়া জ্বালানি খাতের উন্নয়নে ১ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। বৈঠকে অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।