ঢাকা ১৭ বৈশাখ ১৪৩২, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
English
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

খেলাপি ঋণ ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল

প্রকাশ: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৫ পিএম
খেলাপি ঋণ ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়াল
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পরও ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ কমছে না। বরং বেড়েই চলছে। সদ্য বিদায় নেওয়া শেখ হাসিনার সরকার একদিকে ব্যাংক থেকে প্রভাবশালীদের বড় অঙ্কের ঋণ দিতে নানা সুবিধা দিয়েছে, অন্যদিকে কাগজে-কলমে খেলাপি ঋণ কম দেখাতে নেওয়া হয়েছে একের পর এক নীতি। এর পরও আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে খেলাপি ঋণ কমেনি। বরং বেড়েছে ব্যাপকভাবে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের  হালনাগাদ তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ থেকে তিন মাসের ব্যবধানে জুন মাস শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকা বা ১৬ শতাংশ। মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। জুন শেষে তা বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে, তখন মোট খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। বর্তমানে তা দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ব্যাংকগুলোর সম্মিলিত ঋণ ও বিনিয়োগের পরিমাণ হলো ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের পরিমাণ মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গত মার্চে এ হার ছিল ১১ দশমিক ১০ শতাংশ। মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর সম্মিলিত ঋণ ও বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ১৬ লাখ ৪০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা।  গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক জুন প্রান্তিক শেষের এ খেলাপি ঋণের তথ্য প্রকাশ করেছে।  

ব্যাংক খাত-সংশ্লিষ্টরা অবশ্য মনে করেন, প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বেশি। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হিসাবে অবলোপন করা ও আদালতের আদেশে স্থগিত থাকা ঋণ বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর ব্যাংক খাত সংস্কারে পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ইতোমধ্যে ৯টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতি উত্তরণে ব্যাংকগুলোকে নানা নির্দেশনাও দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। ফলে প্রকৃত খেলাপি ঋণের চিত্র আগামী দিনে বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের এ পরিমাণ মোট খেলাপি ঋণের প্রায় ৩৩ শতাংশ। মার্চ শেষে এ হার ছিল ২৭ শতাংশ। এই সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ ছিল ৩ লাখ ১২ হাজার ২৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এর ৩৩ শতাংশই খেলাপি হয়ে পড়েছে।

বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সম্মিলিত খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকা বা ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের ৭ দশমিক ৯৪ শতাংশ। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের পরিমাণ মার্চ শেষে ছিল ১২ লাখ ২১ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। অপরদিকে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা বা মোট খেলাপি ঋণের ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ। মার্চ শেষে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর সম্মিলিত ঋণ ও বিনিয়োগ ছিল ৪০ হাজার কোটি টাকা। তখন এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ছিল প্রায় ১৪ শতাংশ। অর্থাৎ বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমেছে। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ ৩ হাজার ২২৯ বা ৪ দশমিক ৭৪ শতাংশ। মার্চ শেষে বিদেশি ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ ৬৬ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণ ছিল ৫ দশমিক ২০ শতাংশ। 

২০০৯ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে, তখন ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। গত জুন শেষে ব্যাংক খেলাপি ঋণ বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ছয় ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১ লাখ ২ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। এসব ব্যাংকের ঋণের প্রায় ৩৩ শতাংশই খেলাপি।

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের মধ্যে তালিকার শীর্ষে রয়েছে জনতা ব্যাংক, যাদের খেলাপি ঋণ প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকা। জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমরা কোনো কিছু গোপন করছি না। ফলে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ এত বেড়ে গেছে। খেলাপি হয়ে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগও করছি। তারা টাকা জমা দিয়ে ঋণ পুনঃতফসিল করার চেষ্টা করছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নথিপত্রে দেখা গেছে, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৯৯ হাজার ৯২১ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের প্রায় ৮ শতাংশ। এ ছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৩ হাজার ২২৯ কোটি টাকা ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর ৫ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা।

গত ডিসেম্বরে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, ছয় মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৫ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে জানুয়ারি-মার্চ সময়ে বেড়েছে ৩৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে ৪৭০ কোটি ডলারের যে ঋণ দিয়েছে, তার একটি শর্ত হচ্ছে ২০২৪ সালের মধ্যে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। 

রাষ্ট্রীয়ভাবে গত ১৫ বছরে ঋণখেলাপিদের একের পর এক ছাড় দেওয়া হয়েছে। একদিকে বিশেষ বিশেষ গ্রাহককে বেশি ঋণ দিতে আইন শিথিল করা হয়েছে, অন্যদিকে আইনে পরিবর্তন আনা হয়েছে খেলাপিদের ঋণ দিতে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে তৎকালীন সরকার খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা শিথিল করে। ২০১৫ সালে ঋণ পুনর্গঠন সুবিধা দেওয়া হয়। ঋণ অবলোপনের ক্ষেত্রেও দেওয়া হয় বিশেষ ছাড়। ২০১৯ সালে ২ শতাংশ অর্থ দিয়ে ঋণ নিয়মিত করার বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়।

এরপর কোভিড মহামারি শুরু হলে সব ধরনের গ্রাহককে ঋণ পরিশোধ না করার সুবিধা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে কিছু ভালো ঋণগ্রহীতাও ঋণ পরিশোধে অনাগ্রহী হয়ে ওঠেন। সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যোগ দিয়ে ঋণ খেলাপিদের ঢালাও ছাড় দিয়ে নতুন নীতিমালা জারি করেন। আড়াই থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়। খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে আগে জমা দিতে হতো ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত অর্থ। এর পাশাপাশি খেলাপি ঋণ ৫ থেকে ৮ বছরে পরিশোধের সুযোগ রাখা হয়। আগে এসব ঋণ শোধ করতে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দেওয়া হতো।

এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি বিজ্ঞাপন-জনসংযোগে একচেটিয়া বাজার আধিপত্য নেই

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৯ পিএম
বিজ্ঞাপন-জনসংযোগে একচেটিয়া বাজার আধিপত্য নেই

দেশের বিজ্ঞাপন ও জনসংযোগ খাতে এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি একচেটিয়া বাজার আধিপত্য বজায় রেখেছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা অস্বীকার করেছে এই বৃহত্তম বিজ্ঞাপনী সংস্থাটি। একই সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক সম্পর্কের কথাও নাকচ করে দিয়েছে তারা।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটির গ্রুপ চেয়ারপারসন সারা যাকের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে: সোনার পদকে ভেজাল, সিআরআই কানেকশন, স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি ও মুজিব বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজনে দুর্নীতি, জয় বাংলা কনসার্টের আয়োজন ও বিজ্ঞাপনের বাজার দখল। এ ছাড়াও বিজ্ঞাপনী খাতে একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রাখতে দরপত্র কারসাজির অভিযোগ উঠেছে এশিয়াটিকের বিরুদ্ধে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিজ্ঞাপন ও কমিউনিকেশনস খাতে সেবা প্রদানে এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটির একচেটিয়া বাজার আধিপত্য নেই। এ শিল্প খাতের বিভিন্ন সেবা খাতে এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটি অন্যান্য এজেন্সির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে।’

সোনার পদকে ভেজালের বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক ও সংগঠনকে সম্মাননা দিতে যে সোনার ক্রেস্ট প্রদান করা হয়েছিল, তা সরবরাহ করেছিল অন্য একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু অপপ্রচার চালানো হচ্ছে এশিয়াটিকের নামে। এ আয়োজনে এশিয়াটিক শুধু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে।

আওয়ামী লীগের গবেষণা সেল সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন- সিআরআই-এর সঙ্গে ইরেশ যাকের বা এশিয়াটিক থ্রি সিক্সটির কোনো অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক ছিল না বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।

বিগত বছরগুলোতে জয় বাংলা কনসার্ট আয়োজনের সঙ্গে এশিয়াটিক ইভেন্টস বা এশিয়াটিকের কোনো অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সম্পৃক্ততা নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এশিয়াটিক বিগত সরকারের আমলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কিছু অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব পেলেও কোনো রাজনৈতিক দলের প্রচারণা বা অনুষ্ঠান আয়োজনের সঙ্গে কখনো সম্পৃক্ত ছিল না বলে দাবি করা হয়।

হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বাজারে দেশি পণ্যের দাপট

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১১ এএম
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৩ এএম
হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বাজারে দেশি পণ্যের দাপট
ছবি : সংগৃহীত

একসময় দেশের বাজারে বিদেশি হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের রাজত্ব ছিল। এসব পণ্য সাধারণত উচ্চবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে ব্যবহার করা হতো। দাম বেশি হওয়ায় বিদেশি হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য কেনার সক্ষমতা সাধারণ আয়ের মানুষের ছিল না বললেই চলে। সময়ের সঙ্গে চিত্র পাল্টেছে। বছর দশেক থেকে দেশের বাজারে হোম অ্যাপ্লায়েন্সের পণ্যের দাপট বেড়েছে। দেশেই গুণগত মানের হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য তৈরি হচ্ছে। 

দেশে তৈরি হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের দাম আমদানি করা একই জাতীয় পণ্যের তুলনায় কম। এককালীন মূল্য পরিশোধের পাশাপাশি কিস্তিতে কেনারও সুযোগ আছে। এতে সাধারণ আয়ের পরিবারও হোম আপ্লায়েন্স পণ্য ব্যবহার করতে সক্ষম হচ্ছে। অন্যদিকে উপজেলা পর্যায়েও এসব পণ্য বিক্রির শোরুম করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়ায় এখন গ্রামের ঘরে ঘরে ফ্রিজ, ফ্যান ব্যবহার করা হচ্ছে। বৈদ্যুতিক চুলার ব্যবহারও বেড়েছে। 

ব্যবহারকারী বলেছেন, বর্তমান যুগে হোম অ্যাপ্লায়েন্স বা গৃহস্থালি পণ্যগুলো দৈনন্দিন জীবনে অপরিহার্য। এগুলো আমাদের জীবনযাত্রাকে সহজ, নিরাপদ এবং আরামদায়ক করে তুলেছে। বাড়িতে বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের জন্য এসব পণ্যের প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার করা যায় না।

রাজধানীতে করপোরেট হাউসের চাকরিজীবী সোমা রহমান খবরের কাগজকে বলেন, আমি চাকরি করি। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস। বাসায় আসতে আসতে রাত ৮টা বাজে। আবার সকালে ৭টার মধ্যে বের হতে হয়। এই ব্যস্ত জীবনে হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য ব্যবহার করতে না পারলে জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়বে। আমার বাসায় ওভেনে রান্না করি। ওয়াশিং মেশিনে কাপড় পরিষ্কার করি। অনেক খাবার ছুটির দিনে রান্না করে ফ্রিজে রেখে দিয়ে প্রয়োজনমতো ওভেনে গরম করে পরিবারের সদস্যদের খেতে দিই। এভাবে এসব পণ্য আমার ও আমার পরিবারে প্রতিদিনের ব্যবহারের অংশ হয়ে উঠেছে। 

একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা বলেন খুলনার ফুলতলা উপজেলার বাসিন্দা গৃহিণী রুমানা ইসলাম। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, আমি দোকানের বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করি। সকালে ৯টা থেকে রাত ৯-১০ পর্যন্ত আমাকে বিক্রির কাজ করতে হয়। আমি ফ্রিজে খাবার রান্না করে রাখি। আমার প্রেশার কুকার আছে। এটা দিয়ে অল্প সময়ে রান্না করতে পারি। দেশি প্রতিষ্ঠানের তৈরি ফ্রিজ কিস্তিতে কেনার সুযোগ পেয়েছি বলে কিনতে পেরেছি। মাসে মাসে ২ হাজার ৫০০ টাকা কিস্তি আসে। আমার স্বামীর কাছ থেকে নিতে হয় না। আমিই পরিশোধ করি।

যমুনা গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মনিকা ইসলাম খবরের কাগজকে বলেন, সময়ের সঙ্গে হোম অ্যাপ্লায়েন্সের পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। বছরে এ বৃদ্ধির হার প্রায় ২০-৩০ শতাংশ। মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন, দেশব্যাপী বিদ্যুৎ সংযোগ ও ব্যস্ত জীবনকে সহজ করতে গৃহস্থালির নানা কাজে ফ্রিজসহ ব্যবহৃত হচ্ছে নানা ধরনের ইলেকট্রনিক্স হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য। স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হওয়ায় দেশীয় হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস পণ্য ক্রেতার হাতের নাগালে এসেছে।

হোম অ্যাপ্লায়েন্স সামগ্রীর মূল্য ব্র্যান্ড, ফিচার এবং আকারের ওপর নির্ভর করে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, আমাদের দেশে ২৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি দামে ফ্রিজ পাওয়া যায়। ১৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি দামে ওয়াশিং মেশিন, ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা বা তার বেশি দামে মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বা তার বেশি দামে রান্নার চুলা, ৩০ হাজার থেকে ১ লাখ বা তার বেশি দামে এসি পাওয়া যায়। বাজারে বিভিন্ন দামের টেলিভিশন পাওয়া যায়। ১৫ হাজার থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে টেলিভিশন বিক্রি হয়।

দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু খবরের কাগজকে বলেন, হোম অ্যাপ্লায়েন্স সব পণ্যের চাহিদা এক না। ফ্রিজের যে চাহিদা এসির সেই চাহিদা তা না। তবে সব হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের চাহিদাই বাড়ছে। দেশি বিনিয়োগকারীরা এ খাতে আসছে। এতে প্রতিযোগিতা বাড়ছে। ফলে গুণগতমানের পণ্য এখন আমদানি করা পণ্যের চেয়ে কমে পাওয়া যাচ্ছে। সরকার থেকে আরও নীতি সহায়তা দিলে দেশি হোম অ্যাপ্লায়েন্স শিল্পের দ্রুত বিকাশ হবে। 

তিনি আরও বলেন, এসব পণ্যের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সাধারণ মানুষ সচেতন না। হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্যের বিক্রি বাড়াতে হলে এসব পণ্য ব্যবহারের সুফল প্রচার করতে হবে। একই সঙ্গে দাম আরও কমাতে হবে। তাহলে বিক্রি কয়েকগুণ বাড়বে। পণ্যের চাহিদা বাড়লে নতুন নতুন উদ্যোক্তারা এ খাতে যোগ দেবে। বেকারত্ব কমবে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এফবিসিসিআই থেকে জানা যায়, বর্তমানে হোম অ্যাপ্লায়েন্সের বাজারের আকার বছরে ২১ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এই বাজার প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ হারে বড় হচ্ছে। বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায় এমন প্রায় ৮০ শতাংশ হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য দেশেই তৈরি ও সংযোজন হয়। গত ১০ বছরে এটি ৬ থেকে ৮ গুণ বড় হয়েছে। এভাবে বাড়তে থাকলে আগামী ১০ বছরে এই শিল্প আরও ৩-৪ গুণ বড় হবে। 

উদ্যোক্তারা দাবি করেন, বাংলাদেশের হোম অ্যাপ্লায়েন্স শিল্প বর্তমানে দ্রুত বর্ধনশীল এবং সম্ভাবনাময় শিল্প খাত। আর এই প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখছে বেসরকারি খাত। তার মধ্যে বড় ধরনের ভূমিকা পালন করছে ইলেকট্রনিক্স শিল্প। দেশীয় ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য খাতের বিকাশের ফলে বিপুল পরিমাণ পণ্যের আমদানি কমায় ব্যয় সাশ্রয় হচ্ছে। এ শিল্প হয়ে উঠেছে সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য রপ্তানি হচ্ছে। আগামী কয়েক বছরে আরও বেশি দেশের হোম অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য পৌঁছে যাবে এমন দাবিও করেছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ব্যাপকভাবে কর অব্যাহতি কমানো হতে পারে। এ খাতের বেশির ভাগ কাঁচামাল আমদানি করতে হয়। কর অব্যাহতি প্রত্যাহার করা হলে কাঁচামালের দাম বাড়বে। ফলে এই শিল্প কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্ট খাতের উদ্যোক্তারা। 

উদ্যোক্তারা বলেন, আমরা এখনো দেশের অভ্যন্তরে কাঁচামাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পারিনি। আশা করি, সরকার বিষয়টি বিবেচনা করে আগামী বাজেটে রাজস্ব ছাড়ের সুবিধা বহাল রাখবে।

ওয়ালটনের এসি মানেই সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০১ এএম
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৪ এএম
ওয়ালটনের এসি মানেই সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফ

এসির বাজারে ওয়ালটন দেশের নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড। রেসিডেনসিয়াল এসির পাশাপাশি লাইট কমার্শিয়াল এবং কমার্শিয়াল এসি উৎপাদনে ওয়ালটন শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। দেশের এসি বাজারে ৩০ শতাংশেরও বেশি মার্কেট শেয়ার ওয়ালটনের। এসির বাজারজাতকরণ, সম্ভাবনা নিয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেন ওয়ালটন এয়ার কন্ডিশনার সেলস কো-অর্ডিনেটর মো. মুহাইমিন উল বারী

খবরের কাগজ: বাংলাদেশে বর্তমানে এসির বাজার কেমন?
মো. মুহাইমিন উল বারী: সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের এসি বাজারের ব্যাপক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রতিবছরই অসহনীয় গরম, দ্রুত বিকাশমান নগরায়ণ, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, সাশ্রয়ী মূল্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসংবলিত এসির সহজলভ্যতা ইত্যাদি নানা কারণে বাংলাদেশে এসির চাহিদা বাড়ছে। ২০২৪ সালে দেশে ৬.৫ লাখ এসির চাহিদা ছিল। চলতি বছর বাংলাদেশের এসির চাহিদা ৭.৫ লাখে পৌঁছাবে বলে ধারণা করছি। সামনের বছরগুলোতে ২০ শতাংশ হারে এসির বাজার বাড়বে বলে আমরা প্রত্যাশা করি।

খবরের কাগজ: দেশের বাজারে ওয়ালটন এসির অবস্থান কেমন?
মো. মুহাইমিন উল বারী: এসির বাজারে ওয়ালটন দেশের নাম্বার ওয়ান ব্র্যান্ড। রেসিডেনসিয়াল এসির পাশাপাশি লাইট কমার্শিয়াল এবং কমার্শিয়াল এসি উৎপাদনে ওয়ালটন শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। দেশের এসি বাজারে ৩০ শতাংশেরও বেশি মার্কেট শেয়ার ওয়ালটনের। এর পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি ওয়ালটন এসি দেশের বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশে উৎপাদিত এসি মোট চাহিদার ৮০ শতাংশেরও বেশি পূরণ করছে; যার নেতৃত্বে রয়েছে ওয়ালটন।

খবরের কাগজ: ওয়ালটন এসির প্রযুক্তিগত এবং অন্য বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?
মো. মুহাইমিন উল বারী: ওয়ালটন এসির বিশেষত্ব হচ্ছে- ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ইনভার্টার প্রযুক্তিসহ বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও ফিচারের ব্যবহার, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, সর্বোচ্চ পরিবেশবান্ধব, টেকসই ও দীর্ঘস্থায়িত্ব, দামে সাশ্রয়ী, অসংখ্য মডেল ও রুচিশীল ডিজাইন এবং দেশব্যাপী বিস্তৃত সর্বোচ্চসংখ্যক সার্ভিস সেন্টারের মাধ্যমে দ্রুত বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়ার নিশ্চয়তা। বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনই ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ৬ স্টার রেটিং সমৃদ্ধ এসি বাজারে ছেড়েছে, যা বিএসটিআই এবং বুয়েট কর্তৃক স্বীকৃত। এটি দক্ষিণ এশিয়ার সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এসি। ওয়ালটন এসিতে এখন ব্যবহৃত হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব আর-২৯০ এবং আর-৩২ গ্যাস, যা পরিবেশ সুরক্ষায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ভূমিকা রেখে চলছে। ইতোমধ্যে এসিতে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক সিএফসি এবং এইচসিএফসি গ্যাসের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছে ওয়ালটন। দেশের প্রথম ও একমাত্র সর্বোচ্চ পরিবেশবান্ধব আর-২৯০ সমৃদ্ধ এসি উৎপাদন করছে ওয়ালটন। ফলে পরিবেশবান্ধব শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র উৎপাদনে ভারত ও চীনের থেকে অনেক এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। ওয়ালটনের উৎপাদিত ৯০ ভাগ এসিই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী। রয়েছে সর্বোচ্চ এনার্জি ইফিসিয়েন্সি রেশিও (ইইআর)। এর পাশাপাশি ওয়ালটন এসিতে রয়েছে ডিজিটাল ডিসপ্লে, অফলাইন বাংলা ও ইংরেজি ভয়েস কন্ট্রোল, ব্লুটুথ কন্ট্রোল, এআই ডক্টর, কোটেক টেকনোলজি, স্মার্ট টেকনোলজি ইত্যাদি অসংখ্য প্রযুক্তি ও ফিচার।

খবরের কাগজ: ক্রেতাদের জন্য ওয়ালটনের কত মডেলের এসি রয়েছে? দাম কেমন?
মো. মুহাইমিন উল বারী: ক্রেতাদের জন্য চলতি বছর আমরা ছয়টি সিরিজের ৭৪টি মডেলের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী স্প্লিট এসি বাজারে ছেড়েছি। এর মধ্যে ওয়ালটনের ১ টনের ইনভার্টার এসির দাম ৪৯ হাজার ৯০০ টাকা থেকে শুরু হয়েছে। ১.৫ টন এসি পাওয়া যাচ্ছে ৬৫ হাজার ৯০০ থেকে ৮১ হাজার ৯০০ টাকার মধ্যে এবং গ্রাহকরা ২ টনের এসি ৭৯ হাজার ৯০০ থেকে ৯৫ হাজার ৯৯০ টাকায় পাচ্ছেন। স্প্লিট এসি সাধারণত বাসাবাড়ি ও ছোট প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়। মাঝারি ও বড় স্থাপনায় লাইট কমার্শিয়াল এবং কমার্শিয়াল এসি ব্যবহৃত হয়। এসব স্থাপনার জন্য ওয়ালটনের রয়েছে ভিআরএফ ও চিলার।

খবরের কাগজ: গ্রাহকদের জন্য এসি ক্রয়ে ওয়ালটন কী ধরনের বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে?
মো. মুহাইমিন উল বারী: প্রতিবছরই গরম এবং ঈদ উপলক্ষে এসির গ্রাহকদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকে ওয়ালটন। চলতি বছরও এর ব্যতিক্রম নয়। কুরবানির ঈদ পর্যন্ত ওয়ালটন এসি ক্রয়ে গ্রাহকদের জন্য রয়েছে মিলিয়নিয়ার হওয়ার সুযোগ। এ ছাড়া বছরজুড়েই গ্রাহকদের এসি এক্সচেঞ্জ সুবিধা দিচ্ছে ওয়ালটন। এই সুবিধার আওতায় যেকোনো ব্র্যান্ডের পুরোনো এসির বদলে সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ ডিসকাউন্টে গ্রাহকরা ওয়ালটনের নতুন এসি কিনতে পারছেন। এর পাশাপাশি ওয়ালটন এসিতে ফ্রি ইন্সটলেশন, জিরো ইন্টারেস্টে সহজ কিস্তি ও ইএমআই সুবিধা রয়েছে।

খবরের কাগজ: এসি উৎপাদন ও বিপণনে আপনারা কোন কোন বিষয়কে প্রাধান্য দেন?
মো. মুহাইমিন উল বারী: ওয়ালটন দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ এয়ারকন্ডিশনার উৎপাদন, বিপণন ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সালে বাংলাদেশে প্রথম এয়ারকন্ডিশনার প্রোডাকশন প্ল্যান্ট স্থাপন করে ওয়ালটন। শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতারা যেন বিশ্বমানের ইলেকট্রনিক্স পণ্য ও সেবা সাশ্রয়ী মূল্যে পেতে পারেন। সে জন্য এয়ারকন্ডিশনার উৎপাদনে বিদ্যুৎ সাশ্রয় ও পরিবেশের সুরক্ষার ওপর আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আসছি। গ্রাহকচাহিদা ও প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ওয়ালটনের নিজস্ব সুদক্ষ গবেষণা ও উদ্ভাবন (রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন) নিরলস গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এয়ারকন্ডিশনার। দেশে এসি উৎপাদন কারখানা স্থাপনের ফলে এ খাতে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। এর ফলে যেমন বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হচ্ছে, তেমনি কর্মসংস্থান হচ্ছে। বাড়ছে রপ্তানি আয়। বিশ্বের মাত্র ৯টি দেশ ভিআরএফ উৎপাদন করে। তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশের ওয়ালটন। 

খবরের কাগজ: দেশের পাশাপাশি বিশ্ববাজারে ওয়ালটন এসি রপ্তানি হচ্ছে কি না?
মো. মুহাইমিন উল বারী: বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন এসির চাহিদা বিশ্বজুড়ে রয়েছে। বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে আমরা পণ্য রপ্তানি করি। এসির বৈশ্বিক বাজার টার্গেট করে আমরা ব্যাপক পরিকল্পনা নিয়েছি। গ্লোবাল এসি মার্কেটে ওয়ালটনের উপস্থিতি বাড়ানোর মাধ্যমে দেশের রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার জোগান বৃদ্ধিতে আমরা কাজ করছি।

খবরের কাগজ: বাংলাদেশে মূলত কোন শ্রেণির মানুষ এসি কিনছেন? সাম্প্রতিক সময়ে এসির ক্রেতা-শ্রেণির মধ্যে পরিবর্তন দেখছেন কি না?
মো. মুহাইমিন উল বারী: বর্তমান সময়ে এসি আর বিলাসদ্রব্য নয় বরং প্রয়োজনীয় পণ্যে পরিণত হয়েছে। সেই হিসেবে সব শ্রেণির মানুষই এসি কিনছেন এবং ব্যবহার করছেন। গত কয়েক বছরে এই চিত্রটা অবশ্য ভিন্ন ছিল। তখন উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা সাধারণত এসি ব্যবহার করতেন। কিন্তু আমাদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং সরকারের দেওয়া নীতি সহায়তার ফলে দেশে বিশ্বমানের এসি উৎপাদন হচ্ছে। বাংলাদেশে তৈরি আমাদের এসি যেমন মূল্য সাশ্রয়ী, তেমনই বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী এবং সর্বোচ্চ পরিবেশবান্ধব। রয়েছে দ্রুততম বিক্রয়োত্তর সেবা। ফলে বর্তমান সময়ে উচ্চবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্নবিত্ত পর্যন্ত সব শ্রেণির মানুষই এসি ক্রয় এবং ব্যবহার করছেন। 

খবরের কাগজ: এসি-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা রোধে কী কী বিষয় লক্ষ্য রাখা জরুরি?
মো. মুহাইমিন উল বারী: বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের মানসম্মত এসি ব্যবহার করলে বিস্ফোরণের ঝুঁকি নেই বলেই চলে। এসির অভ্যন্তরে যে সামান্য পরিমাণ গ্যাস থাকে, তা থেকে যদি বিস্ফোরণ হয়ও, তা খুব ভয়াবহ রূপ নিতে পারে না। সঠিকভাবে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে এসি থেকে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে না। ঘরের মাপ অনুযায়ী এসি কেনা, সঠিক স্পেকের বৈদ্যুতিক তার ও সকেটের ব্যবহার, নিয়মিত সার্ভিসিং ইত্যাদি বিষয়গুলো মেনে চললে এসি থেকে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা থাকে না।

গুণগত মানের সঙ্গে আপস নেই

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫৩ এএম
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪৪ এএম
গুণগত মানের সঙ্গে আপস নেই
একরাম হোসেন। ম্যানেজিং ডিরেক্টর  র‍্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড

বাংলাদেশের হোম অ্যাপ্লায়েন্স শিল্প বর্তমানে একটি দ্রুত বিকাশমান এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ খাত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এ শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেছেন র‍্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর একরাম হোসেন। 

খবরের কাগজ: দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বর্তমানে বেশ চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাত কেমন করছে?
একরাম হোসেন: বর্তমানে দেশের সামগ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও, হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাত তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল রয়েছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান উন্নত হওয়ায় এবং গৃহস্থালির কাজকে সহজ করার চাহিদা বাড়ায় এ খাতের চাহিদা এখনো ভালো রয়েছে।

খবরের কাগজ: বাংলাদেশের হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতের অবস্থান কেমন? এই খাতের প্রবৃদ্ধি গত পাঁচ বছরে কতটুকু বেড়েছে?
একরাম হোসেন: বাংলাদেশের হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাত বর্তমানে একটি দ্রুত বিকাশমান এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ খাত হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন, নগরায়ণ, বিদ্যুতায়ন এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণের কারণে এ খাতের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিশেষ করে ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, এসি, স্মার্ট টিভি ও রিচার্জেবল ফ্যানের মতো পণ্যগুলোর জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

খবরের কাগজ: দেশের বাজারে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা কেমন? গ্রাহকদের মধ্যে কোন ধরনের পণ্যের চাহিদা সবচেয়ে বেশি?
একরাম হোসেন: বর্তমানে বাংলাদেশের বাজারে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো মানসম্মত পণ্য তুলনামূলক কম দামে সরবরাহ করে বড় একটি বাজার দখল করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলো যেমন- এলজি, সনি, কেলভিনেটর আধুনিক প্রযুক্তি ও ব্র্যান্ড ইমেজের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছে। ফলে বাজারে একটি ভারসাম্যপূর্ণ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়েছে, যা গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন অপশন এবং ভালো দামের সুবিধা এনেছে।

খবরের কাগজ: স্থানীয় উৎপাদন বনাম আমদানি করা পণ্যের মধ্যে আপনি কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখেন?
একরাম হোসেন: স্থানীয় উৎপাদন ও আমদানি করা পণ্যের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ কৌশল অনুসরণ করি। প্রথমত, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের ক্ষেত্রে আমরা গ্রাহকদের চাহিদা, মূল্য সংবেদনশীলতা এবং দ্রুত সাপোর্ট সুবিধার দিকে গুরুত্ব দিই। স্থানীয় পণ্য সুলভ মূল্যে এবং সহজে সার্ভিস সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে আমরা বাজারের একটি বড় অংশের চাহিদা পূরণ করি।
অন্যদিকে, আমদানি করা পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে আমরা উন্নত প্রযুক্তি, প্রিমিয়াম কোয়ালিটি এবং নতুন উদ্ভাবনের ওপর জোর দিই। উচ্চমানের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পণ্য এনে সেসব গ্রাহকের জন্য অপশন রাখি, যারা প্রযুক্তি, ব্র্যান্ড ইমেজ ও দীর্ঘস্থায়ী পারফরম্যান্সে বেশি গুরুত্ব দেন।

খবরের কাগজ: তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য আপনি কী বার্তা দিতে চান? বিশেষ করে যারা ম্যানুফ্যাকচারিং ও টেকনোলজি সেক্টরে আগ্রহী।
একরাম হোসেন: তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রতি আমার বার্তা হলো স্বপ্ন দেখুন, সাহস রাখুন এবং নিরলস পরিশ্রম করুন। বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং ও টেকনোলজি সেক্টর বাংলাদেশের ভবিষ্যতের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হয়ে উঠছে। এই খাতে সাফল্যের জন্য প্রয়োজন উদ্ভাবনী চিন্তা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং স্থিতিশীল মানসিকতা। শুরুতে ছোট পরিসরে হলেও মানের ওপর কোনো আপস করবেন না। গুণগত মান এবং গ্রাহকের আস্থা অর্জনই হবে আপনার দীর্ঘমেয়াদি সফলতার চাবিকাঠি। একই সঙ্গে, প্রযুক্তির দ্রুত পরিবর্তনকে আপন করে নিতে হবে। নতুনত্ব গ্রহণ করুন, ডিজিটালাইজেশনকে কাজে লাগান।

খবরের কাগজ: আপনার কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? আগামী পাঁচ বছরে কোম্পানিকে কোথায় দেখতে চান?
একরাম হোসেন: আমাদের কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো- টেকনোলজি এবং ইনোভেশনের মাধ্যমে গ্রাহকের জীবনে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করা। আমরা হোম অ্যাপ্লায়েন্স, কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স এবং স্মার্ট লিভিং পণ্যের ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তি ও মানসম্পন্ন পণ্য নিয়ে আসার পরিকল্পনা করছি। আগামী পাঁচ বছরে আমরা কোম্পানিটিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর কাতারে দেখতে চাই, যেখানে গ্রাহকসেবা, ইনোভেশন, এবং পণ্যের বৈচিত্র্যে আমরা নতুন মানদণ্ড স্থাপন করব। পাশাপাশি, দেশের বাজারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও আমাদের উপস্থিতি বাড়ানোর জন্য রপ্তানি কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্য রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, ডিজিটালাইজেশন, সাস্টেইনেবল প্র্যাকটিস, এবং গ্রাহককেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবে। এ ভিশন বাস্তবায়নে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং আধুনিক উৎপাদন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগও আমাদের মূল পরিকল্পনার অংশ। সংক্ষেপে বললে, আগামী পাঁচ বছরে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানকে ‘গ্রাহকের প্রথম পছন্দ ও আস্থার প্রতীক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

খবরের কাগজ: প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আপনার প্রতিষ্ঠান কীভাবে নিজস্ব ব্র্যান্ড ভ্যালু ধরে রাখছে?
একরাম হোসেন: সর্বদা গ্রাহক সন্তুষ্টি ও গুণগত মানের প্রতি আপসহীন থাকি। প্রতিটি পণ্যে আমরা উন্নত প্রযুক্তি, টেকসই উপকরণ ও ব্যবহারবান্ধব ডিজাইন নিশ্চিত করি। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও ইনোভেটিভ ফিচার যুক্ত করে পণ্যগুলোকে ভবিষ্যতের চাহিদার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার উপযোগী করি। বাজারের পরিবর্তিত চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত নতুন পণ্য ও সমাধান বাজারজাত করার ক্ষমতা আমাদের একটি বড় শক্তি। বিশ্বস্ত সেবা পরিকাঠামো গড়ে তোলা- বিক্রির পর গ্রাহক সাপোর্ট ও দ্রুত সার্ভিসের মাধ্যমে আমরা গ্রাহকের আস্থা ও সম্পর্ক দৃঢ় করি।

খবরের কাগজ: বর্তমান হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতে কর কাঠামো সহায়ক কি না। কী উদ্যোগ নিলে এই খাতের বিকাশ হবে?
একরাম হোসেন: বর্তমানে বাংলাদেশের হোম অ্যাপ্লায়েন্স খাতে কর কাঠামো আংশিক সহায়ক হলেও আরও উন্নত করার সুযোগ রয়েছে। সরকার স্থানীয় উৎপাদন উৎসাহিত করতে কিছু কর ছাড় এবং নীতিগত সহায়তা দিয়েছে, যা এই শিল্পের বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্ট স্থাপন ও প্রযুক্তি স্থানান্তরে নীতিগত সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।

খবরের কাগজ: বছরের কোন সময়ে এসি/ফ্রিজ/ফ্যানের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে? আপনারা বিক্রি বাড়াতে কোন ধরনের অফার দিচ্ছেন? এবারের ঈদে আপনাদের কত ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে?
একরাম হোসেন: বছরের বিশেষ কিছু সময়ে এসি, ফ্রিজ এবং ফ্যানের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। সাধারণত গ্রীষ্মকাল (মার্চ থেকে জুন) এবং রমজান ও ঈদুল ফিতরের আগে এসি, ফ্রিজ এবং ফ্যানের বিক্রির হার সবচেয়ে বেশি থাকে। গরমের তীব্রতা ও ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সময়ে ক্রেতারা এসব পণ্যের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখান। বিক্রি বাড়াতে আমরা গ্রাহকদের জন্য আকর্ষণীয় কিছু অফার চালু করেছি, যেমন- ডিসকাউন্ট অফার (নির্দিষ্ট মডেলের ওপর বিশেষ মূল্যছাড়), কিস্তি সুবিধা (জিরো পার্সেন্ট ইন্টারেস্টে সহজ ইএমআই), বিনামূল্যে ডেলিভারি ও ইনস্টলেশন সেবা, নগদ ক্যাশব্যাক এবং গিফট অফার, লাকি ড্র ও মেগা পুরস্কারের সুযোগ, এক্সটেন্ডেড ওয়ারেন্টি ও ফ্রি সার্ভিস ক্যাম্পেইন ইত্যাদি। এবারের ঈদ ক্যাম্পেইনে আমরা বিশেষভাবে ফ্রিজ বিক্রির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য হলো, প্রায় ২৫ হাজার ইউনিট ফ্রিজ বিক্রি করা। ঈদের সময় ফ্রিজের চাহিদা প্রচুর থাকে, বিশেষ করে বড় সাইজের। 

খবরের কাগজ: এসি ব্যবহারে বড় প্রশ্ন বিদ্যুৎ খরচ। কম বিদ্যুৎ খরচে আপনাদের এসিগুলোর প্রযুক্তি কতখানি এগিয়ে?
একরাম হোসেন: আমাদের ইনভার্টার সিরিজ এসিগুলো পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা, ঘরের আর্দ্রতা ও ব্যবহারকারীর পছন্দ অনুযায়ী নিজেকে অ্যাডজাস্ট করে কাজ করে। এ কারণে মাসিক বিদ্যুৎ খরচ ২০-৩০ শতাংশ (মডেলভেদে) কমে যায়। এর সঙ্গে আমরা সেবা পরবর্তী সরবরাহ—ফিল্টার ক্লিন, গ্যাস চেক ও সার্ভিসিংও নিশ্চিত করি, যাতে এনার্জি এফিশিয়েন্সি সর্বোচ্চ থাকে।

খবরের কাগজ: হোম অ্যাপ্লায়েন্স রিসাইক্লিং বা ই-ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ কতটা এগিয়েছে?
একরাম হোসেন: বাংলাদেশে হোম অ্যাপ্লায়েন্স রিসাইক্লিং বা ই-ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনা এখনো প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। সঠিক এবং শক্তিশালী নীতিমালা, প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এই খাতে দ্রুত উন্নতি করা সম্ভব। এর জন্য সরকারের, ব্যবসায়ীদের এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

খবরের কাগজ: আপনার প্রতিষ্ঠান কী স্থানীয়ভাবে পণ্য তৈরি করে, নাকি আমদানি করে? উৎপাদনের ক্ষেত্রে কোন ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়? হোম অ্যাপ্লায়েন্স তৈরি বা সংযোজনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী?
একরাম হোসেন: আমাদের প্রতিষ্ঠান স্থানীয়ভাবে পণ্য তৈরি করে থাকে এবং আমদানির পাশাপাশি স্থানীয় উৎপাদনকে প্রাধান্য দেয়। স্থানীয় উৎপাদন আমাদের জন্য শুধু বাজারের চাহিদা দ্রুত পূরণ করার সুযোগ নয়, বরং দেশীয় অর্থনীতির উন্নতি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে সাহায্য করে। 

র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি সিলেটের হাই-টেক পার্কে অবস্থিত নিজস্ব কারখানায় কেলভিনেটর ও র‌্যাংগস ব্র্যান্ডের ফ্রিজ উৎপাদন করছে। এ ছাড়া র‌্যাংগস ব্র্যান্ডের বিভিন্ন মডেলও এই কারখানায় তৈরি হচ্ছে।
 
র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি সনি, RANGS কেলভিনেটর, এলজি, দাইয়্যু, ইলেক্ট্রোলাক্স, Whirlpool ইত্যাদি বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের পণ্য বাংলাদেশের বাজারে বাজারজাত করে আসছে। র‌্যাংগস ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড ৪০ বছর ধরে অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর হিসেবে অত্যন্ত সুনাম, সাফল্য ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্বমানের ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ডের পণ্য বাংলাদেশের বাজারে বাজারজাত করে আসছে।

শিগগিরই ফ্রিজ রপ্তানি শুরু করবে মিনিস্টার

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪২ এএম
আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০১ এএম
শিগগিরই ফ্রিজ রপ্তানি শুরু করবে মিনিস্টার
মো. হুমায়ুন কবীর (কবি) উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিনিস্টার- মাইওয়ান গ্রুপ

দেশের বেকারত্ব সমস্যার সমাধান এবং প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি করতে চান মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর একই সঙ্গে দেশের প্রকৌশলীদের মাধ্যমে গবেষণা ও উন্নয়ন সেক্টরকে আধুনিক এবং যুগোপযোগী করে বিশ্বমানের পণ্য এবং সেবা মানুষের হাতে পৌঁছে দিতে চায় কোম্পানি। হোম অ্যাপ্লায়েন্স শিল্পের সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে খবরের কাগজের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

খবরের কাগজ: দেশের অর্থনীতি তথা ব্যবসা-বাণিজ্য এখন বেশ চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য খাত কেমন করছে?
হুমায়ুন কবীর: বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স পণ্য খাত বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে। বিশেষ করে মুদ্রাস্ফীতি, ডলারের দাম বৃদ্ধি, আমদানি জটিলতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে স্থানীয় উৎপাদকরা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। তবে কিছু সম্ভাবনাও রয়েছে যেমন- সরকার দেশীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করছে, মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রসার ঘটছে এবং দিন-দিন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যের কারণে বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও, স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে এই খাতের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এর জন্য মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও সহায়ক সরকারি নীতি জরুরি।

খবরের কাগজ: বর্তমানে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স বাজারে মিনিস্টার কোথায় অবস্থান করছে বলে আপনি মনে করেন?
হুমায়ুন কবীর: বর্তমানে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ও হোম অ্যাপ্লায়েন্স বাজারে মিনিস্টার-মাইওয়ান গ্রুপ একটি শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। মিনিস্টার এখন স্মার্ট টেলিভিশন, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনসহ নানা হোম অ্যাপ্লায়েন্স এর উল্লেখযোগ্য মার্কেট শেয়ার দখল করেছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে আমাদের পণ্যের অধিক চাহিদা রয়েছে। মিনিস্টার বাংলাদেশেই পণ্য উৎপাদন করে, ফলে পণ্যের মূল্য তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী হয়। এতে দেশীয় ক্রেতাদের কাছে ব্র্যান্ডটির গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়ছে। আমরা কিছু পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারেও রপ্তানি করার চেষ্টা চলমান রেখেছি। সব মিলিয়ে, মিনিস্টার এখন বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স মার্কেটে শীর্ষস্থানীয় দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম।

খবরের কাগজ: মিনিস্টার কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পেছনের মূল উদ্দেশ্য ও প্রেরণাটি কী ছিল?
হুমায়ুন কবীর: আমাদের উদ্দেশ্য ও প্রেরণা হলো- উন্নত ও টেকসই প্রযুক্তিনির্ভর পণ্য এবং সেবা ভোক্তাদের নিকট তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে সরবরাহ করা। একই সঙ্গে, দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখা এবং জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা। 

খবরের কাগজ: বাংলাদেশি ভোক্তাদের চাহিদা পূরণে মিনিস্টার কীভাবে উদ্ভাবনী পণ্য ও সেবা প্রদান করছে?
হুমাযুন কবীর: বাংলাদেশের ভোক্তাদের রুচি, পছন্দ এবং চাহিদা অন্যান্য দেশের তুলনায় ভিন্নতর এবং এই রুচি- পছন্দ প্রতিনিয়ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পরিবর্তন হয়। ভোক্তাদের পছন্দ ও চাহিদার ওপর ভিত্তি করে আমরা আমাদের পণ্য ও সেবা প্রদান করে থাকি। 

খবরের কাগজ: স্থানীয় উৎপাদন বনাম আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে আপনি কীভাবে ভারসাম্য বজায় রাখেন?
হুমায়ুন কবীর: আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই দেশে একটি পণ্যও যেন বিদেশ থেকে না আসে এবং সেই দিনই আমি খুশি হব যেদিন বাংলাদেশে আর একটি পণ্যও বিদেশ থেকে আমদানি হবে না। আমরা চাই আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার সংরক্ষণ হোক। 

খবরের কাগজ: তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য আপনি কী বার্তা দিতে চান? বিশেষ করে যারা ম্যানুফ্যাকচারিং ও টেকনোলজি সেক্টরে আগ্রহী।
হুমায়ুন কবীর: ধৈর্য, মেধা এবং পরিশ্রমী হতে হবে এবং লক্ষ্য নির্ধারণ করেই আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। অনেক বাধা আসবে, বাধা আসবে বলেই আপনি সফল হবেন। আপনি কাজ করতে গিয়ে যদি কোনো বাধা না পান তার মানে আপনি সঠিক পথে নাই। ব্যর্থতাই সব সফলতার চাবিকাঠি। পিপীলিকার জীবন দর্শন থেকে আপনি শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন। কে এফসি, বাংলাদেশের প্ৰবীণ পাটিগণিতবিদ যাদবের দর্শন থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। 

খবরের কাগজ: মিনিস্টার কোম্পানির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? আপনি আগামী ৫ বছরে কোম্পানিটিকে কোথায় দেখতে চান?
হুমায়ুন কবীর: দেশের বেকারত্ব সমস্যার সমাধান এবং প্রচুর কর্মসংস্থান তৈরি করতে চাই। একই সঙ্গে দেশের প্রকৌশলীদের মাধ্যমে গবেষণা ও উন্নয়ন সেক্টরকে আধুনিক এবং যুগোপযোগী করে বিশ্বমানের পণ্য এবং সেবা মানুষের হাতে পৌঁছে দিতে চাই। আমাদের দেশের প্রকৌশলীরা অনেক মেধাবী। সুতরাং তাদের কাজ করার মতো পরিবেশ করে দিতে হবে। 

খবরের কাগজ: প্রতিযোগিতামূলক বাজারে মিনিস্টার কীভাবে নিজস্ব ব্র্যান্ড ভ্যালু ধরে রাখছে?
হুমায়ুন কবীর: মিনিস্টারের কর্মকর্তা হিসেবে আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি পণ্য নিজেই নিজের বিজ্ঞাপন। অর্থাৎ পণ্য উৎপাদনের প্রতিটি স্তরে সঠিক যাচাই বাছাই পূর্বক পণ্যসামগ্ৰী বাজারজাত করা উচিত। তারপরও বলব পণ্যের প্রচারে বিজ্ঞাপন একটি আবশ্যকীয় মাধ্যম যা চলমান রাখাই শ্রেয়। 

খবরের কাগজ: গত এক বছরে এসির ব্যবহার বেড়েছে কি না? ব্যবহার বৃদ্ধির পেছনে কী কী বিষয় কাজ করছে?
হুমায়ুন কবীর: গত এক বছরে এসির ব্যবহার ব্যাপক হারে বেড়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে বিশ্বের সার্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্তরাও এসি ব্যবহার করছে। আমাদের দেশে বর্তমান অসম প্রতিযোগিতার ফলেও এসি বিক্রি বেড়েছে। 

খবরের কাগজ: আপনার কোম্পানির এসির বিশেষ বৈশিষ্ট্য কি? কিস্তিতে কেনার সুযোগ আছে কি না?
হুমায়ুন কবীর: সম্মানিত গ্রাহকদের রুচি-পছন্দ, ক্রমাগত প্রতিযোগিতা এবং চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা মিনিস্টার এসিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি সংযোজন করছি। গ্রাহকদের সুবিধার্থে আমাদের এসিতে যেসব প্রযুক্তি সংযোজিত রয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো: ডুয়েল স্মার্ট ইনভার্টার প্রযুক্তি। এটির কারণে বিদ্যুৎ খরচ ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় হয়। মিনিস্টার এসি দিচ্ছে শতভাগ সঠিক বিটিইউ এর নিশ্চয়তা। আমাদের ১ টন এসিতে ১২০০০ বিটিইউ, ১.৫ টন এসিতে ১৮০০০ বিটিইউ, ২ টন এসিতে ২৪০০০ বিটিইউ রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, বাজারে প্রচলিত অনেক নামি ব্র্যান্ডের এসিতে সঠিক বিটিইউ নেই। কিন্তু মিনিস্টার এসি এর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আমাদের এসি শতভাগ বিটিইউ এর নিশ্চয়তা প্রদানের পাশাপাশি কোন কোন মডেলে অধিক বিটিইউ রয়েছে। এ ছাড়াও আমরা পরিবেশ রক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। এই জন্য আমাদের এসিতে আর ৪১০এ গ্যাস ব্যবহার করছি যা সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। আমাদের এসিতে ফাস্ট কুলিং/ টার্বো কুলিং টেকনোলজি থাকায় রুমকে ১ মিনিটের মধ্যেই ঠাণ্ডা করতে সক্ষম। এ ছাড়াও রয়েছে আইফিল টেকনোলজির মতো আপডেটেড সব ফিচার। রয়েছে নয়েজ ফ্রি ফিচার যা এসি ব্যবহার করার সময় কোনো শব্দ হয় না। রয়েছে কোল্ড প্লাজমা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ফিল্টার টেকনোলজি যার মাধ্যমে বাতাসের ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে নির্মল বাতাস সরবরাহ করে। এ ছাড়াও অটো এরর ডিটেকশন টেকনোলজি থাকায় এসিতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে সাথে সাথে সিগন্যাল দিয়ে থাকে।সহজ কিস্তিতে মিনিস্টার এসি কেনার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও বিশেষ ডিসকাউন্টে এক্সচেঞ্জ অফার রয়েছে।

খবরের কাগজ: এসির বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে কী ভাবছে আপনার প্রতিষ্ঠান? রপ্তানির পরিকল্পনা আছে কি না?
হুমায়ুন কবীর: আমরা এখনো এসি রপ্তানি শুরু করিনি। শিগগিরই মিনিস্টার ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক বাজারে পা রাখতে যাচ্ছে। পৃথিবীব্যাপী এসির চাহিদা বাড়ছে সে অনুযায়ী এসির বাজার এর আকৃতিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে কারণে আমরা উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত বিশ্বমানের এসি উৎপাদন করছি। আশা করছি, দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করে অচিরেই দেশের বাইরে ফ্রিজ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম হব। 

খবরের কাগজ: বছরের কোন সময়টায় এসি/ফ্রিজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে? আপনারা বিক্রি বাড়াতে কী ধরনের অফার দিচ্ছেন? এবারের ঈদে আপনাদের কত ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্য রয়েছে? এসি ব্যবহারে বড় প্রশ্ন বিদ্যুৎ খরচ। কম বিদ্যুৎ খরচের ক্ষেত্রে আপনাদের এসিগুলোর প্রযুক্তি কতখানি এগিয়ে?
হুমায়ুন কবীর: আমাদের দেশে সব সময় এসি এবং ফ্রিজের চাহিদা থাকে তবে গ্রীষ্মকালে এগুলোর চাহিদা তুলনামূলক বেশি বৃদ্ধি পায়। আমরা ক্রেতাদের জন্য সবসময় আকর্ষণীয় অফার প্রদান করি। বর্তমানে আমাদের মিনিস্টার কোটিপতি অফার চলছে। এই অফারে মিনিস্টার এসি, ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিন এবং ওভেন ক্রয় করলে পাচ্ছে স্ক্র্যাচ কার্ড। আর কার্ড ঘষে কোটিপতি কিংবা লাখপতি হওয়ার সুযোগ, একটির সঙ্গে আর একটি ফ্রিসহ নিশ্চিত উপহার। এ ছাড়া বিটুবি, মেম্বারশিপ কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের কার্ড, এসি এক্সচেঞ্জ অফারসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার চলমান আছে। এবারের ঈদ উপলক্ষে আমাদের প্রায় ৫০ হাজার ইউনিট এসি এবং ১ লাখ ৫০ হাজার ইউনিট ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। মিনিস্টার এসিতে ডুয়েল স্মার্ট ইনভার্টার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এটির কারণে বিদ্যুৎ খরচ ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয় হয়।