ঢাকা ৪ মাঘ ১৪৩১, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

ইউরো পার্টনারশিপ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু

প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৪ এএম
ইউরো পার্টনারশিপ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু
প্রতিকী ছবি: সংগৃহীত

দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে ৩০ লাখ ইউরোর ট্যালেন্ট পার্টনারশিপ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়েছে। এটি শ্রমিকদের দক্ষতার ঘাটতি মোকাবিলা, অভিবাসন খরচ কমানো এবং বাংলাদেশে শ্রম অভিবাসনে ইচ্ছুক জনগোষ্ঠীর জন্য সুযোগ বাড়াবে।

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) আয়োজিত প্রোগ্রামে এ তথ্য জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) তিন বছরে ২০২৪-২৭ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামগুলো ইইউতে কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা পূরণের জন্য তিন হাজার কর্মীকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে কাজ করবে বলে প্রোগ্রামে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া প্রকল্পটি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে চাকরি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত করে তুলবে। দক্ষ চাকরিপ্রার্থীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগে এই উদ্যোগগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন বলেন, এই প্রকল্পটি দক্ষতা উন্নয়নে অনেক বেশি উপকারী হবে। এটি প্রযুক্তিগত দক্ষতা উন্নয়ন এবং ন্যায্য নিয়োগকে সহজতর করার লক্ষ্যে কাজ করবে।

বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত এবং প্রধান প্রতিনিধি মাইকেল মিলার বলেন, ইইউ-বাংলাদেশ ট্যালেন্ট পার্টনারশিপকে রূপান্তরকারী এবং সবার জন্য তৈরি করা হয়েছে। এটি নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ অভিবাসন নিশ্চিত করবে, অভিবাসী শ্রমিকের মানবাধিকার ও সম্মান রক্ষা হবে। আইনি অভিবাসনের পথ তৈরির পাশাপাশি আমাদের অনিয়মিত অভিবাসন শেষ করতে এবং পাচার ও শোষণের দুর্ভোগ মোকাবিলা করতে কাজ বাড়াতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য দক্ষ জনশক্তি প্রেরণ। তার জন্যই আমাদের এই প্রজেক্ট। এই ট্যালেন্ট প্রোগ্রামের মূল উদ্দেশ্য হলো বাংলাদেশে জনশক্তি তৈরি করা। যাতে তারা ইউরোপের রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী কাজ পাবে। উপযুক্ত পারিশ্রমিক পাবে।’

আইএলও জানিয়েছে, বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ আইনি অভিবাসনের পথ এবং অনিয়মিত অভিবাসন কমানোর ওপর জোর দিয়ে প্রকল্পটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শ্রমবাজারে বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অনুযায়ী শ্রম অভিবাসনের জন্য তাদের দক্ষতার মান অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ আইনি অভিবাসনের পথ এবং অনিয়মিত অভিবাসন কমানোর ওপর জোর দিয়ে প্রকল্পটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শ্রমবাজারে বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অনুযায়ী শ্রম অভিবাসনের জন্য তাদের দক্ষতার মান অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে।

চট্টগ্রামে খুচরায় চড়া ডিমের বাজার

প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৩৩ এএম
আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪২ এএম
চট্টগ্রামে খুচরায় চড়া ডিমের বাজার
চট্টগ্রাম মহানগরের পাহাড়তলী পাইকারি বাজারে ট্রাক থেকে ডিম নামিয়ে আড়তে রাখছেন শ্রমিকরা। ফাইল ফটো

চট্টগ্রামে পাইকারি বাজারে নিম্নমুখী ডিমের দাম। তবে এর সুফল পাচ্ছেন না সাধারণ ভোক্তারা। আড়ত থেকে কেনার পর খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতিটি ডিম ১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা ২০ পয়সা বেশি দামে বিক্রি করতে পারেন। কিন্তু চট্টগ্রামের খুচরা ব্যবসায়ীরা কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করেই প্রতিটি ডিমে ভোক্তার কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছেন। 

চট্টগ্রামে পাইকারি ডিম বিক্রি হয় পাহাড়তলী বাজারে। গত মাসের শুরুতে বাজারটিতে প্রতিটি ডিম ১০ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। তবে গত সপ্তাহে প্রতিটি ডিম ৯ টাকা ৭০ পয়সা হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা ৬০ পয়সা। 

জানা গেছে, পাইকারি আড়ত থেকে একজন খুচরা বিক্রেতা কিনে আনার পর প্রতিটি ডিম ১ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ টাকা ২০ পয়সা বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন। সেই হিসেবে চট্টগ্রামে খুচরা পর্যায়ে একটি ডিম ১০ টাকা ৬০ পয়সা বা ১০ টাকা ৮০ পয়সায় বিক্রি করার কথা।

কিন্তু চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ি, হালিশহর, নাসিরাবাদসহ বিভিন্ন এলাকার খুচরা দোকান ঘুরে দেখা গেছে, একেক জায়গায় একেক দরে ডিম বিক্রি হচ্ছে। খুচরা পর্যায়ে ১ ডজন কিনলে প্রতিটি ডিমে ক্রেতার খরচ পড়ছে ১১ টাকা ৬৬ পয়সা (ডজনপ্রতি ১৪০ টাকা)। আবার এক হালি কিনলে প্রতি ডিমে ক্রেতার খরচ পড়ছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা (প্রতি হালি ৫০ টাকা)। 

পাহাড়তলী বাজারের পাইকারি ডিম ব্যবসায়ী মো. দেলোয়ার খবরের কাগজকে বলেন, ‘ডিমের বাজার দর কমতির দিকে রয়েছে। প্রতি ১০০ পিস ডিম ৯৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রোজার মাসে ডিমের দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।’

ঢাকার তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমান উল্লাহ আমান খবরের কাগজকে বলেন, ‘বাজার পরিস্থিতি খুব একটা ভালো না। দামও কমতির দিকে। আমরা প্রতি ১০০ পিস ডিম ৯৭০ টাকায় বিক্রি করছি। পাইকারিতে ডিমের বাজার চড়া হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখছি না।’

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার খবরের কাগজকে বলেন, ‘আড়তদার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা যেভাবে লাভবান হচ্ছেন, সেভাবে প্রান্তিক খামারিরা লাভবান হচ্ছেন না। তারা ন্যায্য দামটা পাচ্ছেন না। অপরদিকে ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কারণ খুচরা বিক্রেতারা অতিরিক্ত মুনাফার চেষ্টা করছেন। অনেক ক্রেতা দাম-দর করেন না বলে খুচরা ব্যবসায়ীরা বাড়তি দরে ডিম বিক্রির সুযোগটা পান। তবে দেশের ও জনগণের স্বার্থে সব জায়গায় একটা শৃঙ্খলা থাকা জরুরি।’

চট্টগ্রাম মহানগরের হালিশহর এলাকায় আল মক্কা স্টোরের মালিক মো. নাছির খবরের কাগজকে বলেন, ‘আমরা আড়ত থেকে কিনে আনার সময় অনেক ডিম ফেটে যায়, নষ্ট থাকে। তাই আমাদের সেই ক্ষতি পুষিয়ে নিতে একটু বাড়তি দরে বিক্রি করতে হয়। লোকসান গুণে তো আর ব্যবসা করা যাবে না।’ 

নগরের হালিশহর কাঁচাবাজারে কথা হয় ওই এলাকার বাসিন্দা মো. আল আমিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে একেক দোকানে একেক দামে ডিম বিক্রি হচ্ছে। দোকানদার ডজনপ্রতি ডিমের দাম ১৫০ টাকা চান। দাম-দর করে ১৪০ টাকায় কিনেছি। অথচ শীতকালে ডিমের দাম কমে যাওয়ার কথা।’ 

এদিকে রিয়াজুদ্দিন বাজার ও কর্ণফুলী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ‘এসব বাজারে কমতে শুরু করেছে মুরগির দাম। চলতি মাসের শুরুতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০৫ থেকে ২১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায়। তবে সোনালি ও দেশি মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি দেশি মুরগি ৫৪০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’

তবে আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে সবজি। বর্তমানে প্রতিকেজি নতুন আলু ৪৫ টাকা, মুন্সীগঞ্জের আলু ৫০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা, লাউ ৩০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, ক্ষীরা ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, টমেটো ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম ও বেগুন ৫০ টাকা, শিমের বিচি ১২০ টাকা, বরবটি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ও করলা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তা ছাড়া প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৫ টাকা ও চীনা রসুন ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 
অপর দিকে মাছের বাজারে প্রতিকেজি রুই আকারভেদে ২৮০ থেকে ৩৮০ টাকা, কাতলা মাছ ৩৫০ টাকা, শিং মাছ ৩৫০ টাকা, পাঙাশ ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কোরাল ৬০০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার টাকা, বোয়াল ৫০০ টাকা ও লাল পোয়া ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

৪ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৪ পিএম
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:৪৪ পিএম
৪ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ১ শতাংশে নেমে আসবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত জুন মাসে ৫ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। অর্থাৎ ছয় মাস আগের তুলনায় এবার প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১ দশমকি ৬ শতাংশ পয়েন্ট হ্রাস করেছে সংস্থাটি। যদিও এর মধ্যে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। গত জুলাই মাস থেকেই দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এ ধরনের অস্থিতিশীলতার মধ্যে সাধারণত প্রবৃদ্ধির হার কমে যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক বাণিজ্যে মন্দা, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, ঋণ পরিশোধের ব্যয়ের চাপসহ অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নানা সংকটের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের মূল শক্তি তৈরি পোশাকশিল্প। কিন্তু ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় রপ্তানি আয় কমে যাচ্ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং টাকার অবমূল্যায়নের ফলে আমদানি ব্যয় বেড়েছে।

এদিকে রাজস্ব ঘাটতির কারণে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়ছে। অবকাঠামো উন্নয়ন ও সামাজিক সুরক্ষা খাতে সরকারি বিনিয়োগ কমে গেছে। গ্রামীণ অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যাওয়ায় দরিদ্র জনগোষ্ঠী আরও বেশি সংকটে পড়ছে।

সংকট কাটিয়ে উঠতে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে আছে রাজস্বব্যবস্থায় সংস্কার, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্র্য আনা, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি কার্যকর করা, অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দরমিত গিল বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি সংকটে আছে। নীতিনির্ধারকদের উচিত হবে, দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নিয়ে অর্থনীতির গতি পুনরুদ্ধার করা। বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং রাজস্ব বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে স্বল্প মেয়াদে সংকট মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

এদিকে গত অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাস ছিল, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হবে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদন মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৩ পিএম
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৬ পিএম
মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকির বিষয়টি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এটি ছাড়া আরও চারটি বিষয়কে ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো- চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া, পরিবেশ দূষণ, বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক নিম্নমুখিতা। গত বুধবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হিসেবে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া, বিশেষ করে বন্যা ও উচ্চ তাপমাত্রা এবং দূষণকে দায়ী করা হয়েছে। বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি দেশের মধ্যে একটি, যেখানে দূষণকে শীর্ষ তিন ঝুঁকির একটি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারত ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। দেশ দুটিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ অনেক ক্ষেত্রেই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। সবুজ অর্থনীতি রূপান্তরের ক্ষেত্রে দূষণ সচেতনতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ডব্লিউইএফের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আরও দুটি বিষয় খুব ঝুঁকিপূর্ণ। এর একটি হচ্ছে বেকারত্ব, অন্যটি হচ্ছে অর্থনৈতিক নিম্নমুখিতা। এ দুটি বিষয়ের কারণে বাংলাদেশ উচ্চ মূল্যস্ফীতি, মুদ্রার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ঘাটতি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ধীর প্রবৃদ্ধি মোকাবিলা করছে।

রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০২৪ সালে মূল্যস্ফীতির গড়পড়তা হার ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে তা ছিল ৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবমতে, ২০২২ সালে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৭ শতাংশ।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, জলবায়ুগত, সামাজিক ও অর্থনৈতিকসহ সাম্প্রতিক বছরগুলোর অন্যান্য উদ্বেগকে ছাপিয়ে বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে রাষ্ট্রভিত্তিক সশস্ত্র সংঘাত।

অথচ দুই বছর আগেও এটিকে বড় ঝুঁকি হিসেবে দেখা হতো না। বৈশ্বিক শীর্ষ ১০ ঝুঁকির মধ্যে অন্য ঝুঁকিগুলো হলো চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া, ভূ-অর্থনৈতিক বিবাদ, অপতথ্য ও ভুল তথ্য, সামাজিক মেরুকরণ, বৈশ্বিক ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন, অর্থনৈতিক সুযোগের অভাব বা বেকারত্ব, মানবাধিকার বা নাগরিক স্বাধীনতার অবক্ষয় ও অসমতা এবং প্রযুক্তিগত আধিপত্য।

জরিপে অংশ নেওয়া ৫২ শতাংশ মতামত দিয়েছেন যে বিশ্বব্যাপী চলমান অস্থিরতা ও সংঘাত অর্থনীতির ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

দেশভিত্তিক প্রধান ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করতে নির্বাহী মতামত জরিপ (ইওএস) চালায় ডব্লিউইএফ। এটি মূলত ধারণাভিত্তিক জরিপ। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞেস করা হয়, ‘আগামী দুই বছরে আপনার দেশের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনগুলো।’ অংশগ্রহণকারীদের ৩৪টি ঝুঁকির তালিকা দেওয়া হয়। সেখান থেকে তারা পাঁচটি প্রধান ঝুঁকি চিহ্নিত করেন।

অভ্যন্তরীণ অডিট আগামী সপ্তাহে কার্যকর: অর্থ বিভাগের সচিব

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৪৩ পিএম
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১০:৫৪ পিএম
অভ্যন্তরীণ অডিট আগামী সপ্তাহে কার্যকর: অর্থ বিভাগের সচিব
‘ইন্টারনাল অডিটিং জার্নি ইন পাবলিক সেক্টর’ বিষয়ক স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ কর্মশালায় অতিথিরা। ছবি: খবরের কাগজ

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় অভ্যন্তরীণ অডিটিংয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করছে অর্থ বিভাগ। এ জন্য স্বতন্ত্র ‘ইন্টারনাল অডিট’ও স্থাপন করা হয়েছে। এটি আগামী সপ্তাহ থেকে সম্পূর্ণ কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার।

মানিকগঞ্জে বেসরকারি সংস্থা প্রশিকার মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রে এক কর্মশালায় শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) তিনি এ কথা বলেন।

‘ইন্টারনাল অডিটিং জার্নি ইন পাবলিক সেক্টর’বিষয়ক স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়, সরকারের সব ব্যয় নির্বাহী প্রতিষ্ঠানও এর সঙ্গে যুক্ত। তাই অর্থ মন্ত্রণালয় পাঁচটি ‘হাই স্পেনর্ডি ডিপার্টমেন্ট’, যেখানে প্রকিউরমেন্ট বেশি হয়– প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভ্যন্তরীণ অডিটিং পাইলটিং হচ্ছে। এ উদ্যোগ সুদূরপ্রসারী হবে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চালু করার জন্য সরকার কাজ করছে।

কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা) সিরাজুন নূর চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আব্দুল হাকিম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান ও গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম। অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) বিলকিস জাহান রিমি অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুন্সী আব্দুল আহাদ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সিরাজুন নূর চৌধুরী বলেন, ইন্টারনাল কন্ট্রোল স্থাপন, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য ইন্টারনাল অডিটের গুরুত্ব অপরিসীম।  মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সিস্টেম ডিজিটাইজড করার পাশাপাশি এই সিস্টেম ব্যবহারকারী, বিশেষ করে ভেন্ডারদের দক্ষতার বিষয়টিও ভাবতে হবে। ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ইন্টারনাল অডিট বাস্তবায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতার উন্নয়ন খুবই জরুরি।

বিলকিস জাহান রিমি বলেন, ইন্টারনাল অডিট ম্যানেজমেন্টের ‘থার্ড আই’ হিসেবে কাজ করে এবং এর মাধ্যমে সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ করে আর্থিক ব্যবস্থাপনা হচ্ছে কি না, তা জানা যায়।  সরকারি পর্যায়ে পাঁচটি ‘হাই স্পেনর্ডি ডিপার্টমেন্ট’– প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ  কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানেও এর সম্প্রসারণ ঘটবে।

মাহমুদুল আলম/সুমন/

রাজস্ব আহরণে গতি নেই

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৪৬ পিএম
আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫১ পিএম
রাজস্ব আহরণে গতি নেই

চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) রাজস্ব ঘাটতি আরও বেড়েছে। নভেম্বর পর্যন্ত ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার কোটি টাকা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আয় মূলত আয়কর, ভ্যাট, আমদানি ও রফতানি শুল্ক থেকে আসার কথা।

সংস্থাটির হালনাগাদ পরিসংখ্যান বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর এই পাঁচ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪২ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা কম। বছর ব্যবধানে কমেছে ২ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর শুধু নভেম্বরে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ২৫ হাজার ৩৫৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।

এনবিআরের সাবেক সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন বলছেন, ‘রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি থাকছে। ঘাটতির কারণ বের করে সমাধান করতে হবে। 

এনবিআরের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর এই চার মাসে এনবিআরের মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ১১৪ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায় হয়েছে ১ লাখ ১ হাজার ২৮১ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে ৩০ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম চার মাসের চেয়েও চলতি অর্থবছরের একই সময়ে ১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ বা ১ হাজার ৫৫ কোটি টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১ লাখ ২ হাজার ৩৩৬ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের কোনো মাসেই রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি এনবিআর। জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ২৫ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে ২০ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। জুলাইয়ে রাজস্ব আদায় কমেছে ৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

পরের মাস আগস্টেও একই অবস্থা দেখা গেছে। ওই মাসে ৩১ হাজার ৬০৭ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ২১ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ রাজস্ব আদায় কমেছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা।

গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৯ হাজার ৩২৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৯ হাজার ২ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি। আর অক্টোবর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৩৫ হাজার ৬১৪ কোটি টাকা। আদায় হয়েছে ২৭ হাজার ৭২ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় কমেছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি।

লাবনী/সুমন/এমএ/