মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন বাজারে শাকসবজির দাম কমতে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের শাকসবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। শীতের শাকসবজি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাজারে এলে দাম আরও কমে আসবে। জেলা প্রশাসনের নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ে বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে পড়েছে। এতে ভোক্তারা সুফল পেতে শুরু করেছেন। প্রান্তিক কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন। খবর বাসসের।
গত সোমবার সকাল ৬টায় সদর উপজেলার রামপালে ধলাগাঁও আড়তে গেলে দেখা যায়, প্রান্তিক কৃষক উৎপাদিত শাকসবজি বিক্রির জন্য পাইকারি আড়তে নিয়ে আসছেন। আড়তদার আব্দুল আহাদ দেওয়ান জানান, বাজার সিন্ডিকেট না থাকায় কৃষক উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছেন। প্রতিদিন ধলাগাঁও আড়তে প্রায় ২০ মণ শাকসবজি পাইকারি বিক্রি হয়। এসব পণ্য নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার কারওয়ান বাজারে যাবে।
মুন্সীগঞ্জ শহরের বাজারে শাকসবজি বিক্রেতা মো. নুরুল হক জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের শাকসবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা কমেছে। শীতের শাকসবজি বাজারে চলে আসলে আলুসহ সব ধরনের সবজির মূল্য আরও কমে আসবে।
তিনি আরও জানান, ধুন্দল প্রতি কেজি ৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৭০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ১০০ টাকা। গত সপ্তাহে শিমের মূল্য ছিল ২৪০ টাকা, বর্তমানে প্রতি কেজি ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গত সপ্তাহে এর মূল্য ছিল ৯০ থেকে ১০০ টাকা। কালো বেগুন প্রতি কেজি ৮০ টাকা, গত সপ্তাহে মূল্য ছিল ১২০ টাকা। ১০০ থেকে ১২০ টাকার লাউ এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়। পটোল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়, গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। লালশাক কেজি ৩০ টাকা, পুঁইশাক আঁটি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজি বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর জানান, আলুর বিক্রয়মূল্য গত এক সপ্তাহে কেজি প্রতি ২০ টাকা কমে এখন প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর মৌসুম শেষের দিকে থাকায় হিমাগার থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। শীতের শাকসবজি বাজারে আসতে শুরু করলে আলুর বাজারমূল্য কমে আসবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৪ হাজার ৯০৭ হেক্টর জমিতে শীতের শাকসবজি আবাদের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- সদরে ৯৭৪ হেক্টর, টঙ্গিবাড়ীতে ৫০০ হেক্টর, শ্রীনগরে ৬৭০ হেক্টর, সিরাজদিখানে ১ হাজার ৬১০ হেক্টর, লৌহজঙ্গী ৪২০ হেক্টর এবং গজারিয়ায় ৭৩৩ হেক্টর জমি। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বৃষ্টিতে শীতের সবজির চারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সবজি বাজারে আসতে বিলম্ব হচ্ছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সবজি আসলে বাজারমূল্য আরও কমে আসবে।