ঢাকা ২৫ ভাদ্র ১৪৩১, সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

এনবিআরের আমূল সংস্কার দাবি ব্যবসায়ীদের

প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০১:২১ পিএম
এনবিআরের আমূল সংস্কার দাবি ব্যবসায়ীদের
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আমূল সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে হয়রানি ও অত্যাচার বন্ধে এনবিআর কর্মকর্তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার কথা বলেন তারা। জাতীয় রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখতে রপ্তানিমুখী বাণিজ্যিক সংগঠনের মতবিনিময় সভায় ব্যবসায়ী নেতারা এসব কথা বলেন।

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সোমবার (১২ আগস্ট) এই সভার আয়োজন করে পোশাক খাতের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও মোড়ক পণ্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএপিএমইএ)।

সভায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হওয়ার পেছনে এনবিআর চেয়ারম্যানের দায় আছে। এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করেন তারা।

সভায় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহসভাপতি আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও থাই চেম্বারের সভাপতি শামস মাহমুদ, বাংলাদেশ সুইং থ্রেড ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল কাসেম হায়দার, বিজিএপিএমইএর সাবেক সভাপতি হাফেজ আলম চৌধুরী প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য দেন বিজিএপিএমইএর সভাপতি মো. শাহরিয়ার।

সভায় বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার জন্য গণতন্ত্র আবশ্যক। কেউ দেশের জন্য সম্পদ সৃষ্টি না করেই সম্পদ অর্জন করলে সেটি হবে অবৈধ এবং দুর্নীতি। এ সময় তিনি দলীয় তথা রাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে ব্যবসায়িক স্বার্থে একতাবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে সরকারের সব সিদ্ধান্তকে সমর্থন করার মানসিকতা থাকা উচিত নয়।

দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়ে এই ব্যবসায়িক নেতা বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনারা একটি জনপ্রতিনিধিত্বশীল ও গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের সুযোগ করে দেবেন। এ জন্য বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর সহসভাপতি আবদুল্লাহ-হিল-রাকিব ওয়্যারহাউস থেকে মালামাল নিরাপদে স্থানান্তর করার, রুগ্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বৈদ্যুতিক সংযোগ ৬ মাস পর্যন্ত না কেটে প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যবসায় ফিরে আসার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান। তা ছাড়া সরকারি পরিসংখ্যানগত তথ্য সঠিক ছিল না বিধায় এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময় পেছানোর, এনবিআর ঢেলে সাজানো, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিকের মাধ্যমে শিল্পনীতি প্রণয়ন, দুই মাসের জন্য সফট লোনের ব্যবস্থা করা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্লকড্ ব্যবসা পলিসি পরিবর্তন করে ব্যবসাসহায়ক পলিসি করার দাবি জানান তিনি।

মতবিনিময় সভার উদ্যোক্তা ও বিজিএপিএমইএর সভাপতি মো. শাহরিয়ার এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের সময়সীমা ২০৩২ পর্যন্ত বাড়ানো এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহাল রাখার দাবি জানান। এ ছাড়া রপ্তানিমুখী বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর সব দাবি-দাওয়া একীভূত করে একত্রে সরকারের নিকট দাবি জানানোর জন্য সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক সংগঠনের সমন্বয়ে একটি কমন প্ল্যাটফর্ম/কো-অর্ডিনেশন কমিটি গঠনের প্রস্তাব করেন।

সবশেষে অনুষ্ঠানের সঞ্চালক বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম দেশের রপ্তানির তথ্য যথাযথ নয় প্রমাণিত হওয়ায় এলডিসিতে উত্তরণ আপাতত স্থগিত রাখার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট দাবি জানান। বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় রপ্তানি ধারা অব্যাহত রাখতে রপ্তানিকারী সংগঠনগুলো একত্রে সভার মাধ্যমে করণীয় সম্পর্কে একটি রূপরেখা প্রণয়ন, গ্যাসের বর্ধিত ধার্যমূল্য বাতিলপূর্বক আন্তর্জাতিক মূল্য পর্যালোচনা করে শিল্প খাতের জন্য গ্যাসের মূল্য পুনরায় নির্ধারণ, পলিসি প্রণয়ন এবং রাজস্ব আহরণ পৃথক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে করার লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কারের দাবি জানান। সেই সঙ্গে তিনি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত সব শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রয়োজনে সরেজমিনে পরিদর্শন করে আর্থিক ও নীতিগত সহায়তা দেওয়া এবং কাস্টমস কর্তৃপক্ষের সেবা সহজ ও হয়রানিমুক্ত পাওয়ার জন্য করণীয় নির্ধারণের প্রস্তাব দেন।

এডিবি ৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দেবে : অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:০৫ পিএম
এডিবি ৪০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা দেবে : অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ফাইল ছবি

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ পাওয়া যাবে। বাজেট সহায়তা হিসেবে এই টাকা বাংলাদেশকে দিতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে এডিবি ও জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) প্রতিনিধিদল এবং ঢাকায় নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনারের (ভারপ্রাপ্ত) সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এক প্রশ্নের উত্তরে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ফান্ড দেওয়ার বিষয়ে এডিবি, জাইকা ও অস্ট্রেলিয়া ইতিবাচক। এডিবির বাজেট সাপোর্ট আসবে। ডিসেম্বরের মধ্যে এডিবি ৪০ কোটি ডলার দিতে পারে।’ 

তিনি বলেন, ‘আইএমএফের চলমান ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচির বাইরে আমরা অতিরিক্ত আরও ৩ বিলিয়ন ডলার চেয়েছি। তারা (আইএমএফ) এ প্রস্তাব পর্যালোচনা করে দেখছে।’

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘জাইকা আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। আমাদের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে তাদের অর্থায়ন রয়েছে। ভৌত অবকাঠামো খাতে দেওয়া ঋণ অব্যাহত রাখতে বলেছি। জাইকা বলেছে এটা তারা করবে। এ ছাড়া আরও দুটি বিষয়ে কথা বলেছি। একটি হলো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অপরটি টেকনিক্যাল বা কারিগরি সহায়তা। এতে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছে জাইকা।’

বৈদেশিক ঋণের প্রবাহ কমে গেছে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বৈদেশিক ঋণের প্রবাহ ঠিক আছে। একেবারে কমেনি। কিন্তু ব্যবহার নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।’

সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বৈঠকে যারা এসেছিলেন, তারা তিনজনই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। আমরা সবার সাথে আলাপ করেছি। এতদিন তাদের যে চলমান সহায়তা ছিল, সেটা আরও জোরদার করতে বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াও আমাদের গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। কারণ, তারা যে সহায়তা করে সেটা সরাসরি প্রভাব ফেলে। অস্ট্রেলিয়া অনেক বড় দেশ। তারা আঞ্চলিক বাণিজ্যবিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা বলেছি, বাংলাদেশের আঞ্চলিক বাণিজ্য খুব সীমিত দেশের সঙ্গে। অস্ট্রেলিয়া যদি এখানে আসে, আমরা আসিয়ানের অন্তর্ভুক্ত হতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আঞ্চলিক বাণিজ্য বেশি প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ আছে। তারা এনার্জি, কৃষি খাতে বিনিয়োগ করতে চায়।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘বৈঠকে এডিবি, জাইকা ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিরা বলেছেন, উন্নয়ন সহযোগিতায় তারা সব সময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে।’

আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমল

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ পিএম
আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমল
আগস্ট মাসে কমেছে মূল্যস্ফীতি। ছবি : সংগৃহীত

গত আগস্ট মাসে দেশের মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমলেও তা ডাবল ডিজিটের ওপরেই ছিল। আগস্টে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। তার আগে জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, গত বছরের আগস্টে যা ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। শহরের মতো গ্রামাঞ্চলেও কমেছে মূল্যস্ফীতি। 

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

বিবিএসের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আগস্ট মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমলেও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে। গত মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ছিল ১১ দশমিক ৩৬ ও খাদ্যবহির্ভূত খাতে ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। তার আগে জুলাইয়ে ছিল যথাক্রমে ১৪ দশমিক ১০ ও ৯ দশমিক ৬৮ শতাংশ। ২০২৩ সালের আগস্টে ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৫৪ ও ৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ।

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, শহরের মতো গত মাসে গ্রামাঞ্চলেও মূল্যস্ফীতি কমেছে। আগস্টে গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। তার আগের মাসে ছিল ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ। গত বছরের আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে গত মাসে শহরে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের ওপর। তার আগের মাসে ছিল ১১ দশমিক ২৭ শতাংশ। ২০২৩ সালের আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৩ বছর ৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। এর আগে সর্বশেষ সর্বোচ্চ খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ২০১১ সালের এপ্রিলে। সে সময় ছিল ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এরপর আর কখনো খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৪ শতাংশে ওঠেনি। 

কয়েক বছর ধরে বিবিএসের মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে আসছিলেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, সরকারি পরিসংখ্যানে মূল্যস্ফীতির যে হিসাব দেওয়া হচ্ছে, বাস্তবে সেটি আরও বেশি। সরকার মূল্যস্ফীতি কমিয়ে দেখাচ্ছে। কিন্তু আগস্টে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে গেলে মূল্যস্ফীতির পরিমাণ বাড়ে। অনেকে বলছেন, এখন মূল্যস্ফীতির কোনো তথ্য টেম্পারিং করা হয় না। এটা বেশি হলেও সঠিক তথ্য প্রকাশ পাচ্ছে।

স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে রাসায়নিক সার

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ এএম
স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াচ্ছে রাসায়নিক সার
রাজশাহীতে ফসলি জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করছেন এক কৃষক। ছবি: খবরের কাগজ

রাজশাহীতে ফসলি জমিতে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে নষ্ট হচ্ছে ফসলের পুষ্টিগুণ, কমে যাচ্ছে মাটির উর্বরতা এবং পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানান, এসব ফসলের খাবার গ্রহণের ফলে ক্যানসারসহ মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে। তার পরও নানা সীমাবদ্ধতার কারণে এসব সমস্যা বন্ধ হচ্ছে না।

কৃষি তথ্যসেবা প্রকাশিত কৃষি ডায়েরির হিসাব অনুযায়ী, দেশে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৮৮ লাখ ১৭ হাজার ৯৩৫ হেক্টর। এসব জমিতে ২০২২-২৩ মৌসুমে রাসায়নিক সার ব্যবহার করা হয়েছে ৬৪ লাখ টনেরও বেশি এবং কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৮৩ টন।
সরেজমিনে রাজশাহীর পবা, তানোর, গোদাগাড়ী, পুঠিয়া, বাগমারাসহ বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে দেখা গেছে, রোগবালাই দমন ও বাড়তি ফলন পেতে ফসলি জমিতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন কৃষকরা।

পবা উপজেলার কর্ণহার এলাকার কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, ‘তিনি তিন বিঘা জমিতে বেগুন ও মরিচ লাগিয়েছেন। চার দিন পরপর নিয়মিত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। কীটনাশক প্রয়োগ না করলে পোকা লেগে বেগুন বড় হবে না এবং ভালো হবে না। তাই বাধ্য হয়ে কীটনাশক ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয়।’ বাগমারা এলাকার হাটগাঙ্গোপাড়া এলাকার কৃষক সবুজ হোসেন বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে গত বছর কীটনাশক প্রয়োগ না করায় বেগুনে পোকার আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এবার শুরু থেকেই রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে ভালো ফলন হয়েছে। বিঘাপ্রতি প্রায় এক মণ সার প্রয়োগ করা হয়েছে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ কে এম পারভেজ বলেন, ‘মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে উপকারী অর্গানিজমগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ছাড়া জমির উর্বরতা হারানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের বাস্তুসংস্থান ধ্বংস হচ্ছে এবং জীববৈচিত্র্যের অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘১৫-২০ বছর আগে যেসব জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে বিভিন্ন ধরনের মাছ ও প্রাণীর উপস্থিতি দেখা যেত, সেগুলো এখন আস্তে আস্তে কমে গেছে। পানিতে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য প্রয়োগের ফলে এটি ঘটেছে। এ ছাড়া কৃষিক্ষেত্রে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’

অন্যদিকে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক প্রয়োগ করে উৎপাদিত এসব ফসল থেকে খাদ্য গ্রহণের ফলে ক্যানসারাক্রান্ত ও প্রজননক্ষমতা নষ্ট হওয়ার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের উপপ্রধান চিকিৎসক ডা. এফ এম এ জাহিদ বলেন, “মাত্রাতিরিক্ত সার ও কীটনাশক প্রয়োগে পোকামাকড় রোধ করা গেলেও উৎপাদিত ফসল থেকে খাদ্যেও বিষক্রিয়া থেকে যায়। এতে ক্যানসারাক্রান্ত ও প্রজননক্ষমতা নষ্ট হওয়ার মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়। ফলে যে খামারি বা কৃষক ফসলে এসব প্রয়োগ করেন তাকে অবশ্যই জানান দিতে হবে ‘আমি কীটনাশকটা গতকাল বা আজ ব্যবহার করেছি।’ তাহলে ক্রেতা সচেতনভাবে সেটা ব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন। এভাবে জনগণ স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে বাঁচতে পারবে।”

এ বিষয়ে রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে সালমা বলেন, ‘লোকবল সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতার কারণে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার বন্ধে পদক্ষেপ নিতে পারছে না কৃষি বিভাগ। তবে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এতে আশা করছি, কৃষকরা সচেতন হলে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ আস্তে আস্তে কমবে।’

জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘নিরাপদ ফসল উৎপাদনে সহযোগিতার জন্য কমিটি করা হয়েছে। ওই কমিটিগুলোকে কার্যকর করতে পারলে দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে। তবুও এ বিষয়ে কৃষকরা সচেতন না হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যায় মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:০৩ এএম
কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যায় মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
কুমিল্লায় ভয়াবহ বন্যায় ডুবে গেছে চাষের পুকুর। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লায় চলমান ভয়াবহ বন্যায় মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটেছে। মাছ উৎপাদনে কুমিল্লা দেশের তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। এখানে নদ-নদী, পুকুর, দিঘি, জলাশয় ও প্লাবন ভূমিতে জেলার চাহিদার দ্বিগুণের বেশি মাছ উৎপাদন হয়। তবে এবারের বন্যায় মৎস্য উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। 

প্রাথমিকভাবে মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে এ খাতে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪০০ কোটি টাকা নিরূপণ করা হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন মাছ চাষিরা। খবর বাসসের

জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, চলমান বন্যায় মোট ২৩ হাজার ৪২টি খামার বা পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আয়তনে এসব খামার বা পুকুরের পরিমাণ ৫ হাজার ৮৩৫ দশমিক ৬১ হেক্টর। ক্ষতিগ্রস্ত এসব খামার থেকে ২৫ হাজার ৫৩৮ দশমিক ৫০ টন ফিন ফিশ, ১০ দশমিক ২৮ টন চিংড়ি এবং ১০ কোটি ১৭ লাখ পোনা মাছের ক্ষতি হয়েছে। বাজারমূল্যে মাছের ক্ষতির পরিমাণ ৩৫৮ কোটি ১২ লাখ টাকা, চিংড়িতে ৫ কোটি টাকা এবং পোনা জাতীয় মাছের ক্ষতি ১৭ কোটি ৮ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এ ছাড়া পুকুর, খামার বা স্লুইস গেটের অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে ২২ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং ৮০ লাখ টাকার জাল নষ্ট হয়েছে।

কার্যালয়টি আরও জানায়, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বরুড়া উপজেলা। এখানে ৯০৩ হেক্টর আয়তনের মোট ৩ হাজার ৭৪৯টি মাছের খামার বা পুকুর বিনষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া ব্রাহ্মণপাড়া ১ হাজার ১০টি, বুড়িচংয়ে ১ হাজার ৮০০টি, নাঙ্গলকোটে ৩ হাজার ১৬২টি, লালমাইয়ে ২০৭টি, মনোহরগঞ্জে ২ হাজার ৩৫০টি, আদর্শ সদরে ২ হাজার ৪৫২টি, মুরাদনগরে ৮০০টি, চান্দিনায় ২০০টি, লাকসামে ২ হাজার ৫০০টি, তিতাসে ২২টি, দেবিদ্বারে ৪০০টি, চৌদ্দগ্রামে ১ হাজার ৮৪০টি এবং সদর দক্ষিণে ৬৬০টি মাছের পুকুর তলিয়ে গেছে।

এ ছাড়া ১৫টি মৎস্যবীজ খামারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার আয়তন ২ দশমিক ৬৯ হেক্টর। এসব খামারে ক্ষতির পরিমাণ ৬২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। কুমিল্লার বুড়িচং ভরাসার এলাকার এশিয়ান মৎস্য খামের স্বত্বাধিকারী সালাউদ্দিন জানান, তার মাছের প্রজেক্টে প্রায় ২৫০ মণ মাছ ছিল। বন্যার পানিতে মাছ চলে গেছে। পানি কমলে ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে। তার দাবি, প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মৎস্য চাষি সোহেল মিয়া জানান, তার প্রজেক্টে প্রায় ৩০০ মণ মাছ ছিল। বন্যার পানিতে মাছ চলে যায় এবং প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল আহমেদ বাসসকে জানান, বন্যায় মৎস্য খাতে ক্ষতির একটি প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। বানের পানি নেমে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে নিরূপণ করা যাবে।

জেলা দুর্যোগ, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আবেদ আলী জানান, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিনই ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠছে। প্রতিটি উপজেলাভিত্তিক আলাদা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলা বন্যা আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, নাঙ্গলকোট ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা। এসব উপজেলার মৎস্য খাতে ক্ষয়ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে।

চট্টগ্রামে ডিপো পার্কিং ফি নিয়ে দ্বন্দ্ব

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ এএম
আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৯ এএম
চট্টগ্রামে ডিপো পার্কিং ফি নিয়ে দ্বন্দ্ব
চট্টগ্রাম কাঠগড়ে সামিট এলায়েন্স লিমিটেড ডিপোতে পাকিং করা গাড়ি। ছবি: খবরের কাগজ

চট্টগ্রামের বেসরকারি ডিপোগুলোয় আমদানি-রপ্তানি পণ্য নিয়ে আসা ভারী যানবাহন থেকে অবৈধভাবে অতিরিক্ত পার্কিং ফি নেওয়া হচ্ছে বলে পরিবহন মালিকদের অভিযোগ।

অন্যদিকে, ডিপো কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, প্রাইভেট টার্মিনালগুলোয় ফি দিলে ডিপোতেও দিতে হবে। আইন অনুযায়ী, ডিপোতে পার্কিং চার্জ নেওয়ার কোনো নির্দেশনা নেই।

পণ্যবাহী পরিবহন মালিকরা বলছেন, আইনে বলা আছে, ডিপোর ভেতরে পর্যাপ্ত পরিসরের পার্কিং সুবিধা থাকতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ ডিপোতে ওই সুবিধা নেই। তাই বাধ্য হয়ে প্রাইভেট টার্মিনালগুলোয় পার্কিং চার্জ দিয়ে গাড়ি রাখতে হয়। তবে বেসরকারি ডিপোতে পার্কিং চার্জ নেওয়ার জন্য কোনো নীতিমালা নেই। তাই ডিপো সংশ্লিষ্টদের দাবি অনৈতিক বলে উল্লেখ করছেন পরিবহন মালিকরা।

চট্টগ্রামে বর্তমানে ২০টি ডিপো রয়েছে। এর মধ্যে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড (এসএপিএল), ওসিএল, ইস্পাহানি ইন কনট্রেড এবং কেডিএস- এই চারটি ডিপো কর্তৃপক্ষ আমদানি-রপ্তানি পণ্য নিয়ে আসা গাড়ি চালকদের জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। চার বছর আগে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ডিপো কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান ট্রাক প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিপক্ষীয় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, যেসব ডিপো কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা দেবেন, ওইসব ডিপোর ক্ষেত্রে পার্কিং চার্জ হবে ৫০ টাকা, ভ্যাট ৭ দশমিক ৫ টাকা, মোট ৫৭ দশমিক ৫ টাকা। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফি পরিশোধ করে আসছেন পরিবহন মালিকরা।

তবে সম্প্রতি পণ্য পরিবহন মালিক সমিতি বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার, যিনি ইসহাক ডিপোর মহাব্যবস্থাপকও, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, রুহুল আমিন শিকদার বেসরকারি ডিপোগুলোয় ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা ডিপো চার্জ আদায়ের জন্য বাধ্য করছেন।

এ বিষয়ে রুহুল আমিন শিকদার জানিয়েছেন, ডিপো চার্জ নেওয়া যাবে কি না ওই বিষয়ে আইনে কোনো কিছু উল্লেখ নেই। পরিবহন মালিকরা যখন বাড়তি পরিবহন ভাড়া আদায় করেন, তখন তারা কোনো আলোচনা করে ভাড়া বাড়ান না। তাই আমরা পার্কিং চার্জ কত নেব বা বাড়াব কী কমাব- এই বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন নেই। একটি ডিপো তৈরির জন্য বড় অঙ্কের বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়। তাই ডিপো কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিলে, এর বিপরীতে চার্জ নেওয়া অনিবার্য। কারণ এটি একটি ব্যবসা।

আইন কী বলে?
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেসরকারি আইসিডি/সিএফএস বা অফডক স্থাপন ও পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা-২০২১-এর অনুচ্ছেদ-৩(ঙ) তে পার্কিং চার্জ সংবলিত কোনো নীতিমালা উল্লেখ নেই। আইনে বলা আছে-

‘অপেক্ষমাণ যানবাহনের পার্কিংয়ের জন্য আইসিডির অভ্যন্তরে পর্যাপ্ত পরিসরের পার্কিং সুবিধা থাকতে হবে। আইসিডি/সিএফএস ও তৎসংলগ্ন এলাকায়/সড়কে যাতে কোনো যানজট সৃষ্টি না হয়, ওই জন্য আইসিডি/সিএফএস পরিচালনাকারীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান ট্রাক প্রাইমমুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব চৌধুরী জাফর আহমেদ খবরের কাগজকে বলেন, ‘সম্প্রতি বিকডার মহাসচিব বাড়তি ডিপো চার্জ দেওয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করছেন। তিনি দাবি করছেন, প্রাইভেট টার্মিনালগুলোয় আমরা যদি ১৫০-২৫০ টাকা পার্কিং চার্জ দিই, তাহলে ডিপো কর্তৃপক্ষকে আমরা দেব না কেন? এই যুক্তি একেবারেই অনৈতিক মনে করছি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যে ডিপোগুলো পার্কিং চার্জ নিয়ে পীড়াপীড়ি করবে, তাদের আমরা বয়কট করতে বাধ্য হব, কারণ নীতিমালায় পার্কিং চার্জ দিতে হবে এমন কোনো নির্দেশনা নেই।’

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো অ্যাসোসিয়েশন (বিকডা)-এর সভাপতি নরুল কাইয়ুম খান খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে জানতে পেরেছি। আমি মনে করি, দেশকে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে এগিয়ে নিতে হলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া বাড়াতে হবে, একে অপরের সহযোগী হতে হবে। পার্কিং চার্জ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, আমি মনে করি, বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করা জরুরি। কারণ ব্যবসা-বাণিজ্যে আমরা সবাই একে অপরের পরিপূরক।’