দ্রুত সময়ের মধ্যে উৎপাদন পুনরুদ্ধার ও স্থায়ী প্রবৃদ্ধির ফলে ভিয়েতনামের কৃষি খাত ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্য ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশা করছে দেশটির কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রণালয় (এমএআরডি)। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমনটা জানানো হয়েছে। খবর ভিয়েতনাম টাইমসের।
এমএআরডির ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে কৃষিপণ্যের রপ্তানি মূল্য ৪৬ দশমিক ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ শতাংশ বেশি। খাতটি ১৩ দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত অর্জন করেছে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৭১ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি এবং এটি দেশের মোট বাণিজ্য উদ্বৃত্তের ৬৬ দশমিক ৮০ শতাংশে অবদান রেখেছে।
কফি, চাল, কাজুবাদাম, ফলমূল, চিংড়ি, পাঙাশ জাতীয় মাছ ও গোলমরিচের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলো দেশটির রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে কিছু প্রধান পণ্যের মূল্য রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে, যেখানে কফির রপ্তানিমূল্য ৫৬ শতাংশ, গোলমরিচের ৪৯ দশমিক ২০ এবং চালের রপ্তানিমূল্য ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ বেড়েছে। উল্লিখিত সময়ে দেশটির কৃষি রপ্তানি আয় হয়েছে ২৪ দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের তুলনায় ২৭ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে বনজ ও জলজপণ্য থেকে আয় ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ও ৭ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা যথাক্রমে ২০ দশমিক ৩০ ও ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়েছে। পশুসম্পদ খাত থেকে আয় এসেছে ৩৭ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসেবে এই খাতে ৩ দশমিক ৮০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এসেছে।
ভিয়েতনামের উপমন্ত্রী ফুং ডাক টিয়েন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, এই প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বছরের শেষে কৃষি রপ্তানি ৬০ থেকে ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের রেকর্ড গড়তে পারে। তবে তিনি এটিও উল্লেখ করেন যে, এই ইতিবাচক প্রবণতা থাকা সত্ত্বেও খাতটি কিছু গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এর মধ্যে টাইফুন ইয়াগির প্রভাব বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, যা এই খাতের ১ দশমিক ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি ক্ষতি করেছে। এর মধ্যে পশুসম্পদ ও জলজ খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জলজ খাতের ক্ষেত্রে উৎপাদনসামগ্রীর উচ্চমূল্য একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। এ ছাড়া চতুর্থ প্রান্তিকে মৎস্য খাতের রপ্তানির ফল আংশিকভাবে নির্ভর করবে অবৈধ, অপ্রকাশিত ও অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরার বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চলমান পরিদর্শনের ওপর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিয়েতনামী চিংড়ির ওপর প্রদত্ত ভর্তুকিবিরোধী শুল্কসংক্রান্ত সিদ্ধান্তের ওপর।
খবরে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী পুনরুদ্ধার কার্যক্রম দ্রুততর করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা উৎপাদন পুনরুজ্জীবিত করতে অতিরিক্ত সহায়তা এবং যেসব এলাকা ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি সেখানে কার্যকর কৃষি মডেল প্রচারের সুপারিশ করেছেন। ফুং ডাক টিয়েন আরও বলেন, দেশের উৎপাদন টিকিয়ে রাখতে চোরাচালানবিরোধী ব্যবস্থা কঠোর করা, আমদানি সীমিত করা এবং ২ দশমিক ২০ বিলিয়ন মানুষের বিশাল সম্ভাবনাময় হালাল বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থানও গড়ে তোলা প্রয়োজন।