ঢাকা ২৫ কার্তিক ১৪৩১, রোববার, ১০ নভেম্বর ২০২৪

আর্থিক প্রতিষ্ঠান তিন মাসে আমানতকারী কমেছে ৪৭ হাজার

প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৬ এএম
আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪, ১১:২৭ এএম
তিন মাসে আমানতকারী কমেছে ৪৭ হাজার
খবরের কাগজ গ্রাফিকস

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নজিরবিহীন ঋণ জালিয়াতিসহ নানা অনিয়ম হয় ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে (এনবিএফআই)। ফলে গ্রাহকের জমানো টাকা ফেরত দিতে পারছে না তারা। তৈরি হয়েছে আস্থাহীনতা।

এমন পরিস্থিতিতে তিন মাসের ব্যবধানে ৪৭ হাজার আমানতকারী এনবিএফআই ছেড়ে চলে গেছেন। তবে এই সময়ে আমানত সামান্য বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে লিজ ও ঋণ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত জুন ২০২৪-এর সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

খাতসংশ্লিষ্টরা জানান, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও পরিচালকদের যোগসাজশে যাচাই-বাছাই ছাড়াই বিতরণ করা হয়েছে ঋণ। এখন আদায় করতে পারছে না। আবার অনেক ঋণের বিপরীতে কোনো জামানত নেই। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ তথ্যভাণ্ডার বা সিআইবিতে গ্রাহকের তথ্য হালনাগাদ না থাকায় অনেক গ্রাহককে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। এসব কারণে অর্থসংকটে প্রতিনিয়ত দুর্বল হচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখতে পারছে না, পড়েছে মূলধনসংকটে। কিছু প্রতিষ্ঠান আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে পারছে না। এমন অবস্থায় অস্তিত্বহীনতায় পড়েছে বেশ কিছু এনবিএফআই। যার কারণে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা দিন দিন কমছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে যেভাবে তদারকি করার দরকার ছিল, সেটা করা হয়নি। এখন গ্রাহকদের আস্থা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ শেষে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ২৭ হাজার ৩৪১ জন। আর জুন শেষে অর্থাৎ তিন মাস পর আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৭ জন। সেই হিসাবে তিন মাসে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা কমেছে ৪৭ হাজার ৬০৪ জন। একক প্রান্তিকে আমানতকারী কমার সংখ্যা এটাই সর্বোচ্চ। 

এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স কোম্পানি (আইআইডিএফসি) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া বলেন, জুন প্রান্তিকে আমানতকারীর সংখ্যা কমেছে। আসলে এই সময়ে সরকারের বিল-বন্ডের সুদহার বেশি থাকায় আমানতকারীরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা তুলে সেখানে রেখেছেন। গ্রাহক টাকা রাখেন লাভের জন্য। যেখানে বেশি লাভ পাবেন, সেখানেই তারা যাবেন।

নানা অনিয়মের কারণে মানুষ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলার কারণে আমানত তুলে নিচ্ছেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে গোলাম সরওয়ার ভূঁইয়া বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে কিছু আস্থার সংকট আছে। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে গ্রাহকের আস্থা বাড়ানো যায়।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা কমেছিল ৩ হাজার ৮৮০ জন। এর আগে ২০২৩ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানতকারীর সংখ্যা কমেছিল ২৫ হাজার ৭৮২ জন। এর আগের তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) এ সংখ্যা কমেছিল ১৮ হাজার ৪৯৩ জন। এ ছাড়া ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) এ সংখ্যা কমেছিল ৩৫ হাজার ৫ জন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, জুন প্রান্তিকে এসব প্রতিষ্ঠানে আমানত বেড়েছে মাত্র ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক (এপ্রিল-জুন) শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ১১৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। আর প্রথম প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আমানত ছিল ৪৪ হাজার ৩০৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। সেই হিসাবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে ৮ হাজার ১১৩ কোটি ৯ লাখ টাকা।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের মার্চ শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ বিতরণের স্থিতি ছিল ৭৪ হাজার ৫২৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর তিন মাস পর (এপ্রিল-জুন) আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭৪ হাজার ৯১৮ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৩৮৮ কোটি টাকা।

পোশাকশিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধির রূপকল্প বাস্তবায়নে সচেষ্ট বাংলাদেশ: আনোয়ার হোসেন

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৮ এএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ এএম
পোশাকশিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধির রূপকল্প বাস্তবায়নে সচেষ্ট বাংলাদেশ: আনোয়ার হোসেন
তাইওয়ান টেক্সটাইল ফেডারেশনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করেন বিজিএমইএ'র প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন। ছবি: খবরের কাগজ

পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধির রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন।

শনিবার (৯ নভেম্বর) ঢাকার উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাইওয়ান টেক্সটাইল ফেডারেশনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। 

আনোয়ার হোসেন বলেন, বিজিএমইএ কটন থেকে নন-কটন পণ্য, বিশেষ করে ম্যান-মেইড ফাইবারভিত্তিক পণ্যে স্থানান্তরের মাধ্যমে এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তাইওয়ান নন-কটন টেক্সটাইল, উচ্চমূল্য সংযোজনকারী পোশাক, টেকনিক্যাল টেক্সটাইল, ওভেন টেক্সটাইল ও পোশাক, দক্ষতা উন্নয়ন এবং উদ্ভাবন ক্ষেত্রগুলোতে বাংলাদেশে বিনিয়োগে করতে পারে।

আলোচনায় সহযোগিতার মাধ্যমে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পে প্রযুক্তি প্রয়োগ, দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন, সম্পদ ব্যবহারে দক্ষতা ও সার্কুলারিটির মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে জ্ঞান ও দক্ষতা ভাগাভাগি করে নেওয়ার বিষয়টি ওঠে আসে।
 
বৈঠকে উভয়পক্ষ পোশাক ও টেক্সটাইল খাতে পারস্পরিক সুবিধা অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার আশা প্রকাশ করেন। 

এ সময় তারা তৈরি পোশাকের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি, বৈশ্বিক প্রবণতা, চ্যালেঞ্জ, সুযোগসহ বিভিন্ন বাণিজ্যসংক্রান্ত বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।

এ ছাড়া বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা এবং টেক্সটাইল ও পোশাক খাতে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে সহযোগিতার জন্য উভয়পক্ষ কীভাবে একসঙ্গে কাজ করতে পারে সে বিষয়েও আলোচনা করেন।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন তাইওয়ান টেক্সটাইল ফেডারেশনের সভাপতি জাস্টিন হান। 

এ সময় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) এবং বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেপজা) প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

মেহেদী/অমিয়/

ওয়ালটনের আরও কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার উদ্যোগ

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ এএম
ওয়ালটনের আরও কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনার উদ্যোগ
ছবি: সংগৃহিত

দেশের পুঁজিাবাজারে ওয়ালটন গ্রুপের অধীনে থাকা ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত করতে চায় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ জন্য ওয়ালটন গ্রুপের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছে বিএসইসি। পাশপাশি তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের লেনদেনযোগ্য শেয়ারও বাড়াতে  চায় বিএসইসি। 


রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। ওয়ালটন গ্রুপের পক্ষে বৈঠক ছিলেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, ওয়ালটন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল আলম, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম।


বৈঠকে ওয়ালটনের অধীনে থাকা ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি ও তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাইটেকের লেনদেনযোগ্য বা ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় কোম্পানির শীর্ষ ব্যক্তিদের ব্যাংকঋণের বদলে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ, গ্রিন বন্ড ইস্যুর আহ্বান জানানো হয় বিএসইসির পক্ষ থেকে। এ ছাড়া ওয়ালটনের সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ও মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগেরও আহ্বান জানানো হয়।

বৈঠকের বিষয়ে বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি তালিকাভুক্তির লক্ষ্যে কাজ করছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। তারই অংশ হিসেবে দেশের বড় শিল্প গ্রুপ ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে নিয়মিতভাবে আলোচনা করা হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় ওয়ালটনের উদ্যোক্তাদের সঙ্গে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে শেয়ারবাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া সহজ করা, ব্যাংকের বদলে পুঁজিবাজার থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের বিষয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ওয়ালটন দেশের সর্বোচ্চ কর ও ভ্যাটদাতা কোম্পানিগুলোর একটি। দেশের অর্থনীতিতে প্রতিষ্ঠানটির শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে। ওয়ালটনের অধীন বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠিত বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করা হলে তাতে কোম্পানিগুলোর সুফল দেশের মানুষ পাবে। এ ছাড়া তালিকাভুক্তির ফলে কোম্পানির প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন নিশ্চিত হয়। তাতে কোম্পানিগুলোকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার সুযোগ ঘটে।

বৈঠকে জানানো হয়, পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের সুপারিশের ভিত্তিতে বাজারের উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন পরিকল্পনা ও কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে বিএসইসি। এর ফলে বাজারে সুশাসন যেমন বাড়বে, তেমনি ভালো কোম্পানি বাজারে এলে তাতে বাজারের গভীরতাও বাড়বে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ওয়ালটন গ্রুপের কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। শুরুতে কোম্পানি মাত্র ১ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়ে। পরে এ নিয়ে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিলে কোম্পানির কয়েকজন উদ্যোক্তা তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে বাজারে শেয়ারের সংখ্যা বাড়ান।


ডিএসইতে গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের  সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ৪২৮ টাকা ৯০ পয়সা এবং ১ হাজার ৪৭ টাকা ৭০ পয়সা। 

ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৫ এএম
ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে
ছবি: সংগৃহিত

বিদায়ী সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে। এতে গত সপ্তাহে ডিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা। সূচকের উত্থানের পাশাপাশি আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ২৯ কোটি ৬ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৮৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এক সপ্তাহে লেনদেন বেড়েছে ৯৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা।


পুঁজিবাজারের সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।


বিদায়ী সপ্তাহের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। আর সপ্তাহ শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭১ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ বা ৬ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা।
সমাপ্ত সপ্তাহে বেড়েছে ডিএসইর সব কটি সূচকও। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১১৬ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৫ শতাংশ। সপ্তাহ শেষে সূচকটি দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩১৬ পয়েন্টে।


এ ছাড়া ডিএস-৩০ সূচক বেড়েছে ৩৯ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। আর ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ৪৩ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ।


গত সপ্তাহে  প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬০৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৪১৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।


সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৯১টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২৫৪টি কোম্পানির, কমেছে ১১১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।


বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে ২০ খাতের মধ্যে ১৯ খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে।


গেল সপ্তাহে দর বেড়েছে ১৯ খাতের শেয়ারে। এই ১৯ খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা মুনাফায় রয়েছেন। আলোচ্য সপ্তাহে কেবল খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা লোকসানে রয়েছেন।


আলোচ্য সপ্তাহে বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি মুনাফা পেয়েছেন কাগজ ও প্রকাশনা খাতে। এখাতে বিদায়ী সপ্তাহে দর বেড়েছে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ।

এরপর ৯ দশমিক ৪০ শতাংশ দর বেড়ে সাপ্তাহিক রিটার্নের তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভ্রমণ ও অবকাশ খাত। একই সময়ে ৭ দশমিক ৩০ শতাংশ দর বেড়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে পাট খাত।

সাপ্তাহিক রিটার্নে অন্য ১৬ খাতের মধ্যে বস্ত্র খাতের শেয়ারে মুনাফা বেড়েছে ৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, সেবা ও আবাসন খাতে ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ, লাইফ ইন্স্যুরেন্স খাতে ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ, ওষুধ ও রসায়ন খাতে ৩ দশমিক ৩০ শতাংশ, প্রকৌশল খাতে ৩ শতাংশ, আর্থিক খাতে ২ দশমিক ৬০ শতাংশ, সিমেন্ট খাতে ১ দশমিক ৫০ শতাংশ, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১ দশমিক ২০ শতাংশ, চামড়া খাতে ১ দশমিক ২০ শতাংশ, ব্যাংক খাতে শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ, টেলিকমিউনিকেশন খাতে শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ, বিবিধ খাতে শূন্য দশমিক ৬০ শতাংশ, জেনারেল ইন্স্যুরেন্স খাতে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ, সিরামিক খাতে শূন্য দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।


গত সপ্তাহে ডিএসইতে কোম্পানিগুলোর মাঝে লেনদেনের তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেড।
সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির প্রতিদিন গড় ১৭ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৯২ শতাংশ।

   
লেনদেনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানটির প্রতিদিন গড়ে ১৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা ছিল ডিএসইর মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

সাপ্তাহিক লেনদেনের তৃতীয় স্থানে থাকা ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিন গড়ে ১৪ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন করেছে। যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

এ ছাড়া প্রতিদিন গড় লেনদেনে সাপ্তাহিক শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফারইস্ট নিটিং ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ১৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেডের ১২ কোটি ৫২ লাখ টাকা, অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেডের ১২ কোটি ২৪ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালস লিমিটেডের ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, ওরিয়ন ইনফিউশন লিমিটেডের ১১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা, ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসির ১১ কোটি ৩ লাখ টাকা, তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম পিএলসির ১০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৯৪টি কোম্পানির মাঝে দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে গ্লোবাল হেভি ক্যামিক্যালস লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৭ টাকা ৮০ পয়সা, অর্থাৎ ৪২ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়েছে।
সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা কোম্পানিগুলোর  মধ্যে ৩ টাকা ৪০ পয়সা বা ২৮ দশমিক ৮১ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে শাইনপুকুর সিরামিকস লিমিটেড। এ ছাড়া ৭ টাকা ৮০ পয়সা ২৫ দশমিক ১৬ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে আফতাব অটোমোবাইলস লিমিটেড।

সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো হলো মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেডের ২৪ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, আরামিট সিমেন্ট লিমিটেডের ২২ দশমিক ৮১ শতাংশ, ইনভয় টেক্সটাইল লিমিটেডের ২১ দশমিক ৬৩ শতাংশ, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার লিমেটেডের ২০ দশমিক ৫০ শতাংশ, ওরিয়ন ফার্মা লিমিটেডের ২০ দশমিক ৩৭ শতাংশ, এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলস লিমিটেডের ২০ শতাংশ এবং ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডের ২০ শতাংশ শেয়ার দর বেড়েছে।
বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানির মাঝে দরপতনের শীর্ষে উঠে এসেছে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৬০ পয়সা বা ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ কমেছে।

    

সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা কোম্পানগুলোর মধ্যে ৫৭ টাকা ৮০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ দরপতনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ফার্মা এইডস লিমিটেড। এ ছাড়া ৮ টাকা বা ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ দরপতনে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে শ্যামপুর সুগার মিলস লিমিটেড।

সাপ্তাহিক দরপতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলো হলো পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ফারিস্ট ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর অ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কুইন সাউথ টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড, জিল বাংলা সুগার মিলস লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড।

কাস্টমস আইন যৌক্তিক করতে চায় বিটিএমএ

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৩ এএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৪ এএম
কাস্টমস আইন যৌক্তিক করতে চায় বিটিএমএ
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)'র লোগো। ছবি: সংগৃহীত

চলমান ব্যবসায়িক মন্দা ও নানান বিরূপ পরিস্থিতি বিবেচনায় কাস্টমস আইন ২০২৩-এর ৮২ ধারা বাতিল বা যৌক্তিক করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ)।

কাস্টমস আইনের ৮২ ধারায় পণ্য ঘোষণায় প্রদত্ত তথ্যের সঠিকতা এবং সম্পূর্ণতার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। পাশাপাশি উপস্থাপিত যেকোনো দলিলের সত্যতা, প্রদেয় সব শুল্ক-কর প্রদান ও অন্যান্য চার্জের বিষয়ে বাধ্যবাধকতার কথা বলা আছে।

৮২ ধারায় সংঘটিত অপরাধসমূহের জন্য আইনের ১৭-এর ১৯ ধারায় জরিমানা ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা থেকে অনধিক ২ লাখ টাকা পর্যন্ত আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি পণ্য বাজেয়াপ্ত করার বিধান রয়েছে।

বিটিএমএর সেক্রেটারি জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাকির হোসেনের সই করা চিঠিটি সম্প্রতি এনবিআর চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, চলমান ব্যবসায়িক মন্দা, সর্বোপরি বহুবিধ বিরূপ পরিস্থিতিতে সদস্য মিলগুলো যারা স্বল্প মুনাফা লাভ করে- তাদের পক্ষে ৮২ ধারাসংক্রান্ত এই অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যয়ভার বহন করা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। 

পণ্য আমদানি প্রক্রিয়ার সঙ্গে তিন বা ততোধিক পক্ষসংশ্লিষ্ট, যারা প্রয়োজনীয় তথ্য অ্যাস্যাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে প্রদান করে থাকেন। তাদের এই কার্যক্রমের ওপর আমদানিকারকের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেও ইমপোর্ট জেনারেল মেন্যুফেস্টে (আইজিএম) ভুলের পরিমাণ শূন্য বা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কমিয়ে আনা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি। 

কাজেই অন্য পক্ষের ভুলের বা পদ্ধতিগত জটিলতার দায় আমদানিকারকের ওপর বর্তানোর যৌক্তিকতা বিবেচনার দাবি রাখে।

কাস্টমস আইন ২০২৩-এর উল্লিখিত ধারায় বর্ণিত জরিমানা পুরোপুরি বাতিল অথবা যৌক্তিক পর্যায়ে করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয় চিঠিতে।

এতে আরও বলা হয়, আইজিএমে যেকোনো ধরনের ভুলের জন্য বিগত এক মাসের বেশি সময় ধরে ঢাকা/চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ কাস্টমস আইন, ২০২৩-এর ৮২ ধারায় সংঘটিত অপরাধের জন্য ওই আইনের ১৭১ ধারার ১৯ নং ক্রমিকে উল্লিখিত জরিমানা ন্যূনতম ৫০ হাজার টাকা আরোপ করা হয়েছে। যা নিকট অতীতেও ১০ হাজার টাকা ছিল। 

এ ছাড়া ওই আইনে একই বিষয়ে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা আদায়ের বিধান থাকায় তা অদূর ভবিষ্যতে বাস্তবায়নের আশঙ্কাও রয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, শিল্পখাতের প্রকট জ্বালানি সংকটসহ নানান সমস্যার কারণে দেশের রপ্তানিমুখী অধিকাংশ কারখানা উৎপাদন সক্ষমতার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ব্যবহার না করার ফলে ধীরে ধীরে তাদের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সংকুচিত হয়ে পড়েছে। প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে সিংহভাগ টেক্সটাইল মিল স্থবির বা বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়েছে।

 

উৎপাদন ১৩ কোটি টনে পৌঁছানোর লক্ষ্য ইরানের

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২০ এএম
আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২০ এএম
উৎপাদন ১৩ কোটি টনে পৌঁছানোর লক্ষ্য ইরানের
ছবি: সংগৃহিত

ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন সক্ষমতা ৮ শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে দেশটি। সপ্তম জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার (২০২২-২৭) অংশ হিসেবে ২০২৭ সালের মধ্যে ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন ১৩ কোটি টনে পৌঁছাবে। সম্প্রতি ইরানের পেট্রোএনার্জি ইনফরমেশন নেটওয়ার্ক শানার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর ইরনার। 


ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, দেশটির অষ্টম জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পে আরও ৪ হাজার কোটি (৪০ বিলিয়ন) ডলার বিনিয়োগ করবে, যা এই শিল্পকে আরও সম্প্রসারিত করবে এবং এর মূল্য-শৃঙ্খল বা ভ্যালু চেইন পুরোপুরি স্বনির্ভর করতে সাহায্য করবে।


বর্তমানে বিশ্বের মোট পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন সক্ষমতার ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং অঞ্চলের এই শিল্পের মোট সক্ষমতার প্রায় ২৮ শতাংশে অবদান রাখছে ইরান। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী, সপ্তম উন্নয়ন পরিকল্পনার সময়সীমার মধ্যে ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের উৎপাদনক্ষমতা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।


ইরানের জাতীয় পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি (এনপিসি) প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ইরানি পঞ্জিকাবর্ষ শেষ হওয়ার (মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত) আগেই ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন সক্ষমতা ১০ কোটি ৩০ লাখ টনে পৌঁছাবে। এ ছাড়া সপ্তম জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রায় ৬০টি পেট্রোকেমিক্যাল প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে, যা ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের পেট্রোকেমিক্যাল সক্ষমতায় আরও ৩ কোটি ৫০ লাখ টন যোগ করবে। তবে এই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করতে সপ্তম ও অষ্টম জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য বছরে কমপক্ষে ৭০০ কোটি (৭ বিলিয়ন) ডলারের বিনিয়োগ প্রয়োজন। এই লক্ষ্য অর্জন করতে এবং পরিকল্পনাগুলো সফল করতে সরকার ও পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কারণ এককভাবে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প এই লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম নয়; বরং এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের জন্য সরকারের সহায়তা প্রয়োজন।


চলতি মাসের শুরুতে ন্যাশনাল পেট্রোকেমিক্যালের তত্ত্বাবধায়ক দেশের বর্তমান পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন সক্ষমতা ১০ কোটি টন বলে উল্লেখ করেছেন। তার মতে, ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদনক্ষমতা ১৩ কোটি টন অতিক্রম করতে পারে।
চলতি বছরের মে মাসে অ্যাসোসিয়েশন অব পেট্রোকেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশনের (এপিআইসি) মহাপরিচালক আহমদ মাহদাভি আভারি জানান, গত দুই বছরে ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন ১ কোটি ৫০ লাখ টন বেড়েছে। তিনি দেশটির বর্তমান পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন ৮ কোটি ২০ লাখ টন বলে উল্লেখ করেছেন। তার দেওয়া তথ্যমতে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ইবরাহিম রাইসির দায়িত্ব গ্রহণের আগে, ২০২১ সালের আগস্টে ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ টন।


এই শিল্প কর্মকর্তা জানান, ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প সাম্প্রতিক সময়ে প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। তিনি আরও বলেন, দেশের তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনা থেকে এই শিল্পের প্রবৃদ্ধির হার ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমানে ৪০ দশমিক ৬০ শতাংশে পৌঁছেছে। ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল শিল্পের উৎপাদন সক্ষমতা এখন অঞ্চলটির মোট পেট্রোকেমিক্যাল সক্ষমতার ২৮ শতাংশ এবং বিশ্বের মোট পেট্রোকেমিক্যাল সক্ষমতার ২ দশমিক ৭ শতাংশ।


ইরানের নন-অয়েল অর্থনীতিতে পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পেট্রোকেমিক্যাল রপ্তানি দেশের জ্বালানি তেলের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম আয়ের উৎস হিসেবে বিবেচিত। পেট্রোকেমিক্যাল রপ্তানি ইতোমধ্যেই দেশের মোট নন-অয়েল রপ্তানির প্রায় ৩৩ শতাংশ অবদান রাখছে। ইরানের জাতীয় পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানির (এনপিসি) সাবেক প্রধান মরতেজা শাহমিরজায়ী জানিয়েছেন, কোম্পানি আগামী ১০ বছরের মধ্যে বার্ষিক পেট্রোকেমিক্যাল উৎপাদন সক্ষমতা ২০ কোটি টনে উন্নীত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।