আমদানি-রপ্তানি ও ট্রানজিট বাণিজ্য সহজ করতে দেশের সব কাস্টম হাউস, দুটি বিমানবন্দর ও কয়েকটি শুল্ক স্টেশনে গঠন করা হয়েছে ‘সীমান্ত বাণিজ্য সমন্বয় কমিটি’। স্বল্প সময়ে পণ্য খালাস, বাণিজ্য ব্যয় কমানো ও প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পিছিয়ে পড়া ঠেকাতে এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এনবিআর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, চট্টগ্রাম, ঢাকা, মোংলা, বেনাপোল, কমলাপুর ও পানগাঁও কাস্টম হাউসে এই সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া সাতক্ষীরার ভোমরা, চুয়াডাঙ্গার দর্শনা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ, দিনাজপুরের হিলি, পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা, লালমনিরহাটের বুড়িমারী, সিলেটের তামাবিল ও শেওলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া ও কক্সবাজার টেকনাফ স্থল শুল্ক স্টেশনেও কমিটি করা হয়েছে। একই সঙ্গে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শুল্ক স্টেশন ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শুল্ক স্টেশনেও কমিটি হয়েছে।
সীমান্ত বাণিজ্য সমন্বয় কমিটিতে কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনের কমিশনারকে আহ্বায়ক ও উপকমিশনারকে সদস্যসচিব করে এসব কমিটি গঠন করা হয়েছে। ২৪ সদস্যের কমিটিতে আরও রয়েছেন ২২টি সংস্থার প্রতিনিধি। এর মধ্যে বন্দর কর্তৃপক্ষ বা সিভিল এভিয়েশন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, নৌবাহিনী, ইমিগ্রেশন বিভাগ, বিমান বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, পরমাণু শক্তি কমিশন, বিস্ফোরক অধিদপ্তর ও বিএসটিআইয়ের প্রতিনিধি।
এ কমিটি সংশ্লিষ্ট কাস্টম হাউস, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, স্থল শুল্ক স্টেশনের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি ও ট্রানজিট বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানে বিদ্যমান আইন ও বিধান অনুযায়ী উদ্যোগ নেবে। প্রতি তিন মাসে ন্যূনতম একটি সভা ডেকে মতামতের আলোকে বাণিজ্যসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের প্রস্তাব সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবে। বাণিজ্য সহজ করতে সুপারিশ করবে ও অন্যান্য কার্য সম্পাদন করবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জানিয়েছে, ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউসিও) তত্ত্বাবধানে এনবিআর ২০২২ সালে টাইম রিলিজ স্টাডি বা সমীক্ষা করে। এতে দেখা যায়, এনবিআরের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ ও দ্রুততম সময়ে কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্নের পরও কোনো কোনো পণ্য চালান খালাসে দীর্ঘ সময় ব্যয় হচ্ছে। এতে ব্যবসার খরচ বেড়ে যাচ্ছে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ছে। সেই সমীক্ষায় দেখা গেছে, পণ্য চালান আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা যেমন কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ, উদ্ভিদ ও প্রাণী সঙ্গনিরোধ দপ্তর, ব্যাংক, বিএসটিআই, বিজিবি, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, শিপিং এজেন্ট, স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের মধ্যে যোগাযোগ ও সমন্বয় করা গেলে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া আরও দ্রুততর করা সম্ভব হবে।