নীলফামারীতে শীতের আগমন উপলক্ষে লেপ ও তোশক তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় কারিগররা। শীতের মৌসুমে লেপ ও তোশকের চাহিদা ব্যাপকভাবে বাড়ে। এ কারণে শীতের আগেই অনেক ব্যবসায়ী অগ্রিম পণ্য তৈরি করে রাখছেন, যাতে পরবর্তী সময় তাড়াহুড়ো করতে না হয়।
এ ছাড়া ভ্রাম্যমাণ লেপ-তোশক ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিও বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও রাস্তা-ঘাটে তারা নিজেদের পণ্য বিক্রি করছেন। আবার অনেকেই পুরোনো লেপ-তোশক মেরামত করে বিক্রি করছেন। শীতের শুরুতেই স্থানীয় মানুষের মধ্যে লেপ-তোশক কেনার আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। অনেকেই এসব পণ্য কিনতে ভিড় করছেন দোকানগুলোতে, বিশেষ করে ভোর ও সন্ধ্যাবেলায় শীতের প্রকোপ বাড়তে থাকায় শীত নিবারণের জন্য নানা প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের তুলা ও কাপড়ের দামও বেড়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা, কালো হুল ২০ থেকে ৪০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ২০ থেকে ৪০ টাকা এবং সাদা তুলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব সূত্রে জানা গেছে, তুলা এবং কাপড়ের দাম আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এর ফলে লেপ-তোশক তৈরির খরচও বৃদ্ধি পেয়েছে।
নীলফামারীর কালীবাড়ি মোড়ের আনোয়ার বেডিং হাউসের মালিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। লেপের তুলা প্রতি কেজিতে ৮-১০ টাকা বেড়েছে ও কাপড়ের দামও বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকাসহ অন্যান্য স্থান থেকে মালামাল এনে লেপ-তোশক তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার সব ধরনের পণ্যের দামই বেড়েছে।’
ডোমার উপজেলা ভূমি অফিস মার্কেটের ব্যবসায়ী মো. সুরুজ মিয়া বলেন, ‘এখন আমাদের লেপ-তোশক তৈরিতে বেশ সময় যাচ্ছে। ১৫-২০ দিন পর আমাদের বিক্রি শুরু হবে এবং এ বিক্রি চলবে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস পর্যন্ত।’
এদিকে, নীলফামারী সদরের ইটাখোলার মাস্টারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রমিজ মিয়া (৪৭) বলেন, ‘বাজারে সব জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এবার লেপ-তোশক তৈরির খরচও বেড়েছে। আমি পুরোনো লেপ খুলে নতুন করে বানানোর জন্য দোকানে দিয়ে এসেছি। তুলার খরচ বাদ দিয়ে কাপড় ও মজুরি মিলিয়ে ৭০০ টাকায় বানানো হয়েছে।’
নীলফামারী সদরের উকিলের মোড় এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান (৩৬) জানান, ‘এবার শীতের প্রকোপ বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে। তাই আগেই লেপ বানানোর জন্য অর্ডার দিয়েছি। কারণ পরে দোকানে সিরিয়াল দিয়ে লেপ পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।’
এ ছাড়া সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা লোকমান হোসেন জানিয়েছেন, ‘নীলফামারীতে মাঝে মাঝেই ভোরে ও রাতে ঘন কুয়াশার দেখা মিলছে। গত দুই সপ্তাহ আগে সকালের চারটি বিমান অবতরণ করতে পারেনি কুয়াশার কারণে। তবে দুই ঘণ্টা পর বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়। এ বছর শীতের তীব্রতা আগের বছরের তুলনায় কিছুটা বেশি হতে পারে।’