গাইবান্ধার সাতটি উপজেলায় আমন ধানের খেতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। রাতের বেলায় ইঁদুরের দল ধানগাছের গোড়া কেটে দিচ্ছে। বিশেষ করে নিচু জমিতে ধানের গোড়ায় পানি জমে থাকলে সেগুলোতে ব্যাপকভাবে ইঁদুরের আক্রমণ হচ্ছে। রেহাই পেতে কৃষকরা রাত জেগে চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে কোনো ফাঁদ বা ওষুধে রেহাই মিলছে না। এ অবস্থায় চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গাইবান্ধা জেলায় এবার ১ লাখ ৩৩ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আমন চাষ হয়েছে ৩৪ হাজার ৪৪৪ হেক্টর জমিতে। কৃষি বিভাগ জানায়, যেসব এলাকার জমি নিচু, সেসব স্থানে ইঁদুরের আক্রমণ বেশি হচ্ছে। সম্প্রতি বৃষ্টি হওয়ার ফলে ইঁদুরের উপদ্রব গত বছরের তুলনায় বেড়ে গেছে। তবে এ পর্যন্ত জেলায় কতটুকু জমির ধানে ইঁদুরের আক্রমণ ঘটেছে, এর সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। কৃষি বিভাগের দাবি, ইঁদুর থেকে জমির ফসলকে রক্ষা করতে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি পলাশবাড়ী উপজেলার কুমারগাড়ী, হরিণাবাড়ী, ঘোড়াবান্ধা, বালুখোলা, মালিয়ানদহ গ্রামে সরেজমিনে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে সবুজ রং ধারণ করেছে। কৃষকরা বন্যা ও খরা কাটিয়ে ভালো ধান ফলালেও ইঁদুর দমনে তারা নিরুপায়। অনেক জমিতে ইঁদুর ধানগাছ কেটে খেত ফাঁকা করে ফেলেছে। ইঁদুরের আক্রমণের পর মাঠে অনেক ধান নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধানগাছের ঠিক মাঝখান থেকে কেটে দিয়েছে। খেতের ভেতর থেকে কৃষকরা ইঁদুরের কাটা ধানগাছ হাতে নিয়ে আসছেন। আবার অনেক চাষি পড়ে থাকা ধানগাছ সংগ্রহ করে গবাদিপশুকে খাওয়াচ্ছেন। শতভাগ ধানের ফলন নিয়ে কৃষকরা উৎকণ্ঠা ও হতাশায় আছেন।
কুমারগাড়ী গ্রামের রিমন খন্দকার বলেন, ‘সার, পানি, কীটনাশকসহ এবার আমনে ইরি ধানের মতো খরচ হয়েছে। ইঁদুরে এভাবে কাটলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। চলতি মৌসুমে প্রায় পাঁচ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছি। এর মধ্যে প্রায় জমিতেই চার-পাঁচ শতক করে ধানগাছ কেটে ফেলেছে ইঁদুর। অনেক চেষ্টা করছি, কিন্তু ইঁদুরের হাত থেকে আমন ধান রক্ষা করা যাচ্ছে না। কোনো কৌশলই কাজে আসছে না। ধানের ফলন নিয়ে আমি দুশ্চিন্তায় আছি।’
একই গ্রামের আব্দুল হাই বলেন, ‘২৪ শতক একটি ধানের জমির প্রায় ১০ শতকের ধানগাছ কেটে দিয়েছে। ফাঁদ পেতে ওষুধ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। রাতের বেলায় টর্চলাইট জ্বালিয়ে দেখেছি, তাও কাজ হয়নি।’
হরিণাবাড়ীর এনছোর আলী বলেন, ‘প্রায় ১৫ হাজার টাকা ধারদেনা করে দুই বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। প্রথম দিকে শ্যালো মেশিন থেকে পানি নিয়ে চাষ শুরু করি। এখন ইঁদুর সব নষ্ট করে দিচ্ছে। কিছুই করতে পারছি না।’
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের গাইবান্ধার উপপরিচালক কৃষিবিদ খোরশেদ আলম বলেন, ‘খুব বেশি পরিমাণ খেতে ইঁদুরের আক্রমণ নেই। এসব ইঁদুর নিধনে বিষটোপসহ বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে কৃষকদের