ঢাকা ১ শ্রাবণ ১৪৩২, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
English

ঢাকা চেম্বার সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ পেঁয়াজ আমদানিতে মিসর বিকল্প হতে পারে: রাষ্ট্রদূত

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ পিএম
পেঁয়াজ আমদানিতে মিসর বিকল্প হতে পারে: রাষ্ট্রদূত
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদের সঙ্গে গতকাল বাংলাদেশে নিযুক্ত মিসরের রাষ্ট্রদূত ওমর মহিএদ্দিন আহমেদ ফাহিম সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে পেঁয়াজ আমদানির জন্য মিসর বিকল্প উৎস হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মিসরের রাষ্ট্রদূত ওমর মহি এদ্দিন আহমেদ ফাহমি। গতকাল ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা জানান রাষ্ট্রদূত।
 
রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে ঢাকা চেম্বার সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের হিমায়িত খাদ্য, চিংড়ি এবং সুস্বাদু আম ইউরোপসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি হচ্ছে, যা মিসরেও রপ্তানি করা যেতে পারে। বাংলাদেশ হতে তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়াজাত পণ্য, তৈরি পোশাক, সিরামিক, ঔষধ প্রভৃতি পণ্য বেশি হারে আমদানির জন্য মিসরের উদ্যোক্তাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে বিশেষ করে বাংলাদেশের নদীভিত্তিক পর্যটনশিল্পের উন্নয়নে মিসরের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন আশরাফ আহমেদ।
 
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে মিসরীয় পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অন্যতম প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলে ডিসিসিআই সভাপতি অভিমত ব্যক্ত করেন এবং বাংলাদেশের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলসমূহে একক ও যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য মিসরীয় উদ্যোক্তাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে দুদেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) সেশন আয়োজনের পাশাপাশি দুদেশের বাণিজ্য সংগঠনগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়ন এবং সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন আশরাফ আহমেদ।
 
মিসরের রাষ্ট্রদূত ওমর মহি এদ্দিন আহমেদ ফাহমি বলেন, দুদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি হলেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এখনো আশানুরূপ পর্যায়ে পৌঁছেনি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৮০.৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। মিসর হতে পেট্রোকেমিক্যাল এবং সার আমদানির জন্য বাংলাদেশের প্রতি তিনি উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, মিসরীয় তথ্যপ্রযুক্তিভিক্তিক প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ করেছে এবং ভবিষ্যতে বিভিন্ন খাতে তার দেশের উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। 

রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ঔষধশিল্প খাতে ক্রমাগত উন্নয়ন পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং মিসরের বাজারে ক্যানসারের ওষুধের বেশ চাহিদা রয়েছে, যার সুযোগ বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা গ্রহণ করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, সুয়েজ খাল ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ অধিকাংশ পণ্য ইউরোপসহ সমগ্র পৃথিবীতে রপ্তানি হচ্ছে, তবে মিসরকে ‘ট্রান্সশিপমেন্ট হাব’ হিসেবে ব্যবহারের মাধ্যমে আফ্রিকার বাজারে বাংলাদেশ পণ্য রপ্তানি সম্প্রসারণের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে।

ডিসিসিআইর ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি মালিক তালহা ইসমাইল বারী, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী এবং বাংলাদেশস্থ মিসর দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন সোহেলা মাহরিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ডলারের দাম বাড়ল

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৪৫ এএম
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৪ এএম
বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে ডলারের দাম বাড়ল
প্রতীকী ছবি

সপ্তাহব্যাপী দরপতনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপের এক দিন পরই বেড়েছে ডলারের দাম। দাম বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা। দাম বাড়ার পরও মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বাজার থেকে ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বোচ্চ ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৩টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যদিও নিলামে ২২টি ব্যাংক অংশগ্রহণ করেছিল। এর আগে গত রবিবার প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে নিলামে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকটি। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, দেশের মুদ্রাবাজারে মঙ্গলবার ডলারের সর্বোচ্চ দাম ১২১ টাকা ৫০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ১২০ টাকা ৮০ পয়সা ছিল। আগের দিন সোমবার যা ছিল সর্বোচ্চ ১২০ দশমিক ১০ টাকা ও সর্বনিম্ন ১১৯ দশমিক ৫০ টাকা। গতকাল ডলারের গড় দাম ছিল ১২১ দশমিক ১১ টাকা অর্থাৎ ডলারের বিক্রয়মূল্য বেড়েছে ১ টাকা ৪০ পয়সা।

দেশে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়লেও ডলারের চাহিদা কমেছে। ফলে ডলারের দাম টাকার তুলনায় কমতে শুরু করেছিল। এই পরিস্থিতিতে ডলারের দাম ধরে রাখতে নিলামের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক ডলার কেনার কারণে ডলারের মূল্যহ্রাসের ধারা থেমেছে বলে ধারণা করছেন বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। 

তারা বলছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে অন্যতম লক্ষ্য বললেও কেন বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দর ধরে রাখতে চাইছে তা বোধগম্য নয়। 

এই বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা খবরের কাগজকে বলেন, ‘মুদ্রার বিনিময় হার যেন হুট করে উঠানামা না করে সেই বিষয়টিই বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত নজরদারি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়িত্ব হলো সবদিক ঠিক রাখা। রপ্তানি, রেমিট্যান্স, মূল্যস্ফীতিসহ আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা ঠিক রাখাই বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ। এখন যদি ডলারের দাম হঠাৎ কমিয়ে দিই, রেমিট্যান্স আসা কমে যেতে পারে। আবার রপ্তানিকারকরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

ব্যাংকাররা বলছেন, গত সপ্তাহে ডলারের দাম প্রায় ৩ টাকা কমে যাওয়ার পর নিলামে বেশি দামে ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশি দর দিয়ে ডলার কিনে বাজারে দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দেয়। মঙ্গলবারও একই কাজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। 

এই বিষয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান খবরের কাগজকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে কিছুটা বেশি দরে ডলার কিনে বাজারে একটি ‘ইন্ডিকেটিভ রেট’ দিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ বাজারদর রিয়েল ইফেক্টিভ এক্সচেঞ্জ রেটের (আরইইআর) আশপাশে থাকার কথা। তার প্রভাবেই মঙ্গলবার ডলারের দাম কিছুটা বেড়েছে।” 

তবে ডলারের বাজার নিয়ে এখনই চূড়ান্ত কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আরও কয়েক দিন বাজার পর্যবেক্ষণ করতে হবে।’

পঞ্চগড়ে পুনরায় চালু তৃতীয় চা নিলাম বাজার

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১০:০৫ এএম
পঞ্চগড়ে পুনরায় চালু তৃতীয় চা নিলাম বাজার
ছবি: খবরের কাগজ

পঞ্চগড়ে পুনরায় চালু হয়েছে দেশের তৃতীয় চা নিলাম বাজার। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সকাল থেকে ষষ্ঠ নিলামের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু হয়। স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যান্ড টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ নিলামে চা বিক্রি হয়েছে চাহিদার চেয়ে বেশি দামে।

নিলামে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ দর উঠেছে ২৩০ টাকা। গ্রিন ভ্যালি ব্রোকার হাউস ৩৪ হাজার ৬৬০ কেজি, হিমালয় ব্রোকার হাউস ১ লাখ ১০ হাজার ২২২ কেজি ও ইন্ডিগো ব্রোকার হাউস ২ হাজার ৯৯৪ কেজি চা তোলার জন্য উপস্থাপন করে। নিলাম বন্ধ থাকায় চা শিল্পে স্থবিরতা দেখা দিয়েছিল। গত ৬ মে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নিলাম। দ্বিতীয় নিলাম হয় ২০ মে। এরপর সক্রিয় দুটি ব্রোকার হাউসের অনিয়মের কারণে নিলাম কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়।

তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম নিলাম অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে চা বোর্ডের শুনানিতে ইন্ডিগো ও হিমালয় ব্রোকার হাউসকে আর্থিক জরিমানা করা হয়। তারা ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম করবে না বলে মুচলেকা দেয়। পরে চা বোর্ড তাদের কার্যক্রম পুনরায় চালুর অনুমতি দেয়। নিলাম চালু হওয়ায় খুশি কারখানা মালিক ও ব্যবসায়ীরা। নিলামে বিডারদের অংশগ্রহণ ছিল সক্রিয়। বেশির ভাগ চা বিক্রি হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা কনটেইনার নিলামে উঠবে

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫২ এএম
আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫৭ এএম
চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা কনটেইনার নিলামে উঠবে
চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ইয়ার্ড (ফাইল ছবি)

চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা ১০ হাজার ১২৪ টিইইউএস কনটেইনারের মধ্যে ৪৭৫ টিইইউএস নিলামে তোলা হচ্ছে। যা জমা থাকা কনটেইনারের মাত্র ৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। এরপরও নিলাম শুরু হওয়ায় আশার আলো দেখছেন ব্যবসায়ীরা। অথচ বন্দরের ১৯ শতাংশ জায়গা দখল হয়ে আছে নিলামযোগ্য কনটেইনারে।

জানা যায়, বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ৪৭৫টি পণ্যবাহী কনটেইনার নিলামে তোলার কার্যক্রম শুরু করেছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নির্দেশনায় বন্দরের কনটেইনারজট কমাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, নিলামে গতি ফিরে এলে কনটেইনারে থাকা পণ্যের মান ঠিক থাকা অবস্থায় ক্রেতাদের হাতে পৌঁছাতে পারে। অন্যথায় মান নষ্ট হয়ে গেলে সে পণ্য নিলাম ক্রেতারাও নিতে চান না। এতে সরকার রাজস্ব হারায়।

কাস্টমস ও বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) পর্যন্ত বন্দরে ৪২ হাজার ৯০৬ টিইইউএস কনটেইনার ছিল, যার মধ্যে ১০ হাজার ১২৪ টিইইউএস নিলামযোগ্য কনটেইনার দীর্ঘদিন ধরে বন্দর ইয়ার্ডে পড়ে আছে। সেগুলো খালাস না হওয়ায় নতুন কনটেইনার রাখার জায়গার সংকট দেখা দেয়।

কাস্টস হাউস সূত্র মতে, ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে যেসব পণ্য আমদানি হলেও খালাস হয়নি- সেগুলো ‘পরিত্যক্ত’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এসব কনটেইনারের সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার টিইইউএস। এনবিআরের নির্দেশনায় এসব কনটেইনার দ্রুত নিষ্পত্তির তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
 এর জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের অতিরিক্ত কমিশনার মো. তফছির উদ্দিন ভূঁইয়াকে প্রধান করে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আমদানি-রপ্তানির গতি ফেরাতে নিলাম কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এনবিআরের নিদের্শনায় প্রথম ধাপে ৪৭৫টি কনটেইনার নিলামে তোলা হচ্ছে। কনটেইনার পণ্য ধ্বংসের জন্যও প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব এ কাজ এগিয়ে নেওয়া হবে।’

কাস্টম হাউসের নিলাম শাখা জানিয়েছে, ১৫ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই দুপুর ২টা পর্যন্ত ই-অকশন কার্যক্রম চলবে। এবার চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে থাকা অখালাসকৃত, আটককৃত ও বাজেয়াপ্ত বিভিন্ন মালামাল যেখানে যে অবস্থায় আছে সে অবস্থায় নিলামে বিক্রির জন্য ই-অকশন দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহী নিলাম ক্রেতারা চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে নিলামে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। 

এদিকে বিডাররা সরেজমিনে পণ্য দেখার জন্য লটভুক্ত মালামাল ১৬ জুলাই সকাল থেকে ২২ জুলাই বিকাল ৪টা পর্যন্ত দেখতে পারবেন। ২৭ জুলাই সংশোধনী তালিকা প্রকাশ করা হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার মোহাম্মদ সাবিক হোসেন খবরের কাগজকে বলেন, ‘২০২৩ সালের আগের পড়ে থাকা কনটেইনারগুলো নিলামে তোলা হচ্ছে। যদিও এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। পণ্য চালান ধ্বংসেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এবার নিলামে তোলা কনটেইনারের মধ্যে রয়েছে তৈরি পোশাক, টাইলস, মেশিনারি পণ্য। নিয়ম মেনে কাস্টম হাউসের এ নিলামে যে কেউ অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এখানে লটের মূল্যের ৬০ শতাংশ পূরণ হওয়ার বিধিবিধান থাকছে না। সর্বোচ্চ দরদাতাকে দিয়ে দেওয়া হবে।’

জানা গেছে, বন্দরে ২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ের নিলামযোগ্য ৯ হাজার ৬৪৪টি কনটেইনার রয়েছে। পণ্যের পরিমাণ প্রায় দুই লাখ টন। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নিলামযোগ্য কনটেইনার ছিল ৯ হাজার ৭৮৬ টিইইউএস। বর্তমানের ২০২৫ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত নিলামযোগ্য কনটেইনারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ১২৪ টিইইউএস। যার আর্থিক মূল্য প্রায় চার হাজার কোটি টাকা। অথচ সঠিক সময়ে নিলাম করা গেলে ওই পরিমাণ পণ্যের টাকা সরকার রাজস্ব পেত। নিলামযোগ্য কনটেইনারের কারণে চট্টগ্রাম বন্দরের ১৫০ কোটি টাকা বকেয়া ভাড়া আটকে রয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘নিলাম কনটেইনার সরানোর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বারবার তাগাদা দিয়ে আসছে। এগুলোর কারণে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অথচ নিলামের কনটেইনারগুলো নিষ্পত্তি করা হলে ইয়ার্ডে নতুন কনটেইনার রাখা যেত।’

বিমা খাতে সিইও নিয়োগে সংশোধন হচ্ছে বিধান

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৪ এএম
বিমা খাতে সিইও নিয়োগে সংশোধন হচ্ছে বিধান
খবরের কাগজ ইনফোগ্রাফি

দেশে ব্যবসারত বিমা কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ জটিলতা তৈরি হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) প্রবিধানমালা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হতে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরের (এনএসআই) এক চিঠির জবাবে এমনটিই জানিয়েছে আইডিআরএ। 

আইডিআরএ নিবন্ধন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক মো. নূরুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হতে যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল সেখানে তিনটি জীবন বিমা কোম্পানি ও ২টি নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সিইও নিয়োগে জটিলতার বিষয়ে বলা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে মোট ১৯টি কোম্পানি বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। 

গত ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় হতে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (এফআইডি) সচিব নাজমা মোবারেকের কাছে একটি চিঠি প্রেরণ করা হয়। যা আইডিআরএ-তেও পাঠানো হয়। চিঠিতে পাঁচ বিমা কোম্পানি আইন ভেঙে সিইওর চলতি দায়িত্ব পালন করছে উল্লেখ করে আইডিআরএ কর্তৃক পদক্ষেপ না নেওয়ার বিষয়ে রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এই প্রতিবেদনের পরামর্শের আলোকে আইডিআরএ পরবর্তী সময়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছে তাও জানাতে বলা হয়।

এর পরিপ্রেক্ষিতে চিঠির জবাবে আইডিআরএ জানিয়েছে, বিদ্যমান বিমা কোম্পানি (মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ) প্রবিধানমালা, ২০১২ তে কোম্পানিগুলোতে সিইও নিয়োগের জন্য যে যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে তা পরিপালন করে প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে এ সমস্যা সমাধানে প্রবিধানমালা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা ইতোমধ্যে খসড়া প্রস্তুত আকারে মতামতের জন্য আইডিআরএ ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। 

এক্ষেত্রে নিয়ম ভঙ্গ করে ভারপ্রাপ্ত সিইওর মাধ্যমে যেসব কোম্পানি পরিচালিত হচ্ছে সেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো, জরিমানা আরোপ ও রিট মামলা পরিচালনা করা হচ্ছে চিঠির জবাবে উল্লেখ করেছে আইডিআরএ। 

কোম্পানিগুলোত সিইও নিয়োগের জটিলতা নিরসনে গত ১০ জুলাই বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সঙ্গে একটি মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সংস্থাটির চেয়ারম্যানও স্বীকার করেছেন কোম্পানিগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে বিমা খাতে সিইও সংকট তৈরি করে রেখেছেন।
প্রবিধানমালা সংশোধানের বিষয়ে আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. এম আসলাম আলম সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, কোম্পানিগুলো ইচ্ছা করে নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে সিইও নিয়োগের জন্য এ সেক্টেরে সিইও সংকট তৈরি করে রাখেন। আইন অনুযায়ী, বিমা কোম্পানির সিইও হতে হলে এর পূর্ববতী নিম্ন পদে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কিন্তু কোম্পানিগুলো ইচ্ছা করেই নিম্নপদে কাউকে নিয়োগ প্রদান করেন না। ফলে সিইও সংকট থাকায় কোম্পানিগুলো ভারপ্রাপ্ত সিইও এর মাধ্যমে পরিচালনা করে আসছে।

তিনি আরও বলেন, ‘বিমা খাতের সিইও সমস্যা সমাধানে সংশোধিত প্রবিধানমালায় বলা হয়েছে বিমা কোম্পানিতে ১২ বছরের অভিজ্ঞতা আর এএমডি হিসেবে এক বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে সিইও হিসেবে আবেদন করা যাবে। এ ছাড়া কারও বিমা কোম্পানিতে তিন বছরের ডিএমডিসহ ১ বছর সদর দপ্তরে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকলেও তিনি সিইও হতে পারবেন। তবে তার বিমা কোম্পানিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা লাগবে ১২ বছর। ১৫ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতাসহ তিন বছরের ডিএমডি ও এক বছরের এএমডি থাকলেও বিমা কোম্পানির সিইও হিসেবে আবেদন করা যাবে।’ 

চলতি বছরের ৭ মার্চ আইডিআরএ এক চিঠিতে জানিয়েছে, কোনো বিমা কোম্পানিতে ‘মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব)’ হিসেবে কাউকে নিয়োগ করা যাবে না। কোনো কোম্পানিতে ‘মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব)’ পদবি কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার নিয়োগ প্রস্তাব আইডিআরএর অনুমোদন না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট বিধান অনুসরণ করে একজন অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালককে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া যাবে।

আইডিআরএ পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সোনালী লাইফ কোম্পানিটিতে ২০২৪ সালের ২১ এপ্রিল প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু কোম্পানির মাধ্যমে প্রশাসক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আদালতে ১১টি রিট মামলা করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি প্রশাসকের পদত্যাগ গৃহীত হলে কোম্পানিটিকে সিইও নিয়োগের জন্য আইডিআরএ থেকে তাগিদ দেওয়া হয়। গত ২৫ মে কোম্পানিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিইও নিয়োগ চার মাস সময় প্রদানের আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোম্পানিটি শেখ আব্দুল রশিদকে সিইও হিসাবে নিয়োগের জন্য আইডিআরএতে আবেদন করেছে। আইডিআরএ পক্ষ থেকে কোম্পানির হালনাগাদ চেক লিস্ট অনুযায়ী পুনঃনিয়োগ প্রস্তাব দাখিলের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। 
কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোম্পানির সিইও পদ ছয় মাসের বেশি সময় শূন্য থাকায় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এরপর মোশাররফ হোসেনকে সিইও নিয়োগের আবেদন করলে আইডিআরএ থেকে তার অব্যবহিত নিম্নপদে থাকার প্রত্যয়পত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। যা এখনো প্রক্রিয়াধীন। 

রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সে মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ না হওয়ায় এখন পর্যন্ত কোম্পানিটিকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তারপরও কোম্পানিটিতে এখনো সিইও নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়নি। সর্বশেষ গত ২৫ মে কোম্পাটির প্রস্তাবিত সিইওর বিষয়ে আইডিআরএর কাছে রিভিউ আবেদন করে এবং ১৭ জুন আইডিআরএ- কোম্পানির নতুন চেকলিস্ট অনুযায়ী পুনরায় আবেদনের জন্য জানিয়েছে। 

এ বিষয়ে আইডিআরএর মুখপাত্র সাইফুন্নাহার সুমি খবরের কাগজকে বলেন, ‘বিমা কোম্পানিতে সিইও নিয়োগের প্রবিধানমালা সংশোধনে ইতোমধ্যে এ খাতসংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইডিআরএ- এ বিষয়ে খুবই সচেতন।’

কাতার থেকে আনা হবে এক কার্গো এলএনজি

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ০৯:৩৩ এএম
কাতার থেকে আনা হবে এক কার্গো এলএনজি
ছবি: সংগৃহীত

দেশের জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আগস্ট মাসের জন্য এক কার্গো এলএনজি আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কাতার থেকে এই এলএনজি আনতে ব্যয় হবে ৫৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০৬ টাকা।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮’ অনুসরণে আন্তর্জাতিক কোটেশন প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির প্রত্যাশাগত অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি কমিটি।

জানা গেছে, পেট্রোবাংলা কর্তৃক এক কার্গো এলএনজি সরবরাহের জন্য মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী চুক্তিবদ্ধ ২৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপ্রস্তাব দাখিল করে। দাখিল করা তিনটি প্রস্তাবই কারিগরি ও আর্থিকভাবে রেসপনসিভ হয়।

দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান কাতার এনার্জি ট্রেডিং এলএলসি, কাতার থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ ১৩ দশমিক ২৪ মার্কিন ডলার হিসেবে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৫৫৬ কোটি ৭৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০৬ টাকা।