ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিতে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক স্মারকে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আক্তার মিতাকে এই নিয়োগ দেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়, বাণিজ্য সংগঠন আইন ২০২২-এর ১৭ ধারা অনুযায়ী, প্রশাসক ১২০ দিনের মধ্য সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন।
আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ২০২২-২৩ মেয়াদি পরিচালনা পরিষদের সভাপতিসহ পাঁচ সদস্য পদত্যাগ করেন। পরবর্তী সময় চেম্বারের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হলেও পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ গঠন প্রক্রিয়া ত্রুটিপূর্ণ বিধায়, প্রাক্তন দুজন সহসভাপতিসহ আরও ছয় সদস্যের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সভাপতি বরাবর কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। চেম্বারের পুনর্গঠিত পর্ষদ কারণ দর্শানোর সন্তোষজনক জবাব উপস্থাপন করতে পারেনি। চেম্বারের চলমান অস্থিরতা ও অসন্তোষের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে পুনর্গঠিত পরিচালনা পর্ষদ ভূমিকা রাখতে পারছে না বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
গত ২ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে কমিটি ভেঙে প্রশাসক নিয়োগের জন্য সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান পর্ষদকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত রবিবার তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন। এই কর্মসূচিতে আজ (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তারা। দাবি না মানা হলে ব্যবসায়ীরা কঠোর কর্মসূচির ডাক দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। তবে আল্টিমেটামের দুদিনের মাথায় প্রশাসক দেওয়া হলো সিলেট চেম্বারে।
জানা গেছে, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান কমিটিকে ‘বিনা ভোটের কমিটি’ আখ্যায়িত করে বেশ কয়েক দিন ধরে প্রশাসকের মাধ্যমে নির্বাচন দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। গত রবিবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চেম্বার ভবনের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন সিলেটের ব্যবসায়ীরা। সিলেটের ‘সর্বস্তরের ব্যবসায়ীর’ ব্যানারে এই বিক্ষোভে বক্তারা বলেন, ‘পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের কতিপয় নেতার মদদে ‘বিনা ভোটে’ সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
৫ আগস্টের পর দেশের প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হওয়ায় সিলেটের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা তাদের ভোটাধিকার নিয়ে সোচ্চার হতে পেরেছেন। তারা চেম্বারের বর্তমান কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে সুষ্ঠু ভোটার তালিকার মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে আসছেন। ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে ইতোমধ্যে ৫ জন পরিচালক পদত্যাগ করেছেন।
বক্তারা বলেন, ‘সিলেটের ব্যবসায়ীদের স্বার্থে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সিলেট চেম্বারে প্রশাসক নিয়োগ জরুরি। প্রশাসক একটি সুষ্ঠু ভোটার তালিকার মাধ্যমে নির্বাচন দিয়ে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে নেতৃত্ব তুলে দেবেন। এমন প্রত্যাশা করছেন সিলেটের সর্বস্তরের ব্যবসায়ীরা।