ঢাকা ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪

পাটখড়িতে কৃষকের বাড়তি লাভ

প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৮ এএম
পাটখড়িতে কৃষকের বাড়তি লাভ
যশোরের শার্শা উপজেলায় পাটখড়ি শুকানো হচ্ছে। খবরের কাগজ

যশোরের চাষিরা বর্তমানে সোনালি ফসল পাট নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে পাট ঘরে তোলার কাজে নেমেছেন কৃষকরা। বসে নেই কৃষাণীরাও। বিশেষ করে পাটখড়ি নিয়ে বেশি ব্যস্ত কৃষাণীরা। তারা এ কাজে কোমর বেঁধে নেমেছেন। পাটখড়ির দাম ভালো পাওয়ায় কৃষাণীরা বেজায় খুশি। তারা বাড়তি লাভ দেখছেন পাটখড়িতে।

কৃষি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাটখড়ি আজও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয় গ্রাম-বাংলার দরিদ্র মানুষদের কাছে। এ জ্বালানি বারো মাস ব্যবহার করা হয়, বিশেষ করে বর্ষাকালে এর বেশি ব্যবহার হয়। পাটখড়ি জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও পার্টিক্যাল বোর্ড ও পাটখড়ি পুড়িয়ে তার ছাই কম্পিউটারের কালি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। ফলে পাটের পাশাপাশি পাটখড়ির দামও এবার ভালো। এতে কৃষকরা পাটখড়ি বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।

সূত্র আরও জানায়, যশোর জেলার মধ্যে শার্শা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয়েছে। এখানে তোষা, দেশি, মেছতা, কেনাফ জাতের পাট চাষ করা হয়। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৫ হাজার ৪৬৫ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে ৫ হেক্টর বেশি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে শার্শা উপজেলায় ৫ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ করা হয়েছিল।

এ উপজেলার কৃষকরা জানান, এবারে সোনালি আঁশ পাটের ভালো ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে পাট ধোয়ার পাশাপাশি নতুন পাট হাট-বাজারে বিক্রি শুরু হয়েছে। পাটের সঙ্গে এ মৌসুমে পাটখড়ির বেশ কদর বেড়েছে। পাটচাষিদের বাড়ি থেকে পাটখড়ি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বাজারে ব্যাপক চাহিদা ও দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা খুশি। পাটখড়ি শুকানোর কাজ করছেন কৃষাণীরা।

শার্শা উপজেলার শ্যামলাগাছি গ্রামের পাটচাষি জাহান আলী জানান, এবার তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। ইতোমধ্যে কিছু পাট বাজারে তুলেছেন। সব জমির পাট থেকে যে পাটখড়ি পাবেন তা ভালোভাবে শুকিয়ে বিক্রি করতে পারলে ২০-২৫ হাজার টাকা বাড়তি আয় হবে তার।

একই উপজেলার লক্ষণপুরের মান্দারতলা গ্রামের কৃষক আলী আজগর বলেন, ‘এবার পাটের দামও ভালো। পাশাপাশি প্রতি আঁটি পাটখড়ি আকারভেদে ১০ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছি। আর পাইকারি ১০০ আঁটি পাটখড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকরা জ্বালানির চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি অর্থ ঘরে তুলতে পারছেন। গত বছরের চেয়ে এবার পাটখড়ি দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে।’

যশোর সদরের চাঁচড়া গ্রামের রূপদিয়া গ্রামের কৃষক আদিত্য বিশ্বাস জানান, এবার আড়াই বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। তিনি বিঘাপ্রতি ৮-১০ মণ পেয়েছেন। পাটখড়িতে লাভ বেশি।

আরেক কৃষক সঞ্জয় সরকার জানান, তিনি দুই বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছেন। ফলন ভালো হয়েছে। এরই মধ্যে পাট বিক্রি করেছেন। পাটখড়ি ভালো দামে বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন।

যশোরের পাটখড়ি ব্যবসায়ী নুর ইসলাম ও করিম গাজী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের বাড়ি থেকে পাটখড়ি কিনে শহরে বিক্রি করি। এ পাটখড়ির গ্রামাঞ্চলসহ শহরে বেশ চাহিদা রয়েছে। পাটখড়ি দিয়ে বাড়িঘরের বেড়া, সবজি খেতের বেড়া, মাচায় ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তা ছাড়া অনেক কৃষক পাটখড়ি পুড়িয়ে সার হিসেবে ছাই ব্যবহার করেন ফসলি মাঠে।’

শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, ‘ইতোমধ্যে পাট বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি মণ পাট জাতভেদে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাটের পাশাপাশি পাটখড়ি বিক্রি করেও বাড়তি উপার্জন করছেন কৃষকরা।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর জেলার কর্মকর্তা ড. সুশান্ত কুমার তরফদার জানান, ‘যশোরে এবার লক্ষ্যমাত্রারও বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আট উপজেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৫ হাজার ৩০০ হেক্টর। এ ক্ষেত্রে মোট ২৬ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে পাটের চাষাবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে পাটের আবাদ হয়েছিল ২৩ হাজার ৫৬৫ হেক্টর। লাভজনক হয়ে ওঠায় যশোরে পাটের চাষাবাদ ও উৎপাদন ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।’

মূল্যস্ফীতিতে রাজনীতির প্রভাব রয়েছে : পরিকল্পনা উপদেষ্টা

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৫ পিএম
মূল্যস্ফীতিতে রাজনীতির প্রভাব রয়েছে : পরিকল্পনা উপদেষ্টা
পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ

মূল্যস্ফীতিতে রাজনীতির প্রভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘তাই এটার দিকে আমি তাকাই না। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সক্ষমতার অভাব রয়েছে। তারা যে তথ্য দেবে দিক। আমি তাতে হাত দেব না। তারা স্বাধীন। আমি প্রভাব ফেলব না।’ 

সোমবার (৭ অক্টোবর) একনেক সভা শেষে শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা। তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

সভায় ২৪ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে বিদেশি ঋণ হচ্ছে ১৬ হাজার ১২ কোটি টাকা। বাকি অর্থ সরকার খরচ করবে। 

এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) রাজনৈতিক প্রকল্প রয়েছে। সেগুলোর তালিকা করা হচ্ছে। বিশেষ রাজনৈতিক প্রকল্প যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। তা সংশোধন করতে হচ্ছে। এ কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। উন্নয়ন বাজেট তথা এডিপির আকারও ছোট করা হবে।’

জাহাঙ্গীর আলম/সালমান/

বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়লেও কমেছে সূচক

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়লেও কমেছে সূচক

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রবিবার (৬ অক্টোবর) লেনদেনকৃত বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। তবে এদিন বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়লেও কমেছে সূচক। তবে গত দিনের তুলনায় বেড়েছে লেনদেন। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রমতে, এদিন ডিএসইর লেনদেন শেষে প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ৮৩ দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৩৭৮ পয়েন্টে।

অন্য সূচকগুলোর মাঝে, শরিয়াহ্‌ সূচক ‘ডিএসইএস’ ৩০ দশমিক ৪১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯০ পয়েন্টে আর ‘ডিএস৩০’ ২৬ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে।

এদিন ডিএসইতে মোট ৩৬৮ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। গত কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার। সে তুলনায় আজকে লেনদেনের পরিমাণ ২৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেড়েছে।

রবিবার লেনদেন হওয়া ৩৯২টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮০টির, কমেছে ১৫৬টির অন্যদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬টি কোম্পানির বাজারদর।

রবিবার ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।

রবিবার ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির ২৫ কোটি ৫৮ লাখ ৯৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। তাতে লেনদেনের শীর্ষে জায়গা নিয়েছে কোম্পানিটি।

লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা মিডল্যান্ড ব্যাংক পিএলিসি কোম্পানি ১৪ কোটি ৯৩ লাখ ৪২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর ১২ কোটি ৩৩ লাখ ৭০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করায় তালিকার তৃতীয় স্থান নিয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি।

এদিন লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলো হলো সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, টেকনো ড্রাগস লিমিটেড, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেড, গ্রামীণফোন লিমিটেড, দ্য ইবনে সিনা ফার্মাসিটেক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি, অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেড, এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসি।

রবিবার ডিএসইতে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে ফু ওয়াং সিরামিকস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।

এদিন ডিএসইতে ফু ওয়াং সিরামিকস লিমিটেডের শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় ১ টাকা ২০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেড়েছে।

মূল্যবৃদ্ধির দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ফু ওয়াং ফুড লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ারদর ১ টাকা ২০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় তৃতীয় স্থানে থাকা ডেইরি অ্যান্ড ফুড প্রডাক্টস লিমিটেডের শেয়ারদর বেড়েছে ২ টাকা ২০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

গতকাল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসা অপর কোম্পানিগুলো হচ্ছে দেশবন্ধু পলিমার লিমিটেড, এস আলম কোল্ড রয়েল স্টিলস লিমিটেড, নাভানা ফার্মাসিটিক্যালস পিএলসি, মেট্রো স্পিনিং লিমিটেড, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড, সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলস লিমিটেড, মাইডাস ফাইন্যান্সিং পিএলসি।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দরপতনের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি।

এদিন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের তুলনায় কমেছে ৬ টাকা ১০ পয়সা বা ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। তাতে দরপতনের শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছে কোম্পানিটি।

এদিকে দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা মার্কেন্টাইল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স পিএলসির শেয়ারদর আগের দিনের তুলনায় ৪ টাকা ৪০ পয়সা বা ৯ দশমিক ১২ শতাংশ কমেছে। আর শেয়ারদর ৯ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ কমে যাওয়ায় তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।

এদিন দরপতনের তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো হলো খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেড, দুলামিয়া কটন স্পিনিং মিলস লিমিটেড, ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড, ডিবিএটইচ ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড।

গতকাল অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১০৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১৬৭ পয়েন্টে।

এদিন সিএসইতে ২০১টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০০টির দর বেড়েছে, কমেছে ৮১টির এবং ২০টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
গতকাল সিএসইতে ৯ কোটি ৬৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

সৌদি আরবের রিজার্ভ ১০ শতাংশ বেড়েছে

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩২ এএম
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩২ এএম
সৌদি আরবের রিজার্ভ ১০ শতাংশ বেড়েছে
সৌদি আরব কিং আব্দুল আজিজ সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে আল-ওয়েনাহ গবেষণা কেন্দ্রের সোলার প্যানেল। ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরবের সরকারি রিজার্ভ অ্যাসেট (বিনিয়োগ করা রিজার্ভ) চলতি বছরের আগস্ট মাসে ১ দশমিক ৭৬ ট্রিলিয়ন সৌদি রিয়ালে (৪৬৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার) পৌঁছেছে, যা গত ২১ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেই সঙ্গে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় রিজার্ভ বেড়েছে ১০ শতাংশ। সৌদির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে এই তথ্য জানানো হয়েছে। খবর আরব নিউজের

এসএএমএ (সৌদি অ্যারাবিয়ান মনিটারি অথোরিটি) নামে পরিচিত সৌদি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশ করা সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এই অ্যাসেটের মধ্যে স্বর্ণ, বিশেষ আহরণ অধিকার বা এসডিআর (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের সৃষ্ট একটি আন্তর্জাতিক মুদ্রামান), আইএমএফে সৌদি আরবের অংশীদারত্বের মূল্য (আইএমএফ রিজার্ভ পজিশন) ও বৈদেশিক রিজার্ভ রয়েছে। মোট রিজার্ভের মধ্যে বিদেশি মুদ্রা, আমানত ও বৈদেশিক সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ ছিল ৯৫ শতাংশ, যার পরিমাণ ১ দশমিক ৬৭ ট্রিলিয়ন সৌদি রিয়ালের সমান। এসব খাতের থেকে রিজার্ভ বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। যার প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ৬২ শতাংশ। প্রসঙ্গত, কোনো দেশ আইএমএফ থেকে কত টাকা তুলতে পারে, তার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ হলো আইএমএফ রিজার্ভ পজিশন। এটি মূলত একটি দেশের আইএমএফ-এ থাকা জমা অর্থের মতো।

আগস্ট মাসের পরিসংখ্যানে আরও দেখা গেছে, মোট রিজার্ভের মধ্যে ৫ শতাংশ বা ৭৯ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল ছিল বিশেষ আহরণ অধিকার থেকে। আগস্ট মাসে এটি ২ শতাংশ বেড়েছে।

খবরে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী করার জন্য এসডিআর নামে একটি বিশেষ ধরনের মুদ্রা সৃষ্টি করে। এই এসডিআরের মূল্য নির্ধারিত হয় বিশ্বের কয়েকটি প্রধান মুদ্রা, যেমন- মার্কিন ডলার, ইউরো, চীনা ইউয়ান, জাপানি ইয়েন ও ব্রিটিশ পাউন্ডের ওপর ভিত্তি করে। এই মুদ্রাগুলোকে একসঙ্গে মুদ্রার বাস্কেট বলা হয়। এই বাস্কেটের মূল্যের ওঠানামার ওপর ভিত্তি করে এসডিআরের মূল্যও পরিবর্তিত হয়। প্রয়োজন হলে এগুলো সরকারগুলোর মধ্যে স্বাধীনভাবে ব্যবহারযোগ্য মুদ্রা হিসেবে বিনিময় করা যেতে পারে।

এসডিআরগুলো প্রয়োজনের সময় অতিরিক্ত তারল্য সহায়তা দিতে পারে, বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখে, হিসাবের একক হিসাবে কাজ করে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা সহজতর করে।

সৌদি আরবের আইএমএফ রিজার্ভ পজিশন ছিল প্রায় ১৩ বিলিয়ন সৌদি রিয়াল। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে তা ৯ শতাংশ কমেছে। রিজার্ভ পজিশন মূলত, একটি দেশ শর্ত ছাড়া আইএমএফ থেকে যে পরিমাণ ঋণ নিতে পারে তার পরিমাণ।

বৈদেশিক মুদ্রাসহ সৌদি আরবের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ। আন্তর্জাতিক ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ফিচ রেটিংস অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সৌদির রিজার্ভ কভারেজ অনুপাত ছিল সাড়ে ১৬ মাসের বর্তমান বৈদেশিক ব্যয় মেটানোর সমান। অর্থাৎ তারা তাদের আগামী সাড়ে ১৬ মাসের সব লেনদেনের বৈদেশিক পরিশোধ এই রিজার্ভ থেকে করতে পারত।

এই উচ্চ অনুপাতটি রাজ্যের দীর্ঘ সময়ের জন্য তার বৈদেশিক আর্থিক দায়বদ্ধতা পূরণ করার সক্ষমতার প্রমাণ। এটি নিশ্চিত করে যে, দেশটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখেও স্থিতিশীল থাকবে। এটি একই সঙ্গে একটি আর্থিক নিরাপত্তা বেষ্টনী (ফিন্যান্সিয়াল বাফার) হিসেবে কাজ করে, যা জ্বালানি তেলের দামের ওঠানামা, ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বা বিশ্ববাজারের গতিপ্রকৃতির পরিবর্তনগুলোর মতো বহিঃস্থ চাপ সামলাতে সক্ষম করে। সেই সঙ্গে এটি সৌদি আরবের অর্থনীতিতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ তা সরকারের দায়বদ্ধতা পূরণ করার ক্ষমতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ইঙ্গিত দেয়।

সৌদি আরব তাদের ভিশন ২০৩০ কাঠামোর অংশ হিসেবে একটি রূপান্তরশীল ও প্রসারমূলক কৌশলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার মধ্য দিয়ে দেশটি তাদের অর্থনীতিকে জ্বালানি তেলের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমিয়ে বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে পর্যটন, প্রযুক্তি, অবকাঠামো ও নবানযোগ্য জ্বালানির মতো খাতগুলো সৌদি আরবের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য মূল্য লক্ষ্য হিসেবে নেওয়া হয়েছে এবং দেশটির লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ পূরণ করার জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ।

এসব উচ্চাভিলাষী উদ্যোগের ফলে সরকারি ব্যয় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে এবং পূর্বাভাস অনুযায়ী, যখন ব্যয় বাড়তে শুরু করবে তখন তথা মধ্যবর্তী সময়ে বাজেট ঘাটতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এই ব্যয়-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও সৌদি আরব একটি শক্তিশালী আর্থিক অবস্থানে রয়েছে। রাজ্যের অনুকূল সরকারি ও ঋণ রেটিং, সেই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের কারণে দেশটির অর্থনীতি বড় হচ্ছে। এসব কারণে এমন ব্যয় ও সম্ভাব্য ঘাটতি কার্যকরভাবে পরিচালনা করার সুযোগ পাবে দেশটি।

বেনাপোল বন্দর সাত চালানে ৪১১ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৫ এএম
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৬ এএম
সাত চালানে ৪১১ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ইলিশ রপ্তানি করা হয়। খবরের কাগজ

নানা সমালোচনার মধ্যেই ভারতে রপ্তানি হচ্ছে দেশের রূপালি ইলিশ। গত ২৬ সেপ্টেম্বর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম ইলিশের চালান যায়।

রবিবার (৬ অক্টোবর) পর্যন্ত এই বন্দর দিয়ে ৭টি চালানে মোট ৪১১ টন ৩০০ কেজি ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে।

যার প্রতি কেজি মাছের রপ্তানি মূল্য পড়ছে ১০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ২০০ টাকা। ২৪ সেপ্টেম্বর ৪৯ জন রপ্তানিকারককে ২ হাজার ৪২০টন ইলিশ রপ্তানিতে ছাড়পত্র দেয় বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে ৪৮ জনকে ৫০ টন করে ও একজনকে ২০ টন মাছ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়। এই অনুমতির মেয়াদ আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত।

দুর্গাপূজা উৎসব উপলক্ষে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ২০১২ সাল থেকে ভারতে পদ্মার ইলিশ রপ্তানি করা হয়। আগের সরকারগুলো একে বলত, ‘উপহারের ইলিশ’। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতে ইলিশ না পাঠানো নিয়ে কঠোর মনোভাবের কথা জানায়। পরে অবশ্য অবস্থান পরিবর্তন করে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করছে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) রাশেদুল সজিব নাজির জানান, বেনাপোল বন্দর দিয়ে ৫ অক্টোবর পযন্ত ১৩১ ট্রাকে ৪১১ টন ৩০০ কেজি ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। সর্বশেষ গত শনিবার ১৩ ট্রাকে করে ৪২ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানি হয়েছে। গতকাল রবিবার মাছ আমদানি বন্ধ রাখে ভারত। এজন্য গতকাল (৬ অক্টোবর) ইলিশ রপ্তানি হয়নি। 

তিনি আরও জানান, ৩ অক্টোবর ৩০ ট্রাকে ৯২ টন, ১ অক্টোবর ২৩ ট্রাকে ৬৯ টন ৬৪০ কেজি, ৩০ সেপ্টেম্বর ৩০ ট্রাকে ৮৯ টন, ২৯ সেপ্টেম্বর ছয় ট্রাকে ১৯ টন, ২৮ সেপ্টেম্বর ১৫ ট্রাকে ৪৫ টন ২০০ কেজি এবং ২৬ সেপ্টেম্বর ২০ ট্রাকে ৫৪ টন ৪৬০ কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। রাশেদুল সজিব নাজির বলেন, রপ্তানিকারকদের আগামী ১২ অক্টোবরের মধ্যে ভারতে ইলিশ রপ্তানি শেষ করতে হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে।

এদিকে কম দামে ভারতে ইলিশ রপ্তানি হওয়ায় ক্ষুব্ধ যশোরের মানুষ। দেশের বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও ভারতে রপ্তানি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এটি কীভাবে সম্ভব তা নিয়ে সর্বত্রই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ইলিশের আহরণ বাড়লেও দেশের বাজারে দাম বেশ চড়া। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে এ মাছের দাম। কেন কম দামে এ মাছ ভারতে রপ্তানি করা হচ্ছে সেটাই সবার প্রশ্ন।
 
যশোর পৌর নাগরিক নেতা জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, ‘ইলিশ মাছ ভারতে রপ্তানি নিয়ে দেশে রীতিমতো রাজনীতি চলে। বিগত দিনে বাংলাদেশ সরকারের একটি রেওয়াজ ছিল, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ মাছ রপ্তানি করা। 

দেশের পদ্মা ও মেঘনা নদীর ইলিশ ছাড়া তাদের এ উৎসবের পূর্ণতা পায় না। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের অন্তর্বর্তী সরকার চলতি মৌসুমে প্রথমে ঘোষণা দিয়েছিল ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হবে না। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২ হাজার ৪২০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানি ও রপ্তানি বিভাগের প্রধান নিয়ন্ত্রক। কম দামে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করায়  সাধাররণ মানুষ ক্ষুব্ধ।’ 

কম দামে ভারতে ইলিশ রপ্তানি বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের বেনাপোল স্থলবন্দরের মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের পরিদর্শক আসওয়াদুল আলম বলেন, ‘ইলিশ রপ্তানির পরিপত্রটি কয়েক বছর আগের। এ কারণে পুরোনো দামেই মাছটি রপ্তানি হচ্ছে।’ আগামীতে ইলিশের দেশীয় বাজার দরের সঙ্গে সংগতি রেখে রপ্তানি মূল্য সমন্বয় হতে পারে বলে তিনি ধারণা করেন।

খাতুনগঞ্জে লাগামছাড়া ভোজ্যতেলের বাজার

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৫৯ এএম
আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৩ এএম
খাতুনগঞ্জে লাগামছাড়া ভোজ্যতেলের বাজার
চট্টগ্রাম-পাহাড়তলী পাইকারি একটি দোকানে টিনের জারে তেল ভরা হচ্ছে। ছবি : মোহাম্মদ হানিফ

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেলের বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে। জুলাই থেকে দাম দফায় দফায় বেড়ে বর্তমানে প্রতি মণ পাম অয়েল ৫ হাজার ৭৩০ টাকা, পামতেল সুপার ৫ হাজার ৬০০ টাকা ও সয়াবিন তেল ৫ হাজার ৯৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দাম বৃদ্ধি ও সরবরাহ সংকটের কারণে এই অস্থিরতা। ব্যবসায়ীদের মতে, আমদানি কম হওয়ায় দাম বাড়ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পরিস্থিতি নজর রাখছে।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, তিন কারণে অস্থির হয়ে পড়েছে ভোজ্যতেলের বাজার। বিশেষ করে পাম অয়েলের দাম বেশি বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে। এ কারণে বুকিং রেটও বেড়ে গেছে। তার ওপর খাতুনগঞ্জে তেলের সরবরাহও কম। এর প্রভাব দেশীয় বাজারে পড়েছে। 

গত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত খাতুনগঞ্জের ভোজ্যতেলের বাজার দর বিশ্লেষণ করেছে খবরের কাগজ। দেখা গেছে, গত জুলাই মাসের শেষদিকে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পাম অয়েল বিক্রি হয় ৪ হাজার ৮০০ টাকায়। গত আগস্ট মাসের শেষদিকে ৩০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ৫ হাজার ১০০ টাকায়। সেপ্টেম্বর মাসে পাম অয়েল বিক্রি হয় ৫ হাজার ৩০০ টাকায়। সপ্তাহখানেক আগেও প্রতি মণ পাম অয়েল ৫ হাজার ১৮৭ টাকায় বিক্রি হয়। বর্তমানে প্রতি মণ পাম অয়েলের দাম ঠেকেছে ৫ হাজার ৭৩০ টাকায়। 

এদিকে গত আগস্ট মাসে প্রতি মণ পামতেল সুপার ৫ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেপ্টেম্বরে ৫ হাজার ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়। সপ্তাহখানেক আগে ৫ হাজার ৪১১ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে প্রতি মণ পামতেল সুপার বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৬০০ টাকায়। 

তা ছাড়া গত জুলাইয়ের শেষদিকে প্রতি মণ সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ৪ হাজার ৯৯৪ টাকায়। দাম বেড়ে সপ্তাহখানেক আগে প্রতি মণ সয়াবিন তেল ৫ হাজার ৭৮৪ টাকায় বিক্রি হয়। বর্তমানে প্রতি মণ সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৯৮০ টাকায়।

বাংলাদেশ বাণিজ্য ও ট্যারিফ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২২ লাখ টন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২৩ লাখ টন আমদানি করা হয়েছে। সেই হিসেবে ১ লাখ টন ভোজ্যতেল বেশি আমদানি হয়েছে। বাজারে তেলের সংকট হওয়ার কথা নয়। 

কিন্তু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের বুকিং রেট বেড়ে গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত প্রতিটন সয়াবিন তেলের বুকিং রেট ছিল ৯৪৯ ডলার। সেপ্টেম্বরে বুকিং রেট বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪০ ডলার। ফলে আমদানিকারকরা সয়াবিন ও পাম তেলে বুকিং করতে নিরুৎসাহিত হয়েছেন। এ কারণে আমদানি ও সরবরাহ কমেছে। তাই বাজারে তেলের দাম বেড়েছে।

খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেলের পাইকারি ব্যবসায়ী মো. কামাল উদ্দিন খবরের কাগজকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের বুকিং রেট বেড়েছে। ফলে আমদানিও কমেছে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলো আমাদের চাহিদামতো সয়াবিন দিতে পারছে না। ফলে সরবরাহও কমে গেছে। তাই দাম বেড়েই চলেছে।

এদিকে গত জুলাই মাসের শেষদিকে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) পরিশোধিত চিনি ৪ হাজার ৯৯৪ টাকায় বিক্রি হয়। আগস্ট মাসের শেষে এসে দাম কমে পণ্যটি মণপ্রতি বিক্রি হয় ৪ হাজার ৩৩০ টাকায়। একমাসের ব্যবধানে প্রতি মণ চিনিতে ২১০ টাকা বেড়ে ৪ হাজার ৫৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন খবরের কাগজকে বলেন, বর্তমানে ডিম, আলু, চাল, ভোজ্যতেল, পেঁয়াজ কোনো পণ্যের দাম বাড়ানো বাকি নেই। নানা অজুহাতে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়তি করে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। গত অর্থবছরে চাহিদার তুলনায় বেশি ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে। তাই দাম কেন দফায় দফায় বাড়ছে সেটা ভোক্তা অধিকার, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকেই খতিয়ে দেখতে হবে। ব্যবসায়ীদের কারসাজি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফয়েজ উল্যাহ খবরের কাগজকে বলেন, আমরা আমাদের সীমিত জনবল নিয়ে প্রতিদিন নগরের বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করছি। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি। অপরাধ পেলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।