ঢাকা ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

তরকারির চাহিদা মেটাচ্ছে কুমড়ো বড়ি

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
তরকারির চাহিদা মেটাচ্ছে কুমড়ো বড়ি
নাটরে কুমড়ো বড়ি তৈরি করে বাজারজাতকরণের জন্য শুকানো হচ্ছে। ছবি: খবরের কাগজ

চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মাঝে যখন মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে, তখন তাদের জন্য এক স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে নাটোরের অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ি। কম দামে এই কুমড়ো বড়ি বিক্রির মাধ্যমে একদিকে যেমন ভোক্তাদের চাপ কমছে, তেমনি পরিবারগুলোর জন্য এটি হয়ে উঠেছে একটি সহায়ক উপকরণ। এটি তরকারির চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। 

বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে কুমড়ো বড়ি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় খাবার। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এর কদর অনেক বেশি। কুমড়ো বড়ি সাধারণত শীতকালে তৈরি করা হয়। সঠিকভাবে তৈরি ও সংরক্ষণ করলে এটি সারা বছর খাওয়া যায়। জানা গেছে, কুমড়ো বড়ি তৈরিতে ব্যবহৃত কুমড়োতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা ও ফাইবার, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এ ছাড়া এটি হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া বিভিন্ন স্নায়ুবিক সমস্যা যেমন: সিজোফ্রেনিয়া, হিস্টিরিয়া ইত্যাদি মোকাবিলায় কার্যকরী হতে পারে।

একসময় শীত শুরু হলেই নাটোরের বিভিন্ন গ্রামে কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজ শুরু হতো। তবে তা ছিল শুধু ঘরোয়া প্রেক্ষাপটে। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই খাবারটি বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি হতে শুরু করেছে। এর ফলে অনেক পরিবার আজকাল জীবিকার জন্য কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজকে নিজের পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে। এতে তারা নিজেদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন করেছে। কুমড়ো বড়ি তৈরির এই প্রক্রিয়া ও ব্যবসায়িক উদ্যোগ গ্রামীণ অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে।

নাটোরে কুমড়ো বড়ি তৈরি হয় দুটি প্রধান উপাদান দিয়ে। একধরনের কুমড়ো বড়ি তৈরি হয় মাষকলাই দিয়ে। আর অন্য ধরনের কুমড়ো বড়ি তৈরি হয় অ্যাংকার ডালের সঙ্গে কুমড়ো ও অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে। এর মধ্যে মাষকলাইয়ের কুমড়ো বড়ি বেশি দামী। কারণ এতে ব্যবহৃত উপকরণগুলোও দামী। কিন্তু অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ি তৈরি করার জন্য কম দামী উপকরণ প্রয়োজন, যার ফলে এই ধরনের কুমড়ো বড়ির দামও তুলনামূলকভাবে কম। তাই বর্তমানে অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ির চাহিদা অনেক বেশি।

সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের পুণ্ডরী গ্রামে সবচেয়ে বেশি কুমড়ো বড়ি তৈরি হয়। এই গ্রামে প্রায় ১৫-১৬টি পরিবার কুমড়ো বড়ি তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকে। এখানকার একজন কুমড়ো বড়ির কারিগর আলামিন শাহের স্ত্রী রাশেদা বেগম জানান, তিনি ছোটবেলায় তার বাবার বাড়ি সিরাজগঞ্জের তারাশ উপজেলায় কুমড়ো বড়ি বানানো শিখেছিলেন। বিয়ের পরও তিনি এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। 

এখন তার পুরো পরিবার এই কাজে সম্পৃক্ত। রাশেদা বেগম জানান, এক কেজি অ্যাংকার ডাল ব্যবহার করে প্রায় পৌনে এক কেজি শুকনো কুমড়ো বড়ি তৈরি করা যায়। প্রতিদিন তিনি ২০-৩০ কেজি কুমড়ো বড়ি তৈরি করেন। সপ্তাহে ৩৫০ কেজি কুমড়ো বড়ি বিক্রি করেন, যার মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন ৩০০-৩৫০ টাকা আয় হয়। তার স্বামী ভ্যান চালিয়ে অতিরিক্ত আয় করেন। এতে পরিবারে সংসরার ভালোভাবে চলছে।

অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ি এখন নাটোরের বিভিন্ন হাটবাজারসহ বগুড়া, রাজশাহী, পুঠিয়া ও অন্যান্য অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ী এসব কুমড়ো বড়ি সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য অন্য জেলা থেকে কিনে নিয়ে যান। 

নাটোর সদর উপজেলার দিঘাপতিয়া এলাকার গৃহিণী মাসৌরা বেগম, ভাটোদাড়া গ্রামের বাসিন্দা জামিল ও করিম জানান, তারা নিয়মিত এই কুমড়ো বড়ি কিনে থাকেন। কারণ এর স্বাদ খুবই ভালো এবং দামও সাশ্রয়ী।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল ওয়াদুদ জানান, জেলায় গত কয়েক বছরে অ্যাংকার ডালের কুমড়ো বড়ি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দাম কম হওয়ায় অনেকে পরিবারের তরকারির চাহিদা মিটছে। দিন দিন কুমড়ো বড়ির উৎপাদন বাড়ছে। এটি গ্রামীণ জনগণের জীবনে নতুন এক দিগন্তের সূচনা করেছে। যেখানে তারা সস্তায় ভালো খাবারের সঙ্গে একটি ভালো উপার্জন করতে পারছেন।

বেনাপোল দিয়ে ৩৩২০ টন চাল আমদানি

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ পিএম
আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২৬ পিএম
বেনাপোল দিয়ে ৩৩২০ টন চাল আমদানি
ছবি: খবরের কাগজ

দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম সহনীয় রাখতে চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করেছে সরকার। এ ঘোষণার পর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ২৫ দিনে ভারত থেকে তিন হাজার ৩২০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।

শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, মেসার্স মাহাবুবুল আলম ফুড প্রোডাক্ট, সর্দার এন্টারপ্রাইজ, অর্ক ট্রেডিংসহ আটটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সাধুরাম আয়াতনিরাত প্রাইভেট লিমিটেড থেকে এসব চাল আমদানি করে।

তিনি আরও জানান, দুই বছর পর গত ১৭ নভেম্বর থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়ে শেষ হয় বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর)। এ সময়ে তিন লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয় সরকার। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রাত ১০টা পর্যন্ত আমদানি করা ১০৫ টন নন-বাসমতী চালবোঝাই তিনটি ট্রাক বন্দরের ৩১নং ট্রান্সশিফমেন্ট ইয়ার্ডে ঢুকে। এ নিয়ে ১৭ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা পর্যন্ত ৯৭টি ট্রাকে তিন হাজার ৩২০ মেট্রিক টন চাল ভারত থেকে আমদানি হয়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব লুৎফর রহমান স্বাক্ষরিত এক পত্রে বেসরকারিভাবে ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল এবং এক লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলেও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো সময় স্বল্পতার কারনে চাল আমদানি করতে পারেনি।

বেনাপোল বন্দরের পরিচালক মামুন কবীর তরফদার জানান, ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি বন্ধ ছিল। সেই সময় আমদানি নিরুৎসাহিত করতে চালের ওপর ৬২ শতাংশ শুল্ককর আরোপ করা হয়। এরপর থেকে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আর চাল আমদানি হয়নি।

পরে সরকার চালের শুল্ককর প্রত্যাহার করে নেওয়ায় গত ১৭ নভেম্বর থেকে আবারও এ বন্দর দিয়ে আমদানি শুরু হয়। এর আগে সর্বশেষ ২০২৩ সালের তিন মার্চ এই বন্দর দিয়ে ভারত থেকে চাল আমদানি হয়েছিল।

নজরুল ইসলাম/মেহেদী 

চট্টগ্রামের রিয়াজুউদ্দিন বাজার আলুর দাম কমলেও চড়া টমেটো

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ এএম
আলুর দাম কমলেও চড়া টমেটো
ছবি: খবরের কাগজ

শীতের মৌসুমে দেশে উৎপাদিত নতুন আলুর প্রতি সাধারণ ক্রেতাদের আকর্ষণ থাকে। চট্টগ্রামে চলতি মাসের শুরুতে পাইকারি বাজারে চড়া দামে বিক্রি হয় পণ্যটি। তবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি নতুন আলুতে দাম কমেছে ৩৩ টাকা। পাইকারিতে অধিকাংশ শীতের সবজির দাম কমে এলেও দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা পেঁপে, বরবটি ও টমেটোর কেজিতে ৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। 

চট্টগ্রাম মহানগরে রিয়াজুউদ্দিন বাজারে পাইকারি দরে বিক্রি হয় হরেক রকম সবজি। প্রতিদিন ভোরবেলা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বড় এই বাজারে ট্রাকে করে আসে সবজি। চলতি মাসের শুরুতে বাজারটিতে প্রতি কেজি দেশি নতুন আলু বিক্রি হয় ৯০ টাকায়। তবে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) এ বাজারে পণ্যটি কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৫৭ টাকায়। তবে দেশি পুরোনো আলু আগের ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

বাজারটিতে কাঁচা পেঁপের কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৩০ টাকা, টমেটোর কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৯০ টাকা ও বরবটির কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারটিতে কেজিপ্রতি বেগুনে ১৫ টাকা কমে ২৫ টাকা, শিমের কেজিতে ৮ টাকা কমে ৩০ টাকা, ফুলকপির কেজিতে ৫ টাকা কমে ২০ টাকা, চিচিঙ্গার কেজিতে ৫ টাকা কমে ২৫ টাকা, শসার কেজিতে ১০ টাকা কমে ৩০ টাকা, ক্ষীরার কেজিতে ৫ টাকা কমে ৩০ টাকা, কাঁকরোলের কেজিতে ৫ টাকা কমে ৫০ টাকা, পটোলের কেজিতে ৫ টাকা কমে ২০ টাকা, চাল কমুড়ার কেজিতে ২ টাকা কমে ১৮ টাকা, মিষ্টিকুমড়ার কেজিতে ২ টাকা কমে ২০ টাকা ও কচুরমুখীর কেজিতে ৫ টাকা কমে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া প্রতি কেজি লাউ ও মুলা ১৫ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এদিকে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি নতুন আলু ৬৬ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তা ছাড়া প্রতি কেজি বেগুন ৫০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শিম ৭০ টাকা, লাউ ৩৫ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, পেঁপে ৪৫ টাকা ও টমেটো ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। 

রিয়াজুউদ্দিন বাজার আড়তদার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক শিবলী খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাজারে নতুন আলুর সরবরাহ আগের তুলনায় বেড়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য শীতের সবজির সরবরাহও আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। তাই আমাদের পাইকারি বাজারে সবজির বাজার নিম্নমুখী। আশা করছি সবজির দাম আর বাড়বে না।’ 

নগরের চৌমুহনী এলাকায় কর্ণফুলী মার্কেটে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী মো. আমিনুল হকের সঙ্গে। তিনি খবরের কাগজকে বলেন, পুরো শীতের মৌসুমে সবজির দাম যেভাবে কমে আসার কথা সেভাবে কমেনি। ৫০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না। মাছ, মাংসের বাজারও চড়া। কাজেই খুচরা বাজারে তদারকি বাড়ানোটা বেশি জরুরি। 

এদিকে বাজারটিতে সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে দেশি মুরগি ৫৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কেজিতে ১০ টাকা কমে সোনালি মুরগি ৩০০ টাকা ও ডজনপ্রতি লাল ডিমে ৫ টাকা কমে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন খবরের কাগজকে বলেন, ‘বর্তমানে বাজার তদারকি ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। এ কারণে অসাধু ব্যবসায়ীরা যে যার মতো করে সবজিসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্য বিক্রি করে আসছেন। একটা পণ্যের দাম কমলে আরেকটা বেড়ে যাচ্ছে। কোনো প্রকার স্থিতিশীলতা নেই। আমরা বারবার বলছি, ভোক্তার স্বার্থে জেলা প্রশাসন, ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তাদের এখন থেকেই বাজার তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। তাহলে ক্রেতারা এর দীর্ঘমেয়াদি সুফল পাবেন।’

দাম বাড়ানোর পর মিলছে সয়াবিন তেল

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৮ এএম
আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫৭ পিএম
দাম বাড়ানোর পর মিলছে সয়াবিন তেল
সরকার দাম বেঁধে দেওয়ার পর বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় ১ কেজি আর ২ কেজির বোতলের সয়াবিন তেল। লিটারে ৮ টাকা দাম বাড়ানোর পর এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে সয়াবিন তেল। ছবি: সংগৃহীত

দাম বাড়ানোর জন্য গত সপ্তাহে বাজার থেকে উধাও হয়ে যায় বোতলজাত সয়াবিন তেল। সরকার লিটারে ৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিলে বাজার স্বাভাবিক হয়। পাওয়া যাচ্ছে সয়াবিন তেল। নতুন ধান ও আলু উঠলেও কমেনি দাম। গতকালও খুচরা পর্যায়ে পুরোনো আলু কেজি ৭৫ টাকা ও নতুন আলু ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। চালের দামও সেই পথে। এখনো সরকার নির্ধারিত দরে মিলছে না ডিম, মুরগি। তবে চিনির দাম কমেছে। কেজি ১২৫ টাকা। আগের চেয়ে সবজিতেও কিছুটা স্বস্তি এসেছে। কাঁচা মরিচের কেজি ১০০-৮০ টাকায় নেমেছে। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

দাম বাড়ানোর পরও শর্ত দিয়ে তেল বিক্রি
গত সপ্তাহে সরকার নির্ধারিত দামে বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়াটা যেন সোনার হরিণ ছিল। সরকার ১ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৭ টাকা ও ৫ লিটার ৮১৮ টাকা নির্ধারণ করেছিল। মিলমালিকরা দাম বাড়ানোর জন্য সরবরাহ বন্ধ করে দেন খুচরা ও পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে গত সোমবার সরকার লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা করে খুচরা পর্যায়ে বিক্রির ঘোষণা দেয়। এরপর থেকেই অধিকাংশ দোকানে মিলছে সয়াবিন তেল। তবে কোনো কোনো কোম্পানি শর্ত দিয়ে তেল বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তা আমলে নিয়ে জাতীয় ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ অধিদপ্তর কারওয়ান বাজারের টিকে গ্রুপের ডিলার মেসার্স সিদ্দিক এন্টারপ্রাইজকে জরিমানা করে। এ ব্যাপারে মেসার্স সিদ্দিক এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু বকর সিদ্দিক খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমি পুষ্টির সয়াবিন তেল, আটা, চাল, সরিষার তেলসহ ১০টি পণ্য বিক্রি করি। খুচরা বিক্রেতা এসব ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করার জন্য কেনেন। তাই নিতে বলি। কিন্তু চাল, আটা ছাড়া তেল বিক্রি করি না। এটা বাজে অভিযোগ। কেউ এমন অভিযোগ করায় ভোক্তা অধিদপ্তর আমাকে গতকাল জরিমানা করেছে।’ 

মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজার, কৃষি মার্কেটসহ অন্য বাজারেও দেখা গেছে দাম বাড়ানোর পর আগের মতো সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে। এসব বাজারের খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আগের মতোই ছোলার কেজি ১৪০-১৬০ টাকা, মুগডাল ১৮০ টাকা কেজি, মসুরডাল ১১০-১৩৫ টাকা, ২ কেজির প্যাকেট আটা ১০০-১৩০ টাকা, খোলা আটার কেজি ৪০ টাকা। তবে চিনির দাম কমেছে। আগের সপ্তাহে ১৩০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গতকাল বিভিন্ন বাজারে ১২৫ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা যায়। 

বাড়তি চালের দাম
বোরো ধান উঠার পরও কমেনি চালের দাম। অন্তর্বর্তী সরকার চালের দাম কমাতে গত ৩১ অক্টোবর চাল আমদানিতে সম্পূর্ণ শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। কিন্তু খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ভারতের চালের দাম বেশি। তাই আমদানি করা হচ্ছে না। তাই বিভিন্ন বাজারে আগের মতোই বেশি দামে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের রতন রাইস স্টোরের রতন মিয়া, হাজি এন্টারপ্রাইজের হাজি মো. মাঈনুদ্দিনসহ অন্য চাল বিক্রেতারা বলেন, ‘সরকার শুল্ক কমালেও বাইরের চাল দেশে আসে না। আবার নতুন ধান উঠলেও তা বাজারে আসেনি। কারণ আমন ধানের চাল মোটা। বাজারে চাহিদা কম। এ জন্য কম বিক্রি হয়। চিকন চালের চাহিদা বেশি হওয়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে মিনিকেটের কেজি ৭২-৭৬ টাকা, আটাশ চাল ৬০-৬২ টাকা ও মোটা চাল ৫০-৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ৫০ কেজির বস্তা কিনলে দাম একটু কম। 

কমের দিকে সবজি 
শীতের ভরা মৌসুম শুরু হওয়ায় অধিকাংশ সবজি বাজারে উঠেছে। সবজি বিক্রেতারা বলেন, প্রতি সপ্তাহেই বেগুন, টমেটো, শিমসহ অধিকাংশ সবজির দাম কমছে। বেগুন ও শিমের কেজি ৬০-৯০ টাকায় নেমেছে। টমেটোর দামও কমে ১২০-১৪০ টাকায় নেমেছে। কাঁচা মরিচের কেজি ৮০-১০০ টাকা। বরবটি, কচুর লতির কেজি ৭০-৮০ টাকা কেজি। ঝিঙ্গা, কচুরমুখি ৭০ টাকা, পটোল ৬০-৭০ টাকা, ধুন্দুল ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০-৭০ টাকা, পেঁপে ৪০-৫০ টাকা, শসা ৬০-৭০ টাকা। ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, চালকুমড়ার পিসও ৪০-৬০ টাকার ঘরে। পুঁইশাক ও লাউ ডগার আঁটি ৩০ টাকা, লাল, পালং, কলমি ও পাটশাক ১০ টাকায় নেমেছে। 

নতুন আলু উঠলেও পুরোনোটা বেশি দামে বিক্রি
গত সপ্তাহে নতুন আলু ১১০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও গতকাল ৭০ টাকায় নেমেছে। তবে এখনো চড়া দামে পুরোনো আলু ৭৫-৮০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। অথচ আলুর দাম কমাতে সরকার শুল্ক অর্ধেক কমিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গত ৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে আলু আমদানিতে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করেছে। একই সঙ্গে আলু আমদানিতে যে ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আছে, তা সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করে। তারপরও কমছে না দাম। 

তবে আমদানি বাড়তে থাকায় পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে। ভারতের পেঁয়াজ ৯০ টাকায় নেমেছে। তবে দেশি পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। আগের সপ্তাহের মতোই বিদেশি রসুন ২৪০ টাকা ও দেশি রসুন ২৬০ টাকা, দেশি আদার কেজি ১৬০ টাকা ও চায়না আদা ২৬০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। 

কমেনি মাংস ও মাছের দাম 
সরকার ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগির কেজি ২৭০ টাকা বেঁধে দিলেও গতকাল আগের মতো ব্রয়লার মুরগি ১৯০-২০০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০-৩১০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। গরুর মাংসের কেজিও আগের মতো ৭০০-৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা। ডিমের দাম ১৪২ টাকা বেঁধে দিলেও ১৪০-১৫০ টাকার কমে মেলে না বাজারে। এদিকে নদী খাল-বিলের পানি কমলেও অন্যান্য পণ্যের মতো মাছের দামও কমছে না। আগের মতোই রুই-কাতলার কেজি ৩৫০-৬০০ টাকা। চিংড়ি ৬০০-১২০০ টাকা, কাজলি ১০০০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, ট্যাংরা ৫০০-৮০০ টাকা, তেলাপিয়া ও পাঙাশের কেজি ২০০-২৫০ টাকা, চিংড়ি ৭০০-১০০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ইউক্রেন থেকে ৫২ হাজার ৫০০ টন গম আমদানি

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১২ পিএম
ইউক্রেন থেকে ৫২ হাজার ৫০০ টন গম আমদানি
এমভি এনজয় প্রসপারিটি। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ইউক্রেন থেকে আমদানি করা ৫২ হাজার ৫০০ টন গম চট্টগ্রামে পৌঁছেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিদেশ থেকে আমদানি করা খাদ্যশস্যের প্রথম চালান নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের কুতুবদিয়ায় পৌঁছেছে এমভি এনজয় প্রসপারিটি নামে একটি জাহাজ।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা ইমদাদ ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উন্মুক্ত দরপত্রের চুক্তির আওতায় ইউক্রেন থেকে আমদানি করা গমের নমুনা  পরীক্ষা শেষে খালাসের কাজ শুরু হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে বন্দরে ৩১ হাজার ৫০০ টন গম খালাস হবে এবং ২১ হাজার টন যাবে মোংলা বন্দরে।

মেহেদী 

ইউরো পার্টনারশিপ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ এএম
ইউরো পার্টনারশিপ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু
প্রতিকী ছবি: সংগৃহীত

দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ৩০ লাখ ইউরোর ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়েছে। এটি শ্রমিকদের দক্ষতার ঘাটতি মোকাবিলা, অভিবাসন খরচ কমানো এবং বাংলাদেশে শ্রম অভিবাসনে ইচ্ছুক জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ বাড়াবে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) আয়োজিত প্রোগ্রামে এ তথ্য জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) তিন বছরে ২০২৪-২৭ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামগুলো ইইউতে কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা পূরণের জন্য তিন হাজার কর্মীকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে কাজ করবে বলে প্রোগ্রামে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া প্রকল্পটি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে চাকরি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত করে তুলবে। দক্ষ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগে এই উদ্যোগগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন বলেন, এই প্রকল্পটি দক্ষতা উন্নয়নে অনেক বেশি উপকারী হবে। এটি প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়ন এবং ন্যায্য নিয়োগকে সহজতর করার লক্ষ্যে কাজ করবে।

বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং প্রধান প্রতিনিধি মাইকেল মিলার বলেন, ইইউ-বাংলাদেশ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপকে রূপান্তরকারী এবং সবার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করবে, অভিবাসী শ্রমিকের মানবাধিকার ও সম্মান রক্ষা হবে। আইনি অভিবাসনের পথ তৈরির পাশাপাশি আমাদের অনিয়মিত অভিবাসন শেষ করতে এবং পাচার ও শোষণের দুর্ভোগ মোকাবিলা করতে কাজ বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য দক্ষ জনশক্তি প্রেরণ। তার জন্যই আমাদের এই প্রজেক্ট। এই ট্যালেন্ট প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে জনশক্তি তৈরি করা। যাতে তারা ইউরোপের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী কাজ পাবে। উপযুক্ত পারিশ্রমিক পাবে।’

আইএলও জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ আইনি অভিবাসনের পথ এবং অনিয়মিত অভিবাসন কমানোর ওপর জোর দিয়ে প্রকল্পটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শ্রমবাজারে বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অনুযায়ী শ্রম অভিবাসনের জন্য তাদের দক্ষতার মান অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ আইনি অভিবাসনের পথ এবং অনিয়মিত অভিবাসন কমানোর ওপর জোর দিয়ে প্রকল্পটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শ্রমবাজারে বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অনুযায়ী শ্রম অভিবাসনের জন্য তাদের দক্ষতার মান অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।

'), descriptionParas[2].nextSibling); } if (descriptionParas.length > 6 && bannerData[arrayKeyTwo] != null) { if (bannerData[arrayKeyTwo].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyTwo].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyTwo].file)), descriptionParas[5].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyTwo].custom_code), descriptionParas[5].nextSibling); } } if (descriptionParas.length > 9 && bannerData[arrayKeyThree] != null) { if (bannerData[arrayKeyThree].type == 'image') { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertImageAd(bannerData[arrayKeyThree].url, ('./uploads/ad/' + bannerData[arrayKeyThree].file)), descriptionParas[8].nextSibling); } else { descriptionParas[0].parentNode.insertBefore(insertDfpCodeAd(bannerData[arrayKeyThree].custom_code), descriptionParas[8].nextSibling); } } });