ঢাকা ১৭ কার্তিক ১৪৩১, শনিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৪

বিদেশি ঋণ জুলাইয়ে ছাড়ের চেয়ে পরিশোধ বেশি

প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৫ পিএম
জুলাইয়ে ছাড়ের চেয়ে পরিশোধ বেশি
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জুলাই মাসে উন্নয়ন সহযোগীদেরকে প্রায় ২ দশমিক ৭ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জুলাই মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা যে পরিমাণ অর্থছাড় করেছে তার চেয়ে বেশি সুদ-আসল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে, যার পরিমাণ ২ দশমিক ৭ কোটি ডলার।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্যানুযায়ী, জুলাই মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থছাড় করেছে ৩৫ কোটি ৮৩ কোটি ডলার। অন্যদিকে, একই মাসে বাংলাদেশ উন্নয়ন সহযোগীদের সুদ ও আসল মিলিয়ে মোট ৩৮ দশমিক ৫৬ কোটি ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

ইআরডির কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শুরুতে এমনিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি কম থাকে। এ কারণে অর্থছাড়ও কম হয়। অন্যদিকে, জুলাই মাসজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কারণে রাজনৈতিক সহিংসতা ছিল। এর প্রভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছু সমস্যা হয়েছে। ফলে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় অর্থছাড় কিছুটা কমেছে।

ইআরডি সূত্র জানায়, গত ২০২৩-২৪ অর্থবছর শেষে সরকারি খাতে বিদেশি ঋণের দায় (আউটস্ট্যান্ডিং বা বকেয়া) বেড়ে হয়েছে ৬৯ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলার। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১১ দশমিক ৬ বা ৭ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার বেশি। ২০২৬ সালের পরে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অনেক মেগা প্রকল্পের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হবে। তখন বড় অঙ্কের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ফলে আগামীতে বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ চাপ আরও বেড়ে যাবে। 

গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় চলতি অর্থবছরে বিদেশি ঋণের ছাড় কমেছে ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে উন্নয়ন সহযোগীরা ছাড় করেছিল ৪০ কোটি ডলার। পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে চীনের থেকে নেওয়া ঋণের আসল পরিশোধের পরিমাণ বাড়ায় বিদেশি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে বিদেশি ঋণ পরিশোধ ৫২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে বাংলাদেশ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করেছিল ২৫ কোটি ডলার।

এ সময়ে আসল পরিশোধ বেড়েছে ৮০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ বিদেশি ঋণের আসল পরিশোধ করেছে ২৬ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ১৪ কোটি ৬৫ কোটি ডলার।

এ ছাড়া এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৮১ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন ডলার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ৬৪ দশমিক ৫৭ মিলিয়ন ডলার, বিশ্বব্যাংক ৩৮ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার, রাশিয়া ২৯ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ছাড় করেছে ২১ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলার।

কয়েক বছর ধরেই বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ইআরডির সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-১৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১১০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ। পরের ১০ বছরে; অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে ২০১ কোটি ডলারের উন্নীত হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা পৌনে ৩০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। বিদায়ী অর্থবছরের বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাবদ ৩৩৬ কোটি ডলার খরচ করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এর মানে, গত এক যুগে বিদেশি ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়ে তিন গুণ হয়েছে।

এদিকে প্রতিবছর যত অর্থ বিদেশি সহায়তা হিসেবে আসে, তার তিন ভাগের এক ভাগ আগের নেওয়া ঋণ বাবদ পরিশোধ করতে হয়। অবশ্য বাজেটে ঋণ পরিশোধে আলাদা অর্থ বরাদ্দ থাকে। সামনে ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়বে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন।

সদ্য প্রকাশিত ইআরডির প্রাথমিক হিসাবে দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণে ছাড় দেখানো হয়েছে ৯ দশমিক ২৬৭ বিলিয়ন ডলার।

খাতুনগঞ্জে চড়া আলু-পেঁয়াজের বাজার

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২০ এএম
আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:১৯ পিএম
খাতুনগঞ্জে চড়া আলু-পেঁয়াজের বাজার
পেঁয়াজ ও আলু

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে সপ্তাহের ব্যবধানে পাকিস্তানি পেঁয়াজ কেজিতে ৪ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ১০ ও মিসরীয় পেঁয়াজে বেড়েছে ১১ টাকা। মাসের ব্যবধানে আলুর কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা। অন্যদিকে তিন দিনের ব্যবধানে প্রতি মণ পাম অয়েলে বেড়েছে ৩০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বর্তমানে খাতুনগঞ্জে দেশি, থাইল্যান্ড ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ নেই। পুরো বাজারে ভারতীয়, পাকিস্তানি ও মিসরীয় পেঁয়াজ রয়েছে। ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ও এলসি খোলার ক্ষেত্রে ডলার রেট বাড়ার কারণে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি মিসরীয় ও পাকিস্তানি পেঁয়াজের সরবরাহ কম থাকায় দাম বেড়েছে। অন্যদিকে আমদানি কমে যাওয়া ও সরবরাহ সংকটের কারণে দফায় দফায় বাড়ছে পাম অয়েলের দাম। জয়পুরহাট, মুন্সীগঞ্জ থেকে বাড়তি দরে কেনায় আলুর দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। 

খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে সপ্তাহখানেক আগে ভারতীয় নাসিক জাতের পেঁয়াজ ও ভারতীয় সাউথ পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে এসব পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৩ টাকায়। আকারভেদে মিসরীয় পেঁয়াজ আগে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৭৬ থেকে ৮০ টাকা। অন্যদিকে সপ্তাহখানেক আগে প্রতি কেজি পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৮৫ টাকায়। 

তা ছাড়া বাজারটিতে গত ৩০ অক্টোবর চায়না রসুন ২০২ থেকে ২০৪ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০৮ থেকে ২১০ টাকা। কেরালা আদা ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস খবরের কাগজকে বলেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তার ওপর এলসি খুলতে গিয়ে ডলার রেট বাড়ায় আমদানি খরচও বেড়েছে। এর প্রভাবে আমদানি তুলনামূলক কমেছে। তাই পেঁয়াজের দামটা বাড়তি। পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। দেশে উৎপাদিত এসব পেঁয়াজ বাজারে আসবে ডিসেম্বরে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ থাকায় পেঁয়াজের দর অতিরিক্ত বাড়েনি। আমদানি বাড়লে পণ্যটির দাম আরও কমে যেত। তাই কীভাবে পেঁয়াজের আমদানি বাড়ানো যায় সেটি ভাবা উচিত। 

হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিকারক মো. মোবারক হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘কয়েক মাস আগেও ভারতে পেঁয়াজের দাম কম ছিল। তখন দেশটিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৩৫ থেকে ৩৮ রুপিতে। বর্তমানে মানভেদে ৪৫ থেকে ৫৫ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। এসব পেঁয়াজ কিনে আনতে খরচ পড়ছে ৮৫ টাকার ওপরে। তার ওপর ডলার রেট বেড়েছে। এলসি খুলতে গেলে প্রতি ডলারে গুনতে হচ্ছে ১২১ টাকা। ভারতের নাসিক জাতের পেঁয়াজের ফলন উঠবে আগামী মাসের মাঝামাঝি। আশা করছি, তখন দাম কমে আসতে পারে।’

এদিকে খাতুনগঞ্জে চলতি মাসের শুরুতে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম অয়েল বিক্রি হয়েছিল ৫ হাজার ৭৩০ টাকায়। গত ২৬ অক্টোবর দাম বেড়ে বিক্রি হয়েছিল ৬ হাজার ৬০ টাকায়। ১০ টাকা বেড়ে গত ২৭ অক্টোবর বিক্রি হয় ৬ হাজার ৭০ টাকা। তিন দিনের ব্যবধানে আরও ৩০ টাকা বেড়ে বর্তমানে প্রতি মণ পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ১০০ টাকায়। 

সাধারণত ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েল আমদানি হয়। এসব দেশে বুকিং রেট বেড়েছে। চলতি বছরের শুরুতে মালয়েশিয়ায় প্রতি টন পাম অয়েলের দাম ছিল ৩ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৭০০ রিঙ্গিত। 

খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী মো. কামাল উদ্দিন বলেন, বিশ্ববাজারে পাম অয়েলের বুকিং রেট বেড়েছে। এ কারণে আমদানি ও সরবরাহ দুটোই কমেছে। তাই দামটা বাড়তি। সরবরাহ না বাড়লে সামনে দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানান তিনি। 

এদিকে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে জয়পুরহাট, মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু কিনে আনা হয়। চলতি মাসের শুরুতে পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলু ৪৫ থেকে ৪৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫১ থেকে ৫২ টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, জয়পুরহাট ও মুন্সীগঞ্জে বাড়তি দরে আলু বিক্রি হচ্ছে। তাই এর প্রভাব পাইকারি বাজারেও পড়েছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন খবরের কাগজকে বলেন, বিশেষ টাস্কফোর্স টিম গঠনের পর ডিম ও সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। আলু, পেঁয়াজের দাম বাড়ায় সম্প্রতি চট্টগ্রামের চকবাজার এলাকায় কাঁচাবাজার মনিটরিং করা হয়। এখানে মূল্যতালিকা, বেচাকেনার রসিদ না থাকাসহ বিভিন্ন অসংগতি ধরা পড়ে। টাস্কফোর্স, ভোক্তা অধিকার সবাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সব বাজারে মনিটরিং কার্যক্রম চলবে। কিন্তু সততার সঙ্গে ব্যবসা পরিচালনার সদিচ্ছাটাও থাকতে হবে।

পেঁয়াজ আলুর দাম বাড়তি, উচ্চমূল্যে সবজি স্থির

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:০৩ এএম
পেঁয়াজ আলুর দাম বাড়তি, উচ্চমূল্যে সবজি স্থির
শীতের সবজি আসা শুরু করেছে বাজারে। এতে দাম কমা শুরু করেছে সবজির।

শীতের সবজি বাজারে উঠতে থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির কেজি ১০০ টাকার নিচে নেমেছে। তবে তা বেশ উচ্চমূল্যেই স্থির আছে। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি হলেও দাম কমছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ১৬০ টাকায় ঠেকেছে। আলুর দামও ৫ টাকা বেড়ে ৬৫ টাকা হয়ে গেছে। ডিমের ডজন ১৪৫-১৫০ টাকায় নেমেছে। চাল, মাছ, মাংস আগের মতোই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

একই সবজির দাম বাজার ভেদে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত কম-বেশি হতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজার, কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

পেঁয়াজের কেজি ১৬০ টাকা
টাউন হল বাজারের খুচরা বিক্রেতা অলি আহমেদসহ অন্য বিক্রেতারা বলছেন, দেশি পেঁয়াজের মৌসুম শেষ। সরবরাহ কমে গেছে। এ জন্য দাম বেশি। আমদানি করা পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম ৫ টাকা বেড়ে ৬০-৬৫ টাকা কেজি। রসুন আগের মতোই ২২০-২৪০ টাকা ও আদা ২৮০-৩২০ টাকা কেজি।

বিভিন্ন বাজারের সবজি বিক্রেতারা বলেন, বেগুনের দাম ৩০-৪০ টাকা কমে ৮০-১২০ টাকায় নেমেছে। গত সপ্তাহে বেগুন ১২০-১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও গতকাল ৮০-১২০ টাকায় নামে। ঝিঙ্গার দাম কমে ৮০-৯০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা, পটোল ৫০-৭০ টাকা, ধুন্দুল ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০-৮০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, শসার কেজি ৫০-৭০ টাকা, বরবটি, কচুরলতি ৮০-১০০ টাকা। গাজর ১৪০ টাকা, শিম ১৬০-১৮০ টাকা, টমেটো ১৬০-১৮০ টাকা ও কাঁচা মরিচ ২০০-২৪০ টাকা কেজি। কপির পিস ৪০-৬০ টাকা। লাউ, চালকুমড়ার পিস ৪০-৬০ টাকা। শাকের দামও কমেছে। পুঁইশাকের আঁটি ৪০ টাকা। লাল, পালং, কলমি ও পাটশাক ২০-২৫ টাকা আঁটি।

কারওয়ান বাজারের ইউসুফ স্টোরের ইউসুফ আলীসহ অন্য মুদি বিক্রেতারা বলেন, ‘আগের মতোই ছোলা ১৪০-১৬০ টাকা, মুগ ডাল ১৮০ টাকা কেজি, মসুর ডাল ১১০-১৩৫ টাকা, ২ কেজি ওজনের প্যাকেট আটা ১০০-১৩০ টাকা, খোলা আটা ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৫-১৬৭ টাকা ও ৫ লিটার ৮০০-৮১০ টাকা, চিনি ১৩০-১৩৫ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো জিনিসের দাম কমেনি।’

নির্ধারিত দরের ধারে কাছেও নেই মুরগি
সরকার সম্প্রতি ব্রয়লার ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগির দাম ২৭০ টাকা কেজি বেঁধে দিলেও বাজারে এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। গতকালও বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগি ভোক্তাদের ১৯০-২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০-৩২০ টাকা কেজিতে কিনতে হয়েছে। টাউন হল বাজারের খুচরা বিক্রেতা ব্রয়লার হাউসের বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘বেশি দামে কেনা। এ জন্য আগের মতোই ব্রয়লার ১৯০-২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা কেজি। তবে ডিমের মতো উৎপাদকরা আমাদের কাছে মুরগি বিক্রি করলে আমরাও নির্ধারিত দরে বিক্রি করতে পারব। বিভিন্ন হাত বদল হয়ে আমাদের কাছে মুরগি আসে। এ জন্য দাম বেশি।’ গরুর মাংস ব্যবসায়ীরা জানান, কমে না দাম। এ জন্য আগের মতোই ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি গরুর মাংস ও খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।

বিভিন্ন উদ্যোগের ফলে ডিমের দাম কিছুটা কমে বিভিন্ন বাজারে ১৪৫-১৫০ টাকা ডজন দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এখনো নির্ধারিত ১৪২ টাকা ডজনে পাওয়া যাচ্ছে না। কারওয়ান বাজারের ডিম বিক্রেতা সোহরাব আলী বলেন, ‘আগের চেয়ে ডিমের দাম কমেছে। ডজন ১৪৫ টাকা।’ টাউন হল বাজারের সোহেল রানাও বলেন, ‘ডিম ১৪৫ টাকা ডজন। তবে বিভিন্ন পাড়া-মহাল্লায় এখনো ১৫০-১৫৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।’

কমেনি মাছের দাম
ইলিশ মাছ আহরণ ও বিপণন বন্ধ থাকায় অন্য মাছের দাম চড়া। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, কারওয়ান বাজার, সোয়ারি ঘাটসহ অন্য আড়তে বেশি দাম। এ জন্য আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারি না। রুই-কাতলা ৩৫০-৬০০ টাকা কেজি। চিংড়ি ৬০০-১২০০ টাকা, কাজলির কেজি ১০০০-১২০০, মলা ৫০০ টাকা, ট্যাংরা মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ও পাঙাশের কেজি ২০০-২৫০ টাকা, চিংড়ির কেজি ৭০০-১২০০ টাকা।

চালের দামও বেশি
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমদানি শুল্ক কমালেও কমেনি চালের দাম। বরং মৌসুম শেষের অজুহাতে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২-৪ টাকা বেড়েছে। খুচরা বিক্রেতারা বলেন, মিনিকেট ৭২-৭৬ টাকা, আটাশ চাল ৬০-৬২ টাকা ও মোটা চাল ৫২-৫৫ টাকা। চিনিগুঁড়া চাল খোলা ১৩০-১৪০ টাকা ও প্যাকেটজাত ১৭০-১৮০ টাকা কেজি।

কৃষি ও জলবায়ু গবেষণা খাতে বিনিয়োগ করবে এডিবি

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২০ পিএম
আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২১ পিএম
কৃষি ও জলবায়ু গবেষণা খাতে বিনিয়োগ করবে এডিবি
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক

দেশের কৃষি ও খাদ্য প্রযুক্তি খাতের গবেষণা ও মানোন্নয়ন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, জলবায়ু ব্যবস্থাপনা এবং স্মার্ট কৃষিতে বিনিয়োগ করবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। 

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এডিবি এই আশ্বাস দেয়।

ইউজিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ লক্ষ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি ‘কৃষিবিষয়ক উচ্চশিক্ষা শক্তিশালীকরণ প্রকল্প (এসএটিপি)’ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে এসএটিপি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হতে পারে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ইউজিসি ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) যৌথভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এসএটিপি প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও গবেষণা অবকাঠামো তৈরি করা হবে। ‘বাংলাদেশ ইনস্ট্রুমেন্টেশন সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’ নামে একটি উচ্চতর গবেষণা সেন্টার গড়ে তোলা হবে। আধুনিক ল্যাব প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি কৃষি ও কৃষিপ্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ সেন্টার থেকে গবেষণা পরিচালনা করতে পারবে।

ব্যাংকটির কান্ট্রি ডিরেক্টর হু ইয়ুন জিওং জানান, এই বিনিয়োগ দেশের খাদ্য ও কৃষিশিল্পকে শক্তিশালী করবে এবং এ খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করবে। প্রকল্পটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনেও সহায়তা করবে। এই প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে তিনি ইউজিসি ও সংশ্লিষ্টদের সহায়তা প্রত্যাশা করেন।

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রস্তাবিত প্রকল্পটি দেশের কৃষি খাতে মানবসম্পদ উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু ব্যবস্থাপনা, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্মার্ট কৃষি ও উচ্চতর গবেষণা পরিচালনায় সহায়ক হবে।’

পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প: অনিয়ম খুঁজে পাননি আইএমইডি সচিব!

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:৪৫ পিএম
আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:০৪ পিএম
পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প: অনিয়ম খুঁজে পাননি আইএমইডি সচিব!
পায়রা বন্দর

২০১৫ সালে শুরু করে পাঁচবার সংশোধন করা হয়েছে। তার পরও গত জুনে ৯ বছরে শেষ হয়নি পায়রা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পটি। বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ শতাংশ। ৭ শতাংশ কাজ করতে এবার সময় বাড়ানো হয়েছে দুই বছর।

প্রকল্পটি ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা দেখতে পরিদর্শন করেন বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন। কিন্তু কোনো অনিয়ম খুঁজে পাননি। তবে প্রকল্পের সব কাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করার জন্য মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে বলে সুপারিশ করেছেন। প্রতিবেদন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে আইএমইডি সচিব খবরের কাগজকে বলেন, ‘ইতোপূর্বে অন্য অফিসাররা প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছেন। সর্বশেষ আমি জুলাই মাসে সেখানে মনিটরিংয়ে গিয়েছিলাম। প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি (পিআইসি) ও প্রকল্প স্টিয়ারিং কমিটি (পিএসসি) সভা করার সুপারিশ করা হয়েছে। নিয়মিতভাবে এই দুই মিটিং করা হলে প্রকল্প সঠিকভাবে শেষ হবে। কারণ এসব মিটিংয়ে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা থাকেন। চুলচেরা বিশ্লেষণ করে করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, সরকার ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা খরচ করার জন্য ‘পায়রা বন্দরের কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেয়। প্রকল্পটি প্রথমে তিন বছরের জন্য অর্থাৎ ২০১৮ সালের জুনে শেষ করার জন্য সময় বেঁধে দেয়। নির্ধারিত তিন বছর পর আরও ছয় বছর বাড়িয়ে গত জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। তার পরও হয়নি পুরো কাজ। ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনকাজ বাকি থাকায় সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হলে সম্প্রতি দুই বছর অর্থাৎ ২০২৬ সালের জুনে শেষ করার জন্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। 

ফাস্ট ট্র্যাকভুক্ত প্রকল্পটির অর্থ ও কাজ সঠিকভাবে খরচ হচ্ছে কি না তা বিভিন্ন সময়ে মনিটরিং করছে আইএমইডি। সর্বশেষ গত জুলাইয়ে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন প্রকল্পটি মনিটরিং করেন।

সার্বিক ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক ক্যাপ্টেন মনিরুজ্জামান সম্প্রতি খবরের কাগজকে বলেন, ‘অনেকে বলছেন, এত সময় লাগছে কেন? কিন্তু বুঝতে হবে, এখানে বিভিন্ন ব্যাপার জড়িত। তার পরও গত জুন পর্যন্ত অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ শতাংশ। বাকি কাজের মধ্যে প্রায় ৮০০ একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ বাকি রয়েছে। তা বাস্তবায়ন করতেই সময় বাড়ানো হচ্ছে।’

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডির প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, পায়রা বন্দরের ন্যূনতম অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সীমিত আকারে বন্দরের কার্যক্রম চালুকরণ এবং একটি পূর্ণাঙ্গ বন্দর গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণে সরকার প্রথমে তিন বছরের জন্য অনুমোদন দেয়। কিন্তু ওই সময়ে কাজের কাজ কিছু হয়নি। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে সংশোধন প্রস্তাব করা হলে সরকার ২০১৮ সালের ২০ মার্চ প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়। তাতে খরচ ধরা হয় ৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৫১ লাখ টাকা। এক লাফে খরচ বাড়ে ১৯৭ শতাংশ। সময়ও বাড়ানো হয় দুই বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়। গুরুত্ব বুঝে এটিকে ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের আওতাভুক্ত করা হয়। সময় ও অর্থ খরচ বাড়লেও কাজের অগ্রগতি ভালো হয়নি। তাই দ্বিতীয়বারের মতো ২০২০ সালের ২৪ নভেম্বর আবারও সংশোধন করা হয়। তখন খরচ ধরা হয় ৪ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। খরচ বেড়েছে ২৮৭ শতাংশ। দুই বছর করে দুবার এবং এক বছর করে দুবার মোট ছয় বছর সময় বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুনে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। তাও পুরো কাজ শেষ হয়নি।

প্রকল্পের প্রধান কাজ ধরা হয় ৬ হাজার ৫৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ। এই ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত আনুমানিক ৩ হাজার ৫০০ পরিবারের পুনর্বাসন ও ৪ হাজার ২০০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। জাতীয় মহাসড়ক এন-৮-এর সঙ্গে পায়রা বন্দরের যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ৫ দশমিক ২২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ এবং আউটার বার ও নদীপথে চিহ্নিত বারগুলোর প্রয়োজনীয় ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ নৌপথে মালামাল ও কন্টেইনার পরিবহন নিশ্চিত করা। 
ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হওয়ায় আইএমইডি থেকে বিভিন্ন সময়ে প্রকল্পটি মনিটরিং করা হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে ৬ হাজার ৫৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ ধরা হলেও হয়েছে ৫ হাজার ৩৩২ একর। এখনো ৯৪২ একর ভূমি অধিগ্রহণ বিভিন্ন পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন। আর ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৪টি প্যাকেজের আওতায় ৩ হাজার ৪২৩টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ২ হাজার ৬২৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের কাছে বিভিন্ন আকারের বাড়ি বরাদ্দ দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে। আরও প্রায় ২০৮টি বাড়ি নির্মাণ করা প্রয়োজন। ১১৯টি বাড়ি নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। গত জুন পর্যন্ত প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৯৩ শতাংশ। সর্বশেষ সংশোধন অনুযায়ী অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে হবে ২০২৬ সালের জুনে।

প্রতিবেদনে আইএমইডি সচিব আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন উল্লেখ করেছেন, অডিটসংক্রান্ত পর্যবেক্ষণে শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৪টি অডিট আপত্তি হয়েছে। এর মধ্যে আটটির নিষ্পত্তি হয়েছে। তিনটি অডিট আপত্তির নিষ্পত্তির কার্যক্রম চলমান, আরও তিনটি অডিট নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশে বলা হয়েছে, পুনর্বাসনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের উদ্দেশ্যে নির্মিত বাড়িগুলো প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে। প্রকল্পের সব কার্যক্রম যথাসময়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। নিয়মিত পিআইসি ও পিএসসি সভা করতে হবে। বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে কাজ শেষ করতে কর্মপরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন অগ্রগতি তিন মাস পরপর আইএমইডিকে অবহিত করতে হবে।

পুঁজিবাজারে এক মাস পর ৫০০ কোটি টাকা ছাড়াল লেনদেন

প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:০২ পিএম
পুঁজিবাজারে এক মাস পর ৫০০ কোটি টাকা ছাড়াল লেনদেন
শেয়ারবাজার ডিএসইতে গতি ফিরেছে

টানা দরপতনের পর দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতি ফিরেছে। আগের কার্যদিবসের মতো বুধবারও (৩১ অক্টোবর) মূল্যসূচকের বড় উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। আগের কার্যদিবসের তুলনায় এদিন প্রধান সূচক বেড়েছে ১৪৮ পয়েন্ট। একই সঙ্গে প্রায় এক মাস পর বাজারে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়াল লেনদেন।

এদিন দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান। এমনকি লেনদেনের বেশির ভাগ সময় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রির আদেশের ঘর শূন্য পড়ে থাকে। দাম বাড়ার ক্ষেত্রে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান দাপট দেখানোর পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এতে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।

এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দাম বাড়ার প্রবণতাও বাড়ে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার পাশাপাশি সব কটি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১৪৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৬৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫৭ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯১৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সব কটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৫১৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৪৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৭২ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ২০ কার্যদিবস পর ডিএসইতে ৫০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো। টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৪৬ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজের ১২ কোটি ৯৪ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফারইস্ট নিটিং।

এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস, একমি ল্যাবরেটরিজ, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, টেকনো ড্রাগস ও ইসলামী ব্যাংক।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩৭৩টির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিন দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকার সবার ১০ শতাংশ করে দর বেড়েছে।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ কোম্পানিগুলোর মধ্যে সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৩ টাকা ৮০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিএন্ডএ টেক্সটাইলের শেয়ারদর বেড়েছে ৪০ পয়সা বা ১০ শতাংশ। আর ৪ টাকা ১০ পয়সা বা ১০ শতাংশ শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

এ ছাড়া এদিন ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফু-ওয়াং ফুড, জনতা ইন্স্যুরেন্স, মুন্নু ফেব্রিক্স, নাভানা ফার্মা, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্স এবং ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

বুধবার ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৫ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এদিন দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলসি।

বুধবার মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ২ টাকা ৭০ পয়সা বা ৭ দশমিক ৯২ শতাংশ। তাতে দরপতনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি।

দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা বিআইএফসির শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৬ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ কমেছে। আর শেয়ারদর ৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ কমে যাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে নিউ লাইন ক্লোথিং।

বুধবার ডিএসইতে দরপতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হলো প্রগ্রতি লাইফ, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, ডেসকো, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, খান ব্রাদার্স, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।

অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৩০ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৭৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯টির এবং ১৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা।