বিশ্ববাজারে মালয়েশিয়ান পাম অয়েলের দাম কমেছে। প্রতিদ্বন্দ্বী সয়াবিন তেলের বেচাকেনা ভালো হওয়ায় গতকাল সোমবার পাম অয়েলের ভবিষ্যৎ সরবরাহ (ফিউচার) চুক্তিমূল্য কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে মালয়েশিয়ান পাম অয়েল বোর্ডের উৎপাদন ও মজুতের তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন ব্যবসায়ীরা। কারণ, এই তথ্যের ওপর নির্ভর করে বাজারের ভবিষ্যৎ গতি নির্ধারিত হয়। খবর রয়টার্সের।
ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থাটির খবরে বলা হয়, বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে নভেম্বরে সরবরাহের চুক্তিতে বেঞ্চমার্ক পাম অয়েলের দাম ৩ রিঙ্গিত বা দশমিক ০৮ শতাংশ কমেছে। এর মধ্য দিয়ে বর্তমানে পাম অয়েলের দাম কমে টনপ্রতি ৩ হাজার ৮৯৫ রিঙ্গিতে (৮৯১ ডলার ৭১ সেন্ট) নেমেছে।
উদ্ভিজ্জ তেলের মুম্বাইভিত্তিক ব্রোকারেজ কোম্পানি সানভিন গ্রুপের গবেষণা প্রধান অনিলকুমার বাগানি বলেছেন, শিকাগোতে (শিকাগো বোর্ড অব ট্রেড) সয়াবিন তেল বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় অপরিশোধিত পাম অয়েলের ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিমূল্য কমেছে।
খবরে বলা হয়, মালয়েশিয়ান পাম অয়েল বোর্ড (এমপিওবি) মঙ্গলবার তাদের মাসিক পাম অয়েলের পরিসংখ্যান প্রকাশ করার কথা রয়েছে।
রয়টার্সের একটি জরিপ দেখানো হয়েছে, রপ্তানির চাহিদা কম হওয়ার কারণে মালয়েশিয়ার পাম অয়েলের মজুত আগস্টের শেষনাগাদ ছয় মাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বৈশ্বিক পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান আমস্পেক অ্যাগ্রির মতে, আগস্টের জন্য দেশটির পাম অয়েল রপ্তানির পরিমাণ ১৩ লাখ ৭৬ হাজার ৪১২ টনে দাঁড়াতে পারে।
পাম অয়েলের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া প্রতিযোগিতা ও কৃষকদের আয় বাড়ানোর জন্য রপ্তানি শুল্ক কমানোর পরিকল্পনা করছে।
কারগো সার্ভেয়ার ইন্টারটেক টেস্টিং সার্ভিসের মতে, আগস্ট মাসে মালয়েশিয়ার পাম অয়েল পণ্যের রপ্তানি জুলাইয়ের ১৬ লাখ ৪ হাজার ৫৭৮ টন থেকে কমে ১৪ লাখ ৪৫ হাজার ৪৪২ টন হয়েছে। সে হিসাবে রপ্তানি কমেছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এদিকে সোমবার জ্বালানি তেলের ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিমূল্য প্রায় ১ শতাংশ বেড়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের উপসাগরীয় উপকূলের দিকে একটি সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় এগিয়ে যাওয়ায় জ্বালানি তেলের দাম আগের সপ্তাহের বড় ধরনের ক্ষতি থেকে কিছুটা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিমূল্য পাম অয়েলকে বায়োডিজেল কাঁচামাল হিসেবে আরও আকর্ষণীয় বিকল্প করে তোলে।
রয়টার্সের প্রযুক্তিগত বিশ্লেষক ওয়াং তাও বলেছেন, পাম অয়েলের দাম টনপ্রতি সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৮৬ রিঙ্গিতের স্তরে উঠতে পারে। এর বিপরীতে দাম কমলে সর্বনিম্ন ৩ হাজার ৮৫৬ রিঙ্গিত পর্যন্ত নামার রেকর্ড হতে পারে।
রয়টার্স জানায়, গতকাল বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজার চার সপ্তাহের সর্বনিম্ন স্তরে নেমেছে। এশিয়ার কমে যাওয়া শেয়ারবাজারের চাপের কারণে এই অবস্থা হয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় শেয়ারবাজার বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ বৃহস্পতিবার ইসিবি (ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক) দ্বারা সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি বন্ডের সুদহার বেড়েছে এবং জ্বালানি তেলের দাম গত সপ্তাহে পতনের পর চলতি সপ্তাহে আবার বেড়েছে।