চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) প্রথমেই জুলাই মাসে রাজনৈতিক সহিংসতা ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এর প্রভাবে সব রেকর্ড ছাড়িয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ। আগের মাসে এই হার ছিল ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ।
সোমবার (১২ আগস্ট) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
খাদ্য মূল্যস্ফীতির এই হারের অর্থ হলো খাদ্যপণ্য কিনতে দেশের মানুষকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ অর্থ বেশি খরচ করতে হচ্ছে। অর্থাৎ যে খাদ্যপণ্য কিনতে গত বছর ১০০ টাকা খরচ হতো, গত জুলাই মাসে তা কিনতে ১১৪ দশমিক ১০ টাকা খরচ করতে হয়েছে।
খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি দুটোই বৃদ্ধির কারণে জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতিও দুই অঙ্কের ঘর ছাড়িয়েছে। জুলাই মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। মাসের ব্যবধানে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। কারণ জুন মাসে এটা ছিল ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর গত বছরের জুলাই মাসে ছিল ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
বিবিএস বলছে, দেশের ৬৪ জেলার ১৫৪ টি হাটবাজারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মূল্যস্ফীতি নিরূপণ করা হয়েছে। দেশে দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে।
বিবিএসের এ তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এর আগেও অর্থনীতিবিদরা প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের অভিযোগ, বিবিএস যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে, তাতে মূল্যস্ফীতির প্রকৃত চিত্র উঠে আসে না। কারণ কয়েক মাস থেকে বাজারের যে অবস্থা তাতে মূল্যস্ফীতি আরও বেশি হবে। বিভিন্ন ইস্যুতে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিবিএস সোমবার প্রথম মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, দেশে মূল্যস্ফীতি আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
উচ্চ মূল্যস্ফীতি বর্তমানে অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ। বাজারের জিনিসপত্রের দাম বেশ চড়া। তার সঙ্গে চিকিৎসা, পরিবহনসহ খাদ্যবহির্ভূত খাতেও খরচ বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে মূল্যস্ফীতির এ চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। তাই ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সাবেক সরকার মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু প্রথম মাসেই ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশে পৌঁছে গেছে।