পুঁজিবাজারে চলমান অস্থিরতা কাটিয়ে উঠে স্থিতিশীলতা ফেরাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ভবনে কমিশনের সঙ্গে সভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, ‘বাজারে চলমান অস্থিরতার সব দিক বিবেচনায় নিয়ে কমিশনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পরিকল্পনাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে চাই না। সব পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।’
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মু. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর, ফারজানা লালারুখসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভাটি করেন।
চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, আলোচনায় বিএসইসির পক্ষ থেকে অর্থ উপদেষ্টার কাছে পুঁজিবাজার সংস্কার ও উন্নয়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তার বিষয়ে প্রস্তাবনা তুলে ধরেছে বিএসইসি। তিনি বিষয়গুলোকে খুবই ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, সমন্বিতভাবে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে নীতি সহায়তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। যার মধ্যে কিছু থাকবে স্বল্প মেয়াদে বাস্তবায়নযোগ্য, আর কিছু বিষয় মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।
যেসব পদক্ষেপের উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্র প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে, বাজারে তারল্য সরবরাহ বাড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) বিনিয়োগ সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য তহবিল জোগানে সহায়তা, জরিমানার মাধ্যমে বিএসইসির আদায় করা অর্থ বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি-বেসরকারি ভালো ও লাভজনক কোম্পানিগুলোকে দ্রুত বাজারে আনতে আইপিও আইন সংস্কার ও কর প্রণোদনার ব্যবস্থা করা, শেয়ারবাজারে লেনদেন নিষ্পত্তির সময় কমিয়ে এক দিনে নামিয়ে আনা, ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে পরিমাণ অনাদায়ী পুঞ্জীভূত ঋণাত্মক ঋণ (নেগেটিভ ইক্যুইটি) রয়েছে চূড়ান্তভাবে সেগুলোর নিষ্পত্তি করা, উচ্চসম্পদশালী ব্যক্তিদের বিনিয়োগে উৎসাহিত করতে মূলধনি মুনাফার করহার কমানো, শেয়ার পুনঃক্রয়ব্যবস্থা চালুর বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে ভবিষ্যতে আর কখনো ফ্লোর প্রাইস আরোপ না করা, সুশাসন ও আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করা।