ভারতের আম্বানি পরিবারের সম্পত্তির মোট মূল্য ২৫ দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়ন রুপি। এটি ভারতের জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ। অন্যদিকে প্রথম প্রজন্মের ব্যবসায়িক পরিবারের মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে আদানি পরিবার। তাদের সম্পত্তির মোট মূল্য ১৫ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন রুপি। সম্প্রতি বার্কলেজ-হুরুন ইন্ডিয়ার প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। খবর এই সময়ের।
বার্কলেজ-হুরুন ইন্ডিয়া হলো ভারতের ধনী ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। এই তালিকাটি প্রতিবছর প্রকাশিত হয়। এই তালিকায় ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের নাম এবং তাদের সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করা থাকে।
বার্কলেজ-হুরুন ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে ভারতের সর্বাধিক মূল্যের পারিবারিক ব্যবসার যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে শীর্ষে রয়েছে আম্বানি পরিবার। চলতি বছরের ২০ মার্চ তারিখে ওই সব পরিবারের বিভিন্ন কোম্পানির আর্থিক মূল্যের ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা তৈরি করেছে বার্কলেজ-হুরুন ইন্ডিয়া। এর মধ্যে অবশ্য ওই সব পরিবারের প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট এবং নগদ রুপি-পয়সা, সোনা-দানার হিসাব ধরা হয়নি। ডাবল কাউন্টিং এড়াতে ক্রস-হোল্ডিংও অ্যাডজাস্ট করা হয়েছে।
একাধিক প্রজন্মের ব্যবসায়িক পরিবারগুলোর তালিকায় আম্বানিদের পরেই দুই নম্বরে রয়েছে বাজাজ পরিবার। তাদের পারিবারিক সম্পত্তির মূল্য ৭ দশমিক ১৩ ট্রিলিয়ন রুপি। তিন নম্বরে ৫ দশমিক ৩৯ ট্রিলিয়ন রুপির সম্পত্তি নিয়ে রয়েছে বিড়লা পরিবার।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই তিন পরিবারের মোট ব্যবসার অর্থমূল্য ৪৬০ বিলিয়ন ইউএস ডলার, যা সিঙ্গাপুরের মোট জিডিপির সমান।
বার্কলেজ-হুরুন ইন্ডিয়ার তালিকায় সজ্জন জিন্দাল ও নাদার পরিবার রয়েছে যথাক্রমে চার ও পাঁচ নম্বরে। তাদের পারিবারিক সম্পত্তির মূল্য যথাক্রমে ৪ দশমিক ৭১ ট্রিলিয়ন ও ৪ দশমিক ৩০ ট্রিলিয়ন রুপি। সেরা ১০ ব্যবসায়িক পরিবারের তালিকায় একমাত্র মহিলা হিসেবে জায়গা পেয়েছেন নাদার পরিবারের রোশনি নাদার মালহোত্রা। এই তালিকায় থাকা ১০টি পরিবার একাধিক প্রজন্ম ধরে ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।
এদিকে তালিকায় থাকা প্রথম প্রজন্মের ব্যবসায়িক পরিবারের মধ্যে এক নম্বরে আদানি পরিবার। তাদের পারিবারিক সম্পত্তির মূল্য ১৫ দশমিক ৪৪ ট্রিলিয়ন রুপি। দুই ও তিন নম্বরে রয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার মালিক পুনাওয়ালা পরিবার ও দিবি পরিবার। তাদের ব্যবসায়িক সম্পত্তির মূল্য যথাক্রমে ২ দশমিক ৩৭ ট্রিলিয়ন ও ৯১ হাজার ২০০ কোটি রুপি।
হুরুন ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান গবেষক আনাস রহমান জুনেইদ বলেন, ‘কারখানায় তৈরি পণ্য খাতের ২৮টি কোম্পানির মোট মূল্য ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৭০০ কোটি রুপি। অটোমোবাইল ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে যথাক্রমে ২৩টি ও ২২টি কোম্পানি রয়েছে। তাদের সম্প্রতির মোট মূল্য যথাক্রমে ১৮ লাখ ৭৬ হাজার ২০০ কোটি রুপি ও ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৫০০ কোটি রুপি।’
আনাস রহমান জুনেইদ জানান, ভারতের আর্থিক উন্নয়নে এই সব পরিবারের ব্যবসার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বার্কলেজ প্রাইভেট ব্যাংকের এশিয়া প্যাসিফিকের প্রধান নীতিন সিং বলেন, ‘ভারত একটা জটিল দেশ। এই দেশে অনেক রাজ্যের পাশাপাশি বিভিন্ন জিনিস রয়েছে। এই জটিল পরিবেশে যারা কাজ করতে জানে তাদের ভারত পুরস্কৃত করে। বহু প্রজন্ম ধরে চলে আসা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো বছরের পর বছর ধরে এই কাজটাই করছে। তারা এই জটিল পরিবেশের মধ্যে কাজ করে সফল হয়েছে।’