
ময়মনসিংহে কমেছে সবজি ও মাছের দাম। এতে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। গত কয়েকদিন ধরে বাজারে সবজি ও মাছের সরবরাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে দাম হ্রাস পেয়েছে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এই অবস্থার ফলে কিছু দিনের মধ্যে দাম আরও কমবে।
গত শনিবার বিকেলে মেছুয়া বাজারে ক্রেতাদের কম দামে সবজি কিনতে দেখা যায়।
বাজারে সবজি সরবরাহ বেড়েছে। দুই মাস আগে যে কাঁচামরিচ ৫০০-৬০০ টাকা কেজি ছিল। বর্তমানে তা ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য সবজির দামও অনেক কমেছে। ফুলকপি ১৫ টাকা, পাতাকপি ৩০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, শিম ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১৫ টাকা, মটরশুটি ১২০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, কাঁচকলা ২৫ টাকা, মুলা ১৫ টাকা, শসা ৩০ টাকা, পেঁয়াজ পাতা ৩০ টাকা, কুমড়া ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, লতা ৫০ টাকা, পুলতা ৪০ টাকা, ডাটা-লেবু (প্রতি হালি) ১৫ টাকা ও লাউ ৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। আলু ও অন্যান্য সবজি দামেও কিছুটা কমেছে। বড় আলু ৫০ টাকা। দেশি ছোট আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছের দামও কমেছে। পাঙাশ মাছ ১২০ টাকা কেজি, তেলাপিয়া ১৮০ টাকা, টেংরা ৩৫০ টাকা, চান্দা ২৮০ টাকা, পাবদা ৩৮০ টাকা, বড় রুই ২৪০ টাকা, শিং ৩০০ টাকা, শোল ৫০০ টাকা, দেশি পুঁটি ২০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৮০ টাকা, রাজপুঁটি ১৭০ টাকা, সুলুঙ্গি ৪৮০ টাকা, বড় ব্লাড কার্প ২২০ টাকা, মৃগেল ২১০ টাকা, বাউশ ৩০০ টাকা, মলা ৩৯০ টাকা, মাঝারি কাতল ৩০০ টাকা ও টাকি ৩৮০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে অন্যান্য পণ্য আটা, ছোলা বুট, খেসারি, মটর, মুগডাল, মাষকলাই, চিনি, রসুন, আদা, সয়াবিন তেল ও পাম তেলের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। খোলা আটা ৪০ টাকা, প্যাকেট আটা ৫০ টাকা, ছোলা ১২০ টাকা, খেসারি ১২০ টাকা, মটর ৭০ টাকা, মুগডাল ১৭০ টাকা, মাষকলাই ১৩০ টাকা, বুটের ডাল ১৩০ টাকা, চিনি ১২০ টাকা, দেশি রসুন ২৪০ টাকা, চায়না রসুন ২১০ টাকা, ভারতীয় আদা ১০০ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ টাকা প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে। পাম তেল ১৭৫ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেল ১৮৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগি ১৯৫ টাকা কেজি, সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৬০ টাকা ও লেয়ার মুরগি ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা মোরশেদ মিয়া জানান, শীতে সবজির ব্যাপক সরবরাহ হওয়ায় দাম কমেছে। কয়েক দিনের মধ্যে আরও দাম কমবে। মেছুয়া বাজারের সবজি বিক্রি মোরশেদ জানান, বাজারে বর্তমানে সবজি ভরপুর। এসবের দামও অর্ধেক কমেছে।
মাছ বিক্রেতা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘মাছের দামও নিম্নমুখী হয়েছে। শীতের প্রকোপের কারণে অনেক খামারি পুকুর থেকে মাছ তুলে পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন না। এমন পরিস্থিতিতে বিক্রি না করলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ শীতে মাছ তেমন বড় হয় না।’ ক্রেতা আব্দুল হাই বলেন, সবজি ও মাছের দাম কমলেও, নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য তা এখনো সহনীয় পর্যায়ে নেই।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক ড. নাছরিন আক্তার বানু জানান, চরাঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়নে প্রচুর সবজি চাষ হয়েছে। ফলে বাজারে সবজির কোনো ঘাটতি নেই এবং দাম কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও সবজি বেচার উপযোগী হবে এবং দাম আরও কমবে।’
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘বাজারে তদারকি করা হচ্ছে। যদি কোনো পণ্যের দাম সিন্ডিকেট করে বাড়ানো হয়। তবে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’