বন্ডের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কমিশনার মো. জাকির হোসেন।
সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে কাস্টম হাউসের সম্মেলনকক্ষে ব্যবসায়ীদের সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্সিং বিধিমালা সংস্কার, বন্ডের জরিমানা রোহিতকরণ, আমদানি করা গাড়ি খালাসে জটিলতা নিরসনসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে বঞ্চিত ব্যবসায়ী ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মো. জাকির হোসেন বলেন, 'বন্ডের ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম গ্রহণযোগ্য হবে না। এখনই কর্মকর্তাদের এসব বিষয়ে জানিয়ে দিচ্ছি। আর কিছু কিছু বিষয়ে পলিসিগত ব্যাপার থাকবে, সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করব।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ আমদানি হয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে। বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। সেই বিষয়ে আমিও আপনাদের সঙ্গে একমত। ঊর্ধ্বতন সবার কাছে আপনাদের এক্সেস থাকবে।'
এইচএস কোড পরিবর্তন করে ২০০ থেকে ৪০০ শতাংশ জরিমানা করার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, 'এইচএস কোডের ক্ষেত্রে যদি কোনো ধরনের বৈসাদৃশ্য দেখা যায়, সেটাও আমরা দেখব।'
তিনি আরও বলেন, পার্টনারশিপ বা কোম্পানি এক হলে লাইসেন্সের ক্ষেত্রে মূল মালিক পরিবর্তন হলেও সমস্যা হবে না। তবে নতুন রুলস কি রয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কোনো নির্দেশনা আছে কি না, সেগুলো দেখে সমাধান করব। লাইসেন্স কখনো হস্তান্তরযোগ্য নয়। তবে এ সমস্যাটা সমাধানে আইনই প্রাধান্য পাবে।'
সভায় ব্যবসায়ী ফোরামের আহ্বায়ক এস এম সাইফুল আলম বলেন, 'চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে এক সময় দুর্নীতি ও নানা অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিল্প খাত, বিশেষত উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানা। এই দুর্নীতির কারণে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছিল। তাই বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কাস্টম হাউসে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানাই। তা ছাড়া আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য আরও গতিশীল করে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশন চালু, অযৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ বন্ধ, অনিয়ম ও হয়রানি বন্ধ করে দ্রুত পণ্য খালাসের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।'
ফোরামের সদস্যসচিব শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, 'কাস্টমসে বিদ্যমান শুল্ক মূল্যায়ন বিধিমালার সংশোধন ও সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। তবে সবার আগে প্রয়োজন দুর্নীতির মূলোৎপাটন। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধ করে সিঅ্যান্ডএফ লাইসেন্সিং বিধিমালা আইন সংস্কার করতে হবে।'
সিঅ্যান্ডএফ ব্যাবসায়ী শওকত আলী বলেন, 'কাস্টমসে হয়রানির একটি ধরন হলো পণ্য খালাসে বিলম্বসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে পণ্যভর্তি কনটেইনারের ওপর ডেমারেজ চার্জ আরোপ বা বৃদ্ধি। দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের স্বার্থে এ প্রবণতা বন্ধ হওয়া জরুরি।'
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য আবু সালেহ, জামাল উদ্দিন বাবলু, অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক, বন্দর ট্রাক কাভার্ডভ্যান মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির সোহেল প্রমুখ।
তারেক মাহমুদ/জোবাইদা/অমিয়/